বাংলাদেশ

Spread the love

Featured Image: Wikimedia Commons.

বিশ্ব মানচিত্র ব্লগ

উৎসর্গ
ফাতেমা আক্তার (১৯৬৩-২০১৯)
“মানুষের একটাই মাতৃভূমি থাকে — তার মায়ের কবর।”

পূর্বসাল

৩০০০-২০০১ হরপ্পা সভ্যতা

৪৫০ গঙ্গাঋদ্ধি রাজ্য

সাল

৩৩৫ বাংলাকে গুপ্ত সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হল।

৫৭০ হযরত মুহাম্মদের (সা.) জন্ম।

৬০৫-৬৩৭ গৌড়ে শশাঙ্কের উত্থান।

৬৪০ চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙের বর্ণনায় পূর্ববঙ্গের কথা উল্লেখ করা হল।

৬৫০-৭৫০ উত্তরবঙ্গে মাৎস্যন্যায় পর্ব

৭০১-১২০০ বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রথমবারের মত মুসলমানদের আগমন।

৭৬০-১১৪২ বাংলা, বিহার, ও আসাম শাসন করছেন পাল রাজবংশ

৯০০-১০৪৫ বঙ্গে চন্দ্র রাজবংশ

৯৫০ এ সময়ের কাছাকাছি কখনো জন্ম নেয় বাংলা ভাষা।

১০২১-২৪ বঙ্গে অভিযান চালালেন দক্ষিণ ভারতের রাজেন্দ্র চোল।

১০৪০ তিব্বত সফর করলেন পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান।

১০৭০ বরেন্দ্রে কৈবর্ত বিদ্রোহ।

১১০১-১২০০ এ সময় সেন রাজ্যের রাজধানী ছিল লক্ষণাবতী।

১১৪২-১২৩০ বাংলায় সেন রাজবংশ

১২০৪ লক্ষণ সেনকে হারিয়ে বখতিয়ার খলজির নবদ্বীপ জয়।

১২০৫ বখতিয়ার খলজির সৈন্যরা গৌড়ের পুরাতন রাজধানী লক্ষণাবতী – বর্তমান গৌড় ও মালদহ – দখল করে নিল। এই শহরের নামে বখতিয়ার তাঁর নবলব্ধ রাজ্যের নাম রাখলেন লখনৌতি।* চারদিক থেকেই নদীবেষ্টিত এই রাজ্যের পূর্বে ছিল করতোয়া, পশ্চিমে গঙ্গা, দক্ষিণে পদ্মা, আর উত্তরে তিস্তা।
* আজকের ভারতের বৃহত্তর পাটনা, ভাগলপুর, পূর্ণিয়া, মালদহ এবং বাংলাদেশের রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী ও বগুড়া ছিল এর অন্তর্গত।

১২২৭ দিল্লির সুলতান শামসুদ্দিন আলতামাসের বাহিনী গিয়াসুদ্দিন ইওজ খলজিকে হত্যা করে লখনৌতিকে দিল্লি সুলতানশাহির অন্তর্ভুক্ত করে নিল।

১২৬০ দশরথদেবের আক্রমণে সূর্য সেনের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলায় সেন রাজত্বের অবসান হল।

১৩৩৮ সোনারগাঁওয়ের প্রশাসক বাহরাম খানের মৃত্যু। তাঁর দেহরক্ষী ফখর দিল্লির কাছ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে সোনারগাঁর সিংহাসনে বসলেন। নতুন নাম নিলেন ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ।

১৩৩৮-১৫৩৮ স্বাধীন সুলতানদের যুগ।*
* শের খান – পরবর্তীতে শেরশাহ – বাংলা জয় করার আগ পর্যন্ত দুইশো বছর বাংলা স্বাধীন থাকবে।

১৩৪২-১৪৫২ শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ* ও ইলিয়াসশাহী সুলতানদের রাজত্ব।
* উপাধি শাহ-ই-বাঙ্গাল

১৩৪৬ সিলেটে হযরত শাহ জালালের সাথে সাক্ষাৎ করলেন মরক্কীয় পরিব্রাজক ইবনে বতুতা।

১৪০০ বড়ু চণ্ডীদাস, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন

১৪০৫ চীনের সম্রাট ইউং লির সাথে নিয়মিত দূত ও উপহার বিনিময় করা শুরু করেন সুলতান গিয়াসুদ্দিন আজম শাহ।

১৪০৫-০৯ বাংলা-চীন দূত বিনিময়।

১৪১৪ শিহাবুদ্দিন বায়েজিদ শাহের শিশুপুত্র আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহকে অপসারণ করে বাংলার মসনদে বসলেন মহারাজ গণেশনারায়ণ রায়ভাদুড়ি, ‘রাজা গণেশ’ নামেই যিনি বেশি পরিচিত।

১৪১৫-৩৩ রাজা গণেশের পুত্র জালালুদ্দিন মুহাম্মদ শাহের রাজত্ব।

১৪৮১ বাংলায় ফতেহ শাহের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন প্রভাবশালী হাবশি মালিক আন্দিল, সীমান্তে স্থাপন করলেন একটি ছোট স্বাধীন রাজ্য।

১৪৮৬-১৫৩৩ নবদ্বীপে শ্রীচৈতন্যের সময়কাল।

১৪৮৭ বাংলায় জালালুদ্দিন ফতেহ শাহের বিরুদ্ধে হাবশি সৈন্যদের বিদ্রোহ। সুলতানের দেহরক্ষীদের উৎকোচ দিয়ে সুলতানকে খুন করাল তারা।

১৪৮৭-৯৩ হাবশি সুলতানদের রাজত্ব

১৪৯২ বিপ্রদাস চক্রবর্তী, মনসামঙ্গল

১৪৯৩ বাংলার শেষ হাবশি সুলতান শামসুদ্দিন মুজাফফর শাহের উজির আলাউদ্দিনের হাতে হাবশি সুলতানশাহির অবসান। সুলতান হয়ে আলাউদ্দিন হোসেন শাহ নাম ধারণ করে সিংহাসনে বসলেন তিনি।

বিজয়গুপ্ত, পদ্মপুরাণ

১৪৯৩-১৫১৯ আলাউদ্দিন হোসেন শাহের রাজত্ব।

১৪৯৩-১৫৩৮ হোসেন শাহি সুলতানদের রাজত্ব

১৪৯৮ ভারতে এ সময় পর্তুগিজদের আগমন ঘটে।

১৪৯৯ আলাউদ্দিন হোসেন শাহের সেনাবাহিনীর কামতারাজ্য আক্রমণ। রাজ্যটির একাংশ বাংলার অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।

১৫০১-১৬০০ এ সময় বঙ্গীয় বদ্বীপ থেকে ভারত, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়াসহ দুনিয়ার বহু দেশে চাল রফতানি হচ্ছে। বৃহৎ টেক্সটাইল শিল্প। বহির্বিশ্বে বাংলা রফতানি করছে তুলা আর রেশম।

১৫০১-১৭০০ বঙ্গীয় বদ্বীপে এ সময় ইসলাম প্রসার লাভ করে।

১৫১৮ চট্টগ্রামে পর্তুগিজ কুঠি স্থাপনের অনুমতি চেয়ে গোয়ার শাসনকর্তা আল বুকার্ক তাঁর দূত হোয়াও দ্য সিলভেরাকে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের কাছে পাঠালেন। নানান ঘটনাচক্রে এযাত্রায় অনুমতি পেল না পর্তুগিজরা।

১৫২৬ পানিপথের প্রথম যুদ্ধ, জাহিরুদ্দিন মুহাম্মদ বাবুরের কাছে হেরে গেলেন দিল্লির লোদি রাজবংশের শেষ সুলতান ইব্রাহিম লোদি।

১৫২৯ বাবুরের বাংলা আক্রমণ।

১৫৩৫ ঈসা খাঁর জন্ম, যাঁর বাবা ক্ষত্রিয় রাজপুত কালিদাস – ইসলাম গ্রহণের পরে সুলাইমান খান – আর মা গিয়াসুদ্দিন মাহমুদ শাহের মেয়ে মোমেনা খাতুন।

১৫৩৮ শের খানের পুত্র জালাল খান আর সেনাপতি খাওয়াস খানের বাংলা বিজয়, গিয়াসুদ্দিন মাহমুদ শাহের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শেষ হল বাংলার দুইশো বছরের স্বাধীন সুলতানদের যুগ।

১৫৪০ ফরিদুদ্দিন শেরশাহ নামে দিল্লির মসনদে বসলেন শের খান।

১৫৪০-৪৫ বাংলায় পাঠান রাজত্ব

১৫৫০ কবি চন্দ্রাবতীর জন্ম।

১৫৬৪-৭৬ কররানিদের রাজত্ব

১৫৭৪ দাউদ খান কররানির কাছ থেকে রাজা উপাধি পেলেন প্রতাপাদিত্যের পিতা বিক্রমাদিত্য। গৌড়ের যশ হরণ করে বিক্রমাদিত্যের রাজ্যের সমৃদ্ধি ঘটেছে দাবি করে গৌড় থেকে আসা কিছু লোক রাজ্যটিকে ‘যশোহর’ ডাকা শুরু করল। কালক্রমে যা লোকমুখে যশোর হয়ে উঠবে।

১৫৭৬ জুলাই ১২ রাজমহলের যুদ্ধ, মুঘলদের কাছে পরাজিত হলেন দাউদ খান কররানি, তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হল।

১৫৮০ জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবরের অর্থমন্ত্রী টোডরমলের বাংলা আগমন।

১৫৮০-৮৯ ঢাকায় প্রথম ইওরোপীয় বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করল পর্তুগিজরা।

১৫৮১ মাসুম খান কাবুলির সাথে ঈসা খাঁর মৈত্রীচুক্তি। নিজেকে বাংলার পূর্বাংশের স্বাধীন শাসক বলে ঘোষণা করলেন তিনি, সুবর্ণগ্রাম হল পূর্ব বাংলার রাজধানী। উপাধি নিলেন মসনদ-ই-আলা

১৫৮৪-১৬১২ বারো ভূঁইয়া বিদ্রোহ

১৬০০ প্রথম এলিজাবেথের ইস্যুকৃত রাজকীয় সনদের ভিত্তিতে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত হল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।

১৬১২ বঙ্গীয় বদ্বীপের অধিকাংশ অঞ্চলের ওপর মুঘলদের শাসন কায়েম হল।

১৬১৩ ইসলাম খানের মৃত্যু।

১৬৩৩ সম্রাট শাহজাহানের এক ফরমানের বলে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় তাঁদের উপনিবেশিক বাণিজ্য শুরু করে।

১৬৫০-৫৯ এ সময় আরাকানের রাজসভায় সক্রিয় আছেন বাঙালি কবি ও অনুবাদক আলাওল।

১৬২৩ মুসা খাঁর মৃত্যু।*
* মুসা খাঁ ঢাকায় তাঁর প্রতিষ্ঠা করা মসজিদের উত্তর-পূর্বে কোণে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন, তাঁর কবরটি বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদুল্লাহ ছাত্রাবাসের নিকটেই অবস্থিত।

১৬৬৪-৭৮ সুবাদার শায়েস্তা খানের আমল।*
* বাংলার সমৃদ্ধি আর প্রাচুর্যের যুগ হিসেবে প্রবাদপ্রতিম হয়ে আছে শায়েস্তা খানের আমল।

১৬৬৬ জানুয়ারি ২৭ চট্টগ্রামের ওপর দাবি ছেড়ে দিল পর্তুগিজ উপনিবেশিক শক্তি আর আরাকানিরা, ফলে তা মুঘলদের নিয়ন্ত্রণে এল।

১৬৮৫ চট্টগ্রামে একটা ব্রিটিশ নৌবহরকে পরাজিত করল মুঘলরা।

১৬৯০ কলকাতায় একটি বসতি স্থাপন করলেন জোব চার্নক।

১৬৯৮ মুঘল সম্রাট আলমগীর আওরঙ্গজেবের কাছ থেকে কলিকাতা, সুতানুটি, আর গোবিন্দপুর – এই তিনটি গ্রাম খরিদ করার অনুমতি পেল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।

১৬৯৯ কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম নির্মাণ করল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।

১৬৯৯-১৯৩৫ ফোর্ট উইলিয়ামের প্রেসিডেন্সি।

১৭১৩ রাজধানী জাহাঙ্গীরনগর থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত করা হল।

১৭১৫-৬০ বর্তমান বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এ সময় মুঘলদের রাজস্ব হিসেবে কার্পাস প্রদান করত; তাই কার্পাসমহল নামে পরিচিত হয়।

১৭৩৩ মির্জা মুহাম্মদ শাহ কুলির জন্ম, ইতিহাসে যিনি তাঁর উপাধি সিরাজুদ্দৌলা নামেই পরিচিত হয়ে আছেন।

১৭৩৯ পারস্যের শাসক নাদির শাহ দিল্লি আক্রমণ করলেন। মুঘলদের ময়ূর সিংহাসন নিয়ে গেলেন পারস্যে। এর কাছাকাছি সময়েই বাংলায় মারাঠা আক্রমণ আরম্ভ হয়, ইতিহাসে যা বর্গি আক্রমণ বলে পরিচিত হয়ে আছে।

১৭৪৩ লিসবনে রোমান হরফে মুদ্রিত হল বাংলা বই।*
* মুদ্রিত বই তিনটি: ব্রাহ্মণ-রোমান ক্যাথলিক সংবাদ, কৃপার শাস্ত্রের অর্থভেদ, ও ভোকাবুলারিও এম ইদিওমা বেনগলা ই পোরতুগীজ। প্রথম বইটির লেখক বাঙালি, নাম দোম আন্তোনিয়ো। পরের দুইটির প্রণেতা-সংকলক মানোএল দা আসসুম্পসাউঁ।

১৭৫৬-৫৭ নবাব সিরাজুদ্দৌলার আমল।

১৭৫৬ আলিবর্দি খানের মৃত্যু। সিরাজুদ্দৌলার হাতে প্রথমে কাশিমবাজার কুঠি, তারপর ফোর্ট উইলিয়ামের পতন। কলকাতা জয় করে নগরীর নতুন নাম দিলেন আলিনগর।

১৭৫৭ ২৩ জুন নিজের আত্মীয়, দেশি অমাত্য, আর বিদেশি বণিকদের ত্রিমুখী আক্রমণের শিকার হয়ে পলাশীর প্রান্তরে পরাজিত হলেন নবাব সিরাজুদ্দৌলা।* মুর্শিদাবাদের নবাবি আরো কিছুদিন নামকাওয়াস্তে টিকে থাকলেও সিরাজই শেষ স্বাধীন নবাব বিবেচিত হন। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া  কোম্পানির উপনিবেশিক শাসনের শুরুয়াত।

১৭৫৭ ২৮ জুন ব্রিটিশ পুতুল হিসাবে নামকাওয়াস্তে নবাব হলেন মির জাফর আলি খান। বাংলার গভর্নর হলেন রবার্ট ক্লাইভ।

১৭৬০ ২৭ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে বর্ধমান, মেদিনীপুর, ও চট্টগ্রাম জেলা তুলে দিলেন মির কাশেম। পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্রিটিশদের রাজস্ব প্রদান শুরু করল।

১৭৬৩-১৮০০ ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহ।*
* ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী ঐতিহাসিকরা এই বিদ্রোহীদেরকে ‘ডাকাত’ হিসেবে দেখেছেন, উপমহাদেশের ‘মূলধারার’ জাতীয়তাবাদী ঐতিহাসিকরাও এদেরকে প্রাপ্য মর্যাদাটুকু দেন নি। কিন্তু ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ উপনিবেশিক আমলে যে-কৃষক বিদ্রোহের ঐতিহ্য তৈরি করেছিল, তাই পরবর্তী সকল কৃষক বিদ্রোহের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। এই বিদ্রোহের নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মজনু শাহ, ভবানী পাঠক, ও দেবী চৌধুরানী।

১৭৭০ ছিয়াত্তরের মন্বন্তর, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিষ্কাশনমূলক রাজস্ব নীতির ফলে যে ভয়ানক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, তাতে বাংলার ১ কোটি মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যান।

১৭৭২-৮৫ বাংলার গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংসের আমল।

১৭৭৬-৭৭ উপনিবেশিক ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম চাকমা বিদ্রোহ।

১৭৮১ বাংলার একটি মানচিত্র প্রকাশ করলেন মেজর জেমস রেনেল।

১৭৮২ চাকমা রাজা শের দৌলত খানের মৃত্যু, চাকমাদের নতুন রাজা হলেন জান বকশ খান। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে পিতার বিদ্রোহ অব্যাহত রাখেন তিনি। দ্বিতীয় চাকমা বিদ্রোহ।

১৭৮৪ ১৫ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হল এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বেঙ্গল।

১৭৮৪-৮৭ তৃতীয় ও শেষ চাকমা বিদ্রোহ।

১৭৮৬ উইলিয়াম জোনস কর্তৃক ঘোষিত হল ইন্দো-ইওরোপীয় ভাষাপরিবার।

১৭৮৬-৯৩ লর্ড কর্নওয়ালিসের প্রথম আমল।

১৭৮৭ চাকমা রাজা জান বখশ খান শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশদের বশ্যতা স্বীকার করলেন। বিনিময়ে ব্রিটিশরা অঞ্চলটির প্রশাসনিক ব্যাপারে নাক না গলানোর প্রতিশ্রুতি দিল। এসময় দ্বিতীয় শের দৌলত খান নামে অভিহিত আরেকজন চাকমা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন।

১৭৮৮ ন্যাথানিয়াল ব্র্যাসি হ্যালহেড, বাঙ্গালা ব্যাকরণ

১৭৮৯ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে চাকমা রাজা দ্বিতীয় শের দৌলত খানের বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়ে গেল, এর ফলে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্রিটিশ শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।

১৭৯৩-৯৪ লর্ড কর্নওয়ালিসের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, স্থানীয় অনুগত জমিদারদের হাতে পাকাপাকিভাবে ভূমি মালিকানা তুলে দিল, সর্বনাশ করল বাংলার কৃষকদের।

১৮০১ কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করা হল ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ।*
আজকে আমরা “প্রমিত” বাংলা বলতে যা বুঝি, তা এই কলেজের তৈয়ার; বাংলা ভাষা থেকে বিপুল পরিমাণে আরবিফারসি গোড়ার শব্দ খেদিয়ে ও অপ্রচলিত সংস্কৃত গোড়ার শব্দ আমদানি করে তৈরি করা হয় এই উপনিবেশিক বাংলা।

উইলিয়াম কেরি, বাঙ্গালা ব্যাকরণ

১৮১৩ এপ্রিল ২০ সতীদাহ নিষিদ্ধ করল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। কোম্পানির সনদ নবায়ন করা হল। এ বছরই মিশনারিদের খ্রিস্টধর্ম প্রচারের পূর্ণ সুযোগ দেয়া হয়।

১৮১৭ ২০ জানুয়ারি কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করা হল হিন্দু কলেজ।

১৮২৬ রামমোহন রায়, বাঙ্গালা ব্যাকরণ

১৮২৮ রামমোহন রায় কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করলেন ব্রাহ্মসভা। যা থেকে পরবর্তীকালে তৈরি হবে ব্রাহ্মসমাজ।

১৮২৯ কলকাতা মাদ্রাসার পাঠ্যক্রমে ঐচ্ছিক ও অতিরিক্ত বিষয় হিসাবে ইংরেজি ভাষা চালু করা হল।

১৮৩০-৩৯ দরবারি ভাষা হিসেবে ফারসিকে প্রতিস্থাপিত করল ইংরেজি।

১৮৩১ ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন বারাসাতের মীর নিসার আলি। ইতিহাসে যিনি তিতুমীর নামেই অমর হয়ে আছেন। ব্রিটিশরা তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা কামান দেগে উড়িয়ে দেয়।

১৪ নভেম্বর শহিদ হন তিতুমীর। তাঁর অনুসারীদের ১৪০ জনকে প্রহসনের বিচারের পর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। তিতুমীরের ভাগ্নে ও সেনাপতি গোলাম মাসুমকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। মাসুমের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ধবংসপ্রাপ্ত বাঁশের কেল্লার সামনে তাঁকে ফাঁসি দেয়ার মাধ্যমে।

১৮৩৩ সনদ আইন, ব্রিটিশ সংসদে এই আইন পাশ হওয়ার মধ্য দিয়ে উপমহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্যবসায়িক তৎপরতার আইনী অবসান ঘটল।

১৮৩৫ ফারসির পরিবর্তে ইংরেজিকে দরবারি ভাষা করা হল।

১৮৩৮ আদালতে ফারসির পরিবর্তে ইংরেজি চালু করা হল। হাজী শরিয়তুল্লার নেতৃত্বে শুরু হল ফরায়েজি আন্দোলন।

১৮৩৮-৪৭ ফরায়েজি বিদ্রোহ

১৮৪০ ফরায়েজি আন্দোলনের নেতা হাজী শরিয়তুল্লার মৃত্যু।

১৮৪১ প্রতিষ্ঠিত হল ঢাকা কলেজ।

১৮৪৪ সরকারি চাকরির জন্য ইংরেজি জানা অত্যাবশ্যক ঘোষিত হল।

১৮৪৭ ব্রিটিশ ভারতে ফরায়েজি আন্দোলনের নেতা হাজী শরিয়তুল্লার ছেলে দুদু মিয়া ও তাঁর অনুসারীদের বিচার শুরু হল। এই প্রহসনের বিচারে তাঁরা দোষী সাব্যস্ত হন এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা লাভ করেন। কিন্তু রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল করলে পূর্ববর্তী রায় বাতিল হয়ে যায় এবং দুদু মিয়া ও তাঁর অনুসারীরা মুক্তি লাভ করেন।

১৮৪৯-১৮৫৬ ঢাকার প্রথম প্রাইভেট স্কুল পোগোজ স্কুল প্রতিষ্ঠা করলেন আরমানি বণিক জোয়াখিম গ্রেগরি নিকোলাস পোগোজ, ওরফে “নিকি পোগোজ।”

১৮৫০-৫৯ বাংলায় রেলপথের বিস্তার।

১৮৫২ হানা ক্যাথরিন মুলেন্স, ফুলমণি ও করুণার বিবরণ

১৮৫৫-৫৭ সাঁওতাল বিদ্রোহ।

১৮৫৫ হিন্দু বিধবা আইন প্রবর্তন করা হল। কলকাতা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন করা হল। হিন্দু কলেজের নাম বদলে প্রেসিডেন্সি কলেজ রাখা হল।

১৮৫৭ ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা করা হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

মহাবিদ্রোহ, দিল্লির সেপাইরা ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করল, দ্রুত ভারতবর্ষের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল বিদ্রোহের আগুন।

২১ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের সিংহাসনত্যাগের মধ্য দিয়ে ৩৩১ বছর বয়সী মুঘল সাম্রাজ্যের অবসান।

১৮৫৮ মহাবিদ্রোহের কারণে ব্রিটিশ রাজপরিবার বুঝতে পারে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাঁদের নিজেদের জন্যই একটা বোঝায় পরিণত হচ্ছে। খোদ ব্রিটেনে কোম্পানির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠছিল। তাই এবছর রানী ভিক্টোরিয়া ভারত শাসনের দায়ভার ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে নিজের হাতে তুলে নেন; ব্রিটিশ সংসদে লর্ড স্ট্যানলির আনা ভারত বিল পাশের মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হয়ে যায় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ভারতবর্ষকে ব্রিটিশ রাজমুকুটের অধীনে আনা হয়। এই শতকের শেষাবধি, ভারতবর্ষের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডে রাজ করে ব্রিটিশরা।

১৮৫৮ প্যারীচাঁদ মিত্র, তখল্লুস টেকচাঁদ ঠাকুর, আলালের ঘরের দুলাল।*
* এই উপন্যাসটি সাধু ভাষায় লেখা হয় নি। আজকের দিনে ‘প্রমিত চলিত বাংলা’ বলতে যা বোঝায় এমনকি তাতেও নয়। প্যারীচাঁদ মিত্র আলালের ঘরের দুলাল লিখেছিলেন সমকালীন চলতি ভাষায়।

১৮৫৯-৬১ নীল বিদ্রোহ।*
* বাংলার ইতিহাসে প্রচারণার মাধ্যমে যাঁদের ‘উনিশ শতকের মহাপুরুষ’ বলে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, তাঁরাসহ বাঙালি মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীদের প্রায় সবাই ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের মত নীল বিদ্রোহের ব্যাপারেও নির্লিপ্ত ছিলেন। হরিশ মুখার্জি এই ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম। হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার এই সম্পাদক শুধু যে নীল বিদ্রোহে বুদ্ধিবৃত্তিক সমর্থন দিয়েছেন তাই নয়, বিদ্রোহী চাষীদের আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেছেন।

১৮৬০ পার্বত্য চট্টগ্রাম দখল করে নিল ব্রিটিশ উপনিবেশিক শক্তি। চট্টগ্রাম থেকে আলাদা করল। পার্বত্য চট্টগ্রাম নামে একটি স্বতন্ত্র জেলা গঠন করল।

১৮৬৩ কালীপ্রসন্ন সিংহ, হুতোম প্যাঁচার নকশা

১৮৬৫ ইওরোপের সাথে ব্রিটিশ ভারতের টেলিযোগাযোগ স্থাপিত হল।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দুর্গেশনন্দিনী

১৮৬৬-৮৮ এ সময়ই কখনো দেওবন্দে প্রতিষ্ঠিত হল দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসার বিভিন্ন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উপনিবেশবাদবিরোধী লড়াইয়ে অবদান রেখেছেন।

১৮৬৯ উইলিয়াম শেকসপিয়ারের কমেডি অফ এররস বাংলায় রূপান্তরিত করলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বেরোলো ভ্রান্তিবিলাস নামে।

১৮৭২ ব্রিটিশ ভারতের প্রথম আদমশুমারি। পার্বত্য চট্টগ্রামে এ সময় পাহাড়িদের জনসংখ্যার হার ৯৮ শতাংশেরও বেশি। বাঙালিদের জনসংখ্যার হার মাত্র ১.৭৩ শতাংশ।

১৮৭৩ মীর মোশাররফ হোসেন, জমিদার দর্পণ

১৮৭৪ বাংলা ও বিহারে দুর্ভিক্ষ দেখা দিল। ফোর্ট উইলিয়ামের প্রেসিডেন্সির বাংলাভাষী অঞ্চল গোয়ালপাড়া ও কাছারকে আসামের সাথে যুক্ত করা হল। প্রতিষ্ঠা করা হল ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা।

১৮৭৭ মহারানী ভিক্টোরিয়াকে ভারতবর্ষের সম্রাজ্ঞী ঘোষণা করা হল।

১৮৮৫-৯১ মীর মোশাররফ হোসেন, বিষাদসিন্ধু

১৮৮৫ ইম্পেরিয়াল সিভিল সার্ভিসের, পরবর্তীতে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের কর্মকর্তা, অ্যালান অক্টাভিয়াম হিউম প্রতিষ্ঠা করলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি)।

১৮৯১ এইজ অফ কনসেন্ট বিল।*
*  বাংলা আর মহারাষ্ট্রের হিন্দুদের বিরোধিতার মুখে স্ট্যাচুয়েটরি রেপের বয়সসীমা বাড়িয়ে ১০ থেকে ১২ করল ব্রিটিশ রাজ।

১৯০০ ১৭ মে পাশ হল চিটাগং হিল ট্র্যাক্টস ম্যানুয়াল ল।

১৯০১ ব্রিটিশ সাংবাদিক উইলিয়াম ডিগবি লিখলেন, “দেড়শ বছর আগেও বাংলা ব্রিটেনের চেয়ে অনেক বেশি ধনী ছিল।”

১৯০৩-১৯২৮ জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন (সংকলন ও সম্পাদনা), লিঙ্গুইস্টিক সার্ভে অফ ইন্ডিয়া

১৯০৫ ১৬ অক্টোবর ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসকরা বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা করলেন, উদ্দেশ্য ছিল পূর্ববঙ্গ ও আসাম নিয়ে একটি স্বতন্ত্র প্রদেশ গঠন করা। বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে শুরু হল স্বদেশী আন্দোলন।

১৯০৬ কলকাতায় বালগঙ্গাধর তিলক উদ্বোধন করলেন শিবাজি উৎসব।
ডিসেম্বর ৩০ ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হল নিখিল ভারত মুসলিম লীগ (এআইএমএল)।

মিসেস আর এস হোসেইন, সুলতানার স্বপ্ন

১৯১২ ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে সরিয়ে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হল।

১৯১৩ মুসলিম লীগে যোগ দিলেন গুজরাটের মুহাম্মদালি জিন্নাহভাই।*
* পরবর্তীতে তাঁর নামের প্রথম অংশের মুহাম্মদ আর আলি আলাদা হয়ে যাবে আর জিন্নাহভাই থেকে ভাই ঝরে পড়বে, তিনি হয়ে উঠবেন মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ।

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

১৯১৪-১৮ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ

১৯১৬ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন

১৯১৭ রুশ বিপ্লব

১৯১৯-২২ অসহযোগখেলাফত আন্দোলন

১৯২০ ১৭ অক্টোবর মধ্য এশিয়ার তাশখন্দে গঠিত হল ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই)।

দীনেশচন্দ্র সেন (সম্পাদিত), ময়মনসিংহ গীতিকা

১৯২১ ১ জুলাই প্রতিষ্ঠা করা হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

১৯২২ মে চৌরিচৌরা থানার ঘটনা। অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করলেন গান্ধী।

১৯২৪ বাংলা, পাঞ্জাব, ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের (এনডব্লিউএফপি) মত ব্রিটিশ ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোতে ফেডারেল কাঠামোর আওতায় কয়েকটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ গঠনের দাবি তুলল অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ।

১৯২৬-৩০ ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর, ও বরিশালে দাঙ্গা।

১৯৩০ ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন।

১৯৩২ সাম্প্রদায়িক রোয়েদাদপুনা চুক্তি

১৯৩৫ ২ আগস্ট ভারত শাসন আইন, ভারতে একটি ফেডারেটেড সরকার প্রতিষ্ঠা করা হল।

১৯৩৫-১৯৪৭ বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি।

১৯৩৬ বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি থেকে উড়িষ্যাকে বিচ্ছিন্ন করা হল।

১৯৩৯ ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে প্রথম বেতার অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হল।

১৯৩৯-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

১৯৪০ ২৩ মার্চ ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব

১৯৪১ ১০ ডিসেম্বর মুসলিম লীগ থেকে বহিষ্কৃত হলেন শেরে বাংলা।

১৯৪২ ক্রিপস মিশনভারত ছাড় আন্দোলন

১৯৪৩ তেতাল্লিশের মন্বন্তর, চার্চিলের উপনিবেশিক বর্ণবাদী নীতির ফলে বাংলায় দুর্ভিক্ষ। চলল ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত। এর মধ্যে না খেতে পেয়ে মারা যান ৩৫ লক্ষ মানুষ।

১৯৪৫ ব্রিটিশ ভারতের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনগুলোতে মুসলমান-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোতে মুসলমানদের একটি স্বতন্ত্র আবাসভূমির দাবিতে প্রচারণা চালাল মুসলিম লীগ।*
* এসময় থেকেই অখণ্ড পাকিস্তানের ধারণা সংহত হয়।

১৯৪৭ ৩ জুন ভারত ও পাকিস্তানের ভিত্তিতে স্বাধীনতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হল, যার অর্থ ছিল ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির দুই ভাগ হয়ে যাওয়া।
২০ জুন হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলাসমূহের কংগ্রেস সদস্য, হিন্দু মহাসভার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ও কমিউনিস্ট পার্টির জ্যোতি বসু সমেত ৫৮ জন বিধায়ক বাংলা ভাগের পক্ষে ভোট দেন। অন্যদিকে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলের ১১৬ জন মুসলিম লীগ সদস্য বাংলা ভাগের বিপক্ষে ও ৩৪ জন কংগ্রেস সদস্য বাংলা ভাগের পক্ষে ভোট দেন। অমুসলিমদের মধ্যে দলিতদের তফশিলি ফেডারেশনের ৫ জন বিধায়কও বাংলা ভাগের বিপক্ষে ভোট দেন।

৬-৭ জুলাই গণভোটের মাধ্যমে পূর্ববঙ্গে যোগদানের রায় দিল সিলেট।
১৮ জুলাই ব্রিটেনের পার্লামেন্টে পাশ হল ভারতের স্বাধীনতা আইন।

১৩ আগস্ট র‍্যাডক্লিফ রোয়েদাদ। খুলনার মতও পার্বত্য চট্টগ্রামও পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হল। এটা চিটাগং হিল ট্র্যাক্টস পিপলস এসোসিয়েশন ভালোভাবে নেয়নি। ফলে রাঙামাটিতে ভারতের জাতীয় পতাকা আর বান্দরবানে বার্মার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
১৪ আগস্ট, মধ্যরাত ব্রিটিশ ভারতের অবসান।
১৭ আগস্ট পার্টিশন বাউন্ডারি ঘোষণা করা হল। বাউন্ডারি কমিশন প্রধান সিরিল র‍্যাডক্লিফ কর্তৃক ব্রিটিশ ভারত ভাগ হল। জন্ম নিল ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি রাষ্ট্র। হিন্দু, মুসলমান, ও শিখদের আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হল। গৃহহীন হলেন ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। ১৯৪৯ সালের মধ্যে অধিকাংশ প্রিন্সলি স্টেট ভারতে এবং অল্প কয়েকটি পাকিস্তানে যোগ দেয়।

তমদ্দুন মজলিসের প্রচার বিভাগ, পাকিস্তানের রাষ্ট্র-ভাষা বাংলা – না উর্দু?

১৯৪৯ ২৩ জুন গঠিত হল পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ।

১৯৫০ ২৪ এপ্রিল খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাযজ্ঞ, পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহীর খাপড়া ওয়ার্ডে গুলি চালিয়ে ৭ জন বন্দীকে হত্যা করা হয়। এরা হলেন – কম্পরাম সিং, বিজন সেন, দেলোয়ার হোসেন, হানিফ শেখ, সুধীন ধর, সুখেন ভট্টাচার্য, এবং আনোয়ার হোসেন। সকলেই কমিউনিস্ট ছিলেন।

১৯৫২ ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহিদ হলেন সালাম, বরকত, জব্বার, রফিক প্রমুখ।

২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গনে নির্মিত হল প্রথম শহিদ মিনার।

২৬ এপ্রিল গঠিত হল পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন।

১৯৫৩ ৪ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগ সরকারের বিরুদ্ধে কয়েকটি রাজনৈতিক দল মিলে গঠন করল যুক্তফ্রন্ট।*
* আওয়ামি মুসলিম লীগ আর কৃষক প্রজা পার্টির নেতৃত্বে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ২১ দফার ভিত্তিতে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে। যুক্তফ্রন্টের প্রধান তিন নেতা ছিলেন হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, আর মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। যুক্তফ্রন্টের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল পূর্ববঙ্গের স্বায়ত্তশাসন।

১৯৫৪ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের জয়। প্রদেশটিতে মুসলিম লীগ শাসনের সমাপ্তি ঘটল।

১৯ এপ্রিল পাকিস্তান গণপরিষদ উর্দু ও বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করল।

পাকিস্তান সরকার কমিউনিস্ট পার্টিকে বেআইনী ঘোষণা করল।

১৯৫৫ ১৪ অক্টোবর পূর্ববঙ্গের নাম বদলে পূর্ব পাকিস্তান করা হল।

১৯৫৬ মার্চ পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান গৃহীত হল।

১৯৫৭ ১৮ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ নেতা ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক মতবিরোধের জের ধরে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ভাসানী।

২৭ জুলাই মৌলানা ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)।

১৯৫৮ ৭ অক্টোবর ইসকান্দার মির্জা পাকিস্তানের সংবিধান বাতিল করে সামরিক আইন জারি করলেন। মুসলিম লীগকে নিষিদ্ধ করা হল।
২৭ অক্টোবর এক সামরিক ক্যুদেতায় পাকিস্তানে ক্ষমতায় আসলেন আইয়ুব খান। ইস্কান্দার মির্জা নির্বাসিত হলেন। মৌলানা ভাসানীকে গ্রেপ্তার করা হল।

১৯৫৮-৬৯ আইয়ুব খান আমল।

১৯৫৯ পার্বত্য চট্টগ্রামে এ সময় পাহাড়িদের জনসংখ্যার হার ৯০ শতাংশেরও বেশি, বাঙালিদের জনসংখ্যার হার ৯.৬১ শতাংশ।

এ. জে. কারদার, জাগো হুয়া সাভেরা।*
* ঢাকায় বানানো প্রথম উর্দু সিনেমা। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝির একটা অ্যাডাপ্টেশন। মস্কোর একটা আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছিল।

১৯৬০ ১৫ জুন লাহোরে আইয়ুব খান দাবি করলেন, ‘মৌলিক গণতন্ত্র’ই প্রকৃত ইসলামি গণতন্ত্র।

১৯৬১ কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প।*
* কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের অংশ হিসেবে নির্মিত হয় কাপ্তাই বাঁধ। এতে পানিতে ডুবে যায় ৪০ শতাংশ কৃষিজমি, ভিটেমাটি হারান ১০০,০০০ পাহাড়ি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু পাহাড়ি নাগরিকদের ব্যাপারে উপনিবেশিক “উন্নয়নবাদী” দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি।

১৯৬২ আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন শুরু হল। এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন মোহাম্মদ ফরহাদ, পরবর্তীকালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক। আইয়ুবশাহীর বিরুদ্ধে গঠিত হল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)। ঢাকায় ভারতীয় উপহাইকমিশনের পলিটিকাল অফিসার শশাঙ্ক শেখর ব্যানার্জীর মাধ্যমে পূর্ব বাংলার মুক্তিসংগ্রামের জন্য ভারতের সাহায্য চেয়ে অনুরোধ জানালেন শেখ মুজিবুর রহমান। ছাত্রলীগের ভেতরে একটি নিউক্লিয়াস গঠন করা হল। এর উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার জন্য কাজ করা।

১৯৬৩ সিরাজুল আলম খান, কাজী আরেফ আহমেদ, আর আবদুর রাজ্জাক ছাত্রলীগের ভেতরে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ নামে একটি গোপন সেল গঠন করলেন। প্রথমবারের মত বাংলা নববর্ষ উদযাপন করল ছায়ানট।

১৯৬৫ আগস্ট-সেপ্টেম্বর পাক-ভারত যুদ্ধ

১৯৬৬ ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে ৬ দফা উত্থাপন করলেন শেখ মুজিব।

রাশিয়া ও চীনের মধ্যকার “আন্তর্জাতিক মতাদর্শিক মহাবিতর্কের” জের ধরে ভাগ হয়ে গেল পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (ইপিসিপি)। সুখেন্দু দস্তিদার, মোহাম্মদ তোয়াহা, নজরুল ইসলাম, আবদুল হক, শরদিন্দু দস্তিদার, ও দেলোয়ার হোসেনসহ চীনপন্থীরা আলাদা কমিটি গঠন করেন।

১৯৬৭ রাশিয়া ও চীনের মধ্যকার “আন্তর্জাতিক মতাদর্শিক মহাবিতর্কের” জের ধরে ভাগ হয়ে গেল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। মস্কোপন্থী ন্যাপের প্রধান হলেন খান আবদুল ওয়ালি খান। এই ন্যাপের পূর্ব পাকিস্তান শাখার প্রধান হলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, যাঁর নামানুসারে শাখাটি ন্যাপ-মোজাফফর নামে পরিচিতি পায়। অন্যদিকে, চীনপন্থী ন্যাপের প্রধান হলেন মৌলানা ভাসানী। তাঁর নামানুসারে শাখাটি ন্যাপ-ভাসানী নামে পরিচিতি পায়। গঠিত হল পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) [ইপিসিপি-এমএল]। ইপিসিপি-এমএল “জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা” কায়েমের সিদ্ধান্ত নেয়।

১৯৬৮ ১৭ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামি লীগ প্রথমবারের মত সাংগঠনিকভাবে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন পালন করল।*
* আমার মতে, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা ঘোষণার পর থেকে শেখ মুজিবের কাল্ট অফ পার্সোনালিটি তৈরি করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, এই ঘটনার ভেতর দিয়ে তা পাকাপোক্ত হয়।
১৯ জুন রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য মামলার শুনানি শুরু।
* দীর্ঘদিন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু, ২০১১ সালে ঢাকার প্রথমা থেকে প্রকাশিত একটি বইয়ে মামলার অন্যতম আসামী শওকত আলী দাবি করেন, এটি একটি সত্য মামলা ছিল। দেখুন, (আলী ২০১১)।

শামসুজ্জোহা মানিক, আমজাদ হোসেন, নুরুল হাসান, মাহবুব উল্লাহ ও আবুল কাশেম ফজলুল হক মিলে গঠন করলেন পূর্ব বাংলার বিপ্লবী কমিউনিস্ট আন্দোলন। সিরাজ সিকদার গঠন করলেন পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন।* মৌলানা ভাসানীর ডাকে আইয়ুববিরোধী হরতাল পালিত হল।
* নাফ নদীর ওপারের আরাকানের – বর্তমান বার্মার রাখাইন রাজ্য – কমিউনিস্টদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেন। প্রতিষ্ঠা করলেন মাও সেতুং চিন্তাধারা গবেষণা কেন্দ্র। প্রকাশ করলেন দলের জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের থিসিস।

১৯৬৯ সামরিক আইন জারি করলেন আইয়ুব খান। পাকিস্তানের দুই অংশেই শুরু হল স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন।

জানুয়ারি গঠন করা হল কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ, ঘোষণা করা হল ১১ দফা দাবি।
২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহিদ হলেন আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।

১৫ ফেব্রুয়ারি বন্দী দশায় খুন হলেন সার্জেন্ট জহুরুল হক।
১৮ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় রাষ্ট্রীয় হামলার হাত থেকে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়ে শহিদ হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা। 
২২ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার, শেখ মুজিবকে মুক্তিপ্রদান।
২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে – বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান – এক বিশাল জনসমাবেশে শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দিলেন তোফায়েল আহমেদ।

২৬ মার্চ তীব্র গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করলেন আইয়ুব খান। পাকিস্তানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান।

১-৪ নভেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর-মিরপুরে বাঙালি-বিহারি দাঙ্গা।
২৮ নভেম্বর ইয়াহিয়া খান প্রস্তাবিত লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার (এলএফও)। পশ্চিম পাকিস্তানের এক ইউনিট বিলুপ্ত করা হল। ১৯৭০ সালে জাতীয় গণপরিষদ নির্বাচন ঘোষিত হল।

১৯৭০ ৩০ মার্চ লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার (এলএফও) জারি করা হল।

৭ জুন শেখ মুজিবুর রহমান বললেন, “আসন্ন নির্বাচন হবে ৬ দফার প্রশ্নে গণভোট।”

১২ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড়ে পূর্ব বাংলায় কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু।
২৮ নভেম্বর এক সাংবাদিক সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমান বললেন, “ঘূর্ণিঝড়ে ১০ লাখ মারা গেছে, স্বাধিকার অর্জনের জন্য বাংলার আরও ১০ লাখ প্রাণ দেবে।”

৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। ন্যাপ-ভাসানী এই নির্বাচন বয়কট করে। মুজিবের আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ১৬২টি আসনের মধ্যে ১৬০টি জেতে, অপরদিকে ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ১৩৮টি আসনের মধ্যে ৮১টি জেতে।
১৭ ডিসেম্বর প্রাদেশিক ও জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়লাভ করল আওয়ামী লীগ।

১৯৭১ অপারেশন সার্চলাইট, জেনোসাইড, ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ।

১৯৭২ শেখ মুজিবের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও প্রধানমন্ত্রিত্ব লাভ। গঠিত হল জাতীয় রক্ষিবাহিনী। বায়াত্তরের সংবিধান

১৯৭৩ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামি লীগ নিরঙ্কুশ জয়লাভ করে। বিরোধী দলগুলো জালভোট, কারচুপি ও সন্ত্রাসের অভিযোগ আনে। ফলে, নির্বাচনটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

১৯৭৪ চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ, বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারান।

১৯৭৫ এক সামরিক অভ্যুত্থানে সপরিবারে নিহত হলেন মুজিব।

১৯৭৭ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হলেন জিয়াউর রহমান।

১৯৮১ এক ব্যর্থ ক্যুদেতায় নিহত হলেন প্রেসিডেন্ট জিয়া।

১৯৮২ ক্ষমতা দখল করলেন প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।

১৯৮৩ সীমিত রাজনৈতিক তৎপরতার অনুমোদন দেয়া হল।

১৯৮৬ সামরিক আইন তুলে নিয়ে সংবিধান পুনর্বহাল করলেন এরশাদ।

১৯৮৭ জরুরি অবস্থা জারি।

১৯৮৮ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়া হল।

১৯৯০ গণঅভ্যুত্থান, এরশাদের পতন।

১৯৯১ ফেব্রুয়ারি ২৫ নির্বাচনী প্রচারণার শেষদিন। মানিক মিয়া এভিনিউয়ের সমাবেশে খালেদা জিয়া বললেন, “বিএনপির হাতেই রয়েছে স্বাধীনতার পতাকা, অন্যদের হাতে রয়েছে গোলামির জিঞ্জির।” পান্থপথের সমাবেশে শেখ হাসিনা বললেন, “নৌকায় ভোট দিলে মানুষ গণতন্ত্র পাবে, অর্থনৈতিক মুক্তি পাবে।”
ফেব্রুয়ারি ২৭ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে ২৯৪টি আসনের মধ্যে ১৪০টি জিতে ক্ষমতায় আসল বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। প্রথমবারের মত প্রধানমন্ত্রী হলেন বেগম খালেদা জিয়া। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৮৪টি আসন পায়। বিরোধী দলের নেত্রী হলেন শেখ হাসিনা। জাতীয় পার্টি এই নির্বাচনে ৩৫টি আসন জেতে। এই নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী জেতে ১৮টি আসন। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ৫টি আসন লাভ করে।

এপ্রিল ২৯ ঘূর্ণিঝড়ে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু।

মে ১০ অপারেশন সি অ্যাঞ্জেল, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়র দেশটির সেনাবাহিনীকে বাংলাদেশকে মানবিক সহায়তা দেয়ার হুকুম দিলেন। এই উদ্দেশ্যে লে. জেনারেল হ্যারি সি. স্ট্যাকপোলের নেতৃত্বে ৪০০ মেরিন ও ৩০০০ নাবিকের এক কন্টিঞ্জেসি জয়েন্ট টাস্ক ফোর্সকে খাবার, পানীয়, ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সমেত বাংলাদেশে পাঠানো হল। উপদ্রুত অঞ্চলের ২০ লক্ষ মানুষকে সেবা দিতে।

আগস্ট ৬ জাতীয় সংসদে সংবিধানের একাদশ ও দ্বাদশ সংশোধনী গৃহীত হল, সংসদীয় ব্যবস্থায় ফিরল বাংলাদেশ। এই ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রধান প্রেসিডেন্টই থাকেন। কিন্তু নির্বাহী বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পান প্রধানমন্ত্রী।

সেপ্টেম্বর ১৫ গণভোটের রায় দ্বাদশ সংশোধনী বিলের পক্ষে পড়ল।

অক্টোবর ৪ আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী আবদুর রহমান বিশ্বাস আর আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী বদরুল হায়দার চৌধুরী দুজনেই গোলাম আযমের সাথে দেখা করে দোয়া চাইলেন।
অক্টোবর ৮ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন আবদুর রহমান বিশ্বাস।

ডিসেম্বর ২৯ জামায়াতে ইসলামীর আমির নির্বাচিত হলেন গোলাম আযম।

১৯৯২ জানুয়ারি ১১ যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে তাঁকে আহবায়ক করে গঠিত হল ১০১-সদস্যবিশিষ্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

মার্চ ৬ ৫২ জন আলেম একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বললেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার ইসলামি শরিয়তসম্মত।
মার্চ ৭ গণআদালতে গোলাম আযমের বিচারের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করলেন শেখ হাসিনাসহ ১০০ জন সাংসদ।
মার্চ ২২ বিদেশে সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বললেন, “গোলাম আযম আইনের উর্দ্ধে নন, তবে গণআদালতে বিচারের কোন যুক্তি নেই।”
মার্চ ২৪ বিদেশী নাগরিক আইনের আওতায় গোলাম আযমকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান হল।
মার্চ ২৫ খুলনার শান্তিধাম মোড়ে খুন হলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নেতা আমিনুল ইসলাম বিমান।
মার্চ ২৬ ১২টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ গণআদালত ১-এর চেয়ারপার্সন হিসাবে জাহানারা ইমাম গোলাম আযমের ফাঁসির রায় পড়ে শোনালেন।
মার্চ ২৮ জাহানারা ইমামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হল।

এপ্রিল ১০ লোগাং ম্যাসাকার*
* সরকারি হিসেবে লোগাং ম্যাসাকারে মৃতের সংখ্যা ১২ হলেও বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা ৪০০রও বেশি।

মে ১৩ ডা. মিলন হত্যা মামলার রায়ে ১৪ জন আসামির সবাইকে খালাস দেয়া হল।

জুন ২৬ বাংলাদেশের কাছে তিনবিঘা করিডোর হস্তান্তর করল ভারত।

জুলাই ৩১ খুলনা ডিসি অফিসের সামনে খুন হলেন সিপিবি নেতা রতন সেন।

ডিসেম্বর ৬ ভারতে হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্ট আরএসএস-বিজেপি কর্তৃক বাবরি মসজিদ ধবংসের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করল বাংলাদেশ।
ডিসেম্বর ৭ বাবরি মসজিদ ভাঙনের ঘটনায় মন্ত্রিসভায় তীব্র নিন্দা। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হামলা। ভোলানাথ গিরি আশ্রমে হামলা ও লুঠতরাজ। পুরান ঢাকায় হিন্দুদের স্বর্ণের দোকান লুঠ হল। রায়েরবাজারে হিন্দুদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। চট্টগ্রামে বিভিন্ন মন্দির ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ। ঢাকায় সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ।
ডিসেম্বর ৯ ঢাকায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ও ১৫টি ছাত্রসংগঠন আলাদা আলাদাভাবে শান্তি মিছিল বের করে। বাবরি মসজিদ ধবংসের প্রতিবাদে বিভিন্ন জায়গায় মিছিল। চট্টগ্রাম আর হবিগঞ্জে ৩ জন খুন হলেন।

১৯৯৩ জানুয়ারি ২৪ চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার সভায় গুলি ও বোমা হামলার ঘটনায় ৫০ জন আহত হন।

মার্চ ২৮ পুলিশের লাঠিচার্জে জাহানারা ইমামসহ শতাধিক আহত।

এপ্রিল ২২ সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের বিশেষ বেঞ্চের বিচারপতি আনোয়ারুল হক চৌধুরী গোলাম আযমের নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ অবৈধ ও আইনবহির্ভূত বলে ঘোষণা করলেন।

মে ২ ভারতের ত্রিপুরায় পাহাড়ি শরণার্থীদের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার জন্য মন্ত্রী কর্নেল (অব:) অলি আহমেদের নেতৃত্বে ত্রিপুরা সফর করলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা নিরসন কমিটির সদস্যরা।
মে ১২ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সাথে মেমোরান্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এমওইউ) সই করল বাংলাদেশ ও বার্মা।
মে ২২ ৫০ হাজার পাহাড়ি শরণার্থীর প্রত্যাবাসনের জন্য একটি চুক্তি সই করল ভারত ও বাংলাদেশ।

জুলাই ১৬ রাজধানীতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কর্মীদের সাথে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীদের প্রচণ্ড সংঘর্ষ।

সেপ্টেম্বর ২০ জাতীয় সংসদে সরকারি ও বিরোধী উভয় দলের কিছু সদস্য যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুললেন। খুলনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কর্মীদের সাথে এক বন্দুকযুদ্ধে খুন হলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪ কর্মী।

অক্টোবর ৯ প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জাতিসংঘে ফারাক্কা সমস্যা তুলে ধরায় ক্ষোভ প্রকাশ করল ভারত।

১৯৯৪ মার্চ ২০ বিতর্কিত মাগুরা উপনির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর জয়লাভ।

জুন ২২ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে গোলাম আযমের নাগরিকত্ব বহাল।
জুন ২৬ যুক্তরাষ্ট্রে জাহানারা ইমামের মৃত্যু।
জুন ২৭ এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী  লীগ, জাতীয় পার্টি, ও জামায়াতে ইসলামী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের রূপরেখা ঘোষণা করল।

আগস্ট ৯ তসলিমা নাসরিন নির্বাসিত।

সেপ্টেম্বর ৬ রাজনৈতিক সংকট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বৈঠক করল বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট। শেখ মুজিবের বাড়ি ধানমন্ডি ৩২কে একটি যাদুঘরে রূপ দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের হাতে তুলে দেয়া হল।

অক্টোবর ২৩ খুলনা সিটি কলেজের সামনের রাস্তায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নেতা আবুল কাশেম পাঠানকে গুলি করে হত্যা করা হল।

ডিসেম্বর ২৬ রাজনৈতিক সংকট নিরসনে পূর্ণ মেয়াদ শেষে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে সম্মতি জানালেন বেগম খালেদা জিয়া।
ডিসেম্বর ২৮ জাতীয় সংসদ থেকে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ও জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা একযোগে পদত্যাগ করলেন।

১৯৯৫ জানুয়ারি ১ বিরোধী দলকে সাংবিধানিক রাজনীতিতে ফিরে আসার অনুরোধ জানালেন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
জানুয়ারি ১৩ জাতীয় সরকার গঠনের আহবান জানালেন ড. কামাল হোসেন।
জানুয়ারি ২৬ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করার দাবি জানালেন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা।

ফেব্রুয়ারি ২ খুন হলেন আওয়ামি লীগ নেতা মোসলেমুদ্দিন খান।
ফেব্রুয়ারি ১৬ প্রণীত হল বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন।
ফেব্রুয়ারি ২৬ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের খুলনা নগর ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদকে গুলি করে হত্যা করা হল।

এপ্রিল ২ যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটনের ঢাকা সফর।
এপ্রিল ২৩ বিরোধী দল ছাড়াই জাতীয় সংসদ অধিবেশন শুরু।
এপ্রিল ২৫ খুলনা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট আর তাঁর গাড়ির ড্রাইভারকে গুলি করে হত্যা করা হল।

জুন ২৬ অস্ত্র মামলা থেকে মুক্তি পেলেন এরশাদ।

আগস্ট ২৪ দিনাজপুরের এক দরিদ্র কিশোরী ইয়াসমিন আক্তারকে বাংলাদেশ পুলিশের কয়েকজন সদস্য সম্মিলিতভাবে ধর্ষণ করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
আগস্ট ২৭ ইয়াসমিন ধর্ষণ-হত্যার বিরুদ্ধে দিনাজপুরে গণআন্দোলন দেখা দেয়। কারফিউ জারি করে বিডিআর মোতায়েন করা হয়। ধর্ষণবিরোধী এই গণআন্দোলনে ৭ ব্যক্তি শহিদ হন।

সেপ্টেম্বর ২ আওয়ামী লীগের ৩২ ঘন্টা ব্যাপী হরতালের সূচনা।
সেপ্টেম্বর ৪ ঢাকায় আসলেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি অফ স্টেটস রবিন র‍্যাফেল।
সেপ্টেম্বর ৫ বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সাথে রবিন র‍্যাফেলের বৈঠক।
সেপ্টেম্বর ৬ প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাথে রবিন র‍্যাফেলের বৈঠক। বৈঠকে রবিন বললেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান করা আমেরিকার কাজ নয়।”
সেপ্টেম্বর ১৬ আওয়ামী লীগের ৭২ ঘন্টা ব্যাপী হরতালের সূচনা।
সেপ্টেম্বর ২৩ বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহবান জানালেন। তাঁরা যেন বিএনপি সরকারকে সহায়তা না করে।

অক্টোবর ৭ আওয়ামি লীগের ৭২ ঘন্টার ধর্মঘট শুরু হল।
অক্টোবর ১৬ আওয়ামি লীগের ৯৬ ঘন্টার হরতাল শুরু হল।

নভেম্বর ১০ পুরান পল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে বোমা বিস্ফোরণ।
নভেম্বর ১৬ আওয়ামী লীগের টানা ছয় দিনের হরতাল সমাপ্ত।
নভেম্বর ১৯ হুমায়ুন আজাদের নারী নিষিদ্ধ করল বিএনপি সরকার।

ডিসেম্বর ৯ আওয়ামী লীগের ৭২ ঘন্টা ব্যাপী হরতাল শুরু।
ডিসেম্বর ১১ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আর বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষের কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হল।

১৯৯৬ ফেব্রুয়ারি ১৫ ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করল বিএনপি। অধিকাংশ বিরোধী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসায় এই নির্বাচন বয়কট করে। তাই নির্বাচনটি দেশ বিদেশ কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

মার্চ ২৭ জাতীয় সংসদে গৃহীত হল সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী।*
* এই সংশোধনী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে। সেই সময় এটা আওয়ামি লীগের দাবি ছিল, এই দাবিতে আন্দোলন করে দেশ অচল করে দিয়েছিল তারা। ২০১১ সালে আওয়ামি লীগ সরকারের শাসনামলে সুপ্রিম কোর্ট ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে ও বাতিল করে দেয়।
মার্চ ৩০ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেন বেগম খালেদা জিয়া। বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত হল তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

মে ১২ বিএনপিতে যোগদানের পর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বললেন, “যারা মনে করছেন, মায়ের বোনকে মাসি এবং পিতার বোনকে পিসি সম্বোধন করতে হবে, তাদের স্বপ্নকে চুরমার করে দিতে হবে। আমরা পানি খেতে চাই, জল খেতে চাই না। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদীরা গোসল করে, স্নান করে না।”
মে ১৯ লে. জেনারেল আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম বীর বিক্রম একটি সামরিক ক্যুদেতা সংঘটিত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। ক্যুদেতা সংঘটন প্রচেষ্টার দায়ে গ্রেপ্তার হন নাসিম।
মে ২০ জেনারেল নাসিমকে বাধ্যতামূলকভাবে অবসর প্রদান করলেন প্রেসিডেন্ট।

জুন ১১ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহৃত হলেন।
জুন ১২ সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী  লীগের জয়লাভ। দীর্ঘ দুই দশক পর ক্ষমতায় ফিরল দলটি। প্রথমবারের মত প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা।

জুলাই ২ ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ও সরকারি ছুটির দিন বলে ঘোষণা করা হল।

১৯৯৭ জানুয়ারি ১ বীর উত্তম খেতাব প্রত্যাখ্যান করলেন কাদের সিদ্দিকী।

মার্চ ৮ আগের বছর দেয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সরকার প্রণয়ন করল জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ১৯৯৭
মার্চ ১৭ বাংলাদেশ ভারত ২৫ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ, কোন পক্ষই মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে কোন ধরণের আগ্রহ দেখায়নি।
মার্চ ২৬ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তন স্থাপন করা হল। এ সময় তিনজন বিদেশি বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন ফিলিস্তিনের ইয়াসির আরাফাত, তুরস্কের সুলতান দেমিরেল, এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা।

নভেম্বর ২১ ভূমিকম্পে এক ৫-তালা ভবন ধ্বসে ২৩ ব্যক্তির মৃত্যু।

ডিসেম্বর ২ বাংলাদেশ সরকার ও জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মধ্যে পার্বত্য শান্তিচুক্তির মধ্য দিয়ে দুই দশকের রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটল।
ডিসেম্বর ২১ পার্বত্য শান্তিচুক্তির প্রতিবাদে কালো ব্যাজ ধারণ করলেন, কালো পতাকা মিছিল করলেন, এবং প্রেসিডেন্টের কাছে স্মারকলিপি জমা দিলেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্যরা।

১৯৯৮ জানুয়ারি ২ ঢাকায় গ্রেপ্তার হলেন উলফা নেতা অনুপ চেটিয়া।

১৯৯৮ আগস্ট ১৯ – আগস্ট ৫, ১৯৯৯ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রেপিস্ট গ্রুপের বিরুদ্ধে ধর্ষণবিরোধী ছাত্রী আন্দোলন সারাদেশে ধর্ষণবিরোধী জনসচেতনতা তৈরিতে অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখে।

ডিসেম্বর ২৬ শান্তিচুক্তির বিপরীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে প্রসিত বিকাশ খীসা প্রতিষ্ঠা করলেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।

১৯৯৯ জানুয়ারি ৬ বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি, ও ইসলামী ঐক্যজোট মিলে চারদলীয় জোট গঠন করে।
জানুয়ারি ২৭ কলকাতা বইমেলার প্রধান অতিথি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভুলক্রমে ‘মুখ্যমন্ত্রী’ সম্বোধন করা হল।

ফেব্রুয়ারি ১ শেখ হাসিনার একটি অসতর্ক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত কোন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ উঠল।

মার্চ ৬ যশোরে উদীচীর এক অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসবাদী বোমা হামলায় ১০ ব্যক্তি নিহত।

মে ২৬ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, “যখন হিসাব করে বুঝব বিজয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় আসতে পারব, তখনই নির্বাচন দেব। ক্ষমতায় থাকলে সব সরকারই এ হিসাবটা করে। অন্যরা তা প্রকাশ করে না, আমি খোলামেলাই বললাম।”

জুন ১ আওয়ামী লীগের সুবর্ণজয়ন্তীতে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত প্রতিনিধি সম্মেলনে শেখ হাসিনা বললেন, “বাংলাদেশের ইতিহাস আওয়ামী লীগের ইতিহাস।”

ডিসেম্বর ৩১ দ্বিতীয় সহস্রাব্দের শেষ দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে থার্টি ফাস্ট নাইটের প্রোগ্রামে এসে লাঞ্চিত হন শাওন আখতার বাঁধন।*
*  ১১ বছর পরে ২০১০ সালে ঢাকার একটি আদালত বাঁধনের করা শ্লীলতাহানির মামলায় তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়।

২০০০ এপ্রিল ১৪ বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক হিসেবে একুশে টিভির সম্প্রচার শুরু।

আগস্ট ১৬, ২১ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে দুটি আলাদা মামলা দায়ের করা হয়।

সেপ্টেম্বর ২০ করাচির দ্য নেশন পত্রিকায় বেনজির ভুট্টো লিখলেন, “১৯৭১ সালের দায় এড়িয়ে যাওয়া এবং গণহত্যার জন্য দুঃখ প্রকাশ না করা হবে একটি কাপুরুষোচিত কাজ।”

অক্টোবর ২৪ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা তিনটি আদালত অবমাননার মামলার নিষ্পত্তি হল হাই কোর্টে। আদালত ও বিচারক সম্পর্কে মন্তব্য করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে আরো সতর্ক আর শ্রদ্ধাশীল থাকার আহবান জানান হল। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম বললেন, “যেহেতু রুল জারি করা হয় নাই, সেহেতু প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আদালত অবমাননা হয়নি বলা যেতে পারে।”

নভেম্বর ২০ আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মুখ্যমন্ত্রী সম্বোধন করা হল।
নভেম্বর ২১ শেখ হাসিনাকে মুখ্যমন্ত্রী সম্বোধন করায় আনন্দবাজারের দুঃখপ্রকাশ।

ডিসেম্বর ১৪ শেখ মুজিব হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে হাই কোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ বিভক্ত রায় প্রদান করে।*
* বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখলেন, বিচারপতি এম রুহুল আমিন ৫ আসামিকে খালাস দিলেন। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হল, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও সাংসদরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলেন। বিচারপতি এম রুহুল আমিনের ভাইয়ের বাসায় হামলা।

২০০১ জানুয়ারি ১ বিচারপতি গোলাম রাব্বানী ও বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ সব ধরণের ফতোয়াকে বেআইনী ঘোষণা করলেন। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ইসলামী ঐক্যজোটের নেতা মুফতি ফজলুল হক আমিনী বললেন, “হাইকোর্ট বিভাগের যে দুজন বিচারপতি ফতোয়ার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন তাঁরা মুরতাদ হয়ে গেছেন।”
জানুয়ারি ২০ ঢাকার পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সমাবেশে (সিপিবি) বোমা বিস্ফোরণে ৫ জন নিহত হলেন।

এপ্রিল ১৪ রাজধানীর রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হরকাতুল জিহাদ আল-ইসলামীর চালানো এক গ্রেনেড হামলায় ১০ জন নিহত।
এপ্রিল ১৮ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত যুদ্ধ। ১৬ ভারতীয় ও ৩ বাংলাদেশি সৈনিক নিহত। বাংলাদেশি পক্ষের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এ.এল.এম ফজলুর রহমান।

জুন ২৭ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বিশ্বের সবচে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তকমা পেল বাংলাদেশ। তালিকায় পাকিস্তানের স্থান সপ্তম। আর ভারতের দশম।

সেপ্টেম্বর ৪ টাঙ্গাইলে এক নির্বাচনী সভায় কাদের সিদ্দিকী বললেন, “শূকর খাওয়া যেমন হারাম, নারী নেতৃত্বও তেমন হারাম।”

অক্টোবর ১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লুৎফর রহমানের তদারকিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল।
অক্টোবর ২ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।*
* নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা সহিংসতার শিকার হন। বিশেষত সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার কিশোরী পূর্ণিমা রানী শীলের সম্মিলিত ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনায় সম্পৃক্ততার দায়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী তীব্রভাবে সমালোচিত হয়। চারদলীয় জোট থেকে বেরিয়ে আসে জাতীয় পার্টি।

নভেম্বর ৭ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে আবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হল।

ডিসেম্বর ১৭ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা ওবায়দুল হক বললেন, “পহেলা বৈশাখের উৎসব মুসলমানদের জন্য নয়।”

২০০২ জানুয়ারি ১ ঢাকায় পলিথিন ব্যাগ বিক্রি নিষিদ্ধ করা হল।

ফেব্রুয়ারি ৫ এসিড হামলাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড নির্ধারিত হল।

মার্চ ৫ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ক্রমাবনতি নিয়ে মন্তব্য করা হল, “২০০১ সালে রাজনৈতিক সহিংসতায় ৬৫৫ জনের বেশি নিহত এবং ২৫ হাজার ৭৭০ জন আহত। পুলিশের হামলায় ৪৪ জন মারা যায়। বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ৫৪ ধারা ব্যবহার করে সরকার ঢালাওভাবে জনসাধারণকে গ্রেপ্তার করেছে।”

এপ্রিল ২৫ ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হলেন সাদেক হোসেন খোকা।

মে ৩ মেঘনায় ফেরী ডুবে ৪৫০য়েরও বেশি ব্যক্তির মৃত্যু।

জুন ৮ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উপদলীয় কোন্দলের মাঝখানে পড়ে খুন হলেন বুয়েট ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনি।
জুন ২২ বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব হলেন তারেক রহমান।
জুন ৩০ বন্ধ করে দেয়া হল আদমজি চটকল।

জুলাই ২৪-৩১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কতিপয় নেত্রীর দখলদারিত্ব টিকিয়ে রাখতে পুলিশি হামলা ও ১৮ ছাত্রী গ্রেপ্তার। তীব্র ছাত্র আন্দোলন। আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করলেন উপাচার্য আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী ও প্রক্টর ড. নজরুল ইসলাম।

আগস্ট ২৯ গণসংহতি আন্দোলন নামে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের জন্ম।

অক্টোবর ১৬, ২০০২-জানুয়ারি ৯, ২০০৩ অপারেশন ক্লিনহার্ট: ১৩৬৫ জন গ্রেপ্তার হলেন, অধিকাংশই বিএনপির নেতাকর্মী। এ সময় সেনা হেফাজতে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটে। এসব কাস্টোডিয়াল ডেথকে ‘হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে’ বলে চালিয়ে দেয়া হয়।

নভেম্বর ২ পিরোজপুরে এক ছাত্র সম্মেলনে চরমোনাইয়ের পীর দাবি করলেন, আওয়ামী লীগ ইসলামের ‘প্রকাশ্য শত্রু’ আর বিএনপি ‘গোপন শত্রু’। তিনি আরো দাবি করেন সাবেক সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদ তাঁর নেতৃত্ব মেনে নিলেও তিনি কখনোই এরশাদের নেতৃত্ব মেনে নেন নি। জামায়াতে ইসলামীর নারী নেতৃত্ব বিরোধিতাকে কটাক্ষ করে বললেন, “জামায়াতের সেক্রেটারি পূজামণ্ডপে গিয়ে মেয়েদের হাতের মালা গলায় পরেন।”
নভেম্বর ১০ খুন হলেন মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি।
নভেম্বর ২১ বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইওরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাশ হল এবং সেনা হেফাজতে মৃত্যু ও নির্যাতনের বিচার দাবি করা হল।

ডিসেম্বর ৬ ময়মনসিংহের ৪টি সিনেমা হলে সমন্বিত বোমা হামলায় ২৭ ব্যক্তির মৃত্যু।
ডিসেম্বর ১৪
শহিদ বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) এজেন্টদের দায়ী করল জামায়াতে ইসলামী।
ডিসেম্বর ২২ ব্রিটেনের চ্যানেল ফোরের দুই সাংবাদিকের দোভাষীর কাজ করা ও সেডিশনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া প্রিসিলা রাজ জামিনে মুক্তি পেয়ে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বললেন, তাঁকে পুলিশি হেফাজতে ইলেকট্রিক শক দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে এবং আইনজীবীর সাথে কথা বলতে দেয়া হয়নি।

২০০৩ ফেব্রুয়ারি ২০ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল বললেন, “যে দল ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে ফেলে, বিকৃত করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, তারাই যখন বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতা পুরস্কারে পুরস্কৃত করতে চায়, তা জাতির সঙ্গে এক নির্মম পরিহাস।”

মার্চ ১০ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এক হিন্দু পরিবারের ৭ সদস্যকে জ্যান্ত আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হল।
মার্চ ২৫ স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বললেন, “শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমান সমগ্র জাতির সম্পদ।” স্বাধীনতা পুরস্কার প্রসঙ্গে বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা বললেন, “জিয়াকে বঙ্গবন্ধুর সমান্তরাল করার চেষ্টা হচ্ছে।”

মে ১৮ অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী সাইফুর রহমান বললেন, “এনজিওরা গরিব মানুষকে ছাগলটাগল দিয়ে সাহায্য করবে। কিন্তু ক্ষমতায় কে আসবে-যাবে তা নিয়ে মাথা ঘামালে আমরা সহ্য করব না।”

জুন ২৬ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী জাতীয় সংসদে বললেন, “আওয়ামী লীগ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের কারখানা।… আমি নিজেও কিছুদিন মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত যখন শেখ হাসিনার পাশে ছিলাম তখন আমি ছিলাম একজন মুক্তিযোদ্ধা।”

আগস্ট ১৭ বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হ্যারি কে টমাস বললেন, তাঁর দেশ চায় বাংলাদেশ গ্যাস রপ্তানি করে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিৎজ টমাসের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বললেন, বাংলাদেশের জন্য গ্যাস রপ্তানি করা কল্যাণকর হবে না। স্টিগলিৎজের বক্তব্যের বিরোধিতা করলেন হ্যারি কে টমাস।

নভেম্বর ১১নূর হোসেনকে গণতন্ত্রের মানসপুত্র বলা হয়। একজন অশিক্ষিত লোক কীভাবে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হয়! “উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ” কবিতার কবি শামসুর রাহমানরা এখন চুপ কেন?”, জাতীয় পার্টিতে একদল সাংবাদিকের যোগদান অনুষ্ঠানে এরশাদ।

ডিসেম্বর ১৫ বিজয় দিবসের আলোচনাসভায় আবদুল মান্নান ভূঁইয়া বললেন, “আওয়ামী লীগের সাথে কারো বিরোধ বাঁধলেই তাকে অমুক্তিযোদ্ধা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাথে নানা বিষয়ে বিরোধের কারণে তাজউদ্দীন আহমদ, এম এ জি ওসমানীর মতো নেতৃবৃন্দ অমুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেলেন। সর্বশেষে হলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।”  একই সভায় শাজাহান সিরাজ বললেন, “ইয়াহিয়া খানের সাথে বৈঠকে শেখ মুজিব দেশের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা করেননি। তিনি ক্ষমতার ভাগাভাগির আলোচনা করতে চেয়েছিলেন। একাত্তরের মার্চ মাসে রাজনীতিকদের ব্যর্থতার কারণে মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন।”

২০০৪ ফেব্রুয়ারি ২৭ অমর একুশে বইমেলায় হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলা।

মার্চ ৬ যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে দুনিয়াজোড়া কথিত ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের’ প্রেক্ষিতে ‘সন্ত্রাস দমনের’ দোহাই দিয়ে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‍্যাব) নামের একটি ডেথ স্কোয়াড গঠন করা হল।

এপ্রিল ১ আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র ও গোলাবারুদ ঘটনা

মে ২০ সিলেটে হযরত শাহ জালালের মাজারে বোমা হামলা। ৩ ব্যক্তি নিহত। আহতদের একজন ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী।

আগস্ট ২১ বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা। আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ নেতাকর্মী নিহত। ৩০০রও বেশি আহত।

সেপ্টেম্বর ২ ১৯৯৫ সালে দিনাজপুরের কিশোরী ইয়াসমিন আক্তারকে ধর্ষণ করার দায়ে ২ সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল।
সেপ্টেম্বর ২৫ নভো থিয়েটারের উদ্বোধন।
* প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ভাসানী নভো থিয়েটার। ২০১০ সালে আওয়ামি লীগ সরকার নাম পাল্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভো থিয়েটার রাখে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ২০২৫ সালে অন্তর্বর্তী সরকার আবার নাম পাল্টে শুধু নভো থিয়েটার করে।
সেপ্টেম্বর ২৯ ইয়াসমিন ধর্ষণের দায়ে আরেক পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড।

নভেম্বর ২৭ বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) শহিদ ডা. মিলন দিবসের আলোচনায় ডা. মিলনের মা সেলিনা আকতার বললেন, “সাক্ষ্য দিতে মিলনের কোন সহকর্মীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, সবাই বেঈমানি করেছে।”

২০০৫ জানুয়ারি ২৭ সিলেটের হবিগঞ্জে গ্রেনেড হামলায় নিহত হলেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী (১৯৯৬-২০০১ সাল) শাহ এ এম এস কিবরিয়া।

মার্চ ১৬ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিজা রাইস বললেন, “বাংলাদেশ বেশ সমস্যাসংকুল হয়ে উঠেছে এবং এ ব্যাপারে আমাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত) আরও কিছু করতে হবে।”

এপ্রিল ৭ ঢাকায় লাল গালিচা সংবর্ধনা পেলেন চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও। দুদেশের মধ্যে কয়েকটি চুক্তি ও স্মারক সই হল।

জুন ৩০ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) জানাল, তারা আওয়ামী লীগের সাথে জোট গঠন করবে না।

আগস্ট ১৭ বাংলাদেশে ৬৩টি জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালাল জিহাদি সংগঠন জামাআতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)। ২ জন নিহত ও ১০৪ জন আহত। সংগঠনটির প্রচারপত্রে দেশের সরকার ও বিরোধীদলের প্রতি সংবিধান বাদ দিয়ে ইসলামি শাসনব্যবস্থা কায়েম করার আহবান জানান হল।
আগস্ট ২৯ রাজধানীর মুন সিনেমা হলের মালিক মাকসুদুল হকের একটি রিট আবেদনের রায়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করলেন। মোশতাক, সায়েম, ও জিয়ার ক্ষমতা গ্রহণ প্রক্রিয়াকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ বলে ঘোষণা করলেন। তবে তাঁদের জনকল্যানমূলক কাজগুলোকে সমুন্নত রাখা হল।

ডিসেম্বর ৮ এক সংবাদ সম্মেলনে সিরাজ সিকদারের মেয়ে শিখা সিকদার ও ছেলে শুভ্র শিকদার বললেন, “সিরাজ সিকদারকে কোন ব্যক্তি হত্যা করেনি। শোষক-লুটেরা ও তাঁদের সহযোগীরা তাঁকে হত্যা করেছে। […] সরকারের একটি অংশ তাঁকে হত্যা করেছে এবং অন্য অংশটি তাঁর রাজনৈতিক ফায়দা নিয়েছে।”

২০০৬ জানুয়ারি ২৩ চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণ। ৮ ব্যক্তির মৃত্যু। প্রতিবাদে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, এমপিসহ ২০০ আহত।

ফেব্রুয়ারি ২৩ চট্টগ্রামের কেটিএস গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডে ৫৪ ব্যক্তির মৃত্যু।

মার্চ ১৬ শেখ হাসিনা বললেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে র‍্যাব বন্ধ হবে না, স্পেশাল অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে।”

এপ্রিল ৬ কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সাথে বিএনপি কর্মীদের সংঘাতে ৪ জনের মৃত্যু, আহত শতাধিক।
এপ্রিল ১৬ কানসাটের আন্দোলনকারীদের কাছে নতিস্বীকার করল বিএনপি সরকার। সব দাবি মেনে নিয়ে চুক্তি সই করল। হতাহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ।

আগস্ট ২৬ ঐতিহাসিক ফুলবাড়ি আন্দোলন, এশিয়া এনার্জির উন্মুক্ত কয়লাখানি প্রকল্পের বিরুদ্ধে দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে দেখা দিল গণআন্দোলন। পুলিশ আর বিডিআরের গুলিতে শহিদ হলেন স্থানীয় তিন তরুণ আমিন, তরিকুল, ও সালেকীন। ১৪৪ ধারা জারি।
আগস্ট ৩০ এশিয়া এনার্জিকে দেশ থেকে বিতাড়িত করাসহ ফুলবাড়ির জনগণের ছয় দফা দাবি মেনে নেয়ার ঘোষনা দিল বিএনপি সরকার।

অক্টোবর ১৩ শান্তিতে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীন ব্যাংক।
অক্টোবর ১৭ ড. ইউনূস বললেন, সরকার আর বিরোধীদল উভয়পক্ষও যদি চায়, তাহলেও তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হবেন না। তিনি তাঁর যোগ্য প্রার্থী আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজন হলে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবেন।
অক্টোবর ২৮ আওয়ামি লীগের সহিংস লগি বৈঠা আন্দোলনে মতিঝিল রণক্ষেত্রে পরিণত হল – কয়েক হাজার আহত হলেন – নিহতের সংখ্যা ১২। সারা দেশ অচল। বিচারপতি কে এম হাসান দেশ ও জাতির স্বার্থে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন।

ডিসেম্বর ৫ সুপ্রিম কোর্টে ভাঙচুরের অভিযোগে ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর এবং ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদের বিরুদ্ধে সেডিশনের মামলা।

২০০৭-০৮ ১/১১

২০০৮ ৩০ ডিসেম্বর তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচনে জিতল আওয়ামী লীগ, পেল ২৬২টি আসন, দ্বিতীয়বারের মত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা।

২০০৯ ফেব্রুয়ারি ৯ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশ সফর করলেন। বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যচুক্তি নবায়ন। বিনিয়োগ বিষয়ে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সাক্ষরিত হল।
ফেব্রুয়ারি ১২ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি আবদুর রাজ্জাক বললেন, ১৯৭১ সালের ভূমিকার জন্য দলটি ক্ষমা চাওয়ার কথা ভাবছে।
ফেব্রুয়ারি ২৫-২৭ পিলখানা ম্যাসাকার, ৩৩ ঘন্টা ধরে অবরুদ্ধ পিলখানা। এই সময় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা খুন হন। বিদ্রোহীদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী বলেন এটা কৌশলগত ভুল।

মার্চ ৭ যুবলীগের এক সমাবেশে আওয়ামী লীগপন্থী বুদ্ধিজীবী আবদুল গাফফার চৌধুরী বললেন, “খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের করে দিতে হবে, তা না হলে ১৫ আগস্টের মতো ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।”

জুন ১৬ জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বললেন, “বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশকে একটা দীর্ঘমেয়াদী সামরিক শাসনের হাত থেকে রক্ষা করেছে।”

জুলাই ১২ জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন না করার কারণে চিহ্নিত মাদ্রাসাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ জানাল সরকারের স্থায়ী কমিটি।

আগস্ট ৪ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শেখ মুজিবের ‘শাহাদতবার্ষিকী’ পালনের নির্দেশ। পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের রোডম্যাপ চাইলেন সন্তু লারমা। বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার স্টিফেন ইভান্স দাবি করলেন, সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষমতারোহণে কূটনীতিকদের কোন ভূমিকা ছিল না।

সেপ্টেম্বর ২ বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জেমস এফ. মরিয়ার্টি বললেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের যে বিরোধিতা তাঁর দেশ করেছিল, সেটা দুঃখজনক।

নভেম্বর ৪ জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা বললেন, “বায়াত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে।

ডিসেম্বর ৩১ রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে ঘড়ির কাঁটা ১ ঘন্টা পিছিয়ে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টাইম পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হল। এতে গ্রিনিচ মিন টাইমের (জিএমটি) সাথে বাংলাদেশ সময়ের ফারাক রইল ৬ ঘন্টার।

২০১০ জানুয়ারি ১ মানবাধিকার সংস্থা অধিকার জানাল, ২০০৯ সালে ১৫৪ জন মানুষকে বিনাবিচারে হত্যা করা হয়েছে।
জানুয়ারি ১১ ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক, দুই দেশের মধ্যে তিন চুক্তি ও দুই সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হল।
জানুয়ারি ১৭ এক সংবাদ সম্মেলনে বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ভারতের কাছে ‘দেশ বিক্রি’ করার অভিযোগ তুললেন।
জানুয়ারি ১৯ চট্টগ্রামের হাটহাজারি বড় মাদ্রাসার – আনুষ্ঠানিক নাম আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম – পরিচালক শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করল কওমি মাদ্রাসাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সংগঠন হেফাজতে ইসলাম।

ফেব্রুয়ারি ২ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন খারিজ করে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র আবু বকর ছিদ্দিকের মৃত্যু। ২০১৭ সালে আবু বকর ছিদ্দিক হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের ১০ সাবেক নেতাকর্মীকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
ফেব্রুয়ারি ১৫ জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পাল্টে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাখা হল।
ফেব্রুয়ারি ২৪ বিডিআর হেফাজতে এখন পর্যন্ত ৬৯ জওয়ানের মৃত্যু।

মার্চ ২৫ যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু। গঠন করা হল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ (আইসিটি-১), আইনজীবী প্যানেল, ও অপরাধ তদন্ত সংস্থা। আইসিটি-১য়ের সভাপতি হলেন বিচারপতি মো: নিজামুল হক।

মে ১৮ ২০০৬ সালে শেভরন একটি আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে মামলা করে, তাতে আন্তর্জাতিক আদালত বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিল।

জুলাই ২৮ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে হাই কোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় প্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

আগস্ট ২৬ সংবিধানের সপ্তম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করলেন হাই কোর্ট।

সেপ্টেম্বর ৬ যুবদল নেতা সাব্বির আহমেদ গামা হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২০ জন আসামিকে ক্ষমা করে দিলেন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান।

অক্টোবর ১৩ বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এক মাসের মধ্যে তাঁর সেনানিবাসের বাড়ি ছেড়ে দেয়ার হুকুম দিলেন হাই কোর্ট।

নভেম্বর ১৩ সেনানিবাসের বাড়ি থেকে বেগম খালেদা জিয়ার স্থানান্তর নিয়ে পুলিশের সাথে বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষ দেখা দিল। ২১ জনকে আটক করা হল। এর প্রতিবাদে সকাল সন্ধ্যা হরতাল ডাকল বিএনপি।
নভেম্বর ১৬ বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী গ্রেপ্তার।

ডিসেম্বর ১৩ ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির আহবায়ক ডা. এম এ হাসান বললেন, “যুদ্ধাপরাধের বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে যে ধরণের সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন ছিল, তা এখনো অনেকটাই অনুপস্থিত।”

২০১১ জানুয়ারি ৭ ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) গুলিতে ফেলানি খাতুন নামে এক বাংলাদেশি কিশোরীর মৃত্যু। তাঁর লাশ ৫ ঘন্টা কাঁটাতারে ঝুলে ছিল। এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করে।
জানুয়ারি ২০ শেয়ারবাজারে ধবস নামল।
জানুয়ারি ২১ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শেয়ারবাজারে ধবস নামার জন্য তাঁর দায় স্বীকার করলেন।

মার্চ ২ গ্রামীন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরিয়ে দেয়া হল।

এপ্রিল ২৮ বিডিআরের নাম বদলে বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ (বিজিবি) রাখা হল।

মে ১০ ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ তাকে অবৈধ বলে বাতিল করে দিয়ে রায় দিলেন। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) তাঁদের প্রতিবেদনে দাবি করল ২০০৪ সালে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‍্যাব) গঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬২২ জনকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের ২০০ জন খুন হয়েছে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে। এইচআরডব্লিউর এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বললেন, “প্রতিবেদনে উল্লেখিত সংখ্যা সত্য নয়।”

জুন ২৭ পিলখানা ম্যাসাকারের দায়ে ১০৮ জনের মৃত্যুদণ্ড।
জুন ৩০ জাতীয় সংসদে গৃহীত হল সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী।*
* এই সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়। বায়াত্তরের সংবিধানের রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি – ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ও সমাজতন্ত্র – পুনর্বহাল করা হয়। কিন্তু ২০১০ সালে আদালত পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করলেও বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্মকে বহাল রাখা হয়।

জুলাই ১১ মীরসরাইয়ে এক সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৪০ ব্যক্তির মৃত্যু, যাঁদের মধ্যে ৩৮ জন ছাত্র।
জুলাই ১৯
লক্ষীপুরের বিএনপি নেতা ও আইনজীবী নুরুল ইসলামকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামি এইচ এম বিপ্লবকে ক্ষমা করে দিলেন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান।
জুলাই ২০ নুরুল ইসলামের স্ত্রী রাশিদা ইসলাম রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে বললেন, “মহামান্য রাষ্ট্রপতি, আইভি রহমানের ঘাতকদের কি ক্ষমা করা যায়?”

অক্টোবর ১৬ শেয়ার বাজারের ক্ষুদে বিনিয়োগকারীরা আমরণ অনশনে গেলে বিরোধী দলীয় রাজনীতিকরা তাঁদের সাথে সংহতি জানান।

নভেম্বর ২০ আইসিটি-১ কর্তৃক যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম শুরু হল।

ডিসেম্বর ৩ যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন ও তাঁর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সাকোর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে পদ্মা সেতুর ঋণ প্রদান করা বন্ধ করে দিল বিশ্বব্যাংক।

২০১২-১৬ এই সময়কালে বার্মার জেনোসাইড থেকে বাঁচতে ৮৭,০০০ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসেন।

২০১২ জানুয়ারি ১৮ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাসুদ রাজ্জাক এক সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, কয়েকজন সাবেক-বর্তমান সেনা কর্মকর্তার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার একটা সামরিক ক্যুদেতা পরিকল্পনা নস্যাৎ করা দেয়া হয়েছে।

ফেব্রুয়ারি ১১ অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীরা অজানা কারণে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনীকে তাঁদের ঢাকাস্থ ফ্ল্যাটে ছুরিকাঘাতে হত্যা করল।

মার্চ ২২ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ (আইসিটি-২) গঠন করা হল।

এপ্রিল ৫ ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে শ্রমিকনেতা আমিনুল ইসলামের মৃতদেহ পাওয়া গেল। শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। তাঁর মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

মে ১৫ পুলিশের লাঠিপেটায় নিহত হলেন চর ভাটিয়ানি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান। তিনি চাকরি সরকারিকরণ আন্দোলনের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হল।

জুন ৬ বিএনপি থেকে পদত্যাগ করলেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা।

সেপ্টেম্বর ২৯ কুরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা, ১২টি বৌদ্ধমন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

নভেম্বর ২৪ আশুলিয়ার তাজরিন ফ্যাশনস অগ্নিকাণ্ডে ১১৭ জন শ্রমিকের মৃত্যু। একই দিনে চট্টগ্রামের বহদ্দরহাটে ফ্লাইওভার ধ্বসে ১৭ ব্যক্তি নিহত হন।

ডিসেম্বর ৯ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কয়েকজন সদস্য পুরান ঢাকার দর্জি বিশ্বজিৎ দাসকে প্রকাশ্য দিবালোকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করল।
ডিসেম্বর ১১ স্কাইপ সংলাপের ঘটনায় সমালোচনার মুখে আইসিটি-১ থেকে পদত্যাগ করলেন বিচারপতি মো নিজামুল হক।

২০১৩ জানুয়ারি ২ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল্লাহ তাহের গ্রেপ্তার।
জানুয়ারি ১৪ শেখ হাসিনার মস্কো সফর, রাশিয়ার কাছ থেকে ৮০০০ কোটি টাকার অস্ত্র কিনবে বাংলাদেশ।
জানুয়ারি ২৯ এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বললেন, “জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে জাতীয় ঐক্যমত প্রয়োজন।”

ফেব্রুয়ারির শুরুতে এক সংবাদ সম্মেলন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, “ট্রাইব্যুনাল ভেঙে দেয়া ও যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে আমাদের আদর্শিক মিল নেই।”
ফেব্রুয়ারি ৫ আইসিটি কর্তৃক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ের প্রতিবাদে ও ফাঁসির দাবিতে শাহবাগ আন্দোলনের সূচনা।
ফেব্রুয়ারি ৮ শাহবাগে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও আওয়ামী লীগ সমর্থক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা মিলে মঞ্চের দখল নিয়ে নিলেন।
ফেব্রুয়ারি ৯ দৈনিক আমার দেশয়ের সংবাদ শিরোনামে বলা হল, শাহবাগ থেকে ফ্যাসিবাদের পদধবনি শোনা যাচ্ছে।

মার্চ ৩-৫ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশ সফর করেন।
মার্চ ৬ নারায়ণগঞ্জে খুন হন কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী।*
* ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাসবিরোধী অ্যাকটিভিস্ট। ত্বকী হত্যা মামলার প্রধান আসামি নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ এমপি শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমান তাৎক্ষণিকভাবে আত্মগোপনে যান। পরবর্তীতে প্রকাশ্যেই দাপটের সাথে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।

এপ্রিল ৬ হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ। ১৩ দফা দাবি উত্থাপন। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সরকার দাবি মেনে না নিলে ৫ মে ঢাকা ঘেরাও করার ঘোষণা।
এপ্রিল ১২ বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলে (বাসদ) ভাঙন ঘটে। খালেকুজ্জামানের বাসদ আর মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর বাসদ আলাদা হয়ে যায়।
এপ্রিল ২৪ রানা প্লাজা ম্যাসাকার, সাভারের রানা প্লাজা ভেঙে পড়ায় ২৫০০য়েরও বেশি মানুষ আহত হলেন, কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন ১১৭৫ জন শ্রমিক।

মে ৫, দিবাগত রাত শাপলা চত্বর ম্যাসাকার
মে ১৫ বাংলাদেশের পোষাকশিল্প খাতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সাক্ষরিত হল অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ (সংক্ষেপে দ্য অ্যাকর্ড)।

আগস্ট ১ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিলেন হাই কোর্ট।

সেপ্টেম্বর ২৪ সুন্দরবনের রামপালে ভারতীয় স্বার্থে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে তেল, গ্যাস, ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ঢাকা-সুন্দরবন লংমার্চ।

অক্টোবর আইসিটি আইনে ৫৭ ধারা যুক্ত করা হল।

নভেম্বর ২৫ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হল: জানুয়ারি ৫, ২০১৪।

ডিসেম্বর ২৯ বেগম খালেদা জিয়ার বাসার সামনে বালুবোঝাই ট্রাক রেখে পুলিশ তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখল।

২০১৪ জানুয়ারি ৫ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন পূর্বঘোষিত তারিখে অনুষ্ঠিত হল। বিএনপি ভোট বর্জন করে। ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। নানান মহলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত। নির্বাচনের পরে দেখা যায় এক অদ্ভুত দৃশ্য। একদিকে এরশাদ শেখ হাসিনার বিশেষ দূত নিযুক্ত হন। অন্যদিকে এরশাদের দল জাতীয় পার্টি জাতীয় সংসদে গ্রহণ করে ‘বিরোধী দলের’ ভূমিকা।
জানুয়ারি ৩০ দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ও উলফার মিলিটারি কমাণ্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত।

এপ্রিলের শেষদিকে নারায়ণগঞ্জে র‍্যাবের চাঞ্চল্যকর ৭ খুন, শিকারদের একজন কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম। খুন করে ইট বেঁধে লাশ পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হয়। তিন দিন পরে শীতলক্ষ্যা নদীতে লাশ ভেসে ওঠে।

জুন ১৪ মিরপুরের পল্লবীর কালশীর কুর্মিটোলা বিহারি ক্যাম্পে আগুন। ১০ বিহারি নিহত। এঁদের মধ্যে ৭ জন একই পরিবারের সদস্য।

জুলাই ৮ জাতিসংঘের পার্মানেন্ট কোর্ট অফ আর্বিট্রেশন (পিসিএ) বঙ্গোপসাগরে ভারতের সাথে থাকা বাংলাদেশের এক দ্বন্দ্বে বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিল।

আগস্ট ২৭ গুপ্তঘাতকদের হাতে খুন হলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও মেঘনা ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল্লামা নুরুল ইসলাম ফারুকী।

সেপ্টেম্বর ১৭ মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। জাতীয় সংসদে গৃহীত হল সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী।*
*  এই সংশোধনী বায়াত্তরের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬ পুনঃস্থাপন করার মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেয়।

ডিসেম্বর ৯ মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় সাড়ে ৩ লাখ লিটার জ্বালানি তেলসহ একটি ট্যাংকার ডুবে গেল সুন্দরবনের শেলা নদীতে। প্রায় ৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাটা ম্যানগ্রোভ বনের ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচে বড় প্রতিবেশ বিপর্যয়।
ডিসেম্বর ২৭ ঢাকার শাহজাহানপুরের রেলওয়ে মাঠসংলগ্ন পানির পাম্পের পাইপে পড়ে গেল শিশু জিহাদ। ২৩ ঘন্টা পর মৃত অবস্থায় উদ্ধার।

২০১৫ জানুয়ারি ২৪ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকো।

ফেব্রুয়ারি ২৬ অমর একুশে বইমেলা থেকে ফেরার সময় মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও বিজ্ঞানলেখক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হল, আনসারুল্লা বাংলা টিম (এবিটি) এই হত্যার দায় স্বীকার করে।

মার্চ ৬ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টম কর্মকর্তারা সন ইয়াং নাম নামক এক উত্তর কোরীয় কূটনীতিককে হাতে নাতে ধরে ফেলে। তিনি ১৪ লাখ মার্কিন ডলার সমমূল্যের সোনা চোরাচালানের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। পরে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে ছেড়ে দেয়।

এপ্রিল ১১ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও সাংবাদিক মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

জুন ৬-৭ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম বাংলাদেশ সফর। ১৯টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হল। ২০০ কোটি ডলার ঋণ চুক্তি সই হল।
জুন ২২ এ সময় বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টিউশন ফির ওপর আরোপিত ভ্যাট বাতিলের দাবিতে No VAT on Education আন্দোলন চলছে, আন্দোলনে শ্লোগান ওঠে – ভ্যাট দিব না, গুলি কর

জুলাই ৮ সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্ট্যাণ্ডের ১৩-বছর-বয়সী সবজিবিক্রেতা শিশু সামিউল আলম ওরফে রাজনকে নির্যাতন করে হত্যা করা হল। ‘রিকশা ভ্যান চুরি করার’ অভিযোগ এনে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মুহিত আলমকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিল এলাকাবাসী।

আগস্ট ২৫-২৬ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির সীমান্ত সংঘাত

সেপ্টেম্বর ১৪ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর আরোপিত ১০% ভ্যাট প্রত্যাহার।

অক্টোবর ২৪ আশুরা উপলক্ষ্যে শিয়া মুসলমানরা ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি নেয়ার সময় ঢাকার হোসেনি দালানে বোমা হামলা, ১ কিশোর নিহত ও শতাধিক আহত।

নভেম্বর ২২ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কার্যকর করা হল।

ডিসেম্বর ৪ দিনাজপুরের কাহারোলে ঐতিহ্যবাহী কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গণে শতবর্ষ পুরনো এক মেলায় বোমা হামলা।

২০১৬ জানুয়ারি ২৯ রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল গণসংহতি আন্দোলন।

ফেব্রুয়ারি ৪ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হল।

মার্চ ২০ কুমিল্লা সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগি জাহান তনু ধর্ষণ-হত্যার শিকার। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। দেশ জুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ।

এপ্রিল ২-৪ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বাংলাদেশের পিডিবি ও এস আলম আর চীনের শানতুংয়ের কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলন। পুলিশ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করলে ক্ষুব্ধ প্রতিবাদীরা ৪ এপ্রিল এক জনসমাবেশের ডাক দেয়। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি, প্রতিবাদীরা তা ভঙ্গ করলে পুলিশ প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে অন্তত ৫ ব্যক্তিকে খুন করে।

মে ৫ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করল হাই কোর্ট, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করল রাষ্ট্রপক্ষ।

জুলাই ১-২ হোলি আর্টিজান হামলা। হামলায় নিহত ২২ জনের মধ্যে ১৭ জন বিদেশি নাগরিক। এদের মধ্যে তিনজন ইতালীয়, দুই জন জাপানি, ও এক জন ভারতীয়। নিহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম এবং বনানী থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন। হামলা চলাকালে ৫ হামলাকারীও নিহত হন। এ সময় হামলায় নিহত রেস্তোরাঁর বাবুর্চি সাইফুল ইসলাম চৌকিদারের সহকারী জাকির হোসেন শাওন পুলিশের হাতে আটক হন ও পুলিশী হেফাজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। শাওনের মা মাসুদা বেগম দাবি করেছেন, তাঁর ছেলের মৃত্যুর জন্য পুলিশী নির্যাতন দায়ী।*
* আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করে, কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জেএমবিকে দায়ী করেন।

অক্টোবর ৩০ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে শতাধিক হিন্দু বাড়ি ও অন্ততপক্ষে ১০টি মন্দিরে হামলা, লুটপাট, ও ভাংচুর। এই ঘটনায় ৮ মামলায় ১০৬ জন গ্রেপ্তার। ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরিফ অবমাননাকর পোস্ট দেয়ার অভিযোগে রসরাজ দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নভেম্বর ৬ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জের সান্তাল পল্লীতে চিনিকল মালিকদের স্বার্থে পুলিশ অগ্নিসংযোগ করে। উদ্দেশ্য সান্তালদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা। পুলিশের গুলিতে খুন হন শ্যামল হেমরম, মঙ্গল মার্ডি ও রমেশ টুডু।

ডিসেম্বর ১৮ নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সাথে সংলাপ শুরু করলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

২০১৭ জানুয়ারি-নভেম্বর মানবাধিকার সংস্থা আইন ও শালিস কেন্দ্রের (আসক) হিসেব অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে নভেম্বরে ১০টি অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যাতে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ৩৫ জন নিহত হন। মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের দাবি অনুযায়ী নভেম্বর পর্যন্ত ৮০ জন গুম হন।

ফেব্রুয়ারি ২৩ দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার এক নিবন্ধে হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া জানালেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে এই বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি হিসেবেই ১৩৯১ জন বাংলাদেশি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এ সময়কালে আহত হয়েছেন ১২০৬ জন বাংলাদেশি। ১৯৭৩ সাল একমাত্র বছর যে বছরে কোন বাংলাদেশি সীমান্তে বিএসএফের হাতে খুন হন নি।

এপ্রিল ৯ শেখ হাসিনার ভারত সফর। ২২টি নয়া চুক্তি ও মেমোরান্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এমওইউ) সই। এর একটি প্রতিরক্ষা বিষয়ক।

জুলাই ৩ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আগের বছর ষোড়শ সংবিধানকে অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে দিয়ে হাই কোর্টের রায় সমুন্নত রাখল।

২০১৭ আগস্ট-জানুয়ারি ২০১৮ জেনোসাইডের হাত থেকে বাঁচতে ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা বার্মা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

অক্টোবর ১৩ অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়লেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা।

নভেম্বর ১০ অস্ট্রেলিয়া থেকে সিঙ্গাপুর গিয়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে প্রধান বিচারপতি হিসাবে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার ৮১ দিন আগেই পদত্যাগপত্র জমা দিলেন এসকে সিনহা।
নভেম্বর ১৯ বার্মার রাজধানী নেপিদো সফর করলেন চীনা প্রতিনিধিরা। আরাকান রাজ্যের সংকট নিরসনে ৩ ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাব পেশ করলেন, ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই যাতে সম্মতি ছিল। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আরাকান রাজ্যে প্রত্যাবাসন যার অন্তর্ভুক্ত।
নভেম্বর ৩০ পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু।

ডিসেম্বর ২ ঢাকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাথে সাক্ষাৎ করে বার্মা ও বাংলাদেশে তাঁর ৬ দিনের সফর শেষ করলেন পোপ ফ্রান্সিস।

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ৮ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিল আদালত। তাঁকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডস্থ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী করা হয়।

এপ্রিল ১১ কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের ঘোষণা দিলেন শেখ হাসিনা।

২০১৮ মে-ফেব্রুয়ারি ২০১৯ বাংলাদেশের মাদক যুদ্ধ। এ সময়কালে আত্মসমর্পণ করেন ১০০ মাদক কারবারী। এই যুদ্ধে ৮০০ ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে।

মে ৫ অচিহ্নিত বন্দুকধারীর আততায়ী হামলায় রাঙামাটি জেলায় ৫ জন খুন হন, এঁদের একজন ইউপিডিএফ নেতা তপন জ্যোতি চাকমা।

মে ২৭ টেকনাফের ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক র‍্যাবের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন, বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের প্রকাশ করা এক অডিও ক্লিপ থেকে জানা যায় এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল।

জুলাই ২৯ জাবালে নূর পরিবহনের বাস (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৯২৯৭) চাপা পড়ে নিহত হলেন শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব। দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন শুরু। ১০ আগস্ট পর্যন্ত চলা এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগ ও সরকার-সমর্থকদের হামলা, সাংবাদিকদের হেনস্তা, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম গ্রেপ্তার।

সেপ্টেম্বর ২২ নবগঠিত জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩ দফা দাবি মেনে নেয়ার আল্টিমেটাম দিল। দাবিগুলো হল: ১) নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, ২) নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া, এবং ৩) নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করার আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়া। বিএনপির শীর্ষ নেতারা এই দাবিতে সম্মতি জানান এবং জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের কামাল হোসেনের সাথে মঞ্চে শেয়ার করেন।

অক্টোবর ১০ ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার দায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং সাবেক উপ-শিক্ষামন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুকে মৃত্যুদণ্ড দিল ঢাকার একটি বিশেষ দ্রুত বিচার আদালত। তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। বিএনপি এই রায় প্রত্যাখ্যান করে।

ডিসেম্বর ৭ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ডিসেম্বর ৩০ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। রাতের বেলা ব্যালটবক্স ভর্তি করা নজিরবিহীন অনিয়ম, প্রহসন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক নিন্দাবাদ। ধানের শীষে ভোট দেয়ায় ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরের এক নারী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনের নির্দেশে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার।

২০১৯ জানুয়ারি ৩ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এল আওয়ামি লীগ সরকার।

ফেব্রুয়ারি ১৬ বাংলাদেশের মাদক যুদ্ধ সমাপ্ত। এ সময়কালে আত্মসমর্পণ করেন ১০০ মাদক কারবারী। এই যুদ্ধে ৮০০ ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে।
ফেব্রুয়ারি ২০ পুরান ঢাকার চকবাজারে গ্যাস সিলিণ্ডার বিস্ফোরণের কারণে ছড়িয়ে পড়া আগুনে ৬৭ জনের মৃত্যু।
ফেব্রুয়ারি ২৮ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র হলেন আতিকুল ইসলাম। ভাসানটেক বস্তিতে আগুন লেগে দুই শিশুর মৃত্যু।

মার্চ ১১ ২৮ বছর পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (ডাকসু) অনুষ্ঠিত। ভিপি হলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর। তবে জিএস-সহ অন্যান্য পদে ছাত্রলীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হন।
মার্চ ১৯ রাঙামাটি জেলা স্থানীয় নির্বাচন চলাকালে ৭ ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হল। যাঁদের মধ্যে ৪ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কর্মকর্তা। সেনা মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
মার্চ ২৮ বনানীর এফ আর টাওয়ার অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু।

এপ্রিল ১ অসুস্থতার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া শুরু হল।
এপ্রিল ৯ ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে গায়ে আগুন ধরিয়ে হত্যা করা হল।
এপ্রিল ২৪ রানা প্লাজা কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের ছয় বছর পূর্তির দিনে আত্মহত্যা করলেন রানা প্লাজার উদ্ধারকর্মী ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা মহানগর শাখার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক নওশাদ হাসান হিমু।

জুলাই-আগস্ট ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব

জুলাই ১ স্বীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় ১৫ বছর বিনা বেতনে শিক্ষকতা শেষে অবসরে গেলেন ঝিনাইদহের পিডি আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক সুকুমার সাহা।

সেপ্টেম্বর ২৪ ক্যাসিনো অভিযান
সেপ্টেম্বর ২৯ বাংলাদেশ থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দিল ভারত।

অক্টোবর ৭ ফেসবুকে ভারতের সমালোচনা করে পোস্ট দেয়ার কারণে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শেরে বাংলা হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পিটিয়ে মেরে ফেলল।
অক্টোবর ২০-২২ ভোলা দাঙ্গা, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এক ইসলামবিদ্বেষী পোস্টের বিরুদ্ধে প্রতিবাদীরা রাস্তায় নামলে পুলিশ গুলি করে ৪ ব্যক্তিকে হত্যা করল।
অক্টোবর ২৪ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ এস. এম সিরাজ উদ দৌলা-সহ নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের ১৬ জন আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত।

নভেম্বর ১০ ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ১৭ ব্যক্তির মৃত্যু।

২৫ নভেম্বর নারী শ্রমিক কণ্ঠ নামে একটি সংগঠন জানাল,  বিদেশ থেকে এর আগের এক দশকে ২৬৭৫২ জন নারী প্রবাসী কর্মীর লাশ দেশে ফিরেছে।

ডিসেম্বর ১২-১৩ কেরানিগঞ্জে কারখানায় আগুন লেগে ১২ ব্যক্তির মৃত্যু।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ হিউম্যান রাইটসের (এফআইডিএইচ) এক প্রতিবেদন অনুসারে, এক দশকে ৫০৯ জন বাংলাদেশি জোরপূর্বক অন্তর্ধানের শিকার হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৫৯ জনের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।

২০২০-২১ মহামারী

২০২০ জানুয়ারি ৩০ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটকে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যগত জরুরী অবস্থা বলে ঘোষণা করে। সারা দুনিয়ার মত বাংলাদেশেও লকডাউন দেয়া হয়। মেহনতিদের জন্য সমন্বিত বিশেষ ব্যবস্থার না থাকায় তাঁদের দুর্ভোগ বাড়ে, এই কারণে সরকার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।

ফেব্রুয়ারি ১১ সেইন্ট মার্টিন্স দ্বীপের কাছে মালয়েশিয়াগামী এক ট্রলার ডুবিতে ১৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর মৃত্যু।

মার্চ ৩ খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা পৌরসভার গাজীনগর এলাকায় ব্যক্তিমালিকানাধীন বাগানের গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে বিজিবি ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু। এদের মধ্যে দুইজন পিতা-পুত্র (মো. সাহাব মিয়া ও আহম্মদ আলী)। স্বামীসন্তানের মৃত্যুসংবাদ শুনে হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেলেন রঞ্জু বেগম।
মার্চ ৯ বাংলাদেশে মুজিববর্ষ (২০২০-২১) উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসার কথা থাকলেও করোনা সংকটের কারণে সফর স্থগিত করা হল।
মার্চ ১০ ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি বশির আহমেদের করা এক রিটের প্রেক্ষিতে জয় বাংলাকে জাতীয় শ্লোগান হিসাবে গ্রহণ করার জন্য রায় দিলেন হাই কোর্ট।

মে ৫ করোনা সংকট মোকাবেলায় সরকারি গাফেলতির সমালোচনা করে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দেয়ার দায়ে লেখক মুশতাক আহমেদ ও কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর সহ ১১ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হল।
মে ১৬-২১ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের হানায় প্রায় ১১৫০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি ও ১৬ জনের প্রাণহানি।
মে ২৭ ঢাকার এক হাসপাতালে আগুন লেগে করোনাভাইরাসের জন্য চিকিৎসাহীন থাকা ৫ রোগীর মৃত্যু।

জুন ২৫ অব্যাহত লোকসানের অজুহাতে ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে ২৫০০০ শ্রমিককে অবসরে পাঠাল সরকার।

জুলাই ৩১ রাত ৯টার দিকে টেকনাফে মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে খুন হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। একটি তথ্যচিত্র নির্মাণের কাজে কক্সবাজারে ছিলেন সিনহা। মাটিতে লুটিয়ে পড়া সিনহার দেহে লাথি মারতে মারতে কুত্তার বাচ্চা বলে গালি দিয়ে আরো দুইটা গুলি করেন টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার।

আগস্ট ৪ লেবাননের বৈরুত বিস্ফোরণে নিহত হলেন ৩ বাংলাদেশি।

সেপ্টেম্বর ৪ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বাইতুস সালাম জামে মসজিদে এশার নামাজ চলাকালীন সময়ে মসজিদের পাশের তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন থেকে নিঃসরিত হওয়া গ্যাসের ফলে সৃষ্ট বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে ২৫ ব্যক্তির মৃত্যু।

অক্টোবর ৪ মাসখানেক আগে নোয়াখালীতে এক গৃহবধূর ওপর চালানো নৃশংস নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
অক্টোবর ৩১ লালমনিরহাটে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে শহীদুন নবী জুয়েল নামের এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ আগুন দিয়ে পোড়ানো হল।

ডিসেম্বর ৪ তুমুল আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসান চরে স্থানান্তরিত করা হল।

২০২১ ফেব্রুয়ারি ১ আলজাজিরায় প্রচারিত হল বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের পরিবারের দুর্নীতির সাথে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন।*
* প্রামাণ্যচিত্রের নামটি ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধীর জরুরি অবস্থার সময়কার স্মৃতি নিয়ে জনার্দন ঠাকুরের লেখা ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত বই অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন থেকে নেয়া।
ফেব্রুয়ারি ২৫ আগের বছর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক কুমিরচাষী ও লেখক মুশতাক আহমেদের কারাহেফাজতে মৃত্যু। ১৩ জন রাষ্ট্রদূত উদ্বেগ প্রকাশ করলেন। দেশে-বিদেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠল।

মার্চ ৩ ছয় মাসের জন্য জামিন পেলেন কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর।
মার্চ ৪ সাংবাদিকদের কাছে কারাহেফাজতে তাঁর ওপর চালানো ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন কিশোর, জানালেন সহবন্দী মুশতাকও কারাগারে নির্যাতিত হয়েছিলেন। এই ঘটনায় সরকার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। দেশজুড়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি ওঠে।
মার্চ ১৬-২৯ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমন। দেশ জুড়ে দেখা দিল ব্যাপক প্রতিবাদ। খুন-মামলা-গ্রেপ্তার।

এপ্রিল ১৭ চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের বাঁশখালী বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরোধিতাকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে ৫ জন প্রতিবাদীকে খুন করে পুলিশ।

জুন ২৭ মগবাজারে এক গ্যাস বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত।

জুলাই ৮ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমডি মোহাম্মদ আবুল হাসেমের মালিকানাধীন হাসেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় আগুন লাগায় তাতে ৫২ জন শ্রমিকের মৃত্যু।
জুলাই ১০ হাসেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ড-মৃত্যুর ঘটনায় কারখানার মালিক আবুল হাসেম ও তাঁর ছেলেসহ ৮ জন গ্রেপ্তার।

সেপ্টেম্বর ৩১ রোহিঙ্গা মানবাধিকার কর্মী মহিব উল্লাহ হত্যাকাণ্ড।

অক্টোবর ১৩-১৭ দুর্গা পূজার সময় বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলা।*
* আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এক হিসেবে, ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশি হিন্দুদের উপর ৩,৬৭৯টি রাজনৈতিক মদতপুষ্ট সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে৷ এসব হামলায় ১১ জন হিন্দু খুন হয়েছেন। এ সময়কালে ১,৫৫৯টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, আক্রান্ত হয়েছে ৪৪২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এবং প্রতিমা-মণ্ডপ-মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১,৬৭৮টি।

নভেম্বর ২৪ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লার গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মারা গেলেন নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান।
নভেম্বর ২৯ রামপুরায় অনাবিল পরিবহনের চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী মাঈনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয়কে খুন করা হল। বাসচালকের বিরুদ্ধে মামলা করলেন দুর্জয়ের মা রাশিদা বেগম। প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ জনতা ৯টি বাসে অগ্নিসংযোগ করে।

ডিসেম্বর ১০ মানবাধিকার লঙ্ঘণের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ ও বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হুমকির মুখে ফেলার দায়ে র‍্যাবের সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল যুক্তরাষ্ট্র।*
* এরা হচ্ছেন র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, র‍্যাব-৭’এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদ, র‍্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. জাহাঙ্গীর আলম, ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. আনোয়ার লতিফ খান। র‍্যাবের বিরুদ্ধে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬০০টির বেশি গুম, ২০১৮ সাল থেকে ৬০০ জনকে বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের কারও নামে কিংবা কোন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকের জিম্মায় কোনো সম্পদ থাকলে তা জব্দ হবে।
ডিসেম্বর ১৬ বিজয় দিবসে দেশবাসীকে ‘বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে চলার’ শপথ পাঠ করালেন টানা দুইবার – ২০১৪ সাল আর ২০১৮ সাল – বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়া শেখ হাসিনা।

২০২২ জুন ৪-৭ সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোর বিস্ফোরণে ৪৭ জনের মৃত্যু।

সেপ্টেম্বর ২২-৩০ ইডেন কলেজ কেলেঙ্কারি

২০২৩ জানুয়ারি ১৪ যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অফ স্টেট ফর সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স ডোনাল্ড লু তাঁর দক্ষিণ এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সফর করলেন। ২০২১ সালে র‍্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা জারির পর প্রথমবারের মত এত উচ্চপদস্থ কোন মার্কিন কর্মকর্তার বাংলাদেশে আগমন। দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে গণতন্ত্র, নির্বাচন, শ্রম অধিকার লঙ্ঘণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘণ ইস্যু নিয়ে আলাপ হল।

ফেব্রুয়ারি ১৩ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামি লীগ দলীয় প্রার্থী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

এপ্রিল ৪ বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ড, ২৭.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি।

জুলাই ১৬ চাকরির স্থায়িত্বের দাবিতে ৪ ঘন্টার জন্য অবরোধে গেলেন রাজধানী ঢাকার রেল শ্রমিকরা।

আগস্ট সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩য়ের অনুমোদন দিল মন্ত্রিসভা।

সেপ্টেম্বর ২৯ ৯ দফার ভিত্তিতে ১৫টি ছাত্র সংগঠন নিয়ে গঠিত হল ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য।*
* ছাত্র সংগঠনগুলো হল: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি), গণতান্ত্রিক ছাত্রদল (এলডিপি), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, জাগপা ছাত্রলীগ, ছাত্র ফোরাম (গণফোরাম মন্টু), ভাসানী ছাত্র পরিষদ, জাতীয় ছাত্রসমাজ (কাজী জাফর), জাতীয় ছাত্রসমাজ (পার্থ), জাগপা ছাত্রলীগ (লুৎফর), ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি এবং রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন।

অক্টোবর একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে বাংলাদেশের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রধারীদের (এনআইডি) ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে গেল। বাংলাদেশের এনআইডি সার্ভারে ১২ কোটি ভোটারের তথ্য আছে, যাঁদের মধ্যে প্রায় ৫ কোটি ৫০ লক্ষ স্মার্ট কার্ডধারী। এটি দেশটির ইতিহাসের বৃহত্তম তথ্য ফাঁসের ঘটনা।
অক্টোবর ৪ আত্মপ্রকাশ করল নতুন ছাত্র সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি।

নভেম্বর ৭ গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি করে মাসে ১২,৫০০ টাকা করা হল। উল্লেখ্য, তারা মাসে ২৩,০০০ টাকা বেতনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন।

২০২৪ জানুয়ারি ১ নোবেল লরিয়েট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শ্রম আইন ভঙ্গের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হল।*
* এক আপীলের ধারাবাহিকতায় ৭ আগস্ট রায় বাতিল করে দিয়ে তাঁকে খালাস দেয়া হয়।
জানুয়ারি ৫ ঢাকার গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে এক অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৫ ব্যক্তির মৃত্যু।
জানুয়ারি ৭ বিরোধী দলগুলো-কর্তৃক বয়কটকৃত নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় এল আওয়ামি লীগ সরকার। কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে আগুন লেগে বিপুল ক্ষতিসাধন, বিস্থাপিত হলেন ৪ হাজার রোহিঙ্গা।

ফেব্রুয়ারি ৫ বার্মার গৃহযুদ্ধের স্পিলওভার ইফেক্টে আন্তঃসীমান্ত শেলিংয়ের দরুণ বান্দরবানের ঘুমধুম ইউনিয়নে খুন হলেন বাংলাদেশি গৃহবধূ হোসনেআরা খাতুন ও জনৈক অচিহ্নিত রোহিঙ্গা শ্রমিক।
ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডে এক বহুতল ভবনে আগুন লেগে অন্তত ৪৩ জনের মৃত্যু।

মার্চ ১৫ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহয়ের ক্রুদের বন্দী করে জিম্মি করে রাখল সোমালি জলদস্যুরা।

এপ্রিল ১২ ৩২ দিন আটক থাকার পর সোমালি জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেলেন এমভি আবদুল্লাহয়ের ক্রুরা।

মে ১৩-২২ ১৩ তারিখে উধাও হয়ে যান আওয়ামি লীগ দলীয় এমপি মো. আনোয়ারুল আজীম আনার। ২২ তারিখে কলকাতায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ততার দায়ে ৩ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার।
মে ২৬ ঘূর্ণিঝড় রেমালে সারা দেশে ৭ জন নিহত।

জুন ৬ আগের দিন মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০% কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া এক রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু।

জুলাই ২-৬ দেশ জুড়ে ভারী বৃষ্টিপাতে ৮ ব্যক্তির মৃত্যু।
জুলাই ৫ পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজিত।
জুলাই ৯ মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপে প্যারাবন কেটে চিংড়ি ঘের তৈরির ঘটনায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করল পরিবেশ অধিদপ্তর।
জুলাই ১৬-৩৬ ২১ দিনের গণঅভ্যুত্থান। ছাত্র-শ্রমিক-জনতা ও বিভিন্ন বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে। অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে সারা দুনিয়া থেকে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগতভাবে অদৃশ্য করে দেয়া হল। নৃশংস রাষ্ট্রীয় হত্যাযজ্ঞ। বিপুল সংখ্যক মানুষ জখম হলেন, অসংখ্য শহিদ। শহিদদের চূড়ান্ত তালিকা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।*
* ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি গেজেট প্রকাশ করে, যাতে ৮৩৪ জন শহিদের তথ্য দেয়া হয়।
জুলাই ৩৬ গণঅভ্যুত্থানকারীদের হাতে গণভবনের পতন ও শেখ হাসিনার ভারতে পলায়নের ভেতর দিয়ে ৫৬৯৮ দিনের দীর্ঘ জুলুমশাহির আনুষ্ঠানিক অবসান। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীগুলোর তরফে জানানো হল, একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে। কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার হুকুম জারি করলেন প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

আগস্ট ৬ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিলেন প্রেসিডেন্ট চুপ্পু, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম ঘোষণা করলেন।
আগস্ট ৮ অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হিসেবে শপথ নিলেন ইউনূস।
আগস্ট ১৪ শেখ হাসিনা সহ ৯ জন সাবেক সরকারি কর্তাব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জেনোসাইডের অভিযোগ দায়ের করা হল।

সেপ্টেম্বর ৩ দেশজুড়ে বন্যায় অন্তত ৭১ জন মানুষের মৃত্যু।

অক্টোবর ১৭ জুলাই ম্যাসাকার চলাকালে মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার দায়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
অক্টোবর ২৩ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নামক ছাত্র সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
অক্টোবর ৩১ বিজয় নগরে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসে অগ্নিসংযোগ।

নভেম্বর ২৬ চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার কেন্দ্র করে দেখা দেয়া সহিংসতায় খুন হলেন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ।

ডিসেম্বর ২৪ শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানাল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।

২০২৫ জানুয়ারি ১৬ ২০০৪ সালের এক মামলায় ১৭ বছরেরও বেশি সময় জেল খাটার পর মুক্তি পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।

ফেব্রুয়ারি ৫ ধানমণ্ডি ৩২ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হল।
ফেব্রুয়ারি ৮-৯ অপারেশন ডেভিল হান্ট, সারা দেশে ১৩০০+ গ্রেপ্তার।
ফেব্রুয়ারি ১২ জুলাই ম্যাসাকার নিয়ে ওএনএইচসিআরের প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হল, যাতে দাবি করা হল শেখ হাসিনা প্রশাসনের দ্বারা মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ মিলেছে। জুলাই ম্যাসাকার চলাকালে ১৪০০ মানুষ খুন হয়েছেন। ১১ হাজারেরও বেশি হয়েছেন আটক ও গ্রেপ্তার।
ফেব্রুয়ারি ২৮ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের একাংশের উদ্যোগে গঠিত হল নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

মার্চ ১৮ নারায়ণগঞ্জে গ্রেপ্তার হলেন দি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) নেতা আতাউল্লা আবু আম্মার জুনুনি।

এপ্রিল ৭ গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা
এপ্রিল ১২ মার্চ ফর গাজা। ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচে বড় ফিলিস্তিনপন্থী প্রতিবাদের ঘটনা।
এপ্রিল ১৩ দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার দায়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করল বাংলাদেশ।
এপ্রিল ১৭ দেড় দশক পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান কূটনৈতিক সংলাপ। ১৯৭১ সালের জেনোসাইডের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে মাফ চাওয়া এবং অবিভক্ত পাকিস্তানের (১৯৪৭-৭১) একাত্তর-পূর্ব সম্পদে বাংলাদেশের হিস্যা ৪.৫২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা নিয়ে আলোচনা হল। নানান খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির আশাবাদ দুই রাষ্ট্রের।
এপ্রিল ২০ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেলেন মোহাম্মদ সূফিউর রহমান। ছুরিকাঘাতে নিহত হলেন প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। ৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের যাঁদের ২ জন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা, প্রধান অভিযুক্তসহ ৬ সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার।
এপ্রিল ২৩ বিশ্বব্যাংকের সাথে বাংলাদেশ সরকার মোট ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের দুটি চুক্তি সই করল। এই চুক্তির আওতায়, চট্টগ্রামে বে টার্মিনাল মেরিন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশকে ৬৫০ মিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক। বাকি ২০০ মিলিয়ন ডলার দেবে বিপন্ন জনগোষ্ঠীগুলোর জন্য সামাজিক সুরক্ষা জোরদার প্রকল্প বাস্তবায়নে।
এপ্রিল ২৬ ভারতের গুজরাটে ৫০০রও বেশি বাংলাদেশিকে “অবৈধ অভিবাসী” হওয়ার দায়ে আটক করা হল।

মে ৬ চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে ফিরলেন খালেদা জিয়া।
মে ৮ থাইল্যান্ডে পালালেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আবদুল হামিদ।
মে ১০ আইসিটিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী সরকার। একইসাথে আইসিটি আইনের সংশোধনী প্রস্তাবও অনুমোদন দিল; যাতে ট্রাইব্যুনাল কোন রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে সাজা দিতে পারে। পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হল।

তথ্যসূত্র

আজাদ, হুমায়ুন। ২০১৯। লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী। দ্বিতীয় সংস্করণ সপ্তদশ মুদ্রণ। আগামী।
—২০২১। কতো নদী সরোবর বা বাঙলা ভাষার জীবনী। দ্বিতীয় সংস্করণ একাদশ মুদ্রণ। আগামী।

আলী, কর্নেল শওকত। ২০১১। সত্য মামলা আগরতলা। প্রথমা।

রহমান, মুহাম্মদ হাবিবুর। ২০০৮। বাংলাদেশের তারিখ। তৃতীয় সংস্করণ। মাওলা ব্রাদার্স।
— ২০১৯। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপঞ্জি ১৯৭১-২০১১। পঞ্চম মুদ্রণ। প্রথমা।

রাফিন, ইরফানুর রহমান। ২০২২। সময়রেখা: মহাবিশ্বের উৎপত্তি থেকে করোনাসংকট পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত ঘটনাপঞ্জি। দিব্যপ্রকাশ।

শাহরিয়ার, খন্দকার স্বনন। ২০২১। মধ্যযুগের বাংলা: বখতিয়ার খলজি থেকে সিরাজ-উদ-দৌলা। প্রথম সংস্করণ। বাতিঘর।
— ২০২৩। প্রাচীন যুগের বাংলা: গঙ্গারাজ্য থেকে গৌড়। প্রথম সংস্করণ। বাতিঘর।

BBC. 2019. “Bangladesh Profile – Timeline.” BBC, February 26.
https://www.bbc.com/news/world-south-asia-12651483
— 2024. “Bangladesh country profile.” BBC, August 22.
https://www.bbc.com/news/world-south-asia-12650940

Khalil, Tasneem. 2016. Jallad: Death Squads and State Terror in South Asia. Pluto Press.

OHCHR. 2025. “Human Rights Violations and Abuses related to the Protests of July and August 2024 in Bangladesh.” February 12.
https://www.ohchr.org/en/documents/country-reports/ohchr-fact-finding-report-human-rights-violations-and-abuses-related

Phillips, Douglas A., and Gritzner, Charles F.. 2007. Bangladesh. Chelsea House.

Riaz, Ali. 2016. Bangladesh: A Political History since Independence. I.B. Tauris.

Schendel, Williem Van. 2020. A History of Bangladesh. 2nd ed. Cambridge University Press.

Wikipedia.

নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।

অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ

দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *