
চীন
Featured Image: Wikimedia Commons.

বিশ্ব মানচিত্র ব্লগ
পূর্বসাল
৩০০০-১৭০০ উত্তরপূর্ব চীনে এ সময় লংশান কালচারের বিকাশ ঘটছে।
৩০০০ চৈনিক কিংবদন্তী অনুসারে, পৌরাণিক সম্রাট ফু জি এসময়ই কখনো ভাষাকে লিখিত রূপ দেন।* চীনাদের রান্না করা ও মাছ ধরা শেখান। তবে যেটাকে ফু জির সবচে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ভাবা হয়, সেটা হল ৮টি ট্রাইগ্রামকে (ত্রিভুজাকার রূপ) সাজানো যা পরবর্তীকালে ইজিংয়ে (পরিবর্তন পুস্তক) নথিবদ্ধ হয়েছে।**
* ফু জি তাঁর বোন ন্যু গুয়াকে বিয়ে করেন। চৈনিক বিশ্বাস অনুসারে, ন্যু গুয়া চীনাদের সামাজিক জীবনকে একটা শৃঙ্খলার ভেতরে নিয়ে এসেছেন। বিয়ের মত সভ্য প্রতিষ্ঠানও তিনিই গড়ে তুলেছেন।
** এগুলো হল স্বর্গ, পৃথিবী, মাটি, আগুন, বাতাস, ঝড়, পর্বত, ও হ্রদ। এটা দাওধর্মের ইন ও ইয়াং‘য়ের সাথে সম্পর্কিত। ৮টি টাইগ্রাম মিলে তৈরি করে একটি অষ্টভুজ।
২৭০০ চীনের কিয়ানশাংইয়াংয়ে এসময় থেকে বোনা রেশমের আদিতম নিদর্শনটির দেখা মিলেছে।
২০৭০-১৬০০ জিয়া রাজবংশ।
১৭৮৯-১৭৫৮ প্রাচীন চীন শাসন করছেন জিয়া সম্রাট কং জিয়া।
১৭২৮-১৬৭৫ প্রাচীন চীন শাসন করছেন জিয়া রাজবংশের শেষ সম্রাট জিয়ি।
১৬০০-১০৪৬ শাং রাজবংশ।*
* এসময় চীনে লেখালিখির সূচনা ঘটে। শাংদের রাজত্বে তাওধর্মের বিকাশ ঘটে। যা দাওধর্ম নামেও পরিচিত।
১৩০০ শাং রাজবংশ সাম্রাজ্যিক চীনের রাজধানী ইয়িনে সরিয়ে আনল, শহরটির বর্তমান নাম আনইয়াং। প্রাচীন চীনে প্রথমবারের মত রথের দেখা মিলছে।
১২৫০-১১৯২ প্রাচীন চীন শাসন করছেন শাং রাজবংশের মহান সম্রাট উ দিং।
১২৫০-১১৫০ এসময়ই কখনো রচিত হয় আই-চিং (পরিবর্তন পুস্তক)।
১০৫০ প্রথম চীনা শাসক হিসাবে তিয়ানমিং (ম্যান্ডেট অফ হ্যাভেন) দাবি করলেন ঝৌয়ের রাজা ওয়েন।
১০৪৬-৭৭১ শাং রাজবংশকে উৎখাত করল প্রাচীন চীনের পশ্চিমাঞ্চলের ঝৌ রাজবংশ, ‘পশ্চিম ঝৌ পর্ব’-এর সূচনা।
৭৭২-৪৭৬ শরৎ ও বসন্ত পর্ব।
৭৭১ পশ্চিমে বারবার যাযাবরদের আক্রমণের শিকার হয়ে সাম্রাজ্যিক চীনের রাজধানী লুয়োইয়াংয়ে সরিয়ে আনল ঝৌ রাজবংশ, ‘পূর্ব ঝৌ পর্ব’-এর সূচনা।
৭৭১-২২৬ পূর্ব ঝৌ রাজবংশ।
৬০০-৫০১ প্রাচীন চীনের কয়েকজন দার্শনিক এই শতাব্দীতেই জন্মেছেন। তেং শিহ, লাও-ঝু*, আর সুন-ঝু এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এঁদের জন্মমৃত্যুর বছর সঠিকভাবে জানা যায় না।
* দাওবাদের কথিত প্রতিষ্ঠাতা লাও-ঝু আদৌ কোন ঐতিহাসিক চরিত্র কিনা, তা নিয়ে বিবাদ আছে। অনেকেই মনে করেন, তিনি আসলে কিংবদন্তী চরিত্র। একাধিক বাস্তব চরিত্রের সংমিশ্রণে চরিত্রটি নির্মিত হয়েছে।
৫৬৩-৪৮৩ বর্তমান নেপালের কপিলাবস্তুতে জন্ম নেয়া ও পরবর্তীকালে বুদ্ধ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা রাজকুমার সিদ্ধার্থ গৌতমের জীবনকাল।*
* বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে সংক্ষেপে জানতে দেখুন, (Wangu 2009).
৫৫১-৪৭৯ প্রাচীন চীনা দার্শনিক কনফুশিয়াসের জীবনকাল।
৫১২-৫০৬ প্রাচীন চীনের উ আর ছু রাজ্যের মধ্যে উ-ছু যুদ্ধ।
৫০৬ বোজু’র সমর, সুন-ঝুর নেতৃত্বাধীন উয়ু শক্তিগুলো ছু’দেরকে পরাস্ত করল।
৫০০-৪০১ এ সময়ই কখনো রচিত হয় সুন-ঝুর দ্য আর্ট অফ ওয়ার।
৪৮১-২২১ যুদ্ধরত রাজ্যসমূহয়ের পর্ব।*
* যুদ্ধের বিভীষিকার প্রতিক্রিয়ায় জন্ম নেয় আইনবাদী দর্শন।
৪৭০-৩৯১ প্রাচীন চীনা দার্শনিক মো তির জীবনকাল।
৪৪০-৩৬০ প্রাচীন চীনা দার্শনিক ইয়াং ঝুর জীবনকাল।
৩৭২-২৮৯ প্রাচীন চীনের কনফুশীয় দার্শনিক মেনসিয়াসের জীবনকাল।
৩৩৮ আইনবাদী দর্শনের আদি প্রবক্তা শাং ইয়াং’য়ের মৃত্যু।
৩৩৬ যুদ্ধক্ষেত্রে প্রথমবারের মত আড়ধনুকের ব্যবহার দেখা গেল।
৩২৮-৩০৮ প্রাচীন চীনে কিন রাজবংশের উত্থানপর্ব।
২৮০-২৩৩ প্রাচীন চীনের রাজনৈতিক মতবাদ আইনবাদ যাঁর হাতে সংহতিলাভ করেছে সেই হান ফেইজির জীবনকাল।
২৫৯-২১০ ঐক্যবদ্ধ চীনের প্রথম সম্রাট শি হুয়াংদি’র জীবনকাল।
২৫৬ কিন রাজ্যের সেনাবাহিনী চেংঝৌ শহর দখল করে নিল। খুন হলেন শেষ ঝৌ রাজা নান। ঝৌ রাজবংশের অবসান।
২৩০ কিন রাজ্যের হাতে পরাজিত হল হান রাজ্য।
২২৫ কিন রাজ্যের হাতে পরাজিত হল ওয়েই রাজ্য।
২২৩ কিন রাজ্য ছু রাজ্যটি দখল করে নিল।
২২১ কিন রাজ্যের হাতে পরাজিত হল ইয়ান আর কি রাজ্য।
২২১-২১০ ঐক্যবদ্ধ চীনের প্রথম সম্রাট শি হুয়াংদির শাসনকাল। এসময়ই চীনের মহাপ্রাচীরের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
২২১-২০৬ কিন রাজবংশ।
২১৪ কিন রাজবংশ হংকংকে চীনের অন্তর্ভুক্ত করে নিল।
২১৩ চীনে আইনবাদীদের প্রভাবে মূলত কনফুশীয় দার্শনিকদেরকে জ্যান্ত কবর দেয়া ও তাঁদের বই পোড়ানোর একটি পর্ব শুরু হল।
২১৩-২০৬ কিন রাজবংশ আইনবাদকে চীনের দরবারি দর্শন হিসাবে স্বীকৃতি দিল ও বাকি সব দর্শন নিষিদ্ধ করে দিল।
২১০-২০৬ চীনে কিন রাজবংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা দিল।
২০৯-৬ এসময় স্বীয় রাজধানী শাংআন থেকে চীন শাসন করছে পশ্চিম হান রাজবংশ।
২০৭ পাঁচ শতাব্দী ধরে আউ লাক রাজ্য শাসন করার পর চীনের কিন রাজবংশের হাতে থুকদের পতন ঘটল। বিজয়ী চীনা বাহিনীর সেনাপতি ছিলেন ঝাও তুয়ো, ভিয়েতনামী ভাষায় যাঁর নাম ত্রিউ দা। পরের বছর হান রাজবংশ চীনে ক্ষমতা দখল করলেও হানদের আনুগত্য স্বীকার করেন নি ত্রিউ দা, থুকদের রাজ্যের সাথে তাঁর নিয়ন্ত্রণে থাকা চীনা অঞ্চলগুলো জোড়া লাগিয়ে তিনি গঠন করলেন এক নতুন রাজ্য: নাম ভিয়েত।
২০৬ শি হুয়াংদির মৃত্যু। ৮০০০ সৈন্যের এক পোড়ামাটির সেনাবাহিনীর সাথে তাঁকে এক প্রাসাদ সমাধিতে কবরস্থ করা হল। চীনে কিন রাজবংশের পতন ও গৃহযুদ্ধের সূচনা।
২০২ লিউ বাং কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল হান রাজবংশ। লিউ বাংকে চীনের সম্রাট ঘোষণা করা হল। দেশটির প্রথম হান সম্রাট লিউ বাং গাওজু নামেও পরিচিত।
২০২ পূর্বসাল-২২০ সাল চীনে এসময় আইনবাদী দর্শনের প্রভাব হ্রাস পায়।
১৯৫-১৮০ সম্রাট গাওজুর মৃত্যু। এসময় পুতুল রাজারা শাসন করছেন চীন। আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়াচ্ছেন সম্রাজ্ঞী লু ঝি, যিনি লু হুয়ো নামেও পরিচিত।
১৪১-৮৭ হান সম্রাটদের মধ্যে দক্ষতম বিবেচিত উ’র শাসনকাল। কনফুশীয়বাদকে চীনের দরবারি দর্শন হিসাবে স্বীকৃতি দিল হান রাজবংশ। আইনবাদের রাষ্ট্রীয় আনুগত্য লাভের অবসান।
১৩৮-১২৬ চীনের হান সম্রাট উর দূত ঝাং কিয়ান চীন আর মধ্য এশিয়ার মধ্যকার প্রবাদপ্রতিম বাণিজ্যপথ সিল্ক রোড খুললেন।
১১৭-১০০ চীনের মহাপ্রাচীরের পশ্চিম অংশ সম্প্রসারিত করলেন হানরা।
১১১ চীনা সেনাবাহিনী নাম ভিয়েত দখল করে নিল।
১০৯ তিয়েন রাজ্য দখল করে নিলেন হান সম্রাট।
১০৪-১০১ স্বর্গীয় ঘোড়াদের যুদ্ধ।
সাল
২ এসময় সাম্রাজ্যিক চীনের রাজধানী শাং’আনের জনসংখ্যা ২ লক্ষ ৫০ হাজার।
৯ চীনে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বসলেন ওয়াং মাং। সংস্কারবাদী বলে পরিচিত। ওয়াং মাং কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল জিন রাজবংশ।
৯-২৩ জিন রাজবংশ।
২৩ সাম্রাজ্যিক চীনের রাজধানী শাং’আনকে ধবংসস্তূপে পরিণত করলেন লিউ জিউ, রাজধানী লুয়োইয়াংয়ে সরিয়ে আনলেন।
২৫-২২০ পূর্ব হান রাজবংশ।
৩৯ ভিয়েতনামে চীনা দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ত্রুং বোনেদের বিদ্রোহ। স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করলেন রানী ত্রুং ত্রাক। ৪৩ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল এই রাজ্য।
৪৩ ত্রুংদের হাত থেকে নাম ভিয়েত পুনর্দখল করল চীনারা। কিছুদিনের মধ্যেই ত্রুং বোনেদের লাশ পাওয়া গেল। তাঁদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ আছে। চীনা ঐতিহাসিকদের মতে, ত্রুং বোনেরা চিনা সেনাবাহিনীর হাতে খুন হয়ে গেছিলেন। কিন্তু ভিয়েতনামী ঐতিহাসিকরা এই ইতিহাস অস্বীকার করেন। সত্য যাই হোক, মৃতারা শহিদে পরিণত হন। আজকে তাঁদেরকে বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে ভিয়েতনামীদের প্রতিরোধের প্রতীক হিসাবে দেখা হয়।
৭৩-১০২ হানদের শিনচিয়াং বিজয়।
৮২ হান চীনের সাথে ইয়ায়োই জাপানের যোগাযোগ স্থাপিত হল।
৯১ চীনের হান রাজবংশ মঙ্গোলিয়া দখল করে নিল।
১০৮ চীন কোরীয় উপদ্বীপের উত্তরাংশ দখল করে নিল।
১৫৫-২২০ চীনের সামরিক স্বৈরতন্ত্রী কাও কাওয়ের জীবনকাল।
১৬০ চীনে হান রাজবংশের পতনের কাল শুরু হল।
১৬৮-১৮৯ এসময় চীন শাসন করছেন সম্রাট লিং।
১৮৪ হলুদ পাগড়ি বিদ্রোহ।
১৮৪-১৯২ চীনা কৃষকদের হলুদ পাগড়ি বিদ্রোহ রক্তে ডুবিয়ে দিয়ে দমন করল হানরা।
১৮৯ চীনা সমরপ্রভু ডং ঝুয়ো হান রাজবংশের রাজধানী লুয়োইয়াংকে ধবংসস্তূপে পরিণত করলেন। পরের বছর শহরটি পুড়িয়ে দেয়া হয়। লিউ জিয়ি নামের একটি শিশুকে মসনদে বসানো হয়।
১৮৯-২৪৮ জাপানে রানী হিমিকোর শাসনকাল।
২০৫ চীনের সাবেক হান সরকারের নিয়ন্ত্রণ নিলেন কাও কাও। নিজেকে চ্যান্সেলর হিসাবে নিয়োগ দিলেন। কার্যত একজন সামরিক স্বৈরতন্ত্রী।
২০৮ চীনকে তিনটি আঞ্চলিক রাজ্যে বিভক্ত করা হল।
২২০ কাও কাওয়ের মৃত্যু। চীনের মসনদের ওপর অধিকার ছাড়লেন লিউ জিয়ি। শুরু হল সাড়ে তিনশো বছরের অনিশ্চয়তার কাল।
২৩৮ চীনে একটি শুভেচ্ছামূলক প্রতিনিধিদল প্রেরণ করলেন জাপানের রানী হিমিকো।
২৪৮ চীনাদের বিরুদ্ধে ও চীন-কবলিত ভিয়েতনামী সমাজে নারীর অবস্থানের ক্রমাবনতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিলেন ভিয়েতনামী নারী ত্রিউ আউ।*
* চীনাদের বিরুদ্ধে ভিয়েতনামীদের এই বিদ্রোহ সফল হয়নি। তবে এসব বিদ্রোহ থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে, ভিয়েতনামী নারীরা বিশেষভাবেই নেতৃত্বগুণসম্পন্ন। চীনা শাসনকে একতরফাভাবে খারাপ বলা যায় না। কৃষিক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছিল। বহু রাস্তাঘাট, সেতু, ও পোতাশ্রয় নির্মিত হয়েছিল। কনফুশিয়াসের মতবাদ ও তাওবাদের সাথে পরিচয় ঘটেছিল ভিয়েতনামী সমাজের অভিজাতদের। তবে সাধারণ লোকে চীনাদের ঘৃণাই করত, কারণ চীনারা ভিয়েতনামীদেরকে “বর্বর” মনে করত।
৩০৪ যাযাবর গোষ্ঠী জিওনগু চীনের মহাপ্রাচীর ভেদ করে দেশটিতে ঢুকে পড়ল।
৩১৩ কোরীয়রা চীনাদের কোরীয় উপদ্বীপ থেকে তাড়িয়ে দিল।
৩৪২ চীনের মুরং হুয়াং কোরিয়া আক্রমণ করলেন।
৪১৩-৭৮ জাপানের রাজারা এসময় চীনে রাষ্ট্রদূত ও শুভেচ্ছাদল প্রেরণ করছেন।
৪৯৪ চীনের উত্তরাঞ্চলের ওয়েউ রাজ্য লুয়োইয়াংকে তাঁদের রাজধানী নির্বাচন করল।
৫২৮ স্তেপের বাসিন্দারা সাম্রাজ্যিক চীনের রাজধানী লুয়োইয়াং আক্রমণ করল।
৫৪২ চীনা শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন ভিয়েতনামী লাই বন। সাময়িক সাফল্য পেলেন, প্রতিষ্ঠা করলেন নিজের রাজ্য। ৫৪৬ সালে চীনাদের হাতে পরাস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত লাই বন ক্ষমতায় থাকবেন।
৫৮১-৬১৮ সুই রাজবংশ।
৫৮১-৬০১ চীনের প্রথম সুই সম্রাট ওয়েনদির রাজত্বকাল।
৬০৪-১৮ চীনের দ্বিতীয় ও শেষ সুই সম্রাট ইয়াংদির রাজত্বকাল।
৬১৮-৯০৭ তাং রাজবংশ।*
* এ সময় তাওধর্মের, যা দাওধর্ম নামেও পরিচিত, বিকাশ ঘটে।
৬১৮-২৬ চীনের প্রথম তাং সম্রাট গাওজুর রাজত্বকাল।
৬১৮ চীনের তাং রাজবংশ নাম ভিয়েতএর নাম পাল্টে আন্নাম রাখল।
৬২৬-৪৯ চীনে তাং সম্রাট তাইজংয়ের রাজত্বকাল।
৬৩৪ তিব্বত ও চীনের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি সাক্ষরিত।
৬৪৯-৮৩ চীনে তাং সম্রাট গাওজংয়ের রাজত্বকাল।
৬৬৮ চীনের তাংদের আক্রমণে কোরিয়ার গোগুরইয়েও রাজ্যের পতন।
৬৯০-৭০৪ চীনের ইতিহাসের একমাত্র সম্রাজ্ঞী উ জেতিয়ানের রাজত্বকাল।
৭১২-৫৬ চীনে তাং সম্রাট জুয়ানজংয়ের রাজত্বকাল।*
* তাওধর্ম, যা দাওধর্ম নামেও পরিচিত, এসময় চীনের দরবারি ধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি পায়।
৭৫৬-৯০৭ চীনে এসময় তাং রাজবংশের অবক্ষয় শুরু হয়। সাম্রাজ্যিক অনুগ্রহের ওপর টিকে থাকা তাওবাদী দর্শনের, যা দাওবাদী দর্শন নামেও পরিচিত, জনপ্রিয়তাও একইসাথে কমে আসতে থাকে। জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে কনফুশীয়বাদ ও বৌদ্ধধর্ম।
৭৬৮-৮২৪ চীনের শেকসপীয়ার বলে খ্যাত হান ইয়ু’র জীবনকাল।
৮৪২-৪৫ চীনের বৌদ্ধ ভিক্ষু ও তাঁদের মঠগুলোর ওপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন।
৮৪৩ আন্তঃমঙ্গোলিয়ায় হামলা চালিয়ে ১০,০০০ যাযাবর উইঘুরকে হত্যা করল তাং সাম্রাজ্য।
৯০৭-৯৬০ পাঁচ রাজবংশ আর দশ রাজ্য পর্ব।
৯০৭-১১২৫ খিতান গোষ্ঠীর মানুষেরা প্রতিষ্ঠা করলেন লিয়াও রাজবংশ। মঙ্গোলিয়ার একাংশ, মাঞ্চুরিয়া, আর চীনের উত্তরাঞ্চল শাসন করছেন লিয়াওরা।
৯৩৭-৭৫ চীনে আকর্ষণীয় দেখানোর নামে মেয়েদের পা বেঁধে রাখার জঘন্য অমানবিক পিতৃতান্ত্রিক প্রথার প্রথম উল্লেখ এসময় থেকে পাওয়া যায়।
৯৩৮ খিতানদের লিয়াও রাজবংশ চীনের উত্তরাঞ্চলে হামলা চালাল। বাখ দাং নদীর ঐতিহাসিক সমরে চীনাদেরকে পরাস্ত করলেন ভিয়েতনামী সেনাপতি নগো কুয়েন।
৯৩৯ চীনা শাসনের হাত থেকে মুক্ত নাম ভিয়েত-এর রাজা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করলেন নগো কুয়েন।
৯৬০-১১২৫ উত্তর সং রাজবংশ।
৯৭৬-৯৭ এসময় চীন শাসন করছেন সং সম্রাট তাইজং।
৯৯০-১০৩০ চীনা চিত্রকর ফান কুয়ানের জীবনকাল।
৯৯৭-১০২২ এসময় চীন শাসন করছেন সং সম্রাট ঝেনঝং।
১০০৪ চীনে লিয়াও আর সংদের মধ্যে শানইউয়ান চুক্তি।
১০২২-৬৩ এসময় চীন শাসন করছেন সং সম্রাট রেনজং।
১০২৩ চীনে প্রথমবারের মত ব্যবহৃত হচ্ছে কাগজের মুদ্রা।
১০৬৩-৬৭ এসময় চীন শাসন করছেন সং সম্রাট ইয়িংজং।
১০৬৭-৮৪ এসময় চীন শাসন করছেন সং সম্রাট শেনজং।
১০৮৫-১১০০ এসময় চীন শাসন করছেন সং সম্রাট ঝিজং।
১১০০-২৬ এসময় চীন শাসন করছেন সং সম্রাট হুইজং।
১১১৫-১২৩৪ মঙ্গোলিয়া ও চীনের উত্তরাঞ্চলে জুর্জেন জিন রাজবংশ।
১১১৫-২৩ জুর্জেন জিন রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট তাইজুর রাজত্বকাল।
১১২৫ সং রাজবংশের ওপর জুর্জেন জিনরা হামলা চালাল। এতে সংরা চীনের দক্ষিণাঞ্চলের দিকে সরে আসল। সেখানে প্রতিষ্ঠা করল তারা দক্ষিণ সং রাজবংশ।
১১২৫-১২৭৯ দক্ষিণ সং রাজবংশ।
১১২৭-৬২ এসময় দক্ষিণ চীন শাসন করছেন দক্ষিণ সং সম্রাট গাওজং।
১১৩৮ হাংঝৌকে (লিনান) দক্ষিণ সং রাজবংশ তাদের রাজধানী বানাল।
১১৪২ জুর্জেন জিন আর দক্ষিণ সংরা আনুষ্ঠানিকভাবে একটি শান্তি চুক্তিতে সই করল।
১১৫৩ জুর্জেন জিনরা তাদের রাজধানী শানজিং (হারবিন) থেকে সরিয়ে ইয়ানজিংয়ে (বেইজিং) নিয়ে আসল।
১১৬২-৮৯ এসময় দক্ষিণ চীন শাসন করছেন দক্ষিণ সং সম্রাট জিয়াওজং।
১১৮৯-৯৪ এসময় দক্ষিণ চীন শাসন করছেন দক্ষিণ সং সম্রাট গুয়াংজং।
১১৯৪-১২২৪ এসময় দক্ষিণ চীন শাসন করছেন দক্ষিণ সং সম্রাট নিনজং।
১২০৫, ১২০৯, ১২১১, ১২১৫ চীনের উত্তরাঞ্চলের জুর্জেন জিনদের ওপর মঙ্গোলদের একের পর এক হামলা।
১২২৪-৬৪ এসময় দক্ষিণ চীন শাসন করছেন দক্ষিণ সং সম্রাট লিজং।
১২৩৪ ফেব্রুয়ারি জুর্জেন জিনদের নিয়ন্ত্রণে থাকা উত্তর চীন দখল করে নিল মঙ্গোলরা।
১২৬৪-৭৪ এসময় দক্ষিণ চীন শাসন করছেন দক্ষিণ চীন সম্রাট দুজং।
১২৭১ চীনে কুবলাই খান প্রতিষ্ঠা করলেন ইউয়ান রাজবংশ।
১২৭১-১৩৬৮ মঙ্গোলদের ইউয়ান রাজবংশ।
১২৭৩ মঙ্গোলদের হাতে জিয়াংইয়াংয়ের পতন ঘটল।
১২৭৪-৭৫ এসময় দক্ষিণ চীন শাসন করছেন দক্ষিণ সং সম্রাট গংজং।
১২৭৫-৭৭ এসময় দক্ষিণ চীন শাসন করছেন দক্ষিণ সং সম্রাট দুয়ানজং।
১২৭৫-৭৯ সং চীনের যেটুকু অবশিষ্ট ছিল, কুবলাই খানের নেতৃত্বে সেটুকুও দখল করে নিল মঙ্গোলরা।
১২৭৮-৭৯ এসময় দক্ষিণ চীন শাসন করছেন দক্ষিণ সং রাজবংশের শেষ সম্রাট দিবিং।
১৩৬৮-১৬৪৪ মিং রাজবংশ।
১৩৯২ কোরিয়ায় স্থাপিত হল ইয়ি রাজবংশ, ইয়িরা ১৯১০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।
১৫১৩ মুক্তা নদীর মোহনায় নোঙর ফেলল একটি পর্তুগিজ জাহাজ। পর্তুগিজ নাবিক হোর্হে আলভারেজ হংকংয়ে আদিতম ইওরোপীয় পর্যটক।
১৫২০-২৯ পর্তুগিজ বণিকরা হংকংয়ে ঘাঁটি গাড়লেও সামরিক সংঘাতের পর তারা সেখান থেকে বহিষ্কৃত হল।
১৫২১-৪৯ পর্তুগিজরা মাকাওয়ে জবরদস্তিমূলকভাবে বাণিজ্যকুঠি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালাল, কিন্তু একাধিক সমরে মিং চীনা বাহিনীর হাতে পরাস্ত হল।
১৫৪৯ পর্তুগিজ-চীনা বাণিজ্য সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হল।
১৫৫০-১৬০০ চীনা রেশমি পণ্য জাপানে রফতানি করার মূল সংযোগসূত্র হিসেবে মাকাওয়ের বাণিজ্য উৎকর্ষের চূড়ায় পৌঁছাল।
১৫৫৪ ‘লুসো-চীন চুক্তি’: পর্তুগিজরা মাকাওকে একটা বাণিজ্যকুঠি হিসেবে ভাড়া নিল।
১৫৫৭ মাকাওয়ের ওপর চিরস্থায়ী লিজ বুঝে পেল পর্তুগাল।
১৬২২ ওলন্দাজরা মাকাও দখল করে নেয়ার চেষ্টা চালাল।
১৬৩০-৩৯ উত্তর চীনের মাঞ্চুরা কোরিয়া দখল করে নিল। শাসন করতে লাগল। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে ইয়ি রাজবংশেরই অধীনস্ত রইল দেশটি।
১৬৪০-৪৯ জাপানিরা বাণিজ্য স্থগিত করলে মাকাওয়ের অর্থনীতিতে বিপর্যয় দেখা দিল। এসময়ই কখনো স্পেনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে পর্তুগাল। পর্তুগিজদের হাত থেকে মালাক্কা ওলন্দাজদের হাতে পড়ল।
১৬৪৪-১৯১১ মাঞ্চু রাজবংশ, কিং রাজবংশ বলেও পরিচিত।
১৬৫০-৫৯ ওলন্দাজরা এসময় তাইওয়ানে চীনা অভিবাসনে উৎসাহ যোগাচ্ছে, চীনা চাষীদেরকে শস্তায় কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে।
১৬৬৪ তাইওয়ানে ওলন্দাজ উপনিবেশিক শাসনের অবসান হল, এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেন চীনা সমরনায়ক ছেং চেং-কুং।
১৬৮০ এই দশক নাগাদ ১ থেকে দেড় লক্ষ হান চীনা বসতিস্থাপনকারী তাইওয়ানে বসতিস্থাপন করলেন।
১৬৮৩ চীনের কিং রাজবংশ তাইওয়ান দখল করে নিল।
১৭০১-১৮০০ পশ্চিমাদের কাছে আফিম বাণিজ্যের কদর বৃদ্ধি পাওয়ায় মাকাও একটি বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হল।
১৭৫৭ ক্যান্টন ব্যবস্থার অধীনে বৈদেশিক বাণিজ্যের ওপর নানা ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করল কিন চীন। এতে ওভারসিজ বাণিজ্যের কেন্দ্র হয়ে উঠল দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের ক্যান্টন বন্দর। বর্তমানে যার নাম গুয়াংঝু।
চা, রেশম, ও পোর্সেলিনের মত চীনা পণ্যের মূল্য পরিশোধ করতে ব্রিটিশ বণিকরা চীনের কাছে বিপুল পরিমাণে ভারতীয় আফিম বিক্রি করল। মাদক সংকটের মুখে, আফিম বাণিজ্য ঠেকাতে কিন কর্মকর্তারা আরো আগ্রাসী পদক্ষেপ নিতে শুরু করলেন।
১৮৩৯-৪২ আফিম যুদ্ধ।
১৮৪২ ১ম আফিম যুদ্ধের ধারাবাহিকতায় হংকংকে গ্রেট ব্রিটেনের হাতে তুলে দিল চীন। পরবর্তী দশকগুলোতে হাজার হাজার চীনা অভিবাসী উপনিবেশটিতে বসতিস্থাপন করলেন।
১৮৪০-৬৪ তাইপিং বিদ্রোহ।
১৮৫০ এসময়ই কখনো বাণিজ্যে মাকাওকে ছাড়িয়ে যায় হংকং।*
* বণিকরা ধীরে ধীরে পর্তুগিজ-নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ড ছেড়ে যায়।
১৮৬০ পিকিং সম্মেলন, কওলুনকে আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের হাতে তুলে দিল হংকং।
১৮৭৭ চীন সফর করলেন ইউলিসিস এস. গ্রান্ট, যিনি পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন।
১৮৯৪-৯৫ প্রথম চীন-জাপান যুদ্ধ। শিমোনোসেকি চুক্তি। এই যুদ্ধে মাত্র ৯ মাসে হেরে যায় চীন এবং তাইওয়ান চীনের হাতছাড়া হয়।
১৮৯৮ জুলাই ১ চীন হংকংয়ের দ্য নিউ টেরিটোরিজকে ২৩৫টি দ্বীপের সাথে ৯৯ বছরের জন্য ব্রিটেনের কাছে লিজ দিল।
১৮৯৯ চীনে খনি প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত আছেন হার্বার্ট হুভার, যিনি পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন।
১৯০০ বক্সার বিদ্রোহ।
১৯১১ চীনে কয়েক হাজার বছরের রাজতান্ত্রিক শাসনের অবসান। গণতান্ত্রিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে চীনে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত। চীন প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষিত হলেন সান ইয়াত-সেন।
১৯১৪-১৮ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।
১৯২১ সাংহাইয়ে প্রতিষ্ঠিত হল চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি)।
১৯২৬ সান ইয়াত-সেনের মৃত্যুতে চীনের জাতীয়তাবাদী নেতায় পরিণত হলেন চিয়াং কাই-শেক।
১৯২৭ চীনা কমিউনিস্টদের ওপর ভয়াবহ দমননিপীড়ন চালাল জাতীয়তাবাদীরা।
১৯৩১ চীনের মাঞ্চুরিয়া প্রদেশ দখল করে নিল সাম্রাজ্যিক জাপান, একটি পুতুল সরকারকে ক্ষমতায় বসাল।
১৯৩৪-৩৫ মাও জেদং’য়ের নেতৃত্বে চীনা কমিউনিস্টদের ঐতিহাসিক লংমার্চ।
১৯৩৭ চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল সাম্রাজ্যিক জাপান। সাংহাই, বেইজিং, ও নানজিং দখল করে নিল। রেপ অফ নানজিং।*
* নানজিংয়ে সাম্রাজ্যিক জাপানের হাতে ৩ লক্ষ চীনা বেসামরিক নাগরিক খুন হন, চীনা নারীরা পদ্ধতিগত ধর্ষণের শিকার হন।
সাম্রাজ্যিক জাপানের সামরিক আগ্রাসনের মুখে হাজার হাজার চীনা শরণার্থী তাঁদের মূল ভূখণ্ড থেকে পালিয়ে হংকংয়ে আশ্রয় নিলেন। চীনের কমিউনিস্ট আর জাতীয়তাবাদীরা গঠন করল যুক্তফ্রন্ট।
১৯৩৭-৪৫ সাম্রাজ্যিক জাপানের বিরুদ্ধে চীনের যুদ্ধ।
১৯৩৯-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।*
* জাপানের উপনিবেশিক দখলদারিত্বের বাইরে থাকার কারণে চীনা ও ইওরোপীয়দের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয় মাকাও।
১৯৪১ সাম্রাজ্যিক জাপান দখল করে নিল হংকং। খাদ্য সংকটের দরুণ অনেকেই চীনে পালিয়ে গেলেন।
১৯৪১-৪৫ জাপানি দখলদারিত্বে হংকংয়ের জনসংখ্যা ১৯৪১ সালের ১৬ লক্ষ থেকে কমে ১৯৪৫ সালে ৬ লক্ষ ৫০ হাজারে নেমে এল।
১৯৪৩ কায়রো চুক্তি তাইওয়ানকে চীনা জাতীয়তাবাদীদের হাতে তুলে দিল।
১৯৪৫ মিত্রপক্ষ তাইওয়ানের নিয়ন্ত্রণ চীনের হাতে অর্পণ করল। প্রতিষ্ঠিত হল ভিয়েতনাম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। সাম্রাজ্যিক জাপানের আত্মসমর্পণ।
১৯৪৬ হংকংয়ে বেসামরিক সরকার পুনর্বহাল করল ব্রিটেন।
১৯৪৬-৪৯ চীনের গৃহযুদ্ধের বছরসমূহ।
১৯৪৭ চীনা জাতীয়তাবাদী কুয়োমিনটাং শাসনের বিরুদ্ধে তাইওয়ানিদের বিদ্রোহ। তাইওয়ানে সামরিক আইন জারি করল চীনা জাতীয়তাবাদীরা। মুক্ত নির্বাচনের দাবি তোলা বহু প্রতিবাদী খুন।
১৯৪৯ জাতীয়তাবাদীদের বাহিনীর বিরুদ্ধে কমিউনিস্টদের পিপল’স লিবারেশন আর্মির জয়লাভের মধ্য দিয়ে চীনের গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি। চীনকে একটি গণপ্রজাতন্ত্র ঘোষণা করলেন মাও জেদং। গণ চীনে কমিউনিস্ট পার্টির একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হল।
১৯৪৯-৫০ চীনের গৃহযুদ্ধে কমিউনিস্টদের হাতে জাতীয়তাবাদীদের পরাজয় ঘটে। এর ফলে চিয়াং কাইশেকের কুয়োমিনটাংয়ের সাথে যুক্ত প্রায় দুই লক্ষ চীনা জাতীয়তাবাদী পালিয়ে গিয়ে তাইওয়ানে আশ্রয় নেন। ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত তাইওয়ান, যার আনুষ্ঠানিক নাম চীন প্রজাতন্ত্র, কার্যত একটি কুয়োমিনটাং-নিয়ন্ত্রিত একদলীয় একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র ছিল।*
*১৯৭০য়ের দশক পর্যন্ত জাতিসংঘ ও পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো এই তাইওয়ানভিত্তিক চীন প্রজাতন্ত্রকেই চীনের বৈধ সরকার বলে গণ্য করেছে।
১৯৪৯-৫৩ তাইওয়ানে চীনা জাতীয়তাবাদী সরকারের ‘চাষীর জন্য জমি’ কর্মসূচি।
১৯৫০ জানুয়ারি ভিয়েতনাম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রকে স্বীকৃতি প্রদান করল ও হো চি মিন সরকারের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করল সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীন। চীনাদের আর্থিক ও সামরিক সাহায্য পেল ভিয়েতনাম।
কোরীয় যুদ্ধের সূচনা।*
* কোরিয়া যুদ্ধের সময় চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব তৈরি হলে মার্কিন মিত্র হয়ে ওঠে তাইওয়ান। উত্তর কোরীয় আর চীনা সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্বমূলক ভূমিকা পালন করে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী।
১৯৫০-৫৯ টেক্সটাইলের মত হালকা শিল্পের ভিত্তিতে হংকংয়ের অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ।
১৯৫১ মাকাও আনুষ্ঠানিকভাবে পর্তুগালের ওভারসিজ প্রদেশে পরিণত হল।
১৯৫৩ জুলাই ২৭ জাতিসংঘের বাহিনী, চীনা বাহিনী, আর উত্তর কোরিয়ার বাহিনী কোরীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই করল।
১৯৫৬-৫৭ শত ফুল ফুটতে দাও প্রচারাভিযান।
১৯৫৮ গ্রেট লিপ ফরওয়ার্ড।
১৯৬০-৬৯ হংকংয়ে সামাজিক অসন্তোষ ও শ্রমিক আন্দোলনের দশক।*
* দশকের শেষদিকে দেশটিতে জীবনমানের উন্নতি ঘটায় সামাজিক অসন্তোষ আস্তে আস্তে থিতিয়ে আসে।
১৯৬২ চীন-ভারত সীমান্ত যুদ্ধ।
১৯৬৪ চীন তার প্রথম পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটাল।
১৯৬৬-৭৬ ‘মহান সর্বহারা সাংস্কৃতিক বিপ্লব’।
১৯৬৬ ১২-৩ ঘটনা, চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের অনুপ্রেরণায় মাকাওয়ে পর্তুগিজ শাসনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলন দেখা দিল। ৮ জন খুন হলেন, ২০০র বেশি আহত। এই ঘটনার ফলে মাকাওয়ের ওপর পর্তুগালের নিয়ন্ত্রণ ব্যাপকভাবে হ্রাস পায় এবং ভূখণ্ডটি কার্যত চীনের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
১৯৬৭ চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের অনুসারীদের তৎপরতার কারণে হংকং জুড়ে একাধিক আন্দোলন দেখা দিল।
১৯৬৯ মাও সেতুং ও চৌ এন লাই সিহানুককে চীনে আশ্রয় দিলেন। চীনের মধ্যস্ততায় সিহানুক ও পল পটের নেতৃত্বাধীন কম্বোডীয় কমিউনিস্টদের মধ্যে ঐক্যজোট গঠিত হল।
১৯৭০ এসময় সিহানুক গণ চীনে নির্বাসিত ছিলেন। তিনি একটি গেরিলা আন্দোলন গঠন করলেন। উত্তর ভিয়েতনামী বাহিনী আর কম্বোডিয়ার কমিউনিস্ট গেরিলা খেমার রুজ বাহিনীর হাতে ভূখণ্ড হারাতে শুরু করল কম্বোডীয় সেনাবাহিনী।
১৯৭০-৭৯ একটি “এশীয় বাঘ” হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হল হংকং। হয়ে উঠল অঞ্চলটির অন্যতম অর্থনৈতিক ক্ষমতাকেন্দ্র। অর্থনীতির ভিত্তি হাই-টেক শিল্প।
১৯৭১ চিয়াং কাইশেক দ্বৈত প্রতিনিধিত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন। জাতিসংঘ গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারকে চীন রাষ্ট্রের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি বলে স্বীকার করে নিল। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আসন লাভ করল চীন।
১৯৭২ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের ঐতিহাসিক চীন সফর, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণের সূচনা। জাপানের প্রধানমন্ত্রী চীন সফর করলেন, দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হল। এর ধারাবাহিকতায় তাইওয়ানে নিজ দূতাবাস বন্ধ করে দিল জাপান
১৯৭৪ প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে চীনের সাথে দক্ষিণ ভিয়েতনামের সংঘাত। পর্তুগালে সামরিক ক্যুদেতার ধারাবাহিকতায় মাকাওকে অধিকতর প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দেয়া হল।
১৯৭৫ চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) খেমার রুজদের ১ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা প্রদান করে। সিহানুক কম্বোডিয়ায় ফেরেন, তাঁকে গৃহবন্দী করা হয়। ভিয়েতনামের একটি প্রতিনিধিদল কম্বোডিয়া সফর করতে এলে পল পট তাঁদেরকে একটি কুমিরের বাচ্চা উপহার দেন।
অক্টোবর ৪ বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করল গণচীন।
চিয়াং কাইশেকের মৃত্যু।
১৯৭৬ মাও জেদংয়ের মৃত্যু।
১৯৭৭ জানুয়ারি ২-৭ জিয়াউর রহমানের চীন সফর। হুয়া-জিয়া বৈঠক আয়োজিত। চীনের সাথে বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যচুক্তি সই, ঘোষিত হল বাংলাদেশ-চীন ইশতেহার।
দেং জিয়াওপিংয়ের নেতৃত্বে চীনের অর্থনৈতিক সংস্কার শুরু হল।
১৯৭৮ মার্চ বাংলাদেশের নিমন্ত্রণে দেশটি সফর করলেন চীনের ভাইস প্রিমিয়ার লি জিয়াননিয়ান। এসময় দুই দেশের মধ্যে অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহায়তা চুক্তি সই হয়।
১৯৭৯ “এক চীন নীতি” গ্রহণ করল যুক্তরাষ্ট্র, তাইপেইয়ের বদলে বেইজিংকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দিল। এবছরই দেশটিতে তাইওয়ান রিলেশনস অ্যাক্ট প্রণীত হয়। যা পরিষ্কারভাবে বলল, চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তের পেছনে ভবিষ্যতে তাইওয়ান সংকট শান্তিপূর্ণভাবে সুরাহা করা হবে এই প্রত্যাশা আছে।
ভিয়েতনামীদের হাতে কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনের পতন ঘটল। পল পটসহ অপরাপর খেমার রুজ নেতারা কম্বোডিয়া ছেড়ে পালিয়ে গেলেন। আশ্রয় নিলেন দেশটির থাইল্যান্ড সীমান্তে। ভিয়েতনামের উদ্যোগে কম্বোডিয়ায় গঠিত হল গণপ্রজাতন্ত্রী কম্পুচিয়া। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেশটিতে “ভিয়েতনামী আগ্রাসনের” নিন্দা জানাল। খেমার রুজদের ব্যাকার চীন ভিয়েতনাম আক্রমণ করল, দুদেশের মধ্যে ১৬ দিনের সীমান্তযুদ্ধ। ভিয়েতনামীরা এই যুদ্ধে চীনাদেরকে পিছু হঠিয়ে দেয়।
১৯৮০ আগস্ট চীন সফর করলেন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
১৯৮২ হংকংয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্রিটেনের সাথে চীনের সংলাপ শুরু।
১৯৮২, ১৯৮৫, ১৯৮৭, ১৯৮৮, ১৯৯০ টানা পাঁচবার চীন সফর করেন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। দুদেশের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহায়তা চুক্তি সই হয়। এছাড়াও দেশ দুটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে সাক্ষাতের ব্যবস্থা বিষয়ক চুক্তিও সাক্ষরিত হয়।
১৯৮৪ ব্রিটেন ও চীনের মধ্যকার হংকং যৌথ ঘোষণা। এই ঘোষণায় বলা হল, ১৯৯৭ সালে হংকংকে আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের হাতে তুলে দেয়া হবে। “এক দেশ, দুই ব্যবস্থা” ফর্মুলা মেনে, চীনা কমিউনিস্টদের দ্বারা শাসিত হবে হংকং, তবে হস্তান্তরের পর থেকে ৫০ বছর ধরে নিজস্ব পুঁজিবাদী ও আংশিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখবে।
১৯৮৬ মার্চ বাংলাদেশ সফর করলেন চীনা প্রেসিডেন্ট লি জিয়াননিয়ান।
১৯৮৭ ব্রিটেন ও চীনের মধ্যে সম্পাদিত হংকং যৌথ ঘোষণার আদলে মাকাওকে চীনের কাছে ফিরিয়ে দিতে রাজি হল পর্তুগাল।
১৯৮৯ তিয়েনআনমেন স্কয়ারের ঘটনা। হংকংয়ে অধিকতর গণতান্ত্রিক সুরক্ষাকবচ প্রবর্তনের দাবি উঠল।
নভেম্বর বাংলাদেশে সাবেক প্রিমিয়ার লি পেংয়ের আনুষ্ঠানিক শুভেচ্ছা সফর।
১৯৯০ গণ চীনের বিরুদ্ধে তাইওয়ান ৪০ বছর ধরে যে যুদ্ধাবস্থায় ছিল, এবছর তার অবসানের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিল তাইওয়ান।
হংকংয়ের “বেসিক ল” আনুষ্ঠানিকভাবে অণুসমর্থন করল ব্রিটেন।
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হল এশিয়ান গেমস।
১৯৯১ জুন চীনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আনুষ্ঠানিক শুভেচ্ছা সফর।
১৯৯২ ভিয়েতনামের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত করল চীন।
এপ্রিল হংকংয়ের শেষ ব্রিটিশ গভর্নর হলেন ক্রিস প্যাটেন।
ডিসেম্বর হংকংয়ের স্টক মার্কেটে ধ্বস নামল।
১৯৯৩ আগস্ট ঐতিহাসিক কোনো বিবৃতি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চীনা ও কোরীয় নারীসহ প্রতিপক্ষের নারীদের ওপর সাম্রাজ্যিক জাপানি সেনাবাহিনীর চালানো পদ্ধতিগত ধর্ষণ-নির্যাতনের দায় স্বীকার করে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইল জাপান।
১৯৯৪ কাশগড়ে বান ছাও মেমোরিয়াল পার্ক গঠন করল শিনচিয়াং সরকার। হাজার বছর আগে হানদের শিনচিয়াং বিজয় উদযাপন করতে। ২০১০ সালে পার্কটিকে পান্টু সিটি সিনিক এরিয়ায় সম্প্রসারিত করা হয়।
১৯৯৫ হংকংয়ের নয়া আইনসভা পরিষদের নির্বাচন আয়োজিত হল।
১৯৯৬ সেপ্টেম্বর চীনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক শুভেচ্ছা সফর।
১৯৯৭ “ইসলামি মৌলবাদ ও উইঘুর বিচ্ছিন্নতাবাদ”য়ের জুজু দেখিয়ে শিনচিয়াংয়ের বৃহত্তম আধ্যাত্মিক উৎসব ওরদাম পাদিশাহ মাজারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল চীনের কমিউনিস্ট পার্টি।*
* এবছর থেকেই অন্য মাজারকেন্দ্রিক উৎসবগুলোও ক্রমবর্ধমান সরকারি বিধিনিষেধের আওতায় আসে।
দেং জিয়াওপিংয়ের মৃত্যু।
জুলাই হংকংয়ে দেড়শো বছরের ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের অবসান। অঞ্চলটি শাসন করতে বেইজিং কর্তৃক মনোনীত হলেন সাংহাইয়ে জন্ম নেয়া সাবেক জাহাজশিল্প টাইকুন তুং ছি-হুয়া, যাঁর কোন রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল না। হংকংকে চীনের হাতে তুলে দেয়ার প্রতিবাদে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেইয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন ৭০,০০০ মানুষ।
১৯৯৮ মে হস্তান্তরের পর হংকংয়ের প্রথম নির্বাচন আয়োজিত হল।
১৯৯৯ চীনা সার্বভৌমত্বের অধীনে মাকাও একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলে (এসএআর) পরিণত হল।
চীনের মূল ভূখণ্ডে ফালুন গ্যাংকে নিষিদ্ধ করা হল, যদিও হংকংয়ে সংগঠনটি সক্রিয় থাকল।
২০০০ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট জিয়াং জেমিন আয়োজিত ব্রেকফাস্ট সভায় অংশ নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০০১ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) যোগ দিল চীন।
ফেব্রুয়ারি বেইজিংয়ের চাপের মুখে পদত্যাগ করলেন হংকংয়ের ডেপুটি নির্বাহী প্রধান আনসন চ্যান। হংকংয়ের যেসব প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি দেশটিতে চীনা হস্তক্ষেপের বিরোধী ছিলেন তিনি তাঁদের একজন। আনসন চ্যানের স্থলাভিষিক্ত হলেন ডোনাল্ড স্যাং।
নির্বাসিত তিব্বতী আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা তাইওয়ানি প্রেসিডেন্ট ছেনের সাথে সাক্ষাৎ করলেন, চীন এর কড়া প্রতিবাদ জানাল।
২০০২ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফর করলেন চীনের প্রিমিয়ার ঝু রংজি।
জুন হংকংয়ে বেইজিংয়ের লিয়াজোঁ অফিসের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে ফালুন গ্যাংয়ের ১৬ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হল।
সেপ্টেম্বর তুং ছি-হুয়া প্রশাসন একটি নতুন অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতা-বিরোধী আইনের প্রস্তাব পেশ করল, যা “আর্টিকেল ২৩” নামে পরিচিতি পাবে।
ডিসেম্বর চীন সফর করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
বাংলাদেশের সাথে অনেকগুলো চুক্তি সই করল চীন।
২০০৩ মার্চ-এপ্রিল চীন আর হংকং উভয়েই সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হল।
অসুখটির বিস্তার ঠেকাতে কড়া কোয়ারেন্টাইন উদ্যোগ গৃহীত।
জুন হংকংকে সার্স ভাইরাস মুক্ত ঘোষণা করা হল।
জুলাই হংকং সফর করলেন চীনা প্রিমিয়ার ওয়েন জিয়াবাও। পরদিন ৫ লক্ষ মানুষ ‘আর্টিকেল ২৩’য়ের বিরুদ্ধে মিছিল করলেন, পদত্যাগ করলেন হংকং সরকারের দুইজন মন্ত্রী। বিলটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হল।
২০০৪ এপ্রিল চীন এই মর্মে হুকুম জারি করল যে, হংকংয়ের নির্বাচনী আইনে কোন পরিবর্তন আনতে হলে বেইজিংয়ের অনুমোদন লাগবে।
জুলাই হংকংকে চীনের হাতে তুলে দেয়ার ৭ বছর পূর্তিতে ২ লক্ষ মানুষ দেশটির নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় চীনা হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এলেন।
সেপ্টেম্বর হংকংয়ের আইনসভা পরিষদের নির্বাচনে বেইজিংপন্থী দলগুলো নিজেদের সংখ্যাগুরু অবস্থান ধরে রাখলেন। এই নির্বাচনকে দেখা হচ্ছিল অধিকতর গণতন্ত্রের জন্য হংকংবাসীর আকাঙ্ক্ষার প্রতীক একটি গণভোট হিসাবে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে আইনসভা পরিষদ নির্বাচনের আগের দিনগুলোতে “আতঙ্কের পরিবেশ” তৈরি করার অভিযোগ আনল।
ডিসেম্বর চীনের প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও প্রকাশ্যে তুং ছি-হুয়ার নিন্দা করলেন, এবং শেষোক্তের প্রশাসনিক কর্মক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পরামর্শ দিলেন।
২০০৫ বেইজিং একটি বিচ্ছিন্নতাবিরোধী বিল প্রণয়ন করল, যাতে চীন থেকে তাইওয়ানের বিচ্ছিন্ন হওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা অবৈধ ঘোষিত হল।
মার্চ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করলেন হংকংয়ের তুং ছি-হুয়া।
২০০৭ এপ্রিল প্রথম চীনা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জাপানের সংসদে ভাষণ দিলেন ওয়েন জিয়াবাও, বললেন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ঘটেছে।
২০০৭-১৫ চীনের কমিউনিস্ট পার্টি শিনচিয়াং জুড়ে একের পর এক মাজারকেন্দ্রিক উৎসব বন্ধ করে দেয়া হতে লাগল, যার অন্তর্গত: নিয়ার নিকটবর্তী ইমাম জে’ফিরি সাদিক মাজার, ইয়েংগিসারের চুজে পাদিশাহিম মাজার, খোটানের নিকটবর্তী উজমে আর ইমাম অসিম মাজার।
২০০৮ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের জন্য উচ্চপদস্থ চীনা কর্মকর্তা ছেন শুই-বিয়ান তাইওয়ান সফর করলেন, তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থীদের তীব্র প্রতিবাদ।
২০০৯ তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই হল।
২০১১ হু আনগাং ও হু লিয়ানগে কর্তৃক একটি “দ্বিতীয় প্রজন্মের” জাতিগত নীতিমালা ঘোষিত হল। যার উদ্দেশ্য হবে জাতিগত ভিন্নতার আইনী স্বীকৃতিপ্রদানকে নিরুৎসাহিত করে “অন্তর্ভুক্তীকরণ নিশ্চিত করা, জাতীয়তাবাদ প্রচার করা, এবং একটি সমসত্ত্ব সমাজ গঠন করা।” ২০১৩ সাল থেকে এই প্রস্তাবের ভাষা ব্যবহার ও আইনী পরিস্থিতি বিষয়ক অংশগুলো নিয়মিতভাবে বাস্তবায়িত হয়ে আসছে।
ফেব্রুয়ারি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে জাপানকে প্রতিস্থাপিত করল চীন।
২০১২ সেপ্টেম্বর পূর্ব চীন সাগরের একগুচ্ছ দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জের ধরে জাপানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ৪০ বছর পূর্তির উৎসব বাতিল করল চীন।*
* জাপান এই দ্বীপগুলোকে বলে সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ। চীনের ভাষায় এগুলো হল দাইয়ু দ্বীপপুঞ্জ। দ্বীপগুলোর ওপর তাইওয়ানেরও দাবি আছে।
২০১৩-২২ একদশকে চীন থেকে বাংলাদেশে আমদানির অর্থমূল্য ৬.৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০১৩) থেকে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১৯.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে (২০২২) উন্নীত হয়েছে। অথচ, এই একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে চীনে রফতানির অর্থমূল্য প্রতি বছরই ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কম ছিল। অর্থাৎ, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি বিপুল।
২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চীন থেকে বাংলাদেশে নেট প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ ফি বছর ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কম ছিল। ২০১৮ সালে তা পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৫০৬.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছায়, পরের বছর এর দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ১১৫৯.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়। ২০২০ সালে তা ব্যাপকভাবে কমে ৮০.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এলেও ২০২২ সাল নাগাদ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৬৫.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছায়।
২০১৩ ডিসেম্বর জাপানি সংসদ একটি নতুন নিরাপত্তা বিধি প্রণয়ন করল ও সামরিক খাতে ব্যয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করল। বিশ্লেষকদের মতে, এটা চীনকে দেয়া একটি বার্তা।
২০১৪ চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে সরকার পর্যায়ের বৈঠক, ১৯৪৯ সালের পর এই প্রথমবারের মত। ভারত সফর করলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
২০১৪-২০ “উন্নয়ন” ও “পরিবেশ রক্ষার” নামে উইঘুরদের সমাধিগুলো ধবংস করতে শুরু করল চীন রাষ্ট্র।
২০১৫ সিঙ্গাপুরে তাইওয়ানি প্রেসিডেন্ট মা ইং-জিউ আর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে এক ঐতিহাসিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হল। চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে বিলিয়ন ডলারের অবকাঠামো চুক্তি সই।
ইয়াং ওয়েইওয়েইয়ের নিবন্ধ অপারেশনাল রিসার্চ অন রিস্ট্রেইনিং দ্য ইনফিল্ট্রেশন অফ রিলিজিয়াস এক্সট্রিমিস্ট থট প্রকাশিত হল। নিবন্ধটিতে বলা হল, “ধর্মীয় উগ্রপন্থী চিন্তাধারা” মোকাবেলায় ইসলামের একটি “ঐক্যবদ্ধ”, “নিয়ন্ত্রিত”, ও “রাষ্ট্র-অনুমোদিত” সংস্করণ জরুরি হয়ে পড়েছে। শিনচিয়াংয়ের “বাড়তি” মসজিদগুলো ধবংস করে ফেলতে হবে।
২০১৫-২০২০ রাষ্ট্রীয় “চীনাকরণ” নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে, মসজিদগুলো চীনের জাতীয় পতাকা ওড়াতে শুরু করল। প্রদর্শন করতে শুরু করল বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ব্যানার। যা “জাতীয় সংহতি” ও “চৈনিক স্বপ্ন” জাতীয় কমিউনিস্ট পার্টির মূল্যবোধগুলো উর্ধ্বে তুলে ধরবে।
২০১৬ স্বাধীনতাপন্থী ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির নেত্রী সাই ইং-ওয়েন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন। চীন তাইওয়ানের সাথে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ স্থগিত করল।
“মসজিদ সংস্কার” প্রচারাভিযানের শুরুয়াত। পুরনো ভবনগুলো মুসল্লিদের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে এই অজুহাত দিয়ে পুরো শিনচিয়াং প্রদেশ জুড়ে হাজারও মসজিদ ধবংস করা হল। কাশগড়ের ৭০% মসজিদ এভাবে ধবংস হয়ে গেল।
২০১৭ জুন বিতর্কিত ভূখণ্ডে চীন কর্তৃক সড়ক নির্মাণের প্রতিবাদ জানাল ভুটান।
জুন-আগস্ট ভুটানের দোকলাম ভূখণ্ড নিয়ে সাময়িক চীন-ভারত উত্তেজনা। চীনের সাথে নেপালের প্রথম যৌথ সামরিক অনুশীলন।
জুলাই দোরবুলিন মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়া হল।
নভেম্বর জিবুতিতে নিজের সামরিক ঘাঁটি সম্প্রসারিত করল জাপান, পর্যবেক্ষকদের মতে এটা আফ্রিকায় চীনের একক প্রভাব হ্রাস করার প্রচেষ্টা।
সিসিপি কর্মকর্তারা দোরে দোরে ঘুরে উইঘুর পরিবারগুলোকে বুঝাতে লাগলেন, “তাঁদের জীবনশৈলী সেকেলে হয়ে গেছে।” উইঘুর শৈলীতে বানানো ঘরবাড়িগুলো গুঁড়িয়ে দিয়ে সেগুলো মূল ভূখণ্ডের শৈলীতে নবরূপে নির্মাণ করতে উদ্যোগী হয়ে উঠল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় মুসলমানদের পুরো পরিবার একসাথে বসে খাওয়াদাওয়া করার ঐতিহ্যিক চর্চা তীব্রভাবে সমালোচিত হল।
শিনচিয়াংয়ের ইসলামি স্থাপত্যকলা সাধারণভাবে আক্রমণের মুখে পড়ল। হোটানের বাহার ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ওপরকার গম্বুজকে একটা অষ্টভুজাকার কাঠামো দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা হল।
২০১৮ কারগিলিক জামে মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়া হল। আগের বছর এই মসজিদের ইমাম ক্বারি হাজিমকে আটক করা হয়েছিল। পরে কারা হেফাজতে মারা যান।
মাতইয়াগ জামে মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়া হল। দুই দশক আগে মুসলমান সম্প্রদায়ের অর্থায়নে এই মসজিদটি নির্মিত হয়। কারামাঈ জেলায় সামষ্টিকভাবে নামাজ পড়ার আর একটি স্থানও অবশিষ্ট রইল না।
মার্চ খোটানের প্রায় ৮০০ বছর পুরনো ঐতিহ্যবাহী ও স্থানীয় মুসলমানদের সম্প্রদায়গত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র ইউতিয়ান আইতিকা মসজিদ ধবংস করা হল। অঞ্চলটিকে পর্যটন গন্তব্যে রূপান্তরিত করার বৃহত্তর রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার অংশ হিসাবে শিনচিয়াংয়ের বৃহত্তম মসজিদ কেরিয়া ঈদ কাহ মসজিদের গেটহাউজ ধবংস করা হল।
২০১৯ এপ্রিল পার্কিং লট বানানোর অজুহাত দিয়ে খোটানের সুলতানিম কবরস্থান গুঁড়িয়ে দেয়া হল। এই সমাধিস্থলে ৪ জন সুলতানের সমাধি আছে। যা মুসলমান তীর্থযাত্রীদের একটি জনপ্রিয় গন্তব্য ছিল।
২০২০ মার্চ লাদাখের গালওয়ানে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএএস) ভারতীয় ও চীনা সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘাত ছড়িয়ে পড়ল। অন্তত ২০ জন জওয়ান এতে নিহত হন। দেশদুটির মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেয়।
সেপ্টেম্বর দ্য অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইন্সটিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হল, শিনচিয়াংয়ের ৬৫ শতাংশ মসজিদ (সংখ্যায় প্রায় ১৬,০০০) “সরকারি নীতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ধবংস হয়ে গেছে।”
২০২১ আগস্ট ১৫ তালেবানদের হাতে কাবুলের পতন ঘটল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের বৈদেশিক রিজার্ভ ফ্রিজ করল। ইওরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়ে দিল, তালেবান সরকারের সাথে তাঁরা কোন ধরণের আলাপ-আলোচনায় অংশ নেবে না। পাকিস্তান, চীন, ও রাশিয়া কিছু শর্তসাপেক্ষে তালেবান সরকারের সাথে সম্পর্ক রক্ষায় আগ্রহ দেখাল।
২০২২ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দুই ঘন্টা ধরে মোবাইলে কথা বললেন। বাইডেন শিকে এই বলে আশ্বস্ত করলেন যে তাইওয়ানের ব্যাপারে মার্কিন নীতি অপরিবর্তিত আছে।
জুলাই ১৯ স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেল, দোকলাম মালভূমির ভুটানি অংশের পুব দিকে চীনারা বসতিস্থাপন করছে। উল্লেখ্য যে, দোকলাম নিয়ে ভারত-চীন দ্বন্দ্ব আছে।
আগস্ট মার্কিন হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির অপ্রত্যাশিত তাইওয়ান সফর চীন-তাইওয়ান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটাল, যুদ্ধের আশঙ্কা।
২০২৩ মার্চ চীনের মধ্যস্ততায় সৌদি-ইরান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নাটকীয় উন্নতি। প্রক্রিয়াটি চলমান আছে। সফল হলে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে নজিরবিহীন পরিবর্তন আসবে।
তথ্যসূত্র
Wangu, Madhu Bazaz. 2009. Buddhism. 4th ed. New York: Chelsea House.
Whiteford, Gary T., and Salter, Christopher L.. 2010. China. 2nd ed. New York: Chelsea House.
BBC
Foreign Affairs
The Business Standard
Xinhua News Agency
World History Encyclopedia
Xinjiang Documentation Project
নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।
অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ
দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি