তুরস্ক

Spread the love

Featured Image: Wikimedia Commons.

Image: The Nations Online Project.

পূর্বসাল

৩০০০-২০০১ হুররীয়রা আনাতোলিয়ায় বসতি স্থাপন করতে শুরু করল। এ সময় মর্মর সাগর আর ইজিয়ান সাগরের পারে সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল নিশ্চিতভাবে বলা যায়। কারণ কার্বন ডেটিং পদ্ধতির মাধ্যমে এ সময় অস্তিত্বশীল ছিল এমন হিসালরিক নামের এক প্রাচীন শহরের কথা জানা গেছে।*
* হিসালরিকই হোমারের মহাকাব্য ইলিয়াডয়ের ট্রয় নগরী।

২৭০০ মধ্য আনাতোলিয়ার আদিবাসী জনগোষ্ঠী হাত্তিরা সুমেরীয় সভ্যতার সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে তুলল।

২৫০০ হাত্তিদের নগররাষ্ট্রগুলো রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হল হাত্তুসা।

২৩২০ আক্কাদের সারগন হাত্তিদের অঞ্চলে আক্রমণ চালালেন, কিন্তু হাত্তুসা দখল করতে ব্যর্থ হলেন।

২২০০ সারগনের নাতি ও আক্কাদীয় রাজা নারাম-সুয়েন হাত্তিদের অঞ্চলে অভিযান চালালেন। তাঁকে বাধাপ্রদান করলেন হাত্তিদের রাজা পামবা। এসময় হাত্তীয় নগর রাষ্ট্রগুলোতে শিল্পের সমৃদ্ধি ঘটছে।

২০০০ হাত্তি সংস্কৃতি এ সময় উৎকর্ষের শিখরে আছে।

১৭৫০-১৩০০ ট্রয় নগরী এ সময় উৎকর্ষের শিখরে আছে।

১৭০০-১২০০ হিত্তীয় সাম্রাজ্য

১৭০০ হিত্তীয় গোষ্ঠী হাত্তিদের অঞ্চলে হামলা চালাল ও হাত্তিদের রাজধানী হাত্তুসা ধ্বংস করে দিল, হিত্তীয় সাম্রাজ্যের উত্থান ঘটল।

১৬৫০ হিত্তীয় যোদ্ধা-রাজা হাত্তুসিলি হাত্তিদেরকে সম্পূর্ণরূপে অধীনস্ত করলেন। হিত্তীয়দের রাজধানী হিসাবে হাত্তুসাকে পুনঃনির্মাণ করা হল। হাত্তিদেরকে হিত্তীয় সংস্কৃতিতে আত্মীকৃত করে নেয়া হল।

১৬০০-৮০০ সিরিয়ার আলেপ্পো এ সময় হিত্তীয়দের নিয়ন্ত্রণে আছে।

১৫৯৫ হিত্তীয়দের রাজা মুরসিলিস ধবংস করলেন বাবেল। আমোরীয় শাসনের অবসান। বাবেলের অন্ধকার যুগয়ের শুরুয়াত।

১৫০০-১২০০ তুরস্ক আর আর্মেনিয়ায় আদিবাসী গোষ্ঠীদের হায়াসা-আজ্জি কনফেডারেশন সমৃদ্ধি লাভ করছে।

১৩৮০ হিত্তীয়দের রাজধানী হাত্তুসাকে পুড়িয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিল কাসকা নামের একটি দখলদার গোষ্ঠী। হিত্তীয় সাম্রাজ্যে প্রথমবারের মত লোহা ব্যবহৃত হচ্ছে।

১৩৫০-১২৫০ হিত্তীয় সাম্রাজ্য এ সময় উৎকর্ষের চূড়ায় আছে।

১৩৩৪ সামোসের ডুরিসের মতে, ট্রয় যুদ্ধ ঘটার বছর।

১৩৪৪-২২ হিত্তীয়দের রাজা প্রথম সুপ্পিলুলিউমা মিত্তানিদের রাজধানী ওয়াশুকান্নি ধবংস করে দিলেন এবং দ্বিতীয় আর্তাতামাকে পুতুল শাসক হিসাবে মিত্তানি সাম্রাজ্যের সিংহাসনে বসালেন।

১৩২১ মিত্তানি সাম্রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল দখল করে নিল হিত্তীয়রা।

১৩২০ হায়াসা-আজ্জি কনফেডারেশনের ওপর হামলা চালালেন হিত্তীয়দের রাজা দ্বিতীয় মুসিলি।

১২৭৪ কাদেশের যুদ্ধ, সিরীয় শহর কাদেশে মিসরের ফারাও দ্বিতীয় রামেসিস আর হিত্তীয় রাজা দ্বিতীয় মুওয়াতাল্লির মধ্যে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

১২৫৮ মিসরের ফারাও দ্বিতীয় রামেসিস ও হিত্তীয়দের সম্রাট তৃতীয় হাত্তুসিলির মধ্যে শান্তি চুক্তি সই।*
* নথিবদ্ধ ইতিহাসের প্রথম শান্তি চুক্তি বিবেচিত হয়।

১২৫০ হেরোডোটাসের মতে, ট্রয় যুদ্ধ ঘটার বছর।

১২৪৫ নিহরিয়ার যুদ্ধ, অ্যাসিরিয়ার সম্রাট প্রথম তুকুলতি-নিনুর্তা হিত্তীয়দের সম্রাট চতুর্থ তুদাহালিজাকে পরাজিত করলেন।

১২০০ নব্যহিত্তীয় রাজ্য হিসাবে লিডিয়ার উত্থান ঘটল। ফ্রিজীয় নামের একটি সমুদ্রবাসী গোষ্ঠী আনাতোলিয়ায় হামলা চালাল। হিত্তীয় সাম্রাজ্যের পতন।

১২০০-৬২৫ এ সময় আনাতোলিয়ার মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চল ফ্রিজীয়দের নিয়ন্ত্রণে আছে।

১১৮৫-৬৮৭ এ সময় লিডিয়া শাসন করছে হেরাক্লীয় রাজবংশ।

১১৮৪ এরাতোস্থেনেসের মতে, ট্রয় যুদ্ধ ঘটার বছর।

৮৫০ ফ্রিজীয় রাজ্যের রাজধানী হয়ে উঠল গর্ডিয়াম।

৮০০-৭০০ মহাকবি হোমার এ সময়ই লিখছেন ইলিয়াড ও ওডিসি।*
* ইজিয়ান পারের শহর স্মিরনায় জন্মেছিলেন হোমার, আজকে অবশ্য শহরটি তুর্কি নামে পরিচিত: ইজমির

৭৫০-৬০০ মধ্য আনাতোলিয়ায় ফ্রিজীয় রাজ্য; পূর্ব আনাতোলিয়ায় উরার্তু রাজ্য।

৭৩৮-৬৯৬ ‘মুশকির মিতার’ রাজত্বকাল।*
* প্রাচীন ফ্রিজীয় শিলালিপি ও অ্যাসিরীয় উৎসগুলোতে তাঁকে এই নামে উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রিক পুরাণে মাইডাস নামে এক রাজার কথা বলা আছে, দেবতার বরে যিনি চাইলেই কোনকিছু স্পর্শ করে স্বর্ণ বানিয়ে ফেলতে পারতেন। অনেকে মনে করেন, ‘মুশকির মিতা’ই রাজা মাইডাস।

৭০৯ অ্যাসিরিয়ার রাজা দ্বিতীয় সারগনের সাথে জোট বাঁধলেন মুশকির মিতা।

৭০০-৫৪৬ এ সময় লিডিয়া শাসন করছে মার্মনা রাজবংশ।

৬৯৬ সিমেরীয়রা ফ্রিজিয়ার রাজধানী গর্ডিয়াম ধবংস করে দিল।

৬৮৭-৫২ এ সময় লিডিয়া শাসন করছেন রাজা গাইগেস। তিনি রাজ্যের সীমান্ত সম্প্রসারণ করেন। সার্ডিসকে লিডিয়ার রাজধানী করা হয়।

৬৩৫-৫৮৫ এসময় লিডিয়া শাসন করছেন রাজা আলিয়াত্তেস।*
* নথিবদ্ধ ইতিহাসের প্রথম কয়েনগুলো এসময়ই তৈরি হয় লিডিয়ায়, যা তৈয়ারে ব্যবহৃত হয়েছিল ইলেকট্রাম।

৬২৫ লিডীয়রা ফ্রিজিয়া থেকে সিমেরীয়দের তাড়িয়ে দিল ও ফ্রিজীয়দের রাজ্যটি জয় করে নিল।

৬০০-১ তুরস্কের পারসিক অধীনস্ততার কাল। বর্তমান ইস্তানবুল এ সময় একটি ছোট উপনিবেশ ছিল। গ্রিক শহর মেগারা ছেড়ে আসা বসতি স্থাপনকারীরা বসফরাসের ইওরোপীয় অংশে এটি স্থাপন করেছিল, তবে তখন এর নাম ছিল বাইজেন্টিয়াম

৫৬০ লিডিয়ার রাজা ক্রসাস পারসিক সাম্রাজ্যে হামলা চালান।*
* এই হামলা চালানোর আগে পরামর্শের জন্য ক্রসাস ডেলফি আর থিবসের ওরাকলের কাছে গেলে দুই ওরাকলই তাঁকে জানায়, যুদ্ধে এক বৃহৎ সাম্রাজ্য ধবংস হবে। যুদ্ধ শেষে দেখা গেল ভবিষ্যৎবাণী সঠিক ছিল। যুদ্ধে আসলেই এক বৃহৎ সাম্রাজ্য ধবংস হয়ে যায়, আর সেই সাম্রাজ্যটি হল – লিডিয়া।

৫৫০ পারস্যে কুরুশ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল হাখমানেশি সাম্রাজ্য। ৩৩০ পূর্বসাল পর্যন্ত টিকে ছিল সাম্রাজ্যটি। ইংরেজিভাষী বিশ্বে সাইরাস দ্য গ্রেট নামে পরিচিত।

৫৫০-৫০১ কৃষ্ণসাগর আর ইজিয়ান সাগরের তীরে কিছু গ্রিক উপনিবেশ গড়ে ওঠে।

৫৪৭ ফ্রিজিয়া পারস্য সাম্রাজ্যের একটি সত্রপিতে* পরিণত হল।
* প্রাচীন ফারসি ভাষায় ‘সত্রপ’ বলতে প্রদেশরক্ষক বোঝায়, সংস্কৃতে ক্ষত্রপ এসেছে এই সত্রপ থেকে।

৩৩৪-৩৩ ম্যাকিদোনিয়ার সেকান্দার শা আনাতোলিয়ায় আসলেন, তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করল সার্ডিস।

৩২৩ মাত্র ৩২ বছর বয়সে সেকান্দার শার মৃত্যু। সেকান্দার শার এক সেনাপতি পারস্যের তখতে বসলেন। সেলুসীয় শাসন শুরু।

২৮০ সেলুসীয় সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে গেল লিডিয়া।

১৩৩ লিডিয়া আর তাঁর রাজধানী সার্ডিস রোমক শাসনের অধীনস্ত হল।

৫০-১ তুরস্ক রুমিদের হাতে আসে। হাজার বছর ধরে রুমিরা শাসন করবে তুরস্ক। এরপর ওসমানি তুর্কিরা রুমিদের হাত থেকে এশিয়া মাইনরের দখল নেবেন।

১৭ এক ভূমিকম্পে লিডিয়ার ১২টি শহর ধবংস হল, এর একটি ছিল লিডীয়দের রাজধানী সার্ডিস।

৬ পূর্বসাল – ৩০ সাল বর্তমান ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের শহর বেথলেহেমে জন্ম নেয়া খ্রিস্টধর্মের প্রাণকেন্দ্র জেসাস ক্রাইস্টের জীবনকাল।

সাল

১৩ অগাস্টাস সীজার, ডিডস

৬০-১০০ সুসমাচারগুলো এ সময়ই কখনো লিখিত হয়ে থাকবে।

৭০ আনুমানিক এ সময়ই কখনো সিরিয়া বা এশিয়া মাইনরে (আনাতোলিয়া, বর্তমান তুরস্কের অধিকাংশ অঞ্চল) লিখিত হয় মার্কের সুসমাচার, যা আদিতম সুসমাচার বলে বিবেচিত।

১২৪ লিডিয়া সফর করলেন রোমক সম্রাট হাদ্রিয়ান।

২০১-৩০০ তুর্কিচভাষীরা মঙ্গোলিয়ার আলতাই পাহাড় থেকে নেমে আসেন। আজকের তুর্কিদের পূর্বসূরী। তুরস্ক ছাড়াও মূলত মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে তুর্কিচভাষীরা বাস করেন, চীনের ঝিনঝিয়াংয়ের উইঘুর মুসলমানরাও তুর্কিচভাষী।

২১৫ লিডিয়া সফর করলেন রোমক সম্রাট কারাকাল্লা।

৩০১-৪০০ রুমি সাম্রাজ্য পূর্ব পশ্চিমে ভাগ হয়ে যায়। এই বিভাজনের প্রভাব এশিয়া মাইনরের ওপর পড়ে। এই শতাব্দীতেই অ্যাটিলা দ্য হুন ইওরোপে হামলা চালান, যিনি একটি তুর্কি গোত্রের নেতা ছিলেন।

৩২৫ নিসিয়ার* কাউন্সিল, রোমক সম্রাট কনস্টান্টাইনের তত্ত্বাবধানে খ্রিস্টানদের প্রথম নিখিল সাম্রাজ্য কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হল।
* বর্তমান তুরস্কের ইজনিক।

৩৩০ প্রাচীন গ্রিক শহর বাইজান্টিয়ামে একটি নতুন খ্রিস্টান শহর নির্মাণ করলেন কনস্টান্টাইন। নাম দিলেন কনস্টান্টিনোপল।* নবগঠিত শহরটিকে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী করা হল।**
* বর্তমান তুরস্কের ইস্তানবুল।
**  আজকে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য আর পূর্ব রোমক সাম্রাজ্য পদ দুটি সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এটা মনে রাখা দরকার, পূর্ব রোমক সাম্রাজ্যের নাগরিকরা নিজেদেরকে রুমি বিবেচনা করতেন। গ্রিক ভাষায় কথা বললেও আচারব্যবহারে রুমি ছিলেন। তারা কখনোই নিজেদের মাতৃভূমিকে বাইজেন্টাইন বলেননি। কিন্তু অতিকথা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে বাইজেন্টাইন। শব্দটি ব্যবহারিক কারণে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। আজ আর এই ভুল শোধরানো সম্ভব নয়।

৪৭৬ জার্মান বর্বরদের আক্রমণে পশ্চিম সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। পশ্চিম ইওরোপের অন্ধকার যুগয়ের সূচনা। তবে পূর্ব সাম্রাজ্যে কন্সটান্টিনোপলের বিকাশ ঘটা অব্যাহত থাকে।

৫৩৭ রোমক সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ানের শাসনামলে বিখ্যাত ক্যাথেড্রাল আয়া সোফিয়ার নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়। ১৪৫৩ সাল পর্যন্ত এটি দুনিয়ার সবচে বড় বাজনাতিন চার্চ ছিল, ফাতিহ সুলতান মেহমেত যেটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। ১৯৩৫ সালে মসজিদটিকে যাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়।

৫৭০ হযরত মুহাম্মদের (সা.) জন্ম।

৬০১-৭০০ কুর্দিদের ইসলাম গ্রহণ।

৬১৫ পারস্যের সাসানীয় সাম্রাজ্য সার্ডিসকে ধবংস করে দিল।

৬৩২-৬১ রাশিদুন খেলাফত

৬৩৭ রাশিদুন খেলাফতের লেভান্ত* জয়, অঞ্চলটি থেকে বাইজেন্টাইনদেরকে বের করে দেয়া হল।
* সেকালের এশিয়া মাইনর আর ফিনিশিয়া নিয়ে গঠিত। বর্তমান তুরস্ক, সিরিয়া, আর লেবানন অঞ্চলটির অন্তর্গত। বৃহত্তর অর্থে গ্রিস আর মিসরের মধ্যবর্তী পুরো অঞ্চলটাকেই লেভান্ত বলা যেতে পারে।

৮০১-৯০০ সেলজুক তুর্কিরা বাগদাদের খলিফার মার্সেনারিতে পরিণত হয়।

১০৫৫ সেলজুক তুর্কিরা আক্রমণ চালিয়ে বাগদাদের নিয়ন্ত্রণ নয়। কাগজকলমে আব্বাসীয় খলিফা ক্ষমতায় রয়ে গেলেও কার্যত সেলজুকরাই এসময় থেকে রাজত্ব করতে থাকেন। দুই শতাব্দী পরে হালাকু খাঁর নেতৃত্বাধীন মঙ্গোলদের হামলায় আব্বাসীয় খেলাফতের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটবে।

১০৭১ মানজিকার্টের যুদ্ধ, সেলজুক তুর্কিদের হাতে বাইজেন্টাইনদের পরাজয়। আনাতোলিয়ায় তুর্কিদের প্রবেশ। ফিলিস্তিন সমেত পুরো সিরিয়া সেলজুক সুলতানশাহির অধীনস্ত।

১০৭১-৯৮ এ সময় ফিলিস্তিন শাসন করছেন তুরস্কের সেলজুক সুলতানশাহি।

১০৯৫ নভেম্বর ২৭ প্রথম ক্রুসেডের* ডাক দিলেন পোপ দ্বিতীয় আরবান। ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল, সেলজুক তুর্কিদের হাত থেকে পবিত্র ভূমি পুনরুদ্ধার করা।
* ক্রুসেড সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দেখুন, (Asbridge 2010).

১২০৪ ক্রুসেডাররা কন্সটান্টিনোপলে হামলা করে স্থানীয় গ্রিক অর্থোডক্স চার্চের অনুসারী খ্রিস্টানদের ওপর গণহত্যা চালাল।

১২৬১ কন্সটান্টিনোপলকে ক্রুসেডারদের হাত থেকে উদ্ধার করা হল।

১২৭৩ কোনিয়ার ঘূরন্ত দরবেশদের নেতা জালালুদ্দিন রুমির মৃত্যু।

১২৮৪-১৩২৪ ওসমানি সুলতানশাহির প্রতিষ্ঠাতা ওসমান গাজির জীবনকাল।

১২৯৯-১৯২২ ওসমানি সুলতানশাহি

১৩৯৬ বর্তমান বুলগারিয়ার নিকোপলিসে ওসমানি তুর্কদের কাছে হেরে যায় ক্রুসেডাররা। নিকোপলিসের যুদ্ধের ঐতিহাসিক তাৎপর্য অপরিসীম, এই যুদ্ধের মধ্য দিয়েই ওসমানি সুলতানশাহির পশ্চিমমুখী সম্প্রসারণের শুরু। পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে ইওরোপে সম্প্রসারিত হওয়া জারি রাখে ওসমানিরা।

১৪০১-১৬০০ এশিয়া ও আফ্রিকায় সম্প্রসারিত হল ওসমানি সুলতানশাহি।

১৪০২ আনাতোলিয়ায় আক্রমণ চালালেন আমীর তৈমুর।

১৪৫৩ ফাতিহ সুলতান মেহমেতের হাতে কন্সটান্টিনোপলের পতন ঘটে, এতে এশিয়া মাইনর ও বলকানে সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ওসমানি সুলতানশাহি। এসময় ওসমানি তুর্কিরা গ্রিস দখল করে নেয়। তুর্কিদের হাতে গ্রিকদের ৪০০ বছরের পরাধীনতার শুরু।

১৫১৪ চালদিরানের যুদ্ধ, বর্তমান কুর্দিস্তানে* ওসমানি সুলতানশাহি ও সাভায়ীয় সাম্রাজ্যের মধ্যকার সীমান্ত নির্ধারিত হল।
* কুর্দিস্তান বলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো জাতিরাষ্ট্র নেই। ভৌগোলিক অঞ্চল আছে। যে অঞ্চলটিকে কুর্দিরা তাঁদের দেশ বলে জানেন।

১৫১৬-১৯১৭ এসময় ফিলিস্তিন শাসন করছেন তুরস্কের ওসমানি সুলতানশাহি।

১৫২০ সুলতান সোলেমানের জন্ম। তিনি ওসমানি সুলতানশাহির সীমা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত করেন। সাম্রাজ্যকে সংহত করার ক্ষেত্রেও অতুলনীয় ভূমিকা রাখেন।

১৫২৯ প্রথম সিয়েজ অফ ভিয়েনা, ওসমানি তুর্কিরা সেপ্টেম্বর ২৭ থেকে অক্টোবর ১৫ পর্যন্ত ভিয়েনা অবরুদ্ধ করে রাখেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত দখল করতে ব্যর্থ হয়।*
* ইওরোপীয়রা ওসমানিদের এই নিতান্তই সাম্রাজ্যিক অভিলাষকে ‘খ্রিস্টীয় ইওরোপের বিরুদ্ধে মুসলমানদের’ যুদ্ধ হিশাবে দেখলেন। আজকের ইওরোপে উগ্রডানপন্থীরা মুসলিম অভিবাসনকে ঘিন্না করেন, যে-ঘিন্নাকে ওসমানি তুর্কি আমলে হওয়া – বাস্তব ও কাল্পনিক – অত্যাচারের দোহাই দিয়ে জায়েজ করা হয়। সার্ব বর্ণবাদী জাতীয়তাবাদী নেতা স্লোবোদান মিলোসেভিচ যখন বসনিয়াকদের (বসনীয় মুসলমানদের) ওপর গনহত্যা চালিয়েছিলেন তখনও ইতিহাসের দোহাই দিয়েছিলেন।

১৫৩৫ সিরিয়ার ফরাসি খ্রিস্টানদেরকে ধর্মীয় সুরক্ষা দিল ওসমানিরা।

১৫৪৩-১৬০৩ শরাফনামা নামে কুর্দিদের একটি ইতিহাস লিখলেন শরাফ খান বিতলিসি।

১৫৬৬ সুলতান সোলেমানের মৃত্যু। তাঁকে শেষ মহৎ সুলতান বিবেচনা করা হয়। পরবর্তী ওসমানি সুলতানরা স্রেফ নামকাওয়াস্তে সুলতান ছিলেন।

১৫৮০ সিরিয়ার ব্রিটিশ খ্রিস্টানদেরকে ধর্মীয় সুরক্ষা দিল ওসমানিরা।

১৬০৯-১৬ ইস্তানবুলে নির্মিত হল সুলতানাহমেত মসজিদ, যা নীল মসজিদ নামেও পরিচিত।

১৬৩৯ জুহাবের চুক্তি, বর্তমান কুর্দিস্তানে ওসমানি সুলতানশাহি ও সাভায়ীয় সাম্রাজ্যের মধ্যকার সীমান্ত পুনঃনির্ধারিত হল।

১৬৮৩ দ্বিতীয় সিয়েজ অফ ভিয়েনা, হাবসবুর্গদের রাজধানী ভিয়েনা দ্বিতীয়বারের মত অবরুদ্ধ করে ওসমানি তুর্কিরা। জুলাই ১৪ থেকে সেপ্টেম্বর ১২ পর্যন্ত চলা যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত হেরে যায় তারা। এই যুদ্ধে ওসমানি সুলতানশাহি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়, যা আখেরে মেয়াদে তাঁদের পতনের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

১৬৯৫ এ সময় কুর্দিদের জাতীয় মহাকাব্য মেম উ জিন লিখছেন আহমাদ-ই খানি।

১৭০৩-০৭ জেরুসালেমে ওসমানি প্রশাসনের বিরুদ্ধে নকিব আল-আশরাফ* বিদ্রোহ।
* এই বিদ্রোহের নেতা ছিলেন মোহাম্মদ বিন মোস্তফা আল-ওয়াফা’ই আল-হোসেইনি। তিনি ছিলেন তাঁদের নকিব (প্রধান), যাঁদের ইসলামের নবির সরাসরি বংশধর (আশরাফ) ভাবা হয়। তাই এই নামকরণ।

১৭৪৬-৭৫ স্বাধীনভাবে আক্রে শাসন করছেন জহির আল-ওমর আল-জায়দানি।*
* গালিলির জায়দানি বংশ প্রত্যক্ষ ওসমানি শাসনকে চ্যালেঞ্জ করে বসে। তুলা, শস্য, জলপাইয়ের তেল, আর তামাক রফতানির ওপর নিজ একচেটিয়া কাজে লাগিয়ে গালিলি ও তার পশ্চাৎভূমির ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করলেন জহির আল-ওমর আল-জায়দানি, নাজারেথ পর্যন্ত পৌঁছে গেলেন। আক্রেকে নিজের রাজধানী বানালেন জহির।

১৭৭৫-১৮০৪ ওসমানি সুলতানশাহি জায়দানি স্বায়ত্তশাসনের অবসান ঘটাল। ওসমানি সুলতান আহমাদ পাশা আল-জাজ্জারকে সিদন উলাইয়াতের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিলেন। আল-জাজ্জার আক্রেতে তার সরকার স্থাপন করলেন এবং আক্রে-কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক একচেটিয়া টিকিয়ে রাখলেন; তবে প্রকাশ্যে ইস্তানবুলের ওসমানি কর্তৃপক্ষকে চ্যালেঞ্জ করা থেকে বিরত থাকলেন।

১৮২১-২৯ ওসমানি সুলতানশাহির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গ্রিকদের স্বাধীনতালাভ।

১৮২৫-২৬ ওসমানিদের জোরপূর্বক কর সংগ্রহের বিরুদ্ধে জেরুসালেম বিদ্রোহ। ফিলিস্তিনিরা জেরুসালেমের নিয়ন্ত্রণ নিলেন এবং শহরটি থেকে ওসমানি সেনাদের তাড়িয়ে দিলেন। বিদ্রোহের জন্য নেতাদের কোন সাজা দেয়া হবে না, ওসমানিরা এই ওয়াদা করার পর, বিদ্রোহীদের শান্তিপূর্ণ আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহের অবসান ঘটে।

১৮৩১-৩৪ মিসরের শাসক মোহাম্মদ আলীর ছেলে ইব্রাহিম পাশার নেতৃত্বে মিসরীয় সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনে হামলা চালাল। ওসমানিদের কাছ থেকে অঞ্চলটির অধিকাংশের নিয়ন্ত্রণ নিল। যা পুরো লেভান্তয়ে দখলদারির পথ খুলে দিল।

১৮৩৯-৪১ ওসমানি সুলতানশাহির সমর্থনে এগিয়ে এল ইওরোপীয় শক্তিবর্গ। লেভান্ত ও আনাতোলিয়া থেকে মিসরীয় সেনাবাহিনীকে বিতাড়িত করতে হস্তক্ষেপ চালাল গ্রেট ব্রিটেন, রাশিয়া, ও অস্ট্রিয়া। মোহাম্মদ আলী লেভান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হলেন।

১৮৩৯-৬২ ইওরোপীয় দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্র জেরুসালেমে কনস্যুলেট খুলল। পবিত্র ভূমিতে বসবাসরত খ্রিস্টানদের রক্ষা করার দোহাই দিয়ে নেয়া হয়েছিল এই পদক্ষেপ। আসল উদ্দেশ্য ছিল ক্রমেই দুর্বল হয়ে আসা ওসমানি সুলতানশাহিতে নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধি করা।

১৮৪০-৪৯ কুর্দিস্তানের বারজানে বারজানি বংশ প্রতিষ্ঠা লাভ করল।

১৮৪৭ শেষ আধা-স্বাধীন কুর্দি ইমারাতের আমির বদর খান বেগ ওসমানিদের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন।

১৮৫৬ ফেব্রুয়ারি ১৮ হাত্তি-ই হুমায়ূন নামে একটি ফরমান জারি করলেন সুলতান আবদুল মজিদ, যা তানজিমাত নামে পরিচিত। উদ্দেশ্য ছিল ওসমানি সুলতানশাহির সংস্কার ও আধুনিকীকরণ।

১৮৫৮ এপ্রিল ২১ হিজরি ১২৭৪ সনের ৭ রমজান ওসমানি সুলতানশাহির সর্বত্র জারি করা হয় ওসমানি ভূমি বিধি।

১৮৬৪ নভেম্বর ৭ ওসমানিরা সিরিয়া ও ফিলিস্তিন প্রশাসনিকভাবে পুনর্গঠন করলেন; ফলে জেরুসালেম, নাবলুস, আর আক্রে সিরিয়া প্রদেশের অংশ হয়ে গেল।

১৮৬৭ জুন ১০ হিজরি ১২৮৪ সনের ৭ সফর ওসমানি সুলতানশাহিতে বিদেশিদের বৈধভাবে জমি কেনার অধিকার দেয়া আইন পাশ হল। এর আগ পর্যন্ত এই অধিকার স্রেফ মুসলমান ও ওসমানি প্রজাদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর ফলে ওসমানি ফিলিস্তিনের ভূমি বাজার ইহুদি-অইহুদি নির্বিশেষে ইওরোপীয়দের জন্য উন্মুক্ত হয়ে গেল।

১৮৬৯ সেপ্টেম্বর ২০ ওসমানি শিক্ষা আইন পাশ করা হল। সাম্রাজ্য জুড়ে ঘটল আধুনিক শিক্ষার ব্যাপক বিস্তার। বিশেষত, লেভান্তের প্রধান শহরগুলোতে।

১৮৭২ জেরুসালেম ও পার্শ্ববর্তী এলাকাকে একটি স্বাধীন সানজাকয়ের (জেলা) মর্যাদা দেয়া হল, যারা সরাসরি ইস্তানবুলের সাথে ডিল করবে।

১৮৭৬ আগস্ট ৩১ ওসমানি সুলতান হলেন দ্বিতীয় আবদুল হামিদ।

ডিসেম্বর ১৯ মৌলিক আইন (সংবিধান) প্রবর্তন করলেন আবদুল হামিদ।*
* এই সংবিধান প্রথমবারের মত সাম্রাজ্যের সকল প্রজার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য হবে এমন একটি ওসমানি রাজনৈতিক পরিচয় গঠন করার চেষ্টা চালায়। সেইসাথে একটি দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাব দেয়। এর একটি হবে সিনেট, যার সদস্যরা সুলতান কর্তৃক মনোনীত হবেন; অন্যটি হবে চেম্বার অফ ডেপুটিজ, যার সদস্যরা বিভিন্ন প্রদেশে নির্বাচিত হবেন।

১৮৭৭ মার্চ ১৯ জেরুসালেমের প্রতিনিধি হিসেবে ওসমানি চেম্বার অফ ডেপুটিজে নির্বাচিত হলেন ইউসূফ দিয়া-উদ্দিন পাশা আল-খালিদি।*
* ফিলিস্তিনি-আমেরিকান ঐতিহাসিক ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক আরব অধ্যয়নের এডওয়ার্ড সাঈদ অধ্যাপক রশিদ খালিদির পূর্বপুরুষ।

১৮৭৮ ওসমানি ফিলিস্তিনের দলিলপত্র থেকে দেখা যাচ্ছে, এসময় জেরুসালেম, নাবলুস আর আক্রে শহরে বসবাসরত চার লক্ষাধিক মানুষের মধ্যে মাত্র ১৫,০০০ ইহুদি। বিদেশি নাগরিক হিসেবে আরো ১০,০০০ ইহুদি আছেন। এসময় স্পষ্টত আরবরাই ফিলিস্তিনের জনমিতিক সংখ্যাগুরু।

বার্লিন কংগ্রেস, ওসমানি তুর্করা তাঁদের অধিকাংশ ইওরোপীয় ভূখণ্ড হারায়, এ সময় থেকেই জার্মানি তুরস্কের বন্ধুরাষ্ট্র হয়ে উঠতে থাকে।

১৮৮১ নভেম্বর ২৪ ওসমানি সুলতানশাহিতে ইহুদি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকারের তরফে কিছু শর্ত দেয়া হল। এগুলো ছিল:

১) ইওরোপীয় ইহুদিরা ওসমানি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বসতিস্থাপন করতে পারবেন, কিন্তু ফিলিস্তিনে না,

২) তাদের ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বসতিস্থাপন করতে হবে,

৩) তাদের নিজেদের বিদেশি নাগরিকত্ব বিসর্জন দিতে হবে এবং ওসমানি প্রজা হয়ে যেতে হবে, এবং

৪) তারা কোন বিশেষাধিকার দাবি করতে পারবেন না, এবং সাম্রাজ্যের আইন মেনে চলবেন।

১৯১৭-১৮ সালে ফিলিস্তিন ব্রিটিশ দখলদারিত্বে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কাগজেকলমে এসব নীতি বহাল ছিল। কিন্তু বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নানান খামতি রয়ে গেছিল। যার কারণ ছিল আইনী ফাঁকফোকর, বাস্তব বাধাবিপত্তি, এবং ওসমানি রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের দুর্নীতি।

১৮৮৮ মার্চ ওসমানিরা সিরিয়া প্রদেশকে সিরিয়া আর বৈরুত প্রদেশে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিলেন। ফিলিস্তিনে, নাবলুস আর আক্রে জেলাকে বৈরুতের সাথে জুড়ে দেয়া হল। জেরুসালেম জেলা ইস্তানবুলের সাথে সম্পর্কিত থেকে গেল।

মার্চ ২ – অক্টোবর ৪ ওসমানিরা ইওরোপীয় শক্তিগুলোকে অবহিত করল, ফিলিস্তিনে পা রাখার পর বন্দর কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা তিন মাসের আবাসন অনুমতিপত্র পেতে হলে ইহুদিদের পাসপোর্টে “পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করতে হবে, তাঁরা শুধু তীর্থস্থান পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে জেরুসালেমে যাচ্ছেন, ব্যবসাবাণিজ্য করতে বা বসবাস করার উদ্দেশ্যে নয়।” ব্রিটেন, ফ্রান্স, ও যুক্তরাষ্ট্র শর্তাবলি প্রত্যাখ্যান করে। অক্টোবরে, ওসমানিরা যুক্তরাষ্ট্রকে জানায়, এইসব বিধিনিষেধ শুধু ফিলিস্তিনে বড় আকারে অভিবাসিত হওয়া ইহুদিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, ব্যক্তিগত পর্যায়ে ইহুদিদের কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না।

১৮৯১ ওসমানি সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ হামিদিয়ে নামে একটি কুর্দি ঘোড়সওয়ার বাহিনী গঠন করলেন।

জুন জেরুসালেমের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ফিলিস্তিনে রুশ ইহুদিদের বসতিস্থাপন ও জমি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইস্তানবুলে একটা পিটিশন করলেন।

১৮৯২-৯৩ নভেম্বর ২৬ – এপ্রিল ৩ ওসমানি প্রজা হোক আর বিদেশি হোক, সকল ইহুদির কাছে মিরি (private usufruct State land) বেচার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল ওসমানি সরকার। ইওরোপীয় শক্তিবর্গ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলল। ওসমানিরা ঘোষণা করলেন, যেসব বিদেশি ইহুদি ফিলিস্তিনে বৈধভাবে বাস করেন, তাঁরা চাইলে ওসমানি ফিলিস্তিনে জমি কিনতে পারবেন।

১৮৯৪-১৯২৪ ৩০ বছর ধরে প্রথমে ওসমানি সুলতানশাহি, তারপর তরুণ তুর্কি, ও শেষে ইহজাগতিক প্রজাতন্ত্রীরা তুরস্কের সংখ্যালঘু অ্যাসিরীয়, আরমানি, ও গ্রিক খ্রিস্টানদের ওপর এক ভয়াবহ ও পদ্ধতিগত গণহত্যা চালায়। আরমানি গণহত্যা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। এটা ছিল এই বৃহত্তর গণহত্যার একটি অংশ। (Morris & Ze’evi 2019)

১৯০৮ তরুণ তুর্কি বিপ্লব। ওসমানি তুরস্কে একপ্রকার সাংবিধানিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হল। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ নাগাদ তা অধঃপতিত হয়ে সামরিক একনায়কতন্ত্রের রূপ নেবে।

১৯১২-১৩ প্রথম বলকান যুদ্ধ, ওসমানি সুলতানশাহির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামল বলকান লীগ (গ্রিস, বুলগারিয়া, সার্বিয়া, মন্টেনেগ্রো)। যুদ্ধে বলকান লীগ জেতে। এই যুদ্ধে ওসমানিদের কাছ থেকে গ্রিকরা লাভ করে ক্রিট, এপিরুস, ম্যাকিদোনিয়া, ও উত্তর ইজিয়ান সাগর।

১৯১৩ দ্বিতীয় বলকান যুদ্ধ, বুলগারিয়ার বিরুদ্ধে গ্রিস আর সার্বিয়া যুদ্ধে নামে, ওসমানি সুলতানশাহি স্বতন্ত্রভাবে বুলগারিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। যুদ্ধে বুলগারিয়া হারে। এই যুদ্ধে বুলগারদের কাছ থেকে গ্রিকরা লাভ করে পশ্চিম থ্রেস।

১৯১৪-১৮ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।*

* এই যুদ্ধে ওসমানি সুলতানশাহি জার্মানি ও অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির অক্ষশক্তির পক্ষ হয়ে লড়ে। যুদ্ধে অক্ষশক্তি হেরে গেলে এবং জার্মানির কাইজারশাহি ও অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হলে ওসমানি সুলতানশাহির পতন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় মাত্র। এই যুদ্ধে কুর্দিরা ওসমানি সুলতানশাহির পক্ষে লড়েছিল।

১৯১৫-১৬ তুরস্কের বর্ণবাদী জাতীয়তাবাদী কমিটি ফর ইউনিয়ন অ্যান্ড প্রগ্রেস (সিইউপি) কর্তৃক আরমানি গণহত্যা সংঘটিত।*
* এই গণহত্যার শিকারের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। তুর্কি ঐতিহাসিকরা দাবি করেন সংখ্যাটা ২ লক্ষ, অন্যদিকে আরমানি ঐতিহাসিকরা দাবি করেন সংখ্যাটা ২০ লক্ষ বা তারচেও বেশি। লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের টার্কিশ স্টাডিজের অধ্যাপক এরিক জে. জুর্খারের মতে, সংখ্যাটা ৬-৮ লক্ষের মত। (Zürcher 2017)

১৯১৬ সাইকস-পিকো গোপন চুক্তি।*
* ইঙ্গ-ফরাসিরা মধ্যপ্রাচ্যকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। ফলে কুর্দিস্তান চার টুকরো হয়ে যায়। তুরস্ক, ইরান, ইরাক, আর সিরিয়া নামের চারটি নবগঠিত জাতি-রাষ্ট্রে ভাগ হয়ে পড়ে। বর্তমানে তুর্কি কুর্দিস্তান বাকুর, ইরানি কুর্দিস্তান রোজহিলাত, ইরাকি কুর্দিস্তান বাসুর, আর সিরীয় কুর্দিস্তান রোজাভা নামে পরিচিত। কুর্দি শব্দটা উৎসগতভাবে প্রাচীন সুমেরীয় ভাষার শব্দ। এর অর্থ: পাহাড়ি।

১৯১৬-১৭ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের ওসমানি সুলতানশাহি ব্রিটিশ ও ফরাসিদের বিরুদ্ধে লড়াইরত জার্মানির মিত্র ছিল। এসময় মিসরে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার স্যার হেনরি ম্যাকমোহন মক্কার শরিফ হোসেনের কাছে একটা গোপন চিঠি পাঠান। সেখানে ম্যাকমোহন বলেন, আরবরা যদি ওসমানিদের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের সহায়তা করে, তাহলে ব্রিটিশরা ওসমানি সুলতানশাহির আরব প্রদেশগুলোতে একটি স্বাধীন আরব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে, যার অংশ হবে ফিলিস্তিন। হোসেন এই টোপ গিললেন এবং তাঁর পুত্র ফয়সাল ওসমানি সুলতানশাহির বিরুদ্ধে একটি সফল আরব বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিলেন। ‘লরেন্স অফ অ্যারাবিয়া’ নামে খ্যাত টি. ই. লরেন্স এই আরব বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন। জাতীয়তাবাদী আরবদের বোকা বানিয়ে এভাবেই ব্রিটিশরা ওসমানি সুলতানশাহির কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল ফিলিস্তিন। ঘোষিত হল ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড আর্থার বেলফোরের কুখ্যাত বেলফোর ঘোষণা; যাতে বলা হল, ফিলিস্তিনে ‘ইহুদিদের একটি জাতীয় নিবাসভূমি’ স্থাপনে সহায়তা দেবে গ্রেট ব্রিটেন।

১৯১৯-২২ তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধ।*
* গ্রিকরা পরাজিত হয়। তাদের ইওরোপীয় মিত্ররা আনাতোলিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। এই যুদ্ধে কুর্দিরা তুর্কিদের সমর্থন প্রদান করে।

১৯১৯ ভার্সাই চুক্তির পরে ওসমানি সুলতানশাহির সীমান্তগুলো আজকের তুরস্ক রাষ্ট্রের সীমান্তগুলোর চেহারা লাভ করে।

১৯২০ সেভরেসের চুক্তি, কুর্দিদের স্বাধীনতা দেয়ার ওয়াদা করা হল যা স্রেফ কাগুজে ব্যাপার ছিল।

১৯২২ তরুণ তুর্কিদের হাতে সংঘটিত হল স্মিরনা হত্যাযজ্ঞ।

১৯২৩ ওসমানি সুলতানশাহির অবসান। গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি কর্তৃক প্রজাতন্ত্র ঘোষিত হল। প্রজাতন্ত্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হলেন মোস্তফা কামাল পাশা, আতাতুর্ক।* আতাতুর্কের তুরস্কে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজিত হল। তুর্কি নারীদের ভোটাধিকার প্রদান করা হল। তুর্কি সমাজের সেক্যুলারাইজেশনের উদ্যোগ নেয়া হল। ইসলামপন্থীরা এই পরিবর্তনগুলো ভালো চোখে দেখেননি।
* আতাতুর্ক একটা উপাধি, এর অর্থ তুর্কিদের বাবা। বাবাও তুর্কি শব্দই, তুর্কি থেকে বাংলায় এসেছে। আতাতুর্ককে সেক্যুলার জাতীয়তাবাদীরা আধুনিক তুরস্কের রূপকার হিসেবে দেখেন, আর ইসলামপন্থীরা দেখেন ওসমানি সুলতানশাহি বিলুপ্ত করা খলনায়ক হিসাবে।

লসানে চুক্তির মধ্য দিয়ে গ্রিস থেকে তুর্কি আর তুরস্ক থেকে গ্রিকদেরকে জোরপূর্বক অভিবাসিত করার ভিত্তি স্থাপিত হল।

১৯২৫ শেখ সাঈদের কুর্দি বিদ্রোহ দমন করল তুরস্ক।

১৯২৮ তুরস্কে প্রজাতন্ত্রের সেক্যুলারাইজেশনের উদ্দেশ্যে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বিষয়ক ধারা সরিয়ে দেয়া হল।

১৯৩০ আরারাত অঞ্চলের কুর্দি বিদ্রোহ দমন করল তুরস্ক।

১৯৩৬-৩৮ দেরসিমে কুর্দি বিদ্রোহ দমন করল তুরস্ক।

১৯৩৮ ইস্তানবুলে আতাতুর্কের মৃত্যু। প্রজাতন্ত্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন ইসমেত ইনোনু।

১৯৩৯-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। যুদ্ধের শুরুতে তুরস্ক নিরপেক্ষতা নীতি গ্রহণ করে।* ১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নাৎসি জার্মানি ও সাম্রাজ্যিক জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তুরস্ক।
* প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির সাথে মৈত্রীবন্ধনে আবদ্ধ থাকতে গিয়ে তার যে ক্ষতি হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি এড়াতেই এই সতর্কতা।

১৯৪৩-৪৪ প্রকাশিত হল কুর্দিভাষী জার্নাল নিশতিমান: মাতৃভূমি।

১৯৪৫ তুরস্কের জাতিসংঘে যোগদান।

১৯৪৬ তুরস্কে বহুদলীয় রাজনীতির সূচনা।

১৯৪৮ মে ১৪ ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনের ওপর প্রতিষ্ঠিত হল ইসরায়েল রাষ্ট্র।

১৯৪৯ মার্চ ২৮ ইসরায়েলকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করল তুরস্ক।

গঠিত হল নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো)।*
* ন্যাটোর আনুষ্ঠানিক ভাষা দুইটি: ইংরেজি আর ফরাসি। ফরাসিতে সংগঠনটির নাম Organisation du Traité de l’Atlantique Nord. সংক্ষিপ্ত রূপ OTAN.

১৯৫০ আতাতুর্কের রিপাবলিকান পিপলস পার্টিকে (সিএইচপি) নির্বাচনে পরাজিত করে তুরস্কে ক্ষমতায় এল ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিপি)। তেল আবিবে প্রথম কূটনৈতিক মিশন খুলল। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন নাজিম হিকমেত।

১৯৫০-৬০ ডেমোক্রেটিক পার্টির শাসনামল।

১৯৫২ আতাতুর্কের নিরপেক্ষতা নীতি থেকে সরে এসে ন্যাটোতে যোগদান করল তুরস্ক। স্নায়ুযুদ্ধের পুরোটা সময়ই তুর্কিরা মার্কিন মিত্র ছিল। মার্কিনীরা তুরস্ককে দেখেছে মধ্যপ্রাচ্যে কমিউনিস্টদের সম্প্রসারণ ঠেকানোর একটা দুর্গ হিসাবে।

১৯৫৬ সুয়েজ সংকটের কারণে তুরস্ক-ইসরায়েল সম্পর্কের অবনতি ঘটল।

১৯৬০ তুরস্কে সামরিক ক্যুদেতা।* ডেমোক্রেটিক পার্টির (ডিপি) প্রধানমন্ত্রী আদনান মেন্দেরেস উৎখাত।** দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত।
* তুরস্কে সেনাবাহিনী বহুবার সামরিক ক্যুদেতা ঘটিয়েছে, এতে দেশটির গণতান্ত্রিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে সেনাবাহিনীর পক্ষে একটা সাফাই পাওয়া যায়। তুর্কি সেনাবাহিনী নিজেদের আতাতুর্কের সন্তান হিসেবে দেখে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ইসলামপন্থীদের উত্থানের আশঙ্কা দেখতে পায়। তাই তারা এই সামরিক ক্যুদেতাগুলোকে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের ওপর সেনা হস্তক্ষেপ হিসাবে দেখে না। প্রজাতন্ত্রের সেক্যুলার চরিত্র রক্ষা করা হিসাবে দেখে। সেক্যুলারিজম প্রশ্নে তুর্কি সমাজে গভীর বিভক্তি আছে।
** তাঁকে পরে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

১৯৬৩ আঙ্কারায় ইওরোপীয় ইকোনমিক কমিউনিটির (ইইসি) সাথে অ্যাসোসিয়েশন চুক্তি সই করল তুরস্ক। ইসরায়েলে তুরস্কের কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্বকে কনস্যুলেট পর্যায়ে উন্নীত করা হল।

১৯৬৭ তৃতীয় আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ বা জুন যুদ্ধ শেষে ইসরায়েল পূর্ব জেরুসালেম, পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, গোলান মালভূমি ও সিনাই উপদ্বীপ দখল করে নিলে তুরস্ক এই দখলদারিত্বের প্রতিবাদ জানাল।

১৯৬৯ নেসমেত্তিন এরবাকান, মিল্লি গোরুস
* তুরস্কের ইসলামপন্থী রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র এরবাকান। জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যন্ত্রপ্রকৌশলে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা এরবাকান সূফি ইসলামের নকশবন্দি তরিকার অনুসারী ইসকান্দারপাশা কমিউনিটির একজন সদস্য ছিলেন। তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এরবাকানের রাজনৈতিক শিষ্য।

১৯৭১ এক সামরিক ক্যুদেতায় পুরো মন্ত্রীসভা সমেত উৎখাত হল জাস্টিস পার্টির সুলেইমান দেমিরেলের সরকার।

১৯৭৪ সাইপ্রাস নিয়ে গ্রিস আর তুরস্কের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিল। উত্তর সাইপ্রাস দখল করে নিল তুর্কি সেনাবাহিনী।

১৯৭৫ প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে (পিএলও) আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করল তুরস্ক।

১৯৭৮ নভেম্বর ২৭ তুরস্কে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) প্রতিষ্ঠা করলেন আবদুল্লাহ ওজালান।

১৯৮০ তুরস্কে আবারও সামরিক ক্যুদেতা। সুলেইমান দেমিরেলের সরকার উৎখাত করে ক্ষমতায় এলেন সেনাপ্রধান কেনান এভরান। তৃতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত।

ইসরায়েলে তুরস্কের কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্বকে অ্যাম্বাসেডর পর্যায়ে উন্নীত করা হল। কিন্তু ইসরায়েল পূর্ব জেরুসালেম দখল করে নিলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

১৯৮০-৮৩ ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এমজিকে) প্রধান হিসেবে কেনান এভরানের শাসনকাল।

১৯৮৩ একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা হল। এর ধারাবাহিকতায় নির্বাচনে জিতল মাদারল্যান্ড পার্টি (এএনএপি)। প্রধানমন্ত্রী হলেন তুরগুত ওজাল।

১৯৮৪ তুরস্ক সরকারের বিরুদ্ধে আবদুল্লাহ ওজালানের নেতৃত্বে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু।

১৯৮৭ ইইসির পূর্ণ সদস্যপদের জন্য আবেদন করল তুরস্ক। প্রথম ইন্তিফাদা শুরু। স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করল তুরস্ক।

১৯৮৮ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করল তুরস্ক, এর ফলে তুরস্ক-ইসরায়েল সম্পর্কে চির ধরে।

১৯৮৯ গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ওজালকে প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করল।

১৯৯১ মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া শুরু, তুরস্ক-ইসরায়েল সম্পর্কের উন্নতি।

১৯৯২ ইরাকে পিকেকের সেভ হ্যাভেনগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে ইরাকি কুর্দিস্তানে প্রবেশ করলেন ২০,০০০ তুর্কি সৈন্য।

১৯৯৩ তুরগুত ওজালের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী হলেন তানসু সিলার।*
* তুরস্কের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী।

১৯৯৪ প্রথম তুর্কি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইসরায়েল সফর করলেন তানসু সিলার। স্থানীয় নির্বাচনে জয়লাভ করল ইসলামপন্থী ওয়েলফেয়ার পার্টি। বৃহত্তর ইস্তানবুল পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হলেন রেসিপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

১৯৯৪-৯৮ আঙ্কারা আর তেল আবিবের মধ্যে নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ও অর্থনীতি বিষয়ক কয়েকটি চুক্তি সই হল।

১৯৯৬ জানুয়ারি বলবৎ হল তুরস্ক-ইইসি কাস্টমস ইউনিয়ন। ইজিয়ান সাগরে গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা।

জুন প্রধানমন্ত্রী হলেন ইসলামপন্থী ওয়েলফেয়ার পার্টির নেতা নেসমেত্তিন এরবাকান।

ডেভিড ম্যাকডোয়েল, আ মডার্ন হিস্ট্রি অফ দ্য কুর্দস

১৯৯৭ ফেব্রুয়ারি -জুন পোস্টমডার্ন ক্যুদেতা, ফেব্রুয়ারিতে তুর্কি সেনাবাহিনীর ইস্যু করা একটা মেমোরান্ডামের জের ধরে জুনে পদত্যাগ করলেন এরবাকান। এ বছরই এরবাকান ইসলামপন্থী ভার্চু পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৯৮ তুরস্ক সামরিক অভিযান চালানোর হুমকি দিলে সিরিয়া থেকে আবদুল্লাহ ওজালানকে বহিষ্কার করা হল। নেসমেত্তিন এরবাকানের ওয়েলফেয়ার পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হল।

১৯৯৯ ফেব্রুয়ারি কেনিয়ার নাইরোবি থেকে ওজালানকে পাকড়াও করা হল।*
* একাজে তুরস্কের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটিকে সহায়তা করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। আবদুল্লাহ ওজালানকে শুরুতে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলেও পরবর্তীতে তীব্র বৈশ্বিক প্রতিবাদের মুখে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হয়। মর্মর সাগরের ইমরালি কারাদ্বীপে বন্দী আছেন ওজালান, ১৯৯৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কারাদ্বীপটির একমাত্র বন্দী ছিলেন তিনি।

এপ্রিল জাতীয় নির্বাচনে জিতলেন গণতান্ত্রিক বাম দলের বুলেন্ত এসেভিত।

আগস্ট মর্মর সাগরের ইজমিত উপসাগরের তীরে অবস্থিত ইজমিত শহরে সংঘটিত ভূমিকম্পে সরকারি হিসাবে ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু।

২০০০ মে অবসরে গেলেন প্রেসিডেন্ট সুলাইমান দেমিরেল। প্রজাতন্ত্রের দশম প্রেসিডেন্ট হলেন নেসদেত সেজার।

দ্বিতীয় ইন্তিফাদা, আবারও চির ধরল তুরস্ক-ইসরায়েল সম্পর্কে।

২০০১ জুন সেক্যুলারিজমবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগ এনে তুরস্কের সাংবিধানিক আদালত ইসলামপন্থী ভার্চু পার্টিকে নিষিদ্ধ করল।

আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হল ইসলামপন্থী দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলাপমেন্ট (একে) পার্টি।

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তুর্কি লিরার ব্যাপক দরপতন।

ক্রিস্টোফার হাউস্টন, ইসলাম, কুর্দস, অ্যান্ড দ্য তুর্কিশ নেশন স্টেট

২০০২ জানুয়ারি তুরস্কে এ সময় থেকে পুরুষরা আর আইনীভাবে পরিবারের প্রধান বলে বিবেচিত হন না। তুর্কি নারীদের পূর্ণ আইনী সমানাধিকার দেয়া হল।

নভেম্বর নির্বাচনে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলাপমেন্ট (একে) পার্টির ভূমিধ্বস বিজয়।* প্রথমবারের মত সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করল। প্রধানমন্ত্রী হলেন আবদুল্লাহ গুল।
* একে মতাদর্শিকভাবে ইসলামপন্থী হলেও তুর্কি সংবিধানের সেক্যুলার নীতিমালার প্রতি বিশ্বস্ত থাকার ওয়াদা করে।

২০০৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী হলেন ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলাপমেন্ট পার্টির (একেপি) নেতা রেসিপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

ইভা ওস্টেরগার্ড-নিয়েলসন, ট্রান্সন্যাশনাল পলিটিকস: তুর্কস অ্যান্ড কুর্দস ইন জার্মানি
মাইকেল এম. গুন্টার, হিস্টোরিকাল ডিকশনারি অফ দ্য কুর্দস

২০০৪ তুর্কি সিপ্রিয়টরা দ্বীপটির পুনরেকত্রীকরণের জন্য গণভোট আয়োজনের ব্যাপারে একটি জাতিসংঘ পরিকল্পনা গ্রহণ করে নিল। অধিকাংশ গ্রিক সিপ্রিয়ট পরিকল্পনাটি প্রত্যাখ্যান করেন। সাইপ্রাস প্রজাতন্ত্র ইওরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগ দেয়।

এ বছর নাগাদ শুধু জার্মানিতেই বিশ লক্ষ তুর্কি বাস করছেন। ইরানি কুর্দিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হল দ্য পার্টি ফর আ ফ্রি লাইফ ইন কুর্দিস্তান (পিজেএকে)।

২০০৫ জানুয়ারি ১ নতুন মুদ্রা তুর্কি লিরা প্রবর্তন করা হল।

ইওরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সিদ্ধান্ত নিল তুরস্কের সাথে সদস্যপদ সংলাপ শুরু করবে।

কেরিম ইলদিজ, দ্য কুর্দস ইন তুর্কি: ইউ অ্যাসেশন অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস

২০০৬ তুরস্ক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। তুরস্কের ইইউ অ্যাসেশন চুক্তি স্থগিত করা হল। সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার পেলেন তুর্কি লেখক ওরহান পামুক।

এ সময় নাগাদ গ্রিসের থ্রেস অঞ্চলে জাতিগত সংখ্যালঘু হিসেবে বাস করছেন প্রায় ১০০,০০০ তুর্কি। আরেক জাতিগত সংখ্যালঘু আলবানীয়দের সংখ্যা ৫ লাখ। গ্রিসের জনসংখ্যার ৯৮ শতাংশই গ্রিক, এবং উগ্র জাতীয়তাবাদী আবেগের কারণে গ্রিস রাষ্ট্র এই তুর্কি ও আলবানীয়দের হয় উপেক্ষা করে আর না হয় গ্রিক বলে চালিয়ে দেয়।

এ বছর লেবাননে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদ জানায় তুরস্ক।

২০০৭ জানুয়ারি আততায়ীদের হাত খুন হয়ে গেলেন সাংবাদিক রান্ট দিংক, যিনি একইসাথে তুরস্কের আরমানি সম্প্রদায়ের একজন নেতা ছিলেন।

জুলাই দ্বিতীয়বারের মত সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করল একেপি, তুরস্কের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন আবদুল্লাহ গুল।

অক্টোবর গণভোটে ভোটাররা দেশটির পরবর্তী সব প্রেসিডেন্ট সংসদের বদলে সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত করার পরিকল্পনার পক্ষে ভোট দিলেন।

২০০৮ এরগেনেকন তদন্ত ঘোষিত। তুরস্কের সাংবিধানিক আদালত এই মর্মে রায় দিল যে, একে পার্টি সেক্যুলারপন্থার নীতি ভঙ্গ করেছে। তবে দলটি বন্ধ করে দেয়া থেকে বিরত থাকল।

হিরমিস আবুনা, অ্যাসিরিয়ানস, কুর্দস, অ্যান্ড অটোমানস: ইন্টারকমিউনাল রিলেশনস অন দ্য পেরিফেরি অফ দ্য অটোমান এম্পায়ার

২০০৮-৯ অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদ জানাল তুরস্ক।

২০০৯ আহমেত দাভুতোগলুকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেয়া হল। নেয়া হল “প্রতিবেশীদের সাথে শূন্য সমস্যা” নীতি।

সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এক সভায় তুরস্ক সরকার ও আর্মেনিয়া সরকার দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ব্যাপারে একমত হল।

২০১০ একে পার্টি ফিলিস্তিনের হামাসের প্রতি সহানুভূতি জানাল।

মে ঘেরাও হয়ে থাকা গাজার বাসিন্দাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়া একটি নৌবহরে যোগদানের জন্য আইএইচএইচ হিউম্যানিটারিয়ান রিলিফ ফাউন্ডেশনের মদতপুষ্ট মাভি মার্মারাকে অনুমতি দিল তুরস্ক। ইসরায়েল মাভি মার্মারায় হামলা চালালে তাতে ৯ জন নিরস্ত্র তুর্কি নাগরিক খুন হন। এই ঘটনার ফলে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে পূর্বেকার উষ্ণ সম্পর্ক শীতল হয়ে ওঠে।

সেপ্টেম্বর এক গণভোটে, তুরস্কের অধিকাংশ নাগরিক বেশ কিছু ইস্যুতে সাংবিধানিক পরিবর্তনের অনুমোদন দিল, যার একটি আইন বিভাগ পরিচালনা।

ডিসেম্বর তিউনিসিয়ার প্রতিবাদ থেকে আরব বসন্তের সূত্রপাত হল।

২০১১ জুন টানা তৃতীয়বারের মত নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় এল একে পার্টি, কিন্তু সাংবিধানিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হল।

সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু। ফলে তুরস্কে বিপুল পরিমাণ শরণার্থীর ঢল নামল।

সেপ্টেম্বর সিরিয়ার আসাদ সরকারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল তুরস্ক।

নেসমেত্তিন এরবাকানের মৃত্যু।

২০১২ তুরস্কে ১৯৮০ সালে সামরিক ক্যুদেতা সংঘটিত করার দায়ে কেনান আভরানের বিচার শুরু হল।

২০১৩ মার্চ সলিউশন প্রসেস, দিয়ারবাকিরে কুর্দি শান্তি কর্মসূচি উদ্বোধন করা হল।

মে-জুন ইস্তানবুলের গেজি পার্কসহ অন্যান্য জায়গায় সরকারের কথিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রাণপ্রকৃতিবাদী সক্রিয়তাবাদীরা ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন।

অক্টোবর বরফোরাসের নিচে ইস্তানবুলের এশীয় ও ইওরোপীয় অংশের মধ্যে মর্মর সাবওয়ে ট্রেন চালু করা হল।

ডিসেম্বর এক দুর্নীতি কেলেঙ্কারির জের ধরে একে পার্টির সাথে গুলেন আন্দোলনের শেষ সংযোগটুকুও ছিন্ন হয়ে গেল।

মাভি মার্মারা ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

২০১৩-১৪ পিকেকের সাথে সমঝোতা প্রক্রিয়া শুরু ও যুদ্ধবিরতি।

২০১৪ আগস্ট প্রথমবারের মত প্রত্যক্ষভাবে জনগণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন একে পার্টির রেসিপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

ডিসেম্বর তুর্কস্ট্রিম, আঙ্কারায়, কৃষ্ণসাগরের তলদেশ দিয়ে যাবে এমন একটি গ্যাস পাইপলাইনের পরিকল্পনা ঘোষণা করলেন ভ্লাদিমির পুতিন।

২০১৫ মার্চ ”হাতুড়ি” ক্যুদেতা চক্রান্ত বিচারের অবসান ঘটল। আদালত ২৩৬ জন সামরিক কর্মকর্তাকে খালাস দিল। এঁদের বিরুদ্ধে ২০০৩ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করার চক্রান্তে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ ছিল।

জুন জাতীয় নির্বাচনে সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল একে পার্টি। জাতি প্রশ্নে গণতন্ত্রের পক্ষপাতী পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (এইচডিপি) প্রথমবারের মত নির্বাচনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট পেয়ে সংসদে ঢুকল। দক্ষিণপূর্ব তুরস্কে সহিংসতা, কুর্দি শান্তি কর্মসূচির অবসান।

সেপ্টেম্বর ভূমধ্যসাগরের তীরে আলান কুর্দি নামের এক ২-বছর-বয়সী কুর্দি শিশুর লাশ ভেসে উঠল। তাঁর মৃতদেহের ছবি তুললেন তুর্কি আলোকচিত্রী নিলুফার দেমির। ছবিটি সারা বিশ্বে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করে।

নভেম্বর ১ জাতীয় নির্বাচনে সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরে পেল একেপি।
নভেম্বর ২৫ সিরিয়া সীমান্তে একটি রুশ সামরিক বিমান ভূপাতিত করল তুরস্ক।

তুরস্ক রাশিয়ার একটি সামরিক জেট ভূপাতিত করল। প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া তুরস্কের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ দিল। উল্লেখ্য, তুরস্কের দ্বিতীয় প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার রাশিয়া।

সিরীয় যুদ্ধের কারণে ইওরোপে যে বিশাল অভিবাসন ঢেউ তৈরি হচ্ছিল তা ঠেকাতে তুরস্ক সহায়তা করবে, এই ওয়াদার বিনিময়ে তুরস্কের সাথে ৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করল ইওরোপীয় ইউনিয়ন।

২০১৬ ফেব্রুয়ারি আঙ্কারায় সেনাবহরের ওপর বোমা হামলায় অন্তত ৩৮ জন মানুষের মৃত্যু, পিকেকে থেকে বেরিয়ে আসা কুর্দিস্তান ফ্রিডম হকস (টিএকে) এই হামলার দায় স্বীকার করে।

জুন আতাতুর্ক বিমানবন্দরে হামলায় ৪২ জন মানুষের মৃত্যু, এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশি নাগরিক। তুরস্ক সরকারের ধারণা এই হামলা আইএসের চালানো। তুরস্ক ও ইসরায়েল ২০১০ সালের ঘটনার ব্যাপারে একটা সমঝোতায় এসে সম্পর্ক স্বাভাবিক করল।

জুলাই এরদোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থ ক্যুদেতা প্রচেষ্টা। জরুরি অবস্থা জারি। সহস্রাধিক সৈনিক আর বিচারককে কারারুদ্ধ করা হল। কয়েক ডজন মিডিয়া বন্ধ করে দিল সরকার। শর্তসাপেক্ষে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করল তুরস্ক।

আগস্ট উত্তরপশ্চিম সিরিয়ায় ঢুকল তুর্কি সেনাবাহিনী ও ফ্রি সিরিয়ান আর্মি।

মাইকেল এপ্পেল, আ পিপল উইদাউট আ স্টেট: দ্য কুর্দস ফ্রম দ্য রাইজ অফ ইসলাম টু দ্য ডন অফ ন্যাশনালিজম

২০১৭ জানুয়ারি ইস্তানবুলের রেইনা নৈশক্লাবে নববর্ষ উদযাপন করার সময় জনৈক উজবেক বন্দুকধারীর গুলিতে ৩৯ জন নিহত, এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আইএস।

২০১৭ তুরস্ক ও দ্য নেদারল্যান্ডসের মধ্যে কূটনৈতিক সংকট।

এপ্রিল প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তাঁর ক্ষমতা বাড়াতে সংসদীয় ব্যবস্থার স্থলে প্রেসিডেন্টশাসিত ব্যবস্থায় চালু করার উদ্দেশ্যে সাংবিধানিক পরিবর্তন আনতে আয়োজিত গণভোটে সামান্য ব্যবধানে জিতলেন। বিরোধীরা এই ফলাফলের বিরুদ্ধে আপীল করল।

২০১৮ জানুয়ারি অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ, উত্তরপশ্চিম সিরিয়ায় তুর্কি সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযান শুরু। কুর্দিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিপুল এলাকা দখল। এর একটি আফরিন শহর।

জুন নয়া সাংবিধানিক বন্দোবস্তে নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হলেন এরদোয়ান। সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হল একে পার্টি। ন্যাশনালিস্ট অ্যাকশন পার্টির (এমএইচপি) সাথে মিলে জোট সরকার গঠন করল।

আরমানি গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিল দ্য নেদারল্যান্ডসের সংসদ।

২০১৯ মার্চ স্থানীয় নির্বাচনে ইস্তানবুল ও আঙ্কারার মেয়রের পদগুলো হারাল একে পার্টি। ইস্তানবুলে এক পুনর্নির্বাচন সংযুক্ত বিরোধী দলগুলোর জয় নিশ্চিত করল।

জুন ইস্তানবুলে মেয়র নির্বাচনে বিরোধীদল সিএইচপির পদপ্রার্থীর জয়।

অক্টোবর উত্তর সিরিয়া (রোজাভা) থেকে সেনাপ্রত্যাহার করল যুক্তরাষ্ট্র।

দেনিজ চিফচি, দ্য কুর্দস অ্যান্ড দ্য পলিটিকস অফ তুর্কি
বেনি মরিস ও দ্রোর জিই’ভি, দ্য থার্টি-ইয়ার জেনোসাইড তুর্কি’জ ডেস্ট্রাকশন অফ ইটস ক্রিশ্চিয়ান মাইনরিটিজ: ১৮৯৪-১৯২৪

২০২০ জানুয়ারি লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে তুরস্ক সরাসরি হস্তক্ষেপ করল।

ফেব্রুয়ারি-মার্চ উত্তরপশ্চিম সিরিয়ায় তুর্কি সেনাদল আসাদ সরকারের একটি বড় আক্রমণাত্মক অভিযান রুখে দিল।

সেপ্টেম্বর-নভেম্বর তুরস্কের সামরিক হস্তক্ষেপ নাগরনো-কারাবাখে আরমানিদের হাতে থাকা ভূখণ্ড উদ্ধার করতে আজারবাইজানকে সহায়তা করল।

ডিসেম্বর রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয় ইস্যুতে তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র। ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চলে তেল ও গ্যাসের অবৈধ ড্রিলিংয়ের দায়ে তুর্কি কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল তুরস্ক।

উইলিয়াম গৌরল, দ্য কুর্দস ইন এরদোয়ানস তুর্কি: ব্যালেন্সিং আইডেনটিটি, রেজিস্ট্যান্স, অ্যান্ড সিটিজেনশিপ

২০২১ জুন ভাঙা সম্পর্ক জোড়া লাগাতে ব্রাসেলসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সাক্ষাৎ করলেন এরদোয়ান।

অক্টোবর ৬ প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিল তুরস্ক।
অক্টোবর ২৩ ১০ জন পশ্চিমা রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করার হুকুম দিলেন এরদোয়ান, কিন্তু পরে তিনি এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

রেসিপ তাইয়েপ এরদোয়ান, আ ফেয়ারার ওয়ার্ল্ড ইজ পসিবল: আ প্রোপোজড মডেল ফর আ ইউনাইটেড নেশনস রিফর্ম

২০২২ আঙ্কারার অনুরোধে সাড়া দিয়ে জাতিসংঘ তুরস্ককে আনুষ্ঠানিকভাবে তুর্কিয়ে সম্বোধন করতে রাজি হল।

নভেম্বর ইস্তানবুলে এক বোমা হামলায় ৬ জন নিহত। তুরস্ক সরকার এর জন্য কুর্দিদের দোষারোপ করল। সিরিয়া আর ইরাকের প্রায় ৫০০টি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালানো শুরু করল তুরস্ক।

দিমিতার বেশেভ, তুর্কি আন্ডার এরদোয়ান: হাউ আ কান্ট্রি টার্নড ফ্রম ডেমোক্রেসি অ্যান্ড দ্য ওয়েস্ট

২০২৩ জানুয়ারি সুইডেনে তুর্কি দূতাবাসের সামনে কুরআন শরিফের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেন রাসমুস পালুদান নামের এক উগ্রডানপন্থী রাজনীতিক। তুরস্ক সরকার এই ঘটনার ব্যাপক নিন্দা জানায়।

ফেব্রুয়ারি তুরস্কে ও সিরিয়ায় প্রলয়ঙ্করী এক ভূমিকম্পে ৪১,০০০এরও বেশি মানুষের মৃত্যু।

মে ১৪-২৮ তুরস্কের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত। প্রথম রাউন্ডে ফল নির্ধারিত না হওয়ায় দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মত নির্বাচন রান-অফে গেল। দ্বিতীয় রাউন্ডে ৫২.১৮% ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নিবার্চিত হলেন রেসিপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

অক্টোবর ১-২ আঙ্কারায় পিকেকের সদস্যরা সন্ত্রাসবাদী হামলা চালালে এর প্রতিক্রিয়ায় উত্তর ইরাকে ২০টি পিকেকে লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালাল তুরস্ক।
অক্টোবর ১৯ তুরস্ক থেকে নিজ দেশের অ্যাম্বাসেডার ইরিত লিলিয়ান ও অন্যান্য কূটনীতিককে প্রত্যাহার করে নিল ইসরায়েল।
অক্টোবর ২৩ ন্যাটোর সদস্যপদ লাভ করতে সুইডেনের আবেদনকে সমর্থন জানানো একটি বিল তুরস্কের সংসদে পেশ করলেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।

নভেম্বর ৪ গাজা গণহত্যার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল থেকে নিজ দেশের অ্যাম্বাসেডারকে ডেকে পাঠাল তুরস্ক।

২০২৪ জানুয়ারি ১৩ ইরাকে অবস্থানরত তুর্কি সেনাদের ওপর কুর্দি যোদ্ধাদের হামলায় ৯ জন নিহত হলে এর ধারাবাহিকতায় ইরাক ও সিরিয়ায় বিমান হামলা চালাল তুরস্ক।
জানুয়ারি ২৩ ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের জন্য সুইডেনের প্রস্তাব অনুমোদন দিল তুরস্কের গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলি।
জানুয়ারি ২৫ ন্যাটোর সুইডেনে যোগদান প্রোটোকল ধারণ করা প্রস্তাবে সই করলেন ও অনুমোদন দিলেন প্রেসিডেন্ট রেসিপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
জানুয়ারি ২৮ ইস্তানবুলের সান্তা মারিয়া চার্চে দুই মুখোশধারী বন্দুকবাজের হামলায় ১ ব্যক্তি নিহত হলেন।

ফেব্রুয়ারি ১ কোজায়েলি প্রদেশের গেবজেতে মার্কিন কোম্পানি প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলের মালিকানাধীন এক কারখানায় জনৈক বন্দুকধারী ৭ জনকে জিম্মি করল। আপাতদৃষ্টিতে ইসরায়েলের গাজা গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের মদতের প্রতিবাদে। লোকটিকে পরবর্তীতে অক্ষত অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়, এবং সব বন্দীকে মুক্ত করা হয়।
ফেব্রুয়ারি ৬ ইস্তানবুল জাস্টিস প্যালেসের বাইরে রেভল্যুশনারি পিপলস লিবারেশন পার্টি/ফ্রন্টের দুই বন্দুকধারীর প্রকাশ্য গুলিবর্ষণে ৬ জন জখম হলেন, তারপর বন্দুকধারী দুজন পুলিশের গুলিতে খুন হন।
ফেব্রুয়ারি ১০ ইস্তানবুলের কুচুকজেকমেচে জেলা পৌরসভার একে পার্টির সাবেক মেয়র আজিজ ইয়েনিয়াইয়ের এক নির্বাচনী প্রচারণা অভিযানে বন্দুকধারীর গুলিতে ১ জন গুরুতরভাবে জখম হলে এই হামলার সাথে সম্পৃক্ততার কারণ দেখিয়ে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হল।
ফেব্রুয়ারি ১৩ তুরস্কের পূর্বাঞ্চলের এরযিনজান প্রদেশের এক সোনার খনিতে ভূমিধ্বসে ১৩ জন খনি শ্রমিকের মৃত্যু।
ফেব্রুয়ারি ২৫ ইরাকের উত্তরাঞ্চলে তুরস্কের চালানো এক বিমান হামলায় নিহত হলেন ৪ পিকেকে সদস্য।

মার্চ ১৫ ইজিয়ান সাগরের গোকসেদাতে এক অভিবাসী নৌকা ডুবে ২২ জনের মৃত্যু হল, যাঁদের মধ্যে ৭ জন শিশু। তুর্কি কোস্ট গার্ড ২ জনকে উদ্ধার করে। আর ২ জন সাঁতরে তীরে চলে আসে।
মার্চ ৩১ ইস্তানবুলের মেয়র হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হলেন ইকরাম ইমামোগলু।

এপ্রিল ২ ইস্তানবুলের গেয়রেত্তেপে নাইটক্লাব অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২৯ জনের মৃত্যু।
এপ্রিল ১২ আনাতালইয়ায় এক কেবল কার দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত ও ৭ জন জখম হলেন।

মে ২ গাজা গণহত্যার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের সাথে সব বাণিজ্য স্থগিত করল তুরস্ক।
মে ৬ ইরাকি কুর্দিস্তানে বিমান হামলা চালাল তুরস্কের বিমান বাহিনী, নিহত হলেন ১৬ পিকেকের সদস্য। ইস্তানবুলের বাইজেন্টাইন যুগের কোরা চার্চ, যা বর্তমানে কারিয়ে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হল।
মে ১৩ আঙ্কারায় গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিসের সাথে সাক্ষাৎ করলেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।
মে ১৭ ৭ জন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তার প্রতি ক্ষমা ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। ২০১৮ সালে যাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নেসমেত্তিন এরবাকানকে উৎখাতে ভূমিকা রাখার দায়ে।
মে ২৬ মেরসিনের কাছাকাছি তার্সুস প্রদেশে এক বাস দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ৩৯ জন আহত।
মে ৩১ সিরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলের কামিশলিতে সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) লক্ষ্যবস্তুগুলোতে তুরস্কের চালানো ড্রোন হামলায় ৪ জন যোদ্ধা ও ১১ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু।

জুন ৩ পিকেকের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে হাক্কারির ডেম পার্টির মেয়র মেহমেত সিদ্দিক আকিসকে তাঁর অফিস থেকে সরিয়ে দেয়া হল এবং গ্রেপ্তার করা হল।
জুন ৫ মেহমেত সিদ্দিক আকিসকে ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হল।
জুন ২১ তুর্কি দাবানল, মারদিন ও দিয়ারবাকির প্রদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় এক দাবানলে ১১ জনের মৃত্যু।
জুন ২৮ অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন মোকাবেলার ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে মেনে চলে না এমন দেশগুলোর “ধূসর তালিকা” থেকে তুরস্ককে বাদ দিল ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স।
জুন ৩০ ইজমির প্রদেশের এক রেস্তোরাঁর ভেতরে একটি প্রোপেন ট্যাংক বিস্ফোরিত হয়ে ৫ জনের মৃত্যু।

জুলাই ১ সিরিয়ার তুর্কি-অধিকৃত ভূখণ্ডে তুরস্ক-বিরোধী প্রতিবাদ শুরু হলে তুর্কি বাহিনীগুলোর হাতে ৭ জনের মৃত্যু।
জুলাই ৯ তুরস্কের সেজমে উপকূলে অভিবাসীদের একটা ভেলা ডুবে গিয়ে ৭ জনের মৃত্যু, ১৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হল।
জুলাই ২৯ তুরস্কের ৪০ লক্ষ নেড়ি কুকুরের একাংশের জন্য ইউথেনেশিয়ার সম্মতি দেয়া একটি আইনের অনুমোদন দিল গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি।
জুলাই ৩০ তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানাল, তারা উত্তর ইরাকে বিমান হামলা চালিয়ে ১৩ জন কুর্দি যোদ্ধাকে খতম করেছে।

আগস্ট ১ মার্কিন-রুশ বন্দী বিনিময়, স্নায়ুযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সবচে ব্যাপক আকারে বন্দী বিনিময় সম্পন্ন হল। ৬২ জন বন্দীকে মুক্তি দেয়া হয়। স্থান: আঙ্কারার এসেনবোগা বিমানবন্দর।
আগস্ট ২ ইন্সটাগ্রামে ইন্টারনেট অ্যাকসেস ব্লক করল তুরস্ক, হপ্তাখানেক পর এই ব্লক তুলে নেয়া হয়।
আগস্ট ৭ ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে জেনোসাইড মামলা চলছে, তাতে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করল তুরস্ক।
আগস্ট ১২ এসকিসেহিরে এক মসজিদে ছুরিকাঘাতে অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হল।
আগস্ট ১৬ গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে কারাবন্দী এমপি সেরফেদ্দিন কান আতালেকে নিয়ে এক বিবাদের জের ধরে রক্তক্ষয়ী সহিংসতা দেখা দিল।
আগস্ট ১৮ ইস্তানবুলের কাজিথান পৌরসভায় এক বন্দুক হামলায় ইসরায়েলের জনৈক ফিলিস্তিনি নাগরিকের মৃত্যু।

সেপ্টেম্বর ২ বিআরআইসিএস জোটে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাল তুরস্ক।
সেপ্টেম্বর ৫ ইরাকি কুর্দিস্তানে এক তুর্কি ড্রোন হামলায় ৩ ব্যক্তির মৃত্যু, যাঁদের ১ জন শিশু।
সেপ্টেম্বর ৯ তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানাল, উত্তর ইরাকে পিকেকের সাথে সংঘর্ষে ১ তুর্কি সৈনিক নিহত হয়েছেন।

অক্টোবর ১৬ আরমানি গণহত্যা নিয়ে এক মেহমানের মন্তব্যের জের ধরে ইস্তানবুলের আসিক রেডিও বন্ধ করে দিল তুরস্কের রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশন সুপ্রিম কাউন্সিল।
অক্টোবর ২৩ আঙ্কারা প্রদেশের কাহরামানকাজানের টার্কিশ এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের সদরদপ্তরে এক বন্দুক ও বোমা হামলায় ৫ ব্যক্তি নিহত। এই হামলার জন্য পিকেকেকে দায়ী করা হয়। হামলাকালে ২ হামলাকারীও মারা যান।
অক্টোবর ৩০ পিকেকের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ইস্তানবুল প্রদেশের এসেনইয়ুর্টের সিএইচপি মেয়র আহমেত ওজের গ্রেপ্তার।

নভেম্বর ৪ পিকেকের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বাতমান, মারদিন ও হালফেতির ডেম মেয়রদের বরখাস্ত করা হল।
নভেম্বর ২২ পিকেকের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে তুনসেলি ও ওভাসিকের ডেম মেয়রদের বরখাস্ত করা হল।

ডিসেম্বর ৯ ইস্পার্তা প্রদেশে দুই সামরিক হেলিকপ্টার সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু, যাঁদের একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল।
ডিসেম্বর ২৪ বালিকেসিরে বিস্ফোরক উৎপাদনের এক কারখানায় একটি বিস্ফোরণে ১১ জনের মৃত্যু।
ডিসেম্বর ২৫ ২০২৩ সালের তুরস্ক ও সিরিয়া ভূমিকম্পের সময় আদিয়ামানের গ্র্যান্ড ইসিয়াস হোটেল ধবসে ৭২ জনের মৃত্যু হওয়ার সাথে সম্পৃক্ত থাকার দায়ে হোটেল মালিক, তাঁর ছেলে ও হোটেলটির স্থপতিকে ১৮ বছরেরও বেশি কারাদণ্ড দেয়া হল।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, “এভরিথিং ইজ বাই দ্য পাওয়ার অফ দি উইপন” অ্যাবিউজেজ অ্যান্ড ইমপিউনিটি ইন টার্কিশ-অকুপাইড নর্দার্ন সিরিয়া

২০২৫ জানুয়ারি ১৭ তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানাল, বুটলেগ অ্যালকোহল পানের দরুণ ৬ সপ্তাহে ১২৪ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
জানুয়ারি ২০ ভিক্টোরি পার্টির নেতা উমিত ওজদাগকে প্রেসিডেন্টের অবমাননা ও ২০২৪ সালে শরণার্থী-বিরোধী দাঙ্গার সময় সোশাল মিডিয়ায় সহিংসতা উসকানোর দায়ে গ্রেপ্তার করা হল।
জানুয়ারি ২১ বোলু প্রদেশের কারতালকায়ায় এক হোটেলে আগুন লেগে অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যু।
জানুয়ারি ২৫ কোনইয়া শহরে এক অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং ধ্বসে ২ ব্যক্তির মৃত্যু।
জানুয়ারি ৩১ ২০২৪ সালে নিজেদের স্নাতক অনুষ্ঠানে অননুমোদিত সেক্যুলারপন্থী শপথ পাঠ করার দায়ে তুর্কি সামরিক একাডেমির ৫ প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও তুর্কি সশস্ত্র বাহিনীগুলোর আরও ৩ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হল।

ফেব্রুয়ারি ১১ পিকেকের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ইস্তানবুল প্রদেশের আতাসেহির ও কারতালের ১০ জন সিএইচপি জেলা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হল।
ফেব্রুয়ারি ১৩-১৮ পিকেকের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে সারা দেশের ৫১টি শহরে অভিযান চালিয়ে ২৮২ জনকে গ্রেপ্তার করা হল।
ফেব্রুয়ারি ১৯ ইজমির প্রদেশের সেলজুক উপকূলে অভিবাসীদের এক ডিঙ্গি ডুবে অন্তত ৬ জনের মৃত্যু।
ফেব্রুয়ারি ২৭ পিকেকে নেতা আবদুল্লাহ ওজালান কারাগার থেকে একটি বার্তা জারি করেন, যেখানে দলটিকে একটি কংগ্রেস ডেকে নিজেদের বিলুপ্ত করে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানানো হয়।

মার্চ ১ ওজালানের আহবানে সারা দিয়ে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করল পিকেকে।
মার্চ ১৯ দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের দায়ে গ্রেপ্তার হলেন ইস্তানবুলের মেয়র এবং ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সিএইচপির একরেম ইমামোগলু।
মার্চ ১৯-২৮ ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের প্রেক্ষিতে তুরস্ক জুড়ে প্রতিবাদ শুরু। আন্দোলনকারীদের মধ্যে রয়েছে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি সহ (সিএইচপি) অন্তত ১৯টি রাজনৈতিক দল, বার অ্যাসোসিয়েশন, মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, একাধিক ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন, ও প্রবাসী তুর্কিদের একাংশ। সাংবাদিক সহ ১৪০০রও বেশি প্রতিবাদী গ্রেপ্তার হয়েছেন।

তথ্যসূত্র

রাফিন, ইরফানুর রহমান। ২০২২। সময়রেখা: মহাবিশ্বের উৎপত্তি থেকে করোনাসংকট পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত ঘটনাপঞ্জি। দিব্যপ্রকাশ।

Asbridge, Thomas. 2010. The Crusades: The Authoritative History of the War for the Holy Land. Ecco.

BBC. 2022. “Turkey Profile – Timeline.” BBC, December 14.
https://www.bbc.com/news/world-europe-17994865
— 2023. “Turkey country profile.” BBC, August 22.
https://www.bbc.com/news/world-europe-17988453

Bechev, Dimitar. 2022. Turkey Under Erdoğan: How a Country Turned from Democracy and the West. Yale University Press.

Cartwright, Mark. 2016. “Lydia.” World History Encyclopedia. Last modified April 03, 2016. https://www.worldhistory.org/lydia/.
 2018. “Hayasa-Azzi.” World History Encyclopedia. Last modified February 14, 2018. https://www.worldhistory.org/Hayasa-Azzi/.
 2018b. “Trojan War.” World History Encyclopedia. Last modified March 22, 2018. https://www.worldhistory.org/Trojan_War/.
 2019. “Phrygia.” World History Encyclopedia. Last modified September 05, 2019. https://www.worldhistory.org/phrygia/.

Council on Foreign Relations – cfr. 2022. “The Kurds’ Quest for Independence.” Accessed August 31, 2022.
https://www.cfr.org/timeline/kurds-quest-independence

Howard, Douglas A. 2016. The History of Turkey. 2nd ed. Greenwood Press.

Kucukgocen, Ali, and Kilcoyne, Clodagh. 2023. “Nine survivors pulled from Turkey’s rubble as earthquake death toll passes 40,000.” Reuters, February 15.
https://www.reuters.com/world/middle-east/survivors-ever-fewer-earthquake-rubble-turkey-syria-2023-02-12/

Mark, Joshua J.. 2012. “Hatti.” World History Encyclopedia. Last modified January 20, 2012. https://www.worldhistory.org/hatti/.
 2018a. “Fertile Crescent.” World History Encyclopedia. Last modified March 28, 2018. https://www.worldhistory.org/Fertile_Crescent/.
 2018b. “The Hittites.” World History Encyclopedia. Last modified May 01, 2018. https://www.worldhistory.org/hittite/.

Morris, Benny, and Ze’evi, Dror. 2019. The Thirty-Year Genocide: Turkey’s Destruction of Its Christian Minorities, 1894-1924. Harvard University Press.

Pavlovi´c, Zoran. 2004. Turkey. Chelsea House.

Wikimedia Foundation. 2025. “2024 in Turkey.” Last modified March 22, at 23:57 (UTC).
https://en.wikipedia.org/wiki/2024_in_Turkey
2025b. “2025 in Turkey.” Last modified March 28, at 02:19 (UTC).
https://en.wikipedia.org/wiki/2025_in_Turkey
2025c. “2025 Turkish protests.” Last modified March 28, at 14:35 (UTC).
https://en.wikipedia.org/wiki/2025_Turkish_protests

Yuzbasioglu, Nazli, and Kesgin, Hatice. 2016. “Turkish-Israeli relations: A timeline.” Anadolu Agency, November 17.
https://www.aa.com.tr/en/middle-east/turkish-israeli-relations-a-timeline/687404

Zürcher, Erik J.. 2017. Turkey: A Modern History. 4th ed. I. B. Tauris.

নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।

অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ

দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *