ভারত

Spread the love

Featured Image: Wikipedia Commons.

বিশ্ব মানচিত্র ব্লগ

পূর্বসাল

৩০০০-২০০১ সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতা

২৬০০-২৫০০ ভারতবর্ষে ব্রোঞ্জযুগের সূচনা।

২০৫০ ইন্দো-ইরানিরা এ সময় ইরান ও আফগানিস্তানে বসতিস্থাপন করছেন।

২০০০-১০০১ মধ্য এশিয়া থেকে ভারতের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল ও পাকিস্তানে যাযাবর আর্যদের আগমন।*
* “হিন্দুত্ববাদী চিন্তকরা একটা বহির্গমন তত্ত্ব প্রচার করেন। যার সারকথা হচ্ছে, সংস্কৃতভাষী আর্যদের উৎপত্তিস্থল ভারত। সেখান থেকে বেরিয়ে তাঁরা বাকি দুনিয়ায় গেছেন। এই তত্ত্বের অসারতা দেখিয়ে দিয়েছেন টনি জোসেফ। তিনি খেয়াল করেছেন যে, বহির্গমন তত্ত্বটির পক্ষে “একটাও বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র নেই, যা সতীর্থদের দ্বারা যাচাই করা হয়েছে।” […] হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা প্রায়শই আরেকটা দাবি করে থাকেন। উপমহাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে যে একটি প্রাচীন সভ্যতা ছিল, সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতা, আর্যদের আগমনের কয়েকশো বছর আগে ক্ষয়লাভ করেছিল; তাদের দাবি বৈদিক সভ্যতা সেটির ধারাবাহিকতা। হিন্দুত্ববাদের অনুসারীরা অসততার বিস্ময়কর পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন। যার মধ্যে রয়েছে সম্পূর্ণরূপে জাল প্রমাণ বানানো। যেমন, ঘোড়ার সীলমোহর। এই জালিয়াতির উদ্দেশ্য হচ্ছে সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতা আর বৈদিক সংস্কৃতিকে এক করে দেখানো (উইজেল ও ফার্মার ২০০০)। বহির্গমন তত্ত্বের মত এই প্রমাণেরও একটাই সমস্যা। এই হাওয়াই দাবির কোন বিদ্যায়তনিক ভিত্তি নেই।” (Truschke 2020, translation mine)

২০০০-১৬০০ হরপ্পায় নাগরিক সভ্যতার পতনের কাল শুরু হল।

১৯০০ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সরস্বতী নদীর পানি শুকিয়ে গেল। সিন্ধু সভ্যতার অবসানের সূচনা। ভারতীয় সভ্যতার কেন্দ্র সরস্বতী নদী উপত্যকা থেকে গঙ্গা নদীর উপত্যকায় স্থানান্তরিত হল।

১৫০০-১০০০ ঋগ্বেদয়ের সম্ভাব্য রচনাকাল।

আধুনিক পণ্ডিতদের হিসেবে, ইরানি নবি জরাথুস্ট্রের জীবনকাল।* জরাথুস্ট্রবাদের পবিত্র বই আবেস্তা নামে পরিচিত, এসময়ই তা মৌখিকভাবে বিকশিত হতে শুরু করে। আবেস্তার সাথে ঋগ্বেদের বহু মিল পাওয়া গেছে।**
* প্রাচীন পারস্যের ধর্ম ছিল একটি বহুঈশ্বরবাদী ধর্ম। প্রাচীনেরা বিশ্বাস করতেন, সুনীতির প্রতীক খোদা আহুরা মাজদা সবকিছু সৃষ্টি করেছেন, সৃষ্টি করেছেন তিনি একইসাথে আনাহিতা আর মিথ্রার মত গৌণ উপাস্যদেরও। আহুরা মাজদার শত্রু হচ্ছে দুর্নীতির প্রতীক খোদাদ্রোহী আংরা মান্যু, অন্ধকারের শক্তিগুলোর অধিপতি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাই যার কাজ। সুনীতি আর দুর্নীতির মধ্যে নিরন্তর লড়াই চলছে। আদিপিতা মাশ্যা আর আদিমাতা মাশ্যানা আংরা মান্যুর ধোঁকাবাজির শিকার হয়ে আহুরা মাজদার পথ থেকে দূরে সরে যান। তবে তাঁদের উত্তরসূরী মানুষেরা স্বাধীন ইচ্ছার অধিকারী। তারা অন্ধকারের পরিবর্তে আলোর পথে হাঁটতে পারে। স্বার্থপরতার চেয়ে উন্নততর মূল্যবোধের চর্চা করতে পারে। নবি জরাথুস্ট্র এই বিশ্বাসে মৌলিক পরিবর্তন আনেন। তিনি বলেন, এতকাল লোকে ধর্মটাকে ভুল বুঝেছে। আহুরা মাজদা প্রধান নন, এক এবং অদ্বিতীয়। তিনি সর্বশক্তিমান, তাই তাঁর কোন শরিক নেই। অন্য কথিত উপাস্যরা আসলে তাঁরই গুণের বহিঃপ্রকাশ। এভাবে একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম হয়ে উঠল জরাথুস্ট্রবাদ। তবে স্বাধীন ইচ্ছার চিন্তাটা মেনে নিয়েছিলেন জরাথুস্ট্র। তাঁর ধর্মে মানুষ নিয়তির হাতের পুতুল নয়। তারা স্বাধীন ইচ্ছা ব্যবহার করার সামর্থ্য রাখে।
** জরাথুস্ট্রবাদ সম্পর্কে সংক্ষেপে জানতে দেখুন, (Hartz 2009a).

১৩০০ সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতা এসময় পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে যায়।*
* একসময় “আর্য আগ্রাসন”কে দায়ী করা হত। বর্তমানে এই আগ্রাসন তত্ত্ব অতিকথা বিবেচিত হয়। ধারণা করা হয়, সম্ভবত কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতার মানুষেরা অঞ্চলটি ছেড়ে চলে গিয়ে থাকবে।

১২০০-৯০০ অথর্ববেদ, যজুর্বেদ, ও সামবেদগুলোর সম্ভাব্য রচনাকাল।

১২০০-৬০১ এ সময় ভারতে নির্মিত হচ্ছে রঙিন ধূসর মৃৎপাত্র।

১২০০-৫০০ বর্তমান উত্তর ভারত জুড়ে আর্যভাষী সংস্কৃতির বিস্তার। গড়ে উঠতে থাকল বহু কতিপয়তন্ত্র ও রাজত্ব।

১০০০ ভারতবর্ষে লৌহযুগের সূচনা।

৯৫০-৬৫০ মুখের ভাষা হিসেবে সংস্কৃতের ব্যবহার হ্রাস পেল।

৮০০-৬০০ ব্রাহ্মণ্যগুলোর সম্ভাব্য রচনাকাল।

৭৫০ ভারতবর্ষের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে প্রাকৃত ভাষাগুলোর বিকাশ ঘটছে।

৬০০-৫০০ আরণ্যকগুলোর সম্ভাব্য রচনাকাল।

৬০০-১০১ এ সময় ভারতে নির্মিত হচ্ছে কালো রঙপালিশ মৃৎপাত্র।

৫৯৯-৫২৭ মহাবীর বর্ধমানের জীবনকাল। জৈনধর্মের অনুসারীদের ২৪তম তীর্থঙ্কর বলে বিবেচিত হন। অহিংসা, তপশ্চর্যা, ও নিরামিষবাদ প্রচার করেছেন মহাবীর।

৫৬৩-৪৮৬/৪৮৩ সিদ্ধার্থ গৌতমের জীবনকাল। “বুদ্ধ” নামেই অধিক পরিচিত। রাজপরিবারে জন্মেছিলেন; জগতের মায়া কাটাতে গৃহত্যাগ করেন, নির্বাণ লাভ করে পরিশেষে বৌদ্ধধর্ম* প্রবর্তন করেন।
* বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে সংক্ষেপে জানতে দেখুন, (Wangu 2009a).

৫৫০ গাঙ্গেয় উপত্যকায় নাগরিক সভ্যতা।

৫৪৫-৪১৩ হর্ষঙ্ক রাজবংশ।

৫৪৩-৩২১ মগধ রাজ্যের উত্থান।*
* বর্তমান বাংলা ও বিহারের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত।

৫০০ শ্রৌতসূত্রগুলোর* সম্ভাব্য রচনাকাল।
* শ্রৌতসূত্রগুলোতে প্রাচীন ভারতের রাজাদের সিংহাসন আরোহণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অভিষেকানুষ্ঠান ও উচ্চবর্ণীয়দের নানাবিধ উপলক্ষ্যে বলিদানের বিবরণ পাওয়া যায়।

রচিত হল যাস্কের নিরুক্ত

৫০০-৪০০ আদিপর্বের উপনিষদগুলোর সম্ভাব্য রচনাকাল।

৫০০-২০০ ধর্মশাস্ত্রগুলোর সম্ভাব্য সংকলন।*
* এগুলো আইনের বই।

৪৫০ রচিত হল শৌনকের বৃহদেবতা

৪১৩-৩৪৫ শিশুনাগ রাজবংশ।

৪০০-১০০ শেষপর্বের উপনিষদগুলোর সম্ভাব্য রচনাকাল।

৪০০ রচিত হল জৈমিনির পূর্ব মীমাংসা সূত্র ও বাদরায়ণের বেদান্ত সূত্র

৩৪৫-৩১৭/১৪ নন্দ রাজবংশ।

৩২৬ ম্যাকিদোনিয়ার সেকান্দার শা পাঞ্জাব আক্রমণ করলেন।

৩২৫-১৮৫ মৌর্য সাম্রাজ্য

৩২১-২৯৮ চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজত্বকাল।

৩০৩ দক্ষিণ আফগানিস্তানে এক যুদ্ধে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কাছে হেরে যান প্রাচ্যে সেকান্দার শার এক সেনাপতি সেলুকাস, প্রথম নিকাটোর। তবে ব্যাকট্রিয়া রাজ্যটি দখলে রাখতে সমর্থ হন। উভয়ের মধ্যে একটা শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়, চন্দ্রগুপ্তের কাছ থেকে পাওয়া ৫০০ হাতির বিনিময়ে ভারতবর্ষের ওপর নিজের দাবি ছেড়ে দেন সেলুকাস, প্রথম নিকাটোর।

৩০০ পূর্বসাল-৩০০ সাল রচিত হল মহাভারত।*
* মহাভারতয়ের আদি নাম ছিল জয় সংহিতা। শুরুতে এতে ছিল মাত্র ৮ হাজার ৮০০টি স্তবক। পরে স্তবকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৪ হাজার। সেইসাথে বদলে গেল বইটির নাম, হল ভারত। চূড়ান্ত রূপে স্তবকের সংখ্যা ১ লাখে পৌঁছাল। ফলে, বইটির নাম আবারও বদলে হল শতসহস্রী সংহিতা। আজকে এই চূড়ান্ত রূপটিই মহাভারত নামে পরিচিত। (শর্মা ২০১৭)

৩০০-২০১ এ সময় প্রাকৃত ভাষায় শিলালিপি খোদাই করা হচ্ছে।

৩০০-২০০ বৈশেষিক দর্শনের ধারা প্রতিষ্ঠা করলেন মহর্ষি কণাদ।

রচিত হল ভরত মুণির নাট্যশাস্ত্র

৩০০-১০০ ধর্মসূত্রগুলোর সম্ভাব্য রচনাকাল।

৩০০ গৃহ্যসূত্রগুলোর সম্ভাব্য রচনাকাল।*
* গৃহ্যসূত্রগুলোতে পাই প্রাচীন ভারতের পারিবারিক আচার-অনুষ্ঠানের বিবরণ।

রচিত হল পাণিনির অষ্টাধ্যায়ী

২৯৩-২৬৮ বিন্দুসার মৌর্যের রাজত্ব।

২৬৯-২৩২ অশোক মৌর্যের রাজত্ব।*
* ভারতের ইতিহাসের অন্যতম ন্যায়পরায়ণ রাজা বলে বিবেচিত।

২৬২ বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হলেন রাজা অশোক। ন্যায়ানুগ শাসনের বর্ণনা দিয়ে ১৪টি ফরমান জারি করলেন। যা শাসক হিসেবে তাঁর ক্ষমতাকে সীমিত করল।

২৫০ পাটালিপুত্রে অনুষ্ঠিত হল তৃতীয় বৌদ্ধ কাউন্সিল।

২০০ পূর্বসাল-২০০ সাল রচিত হল বাল্মীকির রামায়ণ

২০০-১০০ ন্যায় দর্শনের ধারা প্রতিষ্ঠা করলেন গৌতম।

২০০-১ বর্তমান দাক্ষিণাত্য শাসন করতে শুরু করলেন অন্ধ্র বা সাতবাহন রাজারা, তৃতীয় শতাব্দী সাল পর্যন্ত চলবে এই শাসন।

২০০ এ সময়ই কখনো অজন্তায় গুহাচিত্র আঁকা শুরু হয়।

১৫০ রচিত হল পতঞ্জলির যোগসূত্র

২০০ পূর্বসাল-১০০ সাল রচিত হল তোলাকাপ্পিয়াম ও জৈমিনির মীমাংসাসূত্র

১৮০-৬৮ শুঙ্গ রাজবংশ।

১০০-১ ভারতে শক আক্রমণ।

৬৮-২২ কাহ্ন রাজবংশ।

৬ পূর্বসাল-৩০ সাল বর্তমান ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের শহর বেথলেহেমে জন্ম নেয়া খ্রিস্টধর্মের* প্রাণকেন্দ্র জেসাস ক্রাইস্টের জীবনকাল।

সাল

১-১০০ দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুতে ভরত নট্যম নাচের উৎপত্তি। দক্ষিণপূর্ব এশিয়া আর চীনে পৌঁছে গেল বৌদ্ধধর্ম। রুমিদের সাথে ভারতীয়দের সমুদ্র বাণিজ্য চালু হল।

১-২০০ দক্ষিণ ভারতের কেরালার কোদুনগাল্লুরে বসতিস্থাপন করল ইহুদিরা।

১-৩০০ কুশান সাম্রাজ্য

৫২ ভারতে এলেন জেসাসের অন্যতম শিষ্য সেইন্ট টমাস। তিনি শায়িত আছেন বর্তমান ভারতের চেন্নাইয়ে (মাদ্রাজ)। তাই স্থানীয় খ্রিস্টানরা নিজেদেরকে টমাস/সিরীয় খ্রিস্টান বলে।

৭৫ গুজরাতের এক রাজকুমারের জাভা অভিযান।

৭৮-১৪৪ কুশান রাজারা এ সময় ভারত শাসন করছেন।

৭৮ শকাব্দের সূচনা।

১০০-৩০০ দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুতে রচিত হচ্ছে সঙ্গম সাহিত্য।

১০০ সাংখ্য দর্শনের প্রবক্তা কপিলের জন্ম।

রচিত হল ভগবত গীতা ও মনুর ধর্মশাস্ত্র

১০১-৫০০ এ সময় সংস্কৃত ভাষায় শিলালিপি খোদাই করা হচ্ছে।

১১২-১৪৪ রাজা কনিষ্কের শাসনকাল।

১৫০ জুনাগড়ে প্রথম সংস্কৃত শিলালিপি প্রকাশ করলেন রুদ্রদমন।

২০০ কম্বোডিয়া ও মালয়েশিয়ায় স্থাপিত হল হিন্দু রাজ্য।*
* হিন্দু বলতে আজকে আমরা যা বুঝি, এই বুঝটা শ্বাশ্বত বা চিরন্তন কিছু নয়। মানুষের ধর্মীয় পরিচয়ের বোধ স্থানকালপাত্রসাপেক্ষে বদলাতে থাকে। তাই এখানে হিন্দু বলতে মুসলমানদের আগমনের আগের ভারতের নানান ধর্মের অনুসারী বুঝতে হবে, কোন একক সম্প্রদায় না।

রচিত হল কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র

২০১-৮৯৮ পল্লব সাম্রাজ্য।

২৫০ তামিলনাড়ুর পল্লব রাজারা তাঁদের রাজধানী কাঞ্চিপুরামে কামাক্ষী মন্দির কমপ্লেক্স নির্মাণ করলেন।

২৫০-৫০০ রচিত হল মৎস্যপুরাণ

২৫০-৫৫০ রচিত হল মার্কণ্ডেয় পুরাণ।*
* দেবীমাহাত্ম্য অংশটুকু প্রক্ষিপ্ত।

২৫৫-৫৫০ ভকতক রাজ্য।

৩০০ রচিত হল পঞ্চতন্ত্র ও বাৎস্যায়ন মল্লনাগের কামসূত্র

৩২০-৫৫০/৭০০ গুপ্ত সাম্রাজ্য। সম্রাটরা বৈষ্ণবমত* ও শৈবমত** উভয়েরই পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। বৌদ্ধদের প্রতিও সহিষ্ণুতা দেখাচ্ছেন।
* বৈষ্ণবরা বিষ্ণু ও তাঁর অবতারদের উপাসনা করেন, যাঁদের মধ্যে রাম আর কৃষ্ণই প্রধান।
** শৈবরা শিবের উপাসক।

৩৩৫-৮০ “গুপ্ত সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ রাজা” বিবেচিত সমুদ্রগুপ্তের রাজত্বকাল।

৩৫০-৯৫০ রচিত হল ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ

৩৮০-৪১৩/১৫ দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বিক্রমাদিত্যের রাজত্বকাল।

৪০০-৪৭৭ শকুন্তলামেঘদূতয়ের লেখক কবি কালীদাসের জীবনকাল।

৪০০ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে হিন্দুধর্মের* বিস্তার ঘটছে।
* হিন্দুধর্ম সম্পর্কে সংক্ষেপে জানতে দেখুন, (Wangu 2009b).

তামিলনাড়ুর ৬৩ জন শৈব সাধুর প্রথমজন কারাইকালাম্মাইয়ারের মৃত্যু।

৪০০-৫০০ রচিত হল ইলানকো আতিকালের তামিল মহাকাব্য চিলাপ্পাতিকারাম

৪০১-৫০০ বর্তমান ভারতে এলেন চীনা পরিব্রাজক ফা হিয়েন। এ সময়ই কখনো প্রতিষ্ঠিত হয় নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়।

৪৫০ রচিত হল হরিবংশবিষ্ণুপুরাণ

৪৫০-৯০০ রচিত হল বামনপুরাণ

৪৫৪, ৪৯৫ ভারতে হুন-এফথালাইটরা পরপর দুটি আক্রমণ চালাল।

৫০০-৮০০ তেভামারয়ের রচয়িতা নয়নমার শৈব তামিল কবিদের যুগ।

৫০১-১১০০ এ সময় দক্ষিণ ভারতের একাংশ শাসন করছে পল্লব রাজবংশ।

৫৯০-৯২০ প্রথম পাণ্ড্য রাজবংশ।

৫৫০-৭৫৭ এ সময় দাক্ষিণাত্য শাসন করছে প্রথম চালুক্য রাজবংশ।

৫৫০-৮৫০ রচিত হল কূর্মপুরাণ

৫৭০-৬৭০ শৈব সাধু আপ্পার ও সাম্বানথারের জীবনকাল।

৫৭০ হযরত মুহাম্মদের (সা.) জন্ম।

৬০০-৭৫০ রচিত হল পদ্মপুরাণ

৬০০-৯৩০ তামিলনাড়ুয় দেখা দিলেন ১২ জন আলভার বৈষ্ণব সাধু, বিষ্ণু ও তাঁর অবতারদের প্রশংসা করে ৪০০০এরও বেশি গান ও কবিতা লিখলেন।

৬০০-১০০০ রচিত হল লিঙ্গপুরাণ

৬০৬-৪৭ এ সময় বর্তমান উত্তর ভারত শাসন করছেব হর্ষবর্ধন।

৬২৯-৪৫ বর্তমান ভারতে এলেন চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং।

৬৩০-৯৭০ এ সময় দাক্ষিণাত্যের একাংশ শাসন করছে পূর্ব চালুক্য রাজবংশ।

৬৩২-৬১ রাশিদুন খেলাফত

৬৩৬/৪৪ ভারতীয় জলদস্যুদের ওপর রাশিদুন খেলাফতের আক্রমণ।

৬৪৪ রাশিদুন খেলাফতের বালুচিস্তান জয়।*
* বালুচিস্তান বর্তমান পাকিস্তানের ৭টি প্রশাসনিক অঞ্চলের একটি।

৬৫০-৮০০ আদি পর্বের তন্ত্র

৬৫১ রাশিদুন খেলাফতের পারস্য জয়।

৬৬১-৭৫০ উমাইয়া খেলাফত।*
* উমাইয়া খেলাফতের কেন্দ্র ছিল বর্তমান সিরিয়ার দামিশক।

৭০০-৮০০ জরথুস্ট্রবাদীদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ ভারতবর্ষে চলে আসলেন, বর্তমানে যারা পার্সি নামেই বেশি পরিচিত। এরা হাজার বছর ধরে আবেস্তা সংরক্ষণ করেছেন। অগ্নি মন্দিরের ঐতিহ্য নতুন ভূখণ্ডেও জারি রেখেছেন।

৭০০-১১০০ রচিত হল স্কন্ধপুরাণ

৭১২ উমাইয়া খেলাফতের সিন্ধ বিজয়।*
* সিন্ধ বর্তমান পাকিস্তানের ৭টি প্রশাসনিক অঞ্চলের একটি।

৭৩০-১০৩৬ বর্তমান ভারতের বিভিন্ন অংশ শাসন করছে গুর্জর-প্রতিহার রাজবংশ।

৭৫০-১৫০০ ভারতের মধ্যযুগীয় পুরাণগুলো এ সময়কালের মধ্যে রচিত।

৭৫০-১৩৫০ রচিত হল শিবপুরাণ

৭৫৭-৯৭৩ এ সময় দাক্ষিণাত্যের একাংশ শাসন করছে রাষ্ট্রকূট রাজবংশ।

৭৬০-১১৪২ বর্তমান বাংলা, বিহার, ও আসাম শাসন করছে পাল রাজবংশ।

৭৮৮-৮২০ আদি শঙ্করের জীবনকাল। মালাবার উপকূলে জন্ম নিয়েছিলেন এই বিখ্যাত দার্শনিক। অদ্বৈত দর্শনকে সুসংহত রূপ প্রদান করেন তিনি।

৮০০ কাশ্মীরী শৈবমতের প্রতিষ্ঠা বসুগুপ্তের জন্ম। তামিলনাড়ুর বালিকা সাধু আন্দালের জন্ম। কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে ভক্তিমূলক কবিতা লেখা আন্দাল ১৬ বছর বয়সে হঠাৎ উধাও হয়ে যান।*
* পরবর্তীকালে দেবী বসুন্ধরার অবতার হিসাবে বিবেচিত হবেন।

রচিত হল মাণিক্যবাসাগরের তিরুভাচাকাম

৮০১-১০০০ আঞ্চলিক ভাষায় শিলালিপি খোদাই করা হচ্ছে।

৮২৫ তামিল শৈব সাধু সুন্দররের জন্ম।

৮৫০-১৩২৭ দক্ষিণ ভারতের একাংশ শাসন করছে চোলা রাজবংশ।

৮৮০-৯৩০ তিরুভায়মলির রচয়িতা নাম্মালভারের জীবনকাল।

৯০০-১০০০ রচিত হল ব্রাহ্মণ্যমালা তন্ত্র

৯০০-১৩০০ রচিত হল যোগবশিষ্ঠ

৯০১-১২০০ ভারতের ওড়িশায় ওড়িশি নাচের উৎপত্তি।

৯১৬-১২০৩ মধ্য ভারত শাসন করছে ছান্দেলা রাজবংশ।

৯৫০ রচিত হল ভাগবতপুরাণ

৯৬২-১১৮৬ এ সময় আফগানিস্তানের গজনী থেকে বর্তমান ভারতের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল শাসন করছে গজনবী রাজবংশ।

৯৭৩-১০৪৮ আল-বিরুনির জীবনকাল।

৯৭৩-১১৮৯ এ সময় দাক্ষিণাত্য শাসন করছে দ্বিতীয় চালুক্য রাজবংশ।

৯৯৭ গজনীর মসনদে আসীন হন সুলতান মাহমুদ, তিন দশকে ১৭ বার ভারতবর্ষ আক্রমণ করেন।

৯৯৮ আফগানিস্তানের গজনীর মসনদে বসলেন সবুক্তগীনের পুত্র মাহমুদ।*
* ভারতবর্ষে ইনি “গজনীর সুলতান মাহমুদ” নামে পরিচিতি। তাঁর রাজত্ব কুর্দিস্তান থেকে কাশ্মীর আর আমু দরিয়া থেকে গঙ্গা নদী পর্যন্ত প্রসারিত ছিল। ১০৩০ সালে মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত শাসন করেন মাহমুদ। জীবদ্দশায় মোট ১৭ বার ভারতবর্ষে আক্রমণ চালান। তাঁর বিরুদ্ধে মন্দির লুঠ করার অভিযোগ আছে, আছে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ, যা সমকালীন ভারতের অন্যতম ঐতিহাসিক বাহাছ। তবে মাহমুদ জ্ঞানবিজ্ঞান ও শিল্পসাহিত্যের সমঝদার ছিলেন। শাহনামার রচয়িতা কবি ফেরদৌসী থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক আল-বিরুনি অনেকেই তাঁর পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছেন।

১০০১ সুলতান মাহমুদ প্রথমবার ভারতবর্ষ আক্রমণ করলেন।

১০০১-২১ উত্তর-পশ্চিম ভারতে অভিযান চালাচ্ছেন গজনীর সুলতান মাহমুদ।

১০২৬ গজনীর সুলতান মাহমুদ কর্তৃক সোমনাথ মন্দির ধবংসসাধন।

১০৩০ গজনীর সুলতান মাহমুদের মৃত্যু।

১০৫৬-১১৩৭ রামানুজের জীবনকাল।

১০৭০-১২৩০ এ সময় বর্তমান বাংলা শাসন শাসন করছে সেন রাজবংশ।

১১০০-১২০০ মহাদেবী আক্কার জীবনকাল।

১১০৬-৬৭/৬৮ লিঙ্গায়ত দর্শনের ধারার প্রতিষ্ঠাতা বাসবের জীবনকাল।

১১৪৮ কাশ্মীরে লিখিত হল কলহনের রাজতরঙ্গিনী

১১৫১ আফগানিস্তানে শেষ হয়ে গেল গজনভী বংশের রাজত্ব। আফগান তুর্কিদের আরেকটি রাজবংশ ঘুরীদের রাজত্ব শুরু হল। ঘুরীরা গজনীতে গণহত্যা চালায়; শহরটির বিখ্যাত গ্রন্থাগার ও ভবনগুলো পুড়িয়ে দেন আলাউদ্দিন, ধারণ করেন জাহানসুজ বা দুনিয়াদগ্ধকারী উপাধি।

১১৭৮ কম্বনের ইরামাবাতারামের সম্ভাব্য রচনাকাল।*
* রামায়ণের তামিল সংস্করণ।

১১৯১ তরাইনের প্রথম যুদ্ধ, আফগানিস্তানের সুলতান মুহাম্মাদ ঘুরিকে পরাস্ত করেন রাজপুত পৃথ্বীরাজ চৌহান।

১১৯২ তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ, রাজপুত পৃথ্বীরাজ চৌহানকে পরাস্ত করেন ও মৃত্যুদণ্ড দেন মুহাম্মাদ ঘুরি। স্বল্পকালীন ঘুরি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত। ১২০৬ সাল পর্যন্ত আমৃত্যু শাসন করেন ঘুরি।

১২০০ উত্তর ভারতের আদি সূফীদের কাল। জয়দেবের গীতগোবিন্দয়ের সম্ভাব্য রচনাকাল। রামাচরিতময়ের সম্ভাব্য রচনাকাল।*
* রামায়ণের মালয়ালাম সংস্করণ।

১২০৩ মঙ্গোল সাম্রাজ্য।*
* তেমুজিন, পরবর্তীতে চেঙ্গিজ খান, কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়।

১২০৬-১৫২৬ দিল্লি সুলতানশাহি।*
* দিল্লি সুলতানশাহির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কুতুবুদ্দিন আইবেক। ছোটকালে তাঁকে গোলাম হিসেবে বিক্রি করা হয়েছিল। এই তুর্কিস্তানি গোলামকে কিনে নেন মুহাম্মদ ঘুরি, এবং কালক্রমে আইবেক প্রতিষ্ঠা করেন দিল্লি সুলতানশাহি।

১২০৬-১১ কুতুবুদ্দিন আইবেকের রাজত্বকাল।

১২১১-৮৯ গোলাম রাজবংশ।

১২১১-৩৫ শামসুদ্দিন আলতামাসের রাজত্বকাল।

১২১৬-১৩২৭ দ্বিতীয় পাণ্ড্য রাজ্য।

১২২১ ভারতে মঙ্গোল আক্রমণ।

১২২৩-২৪ দক্ষিণ এশিয়ার দেশে দেশে মঙ্গোল আক্রমণ।

১২২৮-১৮২৬ এ সময় আসাম শাসন করছে অহোম রাজবংশ।

১২৩০ ভারতীয় সূফী মঈনুদ্দিন চিশতির মৃত্যু।

১২৩৮-১৩১৭ কর্ণাটকের দ্বৈতবাদী দার্শনিক মাধবের জীবনকাল।

১২৪১ মঙ্গোলদের লাহোর দখল।

১২৫০ রচিত হল পালকুরিকি সোমনাথের বাসবপুরাণ

১২৬৫-১২৮৭ গিয়াসুদ্দিন বলবনের রাজত্বকাল।

১২৯০-১৩২০ দিল্লি সুলতানশাহির খলজি রাজবংশ।

১২৯০-৯৬ জালালুদ্দিন ফিরোজ শাহের রাজত্বকাল।

১২৯৬-১৩১৬ আলাউদ্দিন খলজির রাজত্বকাল।

১৩০১-১৪০০ এ সময়ই কখনো ভারতে কাগজের ব্যবহার শুরু হয়।

১৩০৬ ইরাবতী বা রাভি নদীর তীরে মঙ্গোলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।

১৩০৭ দেবগিরি ও ওয়ারঙ্গল দখল করলেন মালিক কাফুর।

১৩১৬-২০ কুতুবুদ্দিন মোবারক শাহের রাজত্বকাল।

১৩২০-১৪১২ দিল্লি সুলতানশাহির তুঘলক রাজবংশ।

১৩২০-২৫ গিয়াসুদ্দিন তুঘলক শাহের রাজত্বকাল।

১৩২৫-৫১ মোহাম্মদ শাহের রাজত্বকাল।

১৩২৫ দিল্লির চিশতিয়া তরিকার সূফী নিজামুদ্দিন আউলিয়ার মৃত্যু।

১৩৩০-১৫৬৫ বিজয়নগর রাজ্য।

১৩৩৬ চেঙ্গিজ খানের বংশধর আমির তৈমুরের জন্ম।

১৩৪৭-১৫২৭ বাহমানী সুলতানশাহি।

১৩৫০ ঋগ্বেদের ভাষ্য লিখছেন সায়ন।

১৩৫১-৮৮ ফিরোজ শাহ তুঘলকের রাজত্বকাল।

১৩৫২-১৪৪৮ মিথিলার বিদ্যাপতির জীবনকাল।

১৩৭৫-১৪৫০ চণ্ডীদাসের জীবনকাল।

১৩৯৮ আমির তৈমুরের আক্রমণে দিল্লি ধবংস হয়ে গেল।

১৩৯৮-১৫১৮ কবীরের জীবনকাল।

১৪০০ মহাভারতয়ের তামিল সংস্করণ রচনা করলেন ভিল্লিপুত্তুর আলভার। রামায়ণের বাংলা সংস্করণ প্রস্তুত করলেন কৃত্তিবাস ওঝা।

১৪০১-১৫৬২ মালওয়া সুলতানশাহি।

১৪০১-১৬০০ বর্তমান ভারতের আসামে ছত্রিয়া নামের উৎপত্তি।

১৪০৮-১৫০৩ তেলেগু কবি অন্যমায়ার জীবনকাল।

১৪১৯ সারেং বিদ্রোহ।

১৪২১-৩৪ মোবারক শাহের রাজত্বকাল।

১৪২২-৩৫ আহমদ শাহ বাহমনীর রাজত্বকাল।

১৪৪৬-৮১ মাহমুদ গাওয়ানের রাজত্বকাল।

১৪৫১-১৫২৫ দিল্লি সুলতানশাহির লোদি রাজবংশ।

১৪৫১-৮৯ বাহলুল খাঁর রাজত্বকাল।

১৪৫৮-১৫১১ প্রথম মাহমুদ বেগার্হার রাজত্বকাল।

১৪৬৯-১৫৩৯ গুরু নানকের জীবনকাল। শিখ ধর্মের প্রবর্তক বলে বিবেচিত হন নানক। তাঁর ধর্মচিন্তায় হিন্দুধর্ম ও ইসলামের সমন্বয় ঘটেছে।

১৪৮৬-১৫৩৩ চৈতন্যের জীবনকাল।

১৪৮৯-১৫১৫ সিকান্দার শাহের রাজত্বকাল।

১৪৯৮ ভারতে পৌঁছলেন পর্তুগীজ অভিযাত্রিক ভাস্কো দা গামা।

১৪৯৮-১৫৪৭ মীরাবাঈয়ের জীবনকাল।

১৫০১-১৬০০ এই শতাব্দীতে কেরালায় মহিনট্যম, উত্তর ভারতে কত্থক, আর অন্ধ্র প্রদেশে কুচিপুরি নাচের উৎপত্তি ঘটে।

১৫০৪ মায়ের দিক থেকে চেঙ্গিজ খান আর বাপের দিক থেকে আমির তৈমুরের বংশধর ১৯-বছর-বয়সী তুর্কি যুবক জহিরুদ্দিন মুহাম্মদ বাবুর কাবুল জয় করেন।

১৫০৯-২৯ কৃষ্ণদেব রায়ের রাজত্বকাল।

১৫১০ পর্তুগিজরা গোয়া দখল করে নিল।

১৫২৬ পানিপথের প্রথম যুদ্ধে লোদিদের পরাস্ত করার মাধ্যমে ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন বাবুর।

১৫২৬-১৮৫৮ মুঘল সাম্রাজ্য।*
* মুঘল শব্দটা আসলে মঙ্গোল শব্দের হিন্দুস্থানী রূপ। প্রাচীন আর্যভাষীদের মত এরাও ভারতের বাইরে থেকে এসেছেন। তবে পাকাপাকিভাবে ভারতে নিবাস গড়ে স্থানীয় হয়ে যাওয়ায় আর্যভাষী বা মুঘল কাউকেই আর বহিরাগত বলার সুযোগ নেই।

১৫২৬-৩০ জহিরুদ্দিন মুহাম্মদ বাবুরের রাজত্বকাল।

১৫৩০ জহিরুদ্দিন মুহাম্মদ বাবুরের মৃত্যু।

১৫৩০-৪০ মুঘল সম্রাট নাসিরুদ্দিন মুহাম্মদ হুমায়ুনের প্রথম রাজত্বকাল।

১৫৩২/৪৩-১৬২৩ তুলসীদাসের জীবনকাল।

১৫৩৫ দিউতে দুর্গ নির্মাণ করল পর্তুগিজরা।

১৫৪০-৪৫ বর্তমান ভারতের উত্তরাঞ্চল শাসন করছেন শের শাহ। সুরি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমান বাংলায় শাসনকালটি পাঠান রাজত্ব বলে পরিচিত।

১৫৪৫-৫৪ শের শাহের পরে সুরি সাম্রাজ্যের মসনদে আসীন হলেন তাঁর পুত্র ইসলাম শাহ।

১৫৫৫-৫৬ নাসিরুদ্দিন মুহাম্মদ হুমায়ুনের দ্বিতীয় রাজত্বকাল।

১৫৫৬-১৬০৫ জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবরের রাজত্বকাল।

১৫৫৬ পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে বিদ্রোহী হেমুকে হারালেন আকবর।

১৫৬৫ বিজয়নগর রাজ্যের পতন।

১৫৭৪-৭৭ রচিত হল তুলসীদাসের রামচরিতমানস

১৬০০ ব্রিটেনের রানী প্রথম এলিজাবেথের কাছ থেকে পাওয়া রাজকীয় সনদের ভিত্তিতে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত হল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।

কাশীরাম দাসের মহাভারতয়ের সম্ভাব্য রচনাকাল।

১৬০১-১৭০০ এই শতাব্দীতে কেরালায় কথাকলি নাচের উৎপত্তি ঘটে।

১৬০৫-২৭ নুরুদ্দিন মুহাম্মদ সেলিমের রাজত্বকাল। জাহাঙ্গীর নামে অধিক পরিচিত। নামকাওয়াস্তে বাদশা ছিলেন জাহাঙ্গীর; কার্যত, সম্রাজ্ঞী নূরজাহানই দেশ চালাতেন।

১৬০৮-৪৯ তুকারামের জীবনকাল।

১৬১২ ভারতে ব্রিটিশদের আগমন।

১৬১৩-১৪ উইলিয়াম হকিনসের নেতৃত্বে মসুলিপত্নম ও সুরাটে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। রাজা প্রথম জেমসের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে বাদশা জাহাঙ্গীরের সামনে উপস্থাপন করলেন স্যার টমাস রো।

১৬১৫-১৮ মুঘলরা ভারতে ব্রিটিশদের ব্যবসা করার ও কারখানা খোলার অনুমতি দিল।

১৬২৮-৫৮ শাহাবুদ্দিন মুহাম্মদ খুররমের রাজত্বকাল। শাহজাহান নামে অধিক পরিচিত। স্থাপত্যকলার অনুপম নিদর্শন তাজমহল নির্মাণের জন্য বিখ্যাত।

১৬৩১ আগ্রায় সম্রাট শাহজাহানের হুকুমে নির্মিত হল তাজমহল।

১৬৫৮-১৭০৭ আবু মুজাফফর মহিউদ্দিন মুহাম্মদ আওরঙ্গজেবের রাজত্বকাল। তাঁর শাসনামলেই মুঘলরা দক্ষিণ ভারত জয় করে। বাদশা আওরঙ্গজেব তাঁর শাসনামলের প্রায় পুরোটাই উত্থানশীল মারাঠা শক্তির সাথে লড়েছেন।

১৬৬৪ লোরেইনেঁ প্রতিষ্ঠিত হল ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।

১৬৬৯ গোকলা অভ্যুত্থান।

১৬৭০-৭৯ এ সময়ই কখনো প্রতিষ্ঠিত হয় প্রথম বোম্বে পার্সি পঞ্চায়েত।

১৬৭৪ ভারতে বাণিজ্যকুঠি নির্মাণ করতে শুরু করল ফরাসিরা। ছত্রপতি শিবাজি রাজে ভোঁসলে কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল মারাঠা সাম্রাজ্য। এই সাম্রাজ্য ১৮২০ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল।

১৬৮০ মারাঠা নেতা ছত্রপতি শিবাজী রাও পেশোয়ার মৃত্যু।

১৬৮৬ বিজাপুর ও গোলকুন্ডা দখল করলেন আওরঙ্গজেব।

১৬৯০ সুতানুটি, ডিহি কলকাতা, ও গোবিন্দপুর এই তিনটি গ্রাম নিয়ে কলকাতা শহরের পত্তন করা হল।

১৬৯৯ গুরু গোবিন্দ সিং কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল খালসা।

১৭০০ এসময় বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারতের ভাগ ২৭ শতাংশ।

রচিত হল মহানির্বাণ তন্ত্র কল্কিপুরাণ

১৭০১-১৮০০ বর্তমান ভারতের মণিপুরে মণিপুরি নাচের উৎপত্তি।

১৭০২ মাদ্রাজের প্রশাসক টমাস পিট চুরি করলেন পিট হীরক, এরপর তা ১ লক্ষ ৩৫ হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে ফ্রান্সের রাজপ্রতিনিধির কাছে বেচে দিলেন।

১৭০৭ শেষ “মহান মুঘল” সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যু।

১৭২০-৮১ রামপ্রসাদ সেনের জীবনকাল।

১৭২৩ ভারতে সফর করতে গিয়ে এক বণিক আবেস্তার একটি পাণ্ডুলিপি সাথে নিয়ে ব্রিটেনে ফিরলেন। ইওরোপীয়রা এই বইটির অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারল। পাণ্ডুলিপিটি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বডলেইয়ান পাঠাগারে রাখা হল।

১৭২৫-৭৪ রবার্ট ক্লাইভের জীবনকাল।

১৭৩৯ নাদির শাহের আক্রমণে দিল্লি ধবংস হয়ে গেল।

১৭৪৭-৭৩ “আফগানিস্তানের জনক” খ্যাত আহমাদ শাহ দুররানির রাজত্বকাল।

১৭৫১ তামিলনাড়ুর আরকট কবজা করলেন ২৬-বছর-বয়সী রবার্ট ক্লাইভ।

১৭৫৫ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বডলেইয়ান পাঠাগারে রাখা আবেস্তার পাণ্ডুলিপিটি আব্রাহাম হায়াসিন্থ আনকোতিল-দুপ্রে নামের এক ফরাসি পণ্ডিতের নজরে আসলো।

১৭৫৭ জুন ২৩ পলাশীর যুদ্ধে ব্রিটিশদের হাতে নবাব সিরাজুদ্দৌলার পরাজয়। মুর্শিদাবাদের নবাবির পতন। বাংলায় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের সূচনা।

১৭৫৭-১৯৪৭ ব্রিটিশ ভারত

১৭৬১-৯৯ মহীশূর রাজ্য।

১৭৬১-৮২ হায়দার আলির রাজত্বকাল।

১৭৬১ মারাঠা আর শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন আহমাদ শাহ দুররানি। ব্রিটিশদের হাতে ভারতে ফরাসিদের রাজধানী পণ্ডিচেরির পতন। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে আফগানদের কাছে মারাঠাদের পরাজয়।

১৭৬১-৬৯ আফগান-শিখ যুদ্ধ, এসময় আফগানরা কয়েক হাজার শিখকে হত্যা করে। ধবংস করে অসংখ্য শিখ উপাসনালয়। কিন্তু এতকিছুর পরও তারা পাঞ্জাবের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হয়।

১৭৬২ আবেস্তা পুনরুদ্ধার করতে ভারত সফর করলেন আনকোতিল-দুপ্রে। ফ্রান্সে ফিরলেন ১৮০টা আবেস্তান পাণ্ডুলিপি সাথে নিয়ে। শুরু করলেন অনুবাদ।

১৭৬৩-৬৯ উপনিবেশিক ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহের প্রথম পর্ব।

১৭৬৪ বক্সারের যুদ্ধ।

১৭৬৫ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সাথে একটি বাণিজ্য চুক্তি করলেন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রশাসক রবার্ট ক্লাইভ। বাংলা, বিহার, ওড়িশার দেওয়ানি লাভ করল কোম্পানি। ভারতে কাগজে-কলমে মুঘল সাম্রাজ্য টিকে থাকলেও এসময় থেকেই কার্যত ব্রিটিশ শাসন শুরু হয়।

১৭৬৭ প্রথম ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ।*
* এই যুদ্ধে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, মারাঠা, আর হায়দ্রাবাদের নিজামের সম্মিলিত বাহিনী মহীশূরের হায়দার আলীর কাছে পরাজিত।

১৭৬৭-৬৮ ত্রিপুরার সমশের গাজীর বিদ্রোহ।

১৭৬৯ সন্দ্বীপের প্রথম কৃষক বিদ্রোহ।

১৭৭০ কোম্পানির উপনিবেশিক নিষ্কাশনমূলক রাজস্বনীতির কারণে বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ নামে পরিচিত। এতে প্রায় এক কোটি মানুষ মারা যায়।

১৭৭০-৭২, ১৭৭৩-৭৮, ১৭৭৫-৮০, ১৭৮১-৮৬, ১৭৮৭-৯২ ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহের দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ পর্ব।

১৭৭১ দিল্লি মারাঠাদের হাতে এল।

১৭৭২-১৮৩৩ রামমোহন রায়ের জীবনকাল।

১৭৭৩ বাংলার আফিমের উৎপাদন ও বিক্রয়ের ওপর একচেটিয়া অধিকার লাভ করল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ব্রিটিশ সংসদে অনুমোদন পেল ভারত নিয়ন্ত্রণ আইন।

১৭৭৪ ব্রিটিশ ভারতের প্রথম গভর্নর-জেনারেল হলেন ওয়ারেন হেস্টিংস।

১৭৭৫-৮৪ প্রথম ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ।

১৭৭৬-৭৭ উপনিবেশিক ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম চাকমা বিদ্রোহ।

১৭৮০-৮৪ দ্বিতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ।

১৭৮১ হায়দার আলীর ছেলে টিপু সুলতানের হাতে ব্রিটিশদের পরাজয়।

১৭৮২ দ্বিতীয় চাকমা বিদ্রোহ।

১৭৮২-৯৯ টিপু সুলতানের রাজত্বকাল।

১৭৮৩ রংপুর বিদ্রোহ।

১৭৮৪ পাশ হল উইলিয়াম পিটের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অ্যাক্ট: উদ্দেশ্য কোম্পানির রাশ টেনে ধরে সংসদীয় কর্তৃত্বের অধীনে আনা। আইনজীবী ও ভাষাবিজ্ঞানী স্যার উইলিয়াম জোনস কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল কলকাতার রয়েল এশিয়াটিক সোসাইটি। যশোর ও খুলনার প্রথম প্রজাবিদ্রোহ।

১৭৮৪-৮৭ তৃতীয় ও শেষ চাকমা বিদ্রোহ।

১৭৮৫-৮৬ বীরভূমের গণবিদ্রোহ।

১৭৮৬ ব্রিটিশ ভারতের দ্বিতীয় গভর্নর-জেনারেল হলেন লর্ড কর্নওয়ালিস। উইলিয়াম জোনস কর্তৃক ঘোষিত হল ইন্দো-ইওরোপীয় ভাষাপরিবার।

১৭৮৭-৯৫ ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর-জেনারেল থাকাকালীন সময়কার অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির দায়ে ব্রিটেনের সংসদে অভিশংসন বিচারের সম্মুখীন হলেন ওয়ারেন হেস্টিংস। এই বিচারে প্রজিকিউশনের নেতৃত্বে দেন এডমুন্ড বার্কে। বিচারের মূলে ছিল উপনিবেশবাদ বিষয়ে দুই দৃষ্টিভঙ্গি। হেস্টিংস ব্রিটিশদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার পক্ষপাতী ছিলেন, আর বিশ্বাসী ছিলেন নিরঙ্কুশ ক্ষমতার চর্চায়। বার্কে মনে করতেন, উপনিবেশের জনগণের অধিকারের একটা স্বীকৃতি থাকা দরকার, সাম্রাজ্যিক ক্ষমতার চর্চারও একটা সীমা থাকা উচিত। বিচার শেষে অধিকাংশ অভিযোগ থেকে খালাস পান হেস্টিংস, সংখ্যাগুরুর ভোট তার পক্ষে যাওয়ায় অভিশংসন প্রচেষ্টা ব্যর্থ যায়। এটা ব্রিটেনের ইতিহাসের সবচে বিখ্যাত মামলাগুলার একটা।

১৭৮৯-৯১ বীরভূম ও বাঁকুড়ার পাহাড়িয়া বিদ্রোহ।

১৭৯০-৯২ তৃতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ।

১৭৯২ বাখরগঞ্জের সুবান্দিয়া বিদ্রোহ।

১৭৯৩ লর্ড কর্নওয়ালিস কর্তৃক প্রবর্তিত হল চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। সিভিল সার্ভিসের সংস্কার।

১৭৯৩-১৮০০ ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহের শেষ পর্ব।

১৭৯৩-১৮০১ আফগানিস্তানে জামান শাহ দুররানির রাজত্বকাল।

১৭৯৬ যশোর ও খুলনার দ্বিতীয় প্রজাবিদ্রোহ।

১৭৯৭-৯৮ শিখদের বিরুদ্ধে জামান শাহ দুররানির দুটি অভিযান। ব্যর্থ হয়ে গেল। লাহোরে নিজেরই রাজ্যপাল রঞ্জিৎ সিংয়ের কাছে পরাজিত হলেন তিনি।

১৭৯৮ ব্রিটিশ ভারতের তৃতীয় গভর্নর-জেনারেল হলেন লর্ড ওয়ালেসলি।

১৭৯৯ চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ। ৫ হাজার ব্রিটিশ সৈনিক মহীশূরের রাজা টিপু সুলতানের রাজধানী শ্রীরঙ্গপত্নম দখল করে নিল। শহিদ হলেন টিপু।

১৮০১-১৮৩৯ পাঞ্জাবে শিখ সাম্রাজ্য স্থাপন করলেন ‘শের-ই-পাঞ্জাব’ মহারাজা রণজিৎ সিং।

১৮০৩-৫ দ্বিতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ।*
* ব্রিটিশরা দিল্লি দখল করে নিল এবং ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলের ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করল।

১৮০৬ ভেলোর বিদ্রোহ রক্তাক্ত উপায়ে দমন করা হল।

১৮০৭ দিল্লিতে কৃষক অভ্যুত্থান।

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জনৈক কর্মচারী জেমস প্রিন্সেপ প্রথমবারের মত সম্রাট অশোকের শিলালিপিগুলোর পাঠোদ্ধার করতে সমর্থ হলেন।*
* বহু আগেই, সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক মীরাটে সম্রাট অশোকের একটি স্তম্ভলিপির সন্ধান পেয়েছিলেন। তিনি সেটি দিল্লি নিয়ে আসেন এবং তাঁর দরবারের পণ্ডিতদের বলেন এর পাঠোদ্ধার করতে। পণ্ডিতরা ব্যর্থ হন। (শর্মা ২০১৭)

১৮১২ ময়মনসিংহের কৃষক বিদ্রোহ।

১৮১৩ ভারত সনদ আইন।

এপ্রিল ২০ সতীদাহ নিষিদ্ধ করল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।*
* “একই সাথে সহমরণকে আইনীভাবে রিকগনাইজ করে। নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়, ১৬ বছরের নিচে বিধবা হলে, গর্ভবতী অবস্থায় হলে বা দুগ্ধপোষ্য শিশুর মা বিধবা–এনারা সহমরণে যেতে পারবে না; এবং নেশাদ্রব্য সেবন বা জোরারোপের মাধ্যমে স্বামীর চিতায় বিধবাকে পোড়ানো যাবে না; সহমরণের একমাত্র বৈধ উপায় বিধবার উইল; বিধবার ইচ্ছা ভিন্ন কোন উপায় নাই আর। বিধবার ‘উইল’ জিনিসটা এইখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ; ইংরেজ তথা ইউরোপীয় অনুমান ছিলো সহমরণ হয় না আসলে, ওইটা সতীদাহ।” (মনু ২০১৩)

১৮১৫ প্রতিষ্ঠিত হল আর্যসভা।

১৮১৭-৯৮ সৈয়দ আহমদ খানের জীবনকাল।

১৮১৭-১৯ তৃতীয় হিন্দু-মারাঠা যুদ্ধ।

১৮১৯ সন্দ্বীপের দ্বিতীয় ও তৃতীয় কৃষক বিদ্রোহ।

১৮২০-৯১ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনকাল।

১৮২৪-৮৩ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর জীবনকাল।

১৮২৫-১৯১৭ দাদাভাই নওরোজীর জীবনকাল।

১৮২৫-২৭ ময়মনসিংহের প্রথম “পাগলপন্থী” বিদ্রোহ।

১৮২৫ ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ থেকে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় শ্রমিক রিইউনিয়ন ও মরিশাসে অভিবাসিত হলেন।

১৮২৮ রাজা রামমোহন রায় কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল ব্রাহ্মসভা। পরবর্তীতে ব্রাহ্ম সমাজে পরিণত হয়। ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর-জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক।

১৮৩০-৩৯ সরকারি কাজকর্মে ফারসির বদলে ইংরেজি চালু হল।

১৮৩১ ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন বারাসাতের মীর নিসার আলি। ইতিহাসে যিনি তিতুমীর নামেই অমর হয়ে আছেন। ব্রিটিশরা তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা কামান দেগে উড়িয়ে দেয়। শহিদ হন তিতুমীর। তাঁর অনুসারীদের ১৪০ জনকে প্রহসনের বিচারের পর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। তিতুমীরের ভাগ্নে ও সেনাপতি গোলাম মাসুমকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। মাসুমের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ধবংসপ্রাপ্ত বাঁশের কেল্লার সামনে তাঁকে ফাঁসি দেয়ার মাধ্যমে।

১৮৩২-৩৩ ময়মনসিংহের দ্বিতীয় ‘পাগলপন্থী’ বিদ্রোহ।

১৮৩৩ সনদ আইন: ব্রিটিশ সংসদে এই আইন পাশ হওয়ার মধ্য দিয়ে উপমহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্যবসায়িক তৎপরতার আইনী অবসান ঘটল।

১৮৩৪/৬-১৮৮৬ রামকৃষ্ণ পরমহংসের জীবনকাল।

১৮৩৫ ব্রিটিশ ভারতে পশ্চিমা শিক্ষা বিস্তারের পক্ষে ম্যাকলের মিনিট। ‘ইংলিশ এডুকেশন অ্যাক্ট’: ফারসির বদলে ইংরেজিকে দাপ্তরিক ও দরবারি ভাষার মর্যাদা দেয়া হল। মরিশাসে ১৯ হাজার শর্তাবদ্ধ ভারতীয় শ্রমিকের আগমন।

১৮৩৭-৮২ ময়মনসিংহের গারো বিদ্রোহ।

১৮৩৮ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে হাজী শরিয়তুল্লার নেতৃত্বে শুরু হল ফরায়েজি আন্দোলন।

১৮৩৮-৪৭ ফরায়েজি আন্দোলন।

১৮৩৮-৯৪ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনকাল।

১৮৩৯ ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সমালোচনা করলেন ধর্মপ্রচারক উইলিয়াম হাউইট।

১৮৪৩ ব্রিটিশরা সিন্ধু প্রদেশ দখল করে নিল। ডক্ট্রিন অফ ল্যাপস, কোন দেশীয় রাজা ওয়ারিশ না রেখে মারা গেলে তার রাজ্য গ্রাস করে নেয়ার আইন বানানো হল। ব্রাহ্ম সমাজকে পুনরুজ্জীবিত করে তুললেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

১৮৪৪-৯০ কুকি বিদ্রোহ।

১৮৪৫-৪৬ প্রথম ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ।

১৮৪৭ ব্রিটিশ ভারতে ফরায়েজি আন্দোলনের নেতা হাজী শরিয়তুল্লার ছেলে দুদু মিয়া ও তাঁর অনুসারীদের বিচার শুরু হল। এই প্রহসনের বিচারে তাঁরা দোষী সাব্যস্ত হন এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা লাভ করেন। কিন্তু রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল করলে পূর্ববর্তী রায় বাতিল হয়ে যায় এবং দুদু মিয়া ও তাঁর অনুসারীরা মুক্তি লাভ করেন।

১৮৪৮-৪৯ দ্বিতীয় ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ।

১৮৪৯-১৮৫৬ বাংলা, রাজস্থান, পাঞ্জাব, আর আওধের প্রিন্সলি স্টেটগুলো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করে নিলেন গভর্নর-জেনারেল লর্ড ডালহৌসি।

১৮৫০ তিপ্রা বিদ্রোহ।

১৮৫৩ বোম্বে ও থানেকে সংযুক্ত করা রেলরাস্তা বসানো হল।

১৮৫৪ বোম্বেতে প্রথম কাপড়ের কারখানা খোলা হল।

১৮৫৫-৫৭ সান্তাল বিদ্রোহ।

১৮৫৬-১৯২০ বালগঙ্গাধর তিলকের জীবনকাল।

১৮৫৬-১৯১৮ শিরডি’র সাই বাবার জীবনকাল।*
* তাঁকে হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই ভালোবাসেন। হিন্দুরা তাঁকে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শিবের অবতার মনে করেন। আর মুসলমানরা তাঁকে একজন ফকির হিসেবে দেখেন।

১৮৫৭ মহাবিদ্রোহ: দিল্লির সেপাইরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করল। দ্রুত ব্রিটিশ ভারতের সর্বত্র বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে পড়ল।*
* এই বিদ্রোহ শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের নামে হলেও কার্যত এর কোনো একক কেন্দ্র বা নেতৃত্ব ছিল না, সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে যে যার মত লড়েছেন। মহাবিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব – প্রিন্স আজিমুল্লাহ, নানাসাহেব, ঝাঁসির রানী লক্ষী বাঈ। এই বিদ্রোহ ভারতবর্ষ থেকে ব্রিটিশদের তাড়াতে সক্ষম না হলেও সাম্রাজ্যকে ধাক্কা দিয়েছিল, পরের বছর কোম্পানি বিলুপ্তি করে দিয়ে ভারতবর্ষকে ব্রিটিশ রাজমুকুটের অধীনস্ত করার পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের পুনরাবৃত্তি রোখা।

মে ১১ বিদ্রোহীরা দিল্লি দখল করে নিলেন।

সেপ্টেম্বর ১৪ বিদ্রোহীদের কাছ থেকে ব্রিটিশরা ছিনিয়ে নিল দিল্লি।
সেপ্টেম্বর ২১ দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের সিংহাসন। ৩৩১ বছর বয়সী মুঘল সাম্রাজ্যের অবসান।**
** ব্রিটিশ ঐতিহাসিক রিচার্ড এম. ইটন দিল্লি সালতানাত আর মুঘল সাম্রাজ্যের ছয়শো বছরকে বলেছেন পার্সিয়ানাত: ফারসি ভাষার সাম্রাজ্য। ১৮৫৭ সালের আগ পর্যন্ত ভারত – গ্রিকে ইন্ডিয়া আর ফারসিতে হিন্দুস্তান – স্রেফ একটা geographical territory ছিল, রাষ্ট্র নয়। ব্রিটিশ উপনিবেশিক আমলেই ভারত কেন্দ্রীভূত কর্তৃত্ববাদী প্রতিষ্ঠান অর্থে রাষ্ট্র হয়ে ওঠে, ১৯৪৭ সালের আজাদ পাকিস্তান ও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের আজাদ বাংলাদেশ একই উপনিবেশিক আইনি-প্রশাসনিক উত্তরাধিকার বহন করে চলেছে।

কলকাতা, বোম্বে, ও মাদ্রাজে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হল।

১৮৫৮ সিপাহি যুদ্ধের কারণে ব্রিটিশ রাজপরিবার বুঝতে পারে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ব্রিটেনের জন্য একটা বোঝায় পরিণত হচ্ছে। খোদ ব্রিটেনে কোম্পানির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠছিল। নভেম্বর ১: রানী ভিক্টোরিয়া ভারত শাসনের দায়ভার ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে নিজের হাতে তুলে নিলেন; ব্রিটিশ সংসদে লর্ড স্ট্যানলির আনা ভারত বিল পাশের মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হয়ে গেল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ভারতবর্ষকে ব্রিটিশ রাজমুকুটের অধীনে আনা হয়। এই শতকের শেষাবধি, ভারতবর্ষের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডে রাজ করে ব্রিটিশরা।*
* বাকি প্রায় এক-তৃতীয়াংশ থাকে প্রিন্সলি স্টেটগুলোর দখলে। ১৯৪৭ সাল নাগাদ এরকম ৫০০-৬০০ প্রিন্সলি স্টেট ছিল, যাদের শাসকরা ব্রিটিশদের সাথে বোঝাপড়ার মাধ্যমে, আধা-স্বাধীনভাবে রাজত্ব করতেন। ১৯৪৭-৪৯ সালে অধিকাংশ প্রিন্সলি স্টেট ভারতে ও অল্প কয়েকটি পাকিস্তানে যোগদান করে; অবশ্য জম্মু ও কাশ্মির, জুনাগড় এবং হায়দারাবাদের মত কয়েকটি প্রিন্সলি স্টেট নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।

ভারতীয়দের সিভিল সার্ভিসে যোগদানের অধিকার দেয়া হল। স্যার সৈয়দ আহমদ খান মুসলমান সমাজের ব্রিটিশ কৃষ্টিকালচার গ্রহণ করে নেয়ার ও ইসলামের সংস্কারের পক্ষে কলম ধরলেন।

১৮৫৯ বাংলার ভূমিরাজস্ব আইন: ভারতের প্রথম প্রজাস্বত্ব আইন।

১৮৫৯-৬২ নীল বিদ্রোহ।

১৮৬০-৬১ কুকি অভ্যুত্থান।

১৮৬১-১৯৪১ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনকাল।

১৮৬১ সুন্দরবন অঞ্চলের বিদ্রোহ। আহমেদাবাদে একটি কাপড়ের কারখানা খোলা হল।

মাইকেল মধুসূদন দত্ত, মেঘনাদবধ কাব্য

১৮৬২-১৯০২ স্বামী বিবেকানন্দের জীবনকাল।

১৮৬৩ জমাতিয়া বিদ্রোহ।

১৮৬৪ হজ পালন করলেন ভোপালের নবাব সিকান্দার বেগম।

১৮৬৬ ওড়িশা দুর্ভিক্ষ, ১৫ লক্ষ ভারতীয়র মৃত্যু।

১৮৬৮ দেওবন্দে প্রতিষ্ঠিত হল দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসার বিভিন্ন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উপনিবেশবাদবিরোধী লড়াইয়ে অবদান রেখেছেন।

১৮৬৯-১৯৪৮ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর জীবনকাল।

১৮৭০ গঠন করা হল পুনে সর্বজনিক সভা।

১৮৭২ ব্রিটিশ ভারতের প্রথম জরিপ। পাঞ্জাবের নামধারী বিদ্রোহ।

১৮৭২-৭৩ পাবনা ও বগুড়া জেলার কৃষক বিদ্রোহ।

১৮৭২-১৯৪৮ অরবিন্দ ঘোষের জীবনকাল।

১৮৭৩-১৯২৪ মহাকবি কুমারান আসানের জীবনকাল।

১৮৭৩-৭৫ মহারাষ্ট্রে মহাজনদের বিরুদ্ধে কৃষক বিদ্রোহ।

১৮৭৫ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল আর্য সমাজ। হেলেনা ব্লাভাতস্কি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল থিওজফিকাল সোসাইটি।

১৮৭৬-৭৭ ভাইসরয় লর্ড লিটনের দায়ে বড় আকারের দুর্ভিক্ষ।

১৮৭৭ জানুয়ারি ১ মহারানী ভিক্টোরিয়াকে ভারতবর্ষের সম্রাজ্ঞী ঘোষণা করা হল। নাগপুরের কাপড়ের কলে প্রথম শ্রমিক ধর্মঘট। কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হল জাতীয় মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন।

১৮৭৮ ব্রিটিশ ভারতে পাশ হল দুটি নিবর্তনমূলক আইন: ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট আর আর্মস অ্যাক্ট

১৮৭৯ বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের বিদ্রোহ।

১৮৭৯-৮৩ রাম্পার কৃষক অভ্যুত্থান।

১৮৮১ ভারতে ইসমাইলি নেতা প্রথম আগা খানের মৃত্যু। প্রণয়ন করা হল ভারতের প্রথম কারখানা আইন।

১৮৮৪ বোম্বেতে বস্ত্রকল শ্রমিকদের প্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হল। প্রতিষ্ঠিত হল প্রথম ভারতীয় শ্রমিক ইউনিয়ন।

১৮৮৫ ইম্পেরিয়াল সিভিল সার্ভিস, পরবর্তীতে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের কর্মকর্তা, অ্যালান অক্টাভিয়াম হিউম কর্তৃক ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি) প্রতিষ্ঠিত।

১৮৮৯-১৯৬৪ জওহরলাল নেহরুর জীবনকাল।

১৮৯১ এইজ অফ কনসেন্ট বিল: বাংলা আর মহারাষ্ট্রের হিন্দুদের বিরোধিতার মুখে স্ট্যাচুয়েটরি রেপের বয়সসীমা ১০ থেকে ১২ করল ব্রিটিশ ভারতের উপনিবেশিক সরকার। মণিপুরে গণঅভ্যুত্থান।

১৮৯১-১৯৫৬ বাবাসাহেব ভীমরাও রামজি আম্বেদকারের জীবনকাল।

১৮৯২ ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অ্যাক্ট: ব্রিটিশ ভারতের বাংলা, বোম্বে, আর মাদ্রাজের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইনসভাগুলোর প্রতিনিধিদের অপ্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত করার আইন পাশ হল। ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) পরীক্ষায় বসার বয়স বাড়িয়ে ২৩ করা হল।

১৮৯৩ শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম সংসদে অংশ নিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ‘গোরক্ষা’ ইস্যুতে হিন্দু মুসলমান উত্তেজনা দেখা দিল।

১৮৯৩-১৯৫২ পরমহংস যোগানন্দের জীবনকাল।

১৮৯৫-১৯৮৬ জিদ্দু কৃষ্ণমূর্তির জীবনকাল।

১৮৯৬-১৯৭৭ এ. সি. ভক্তিবেদান্তের জীবনকাল।*
* ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেসের (ইসকন) প্রতিষ্ঠাতা।

১৮৯৬ ভারতীয় জাতীয়তাবাদী নেতা ও মারাঠি পণ্ডিত বাল গঙ্গাধর তিলকের প্রচেষ্টায় উদযাপিত হল গণেশ বিসর্জন ও শিবাজি উৎসব।*
* তিলকই প্রথম ‘পূর্ন স্বরাজ’-য়ের দাবি উত্থাপন করেন।

১৮৯৭ ভারতে একটি বড় মাপের দুর্ভিক্ষ চলাকালীন সময়ে রানী ভিক্টোরিয়ার হীরক জয়ন্তী উদযাপিত হল। স্বামী বিবেকানন্দ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল রামকৃষ্ণ মিশন।

১৮৯৭-১৯৪৬ সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনকাল।

১৮৯৮ বাংলাদেশের মানিকগঞ্জে হীরালাল সেন প্রতিষ্ঠা করেন দ্য রয়েল বায়োস্কোপ কোম্পানি, ঢাকার সদরঘাটের ক্রাউন থিয়েটারে ছায়াছবি প্রদর্শিত হল।*
* ভারতের জাতীয়তাবাদী ইতিহাসে দাদাসাহেব ফালকেকে ‘ভারতীয় উপমহাদেশে ছায়াছবির জনক’ হওয়ার সম্মান দেয়া হয়। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী ইতিহাস আবদুল জব্বার খানকে দেখা হয় প্রথম বাংলা ছায়াছবির নির্মাতা হিসেবে। বাস্তবে, মানিকগঞ্জের হীরালাল সেনই উপমহাদেশের প্রথম চলচ্চিত্রকার।

১৮৯৮ মুসলমান আধুনিকতাবাদী সংস্কারক সৈয়দ আহমদ খানের মৃত্যু। আহমদিয়া আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা গোলাম আহমদ কাদিয়ানির মৃত্যু।

১৯০০-৭৩ নিম কারোলি বাবার জীবনকাল।

১৯০০ ব্রিটেনে এসময় ভারত থেকে ১৩৭ মিলিয়ন পাউন্ড অর্থমূল্যের চা রফতানি হচ্ছে।

১৯০১ ভারতের প্রথম এথনোগ্রাফিক জরিপ পরিচালনা করলেন হার্বার্ট রিজলি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল শান্তিনিকেতন।

১৯০৩-১৯৭৯ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা আবু আলা মওদূদীর জীবনকাল।

১৯০৩ লর্ড কার্জনের দিল্লি দরবার

১৯০৫ অক্টোবর ১৬: ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসকরা বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা করলেন, উদ্দেশ্য ছিল পূর্ববঙ্গ ও আসাম নিয়ে একটি স্বতন্ত্র প্রদেশ গঠন করা। বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে শুরু হল স্বদেশী আন্দোলন। লর্ড কার্জনের পদত্যাগ।

শ্যামাজি কৃষ্ণবর্মা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল দ্য হোমরুল সোসাইটি।

১৯০৬ ডিসেম্বর ৩০: ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হল নিখিল ভারত মুসলিম লীগ (এআইএমএল)।

১৯০৭ সুরাটে আইএনসির কংগ্রসে প্রথম ভাঙন দেখা দিল।

১৯০৮ জুলাই ১৩-২২ বালগঙ্গাধর তিলকের মামলা।
জুলাই ২৩ সাধারণ রাজনৈতিক ধর্মঘট।
জুলাই ২৪ বোম্বেতে রাজনৈতিক ধর্মঘট।

সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবীদের কার্যক্রম শুরু।

১৯০৯-৬৬ হোমি জাহাঙ্গীর ভাবার জীবনকাল।

১৯০৯-১০ মর্লি মিন্টো সংস্কার।

১৯১১ ব্রিটেনের রাজা পঞ্চম জর্জের রাজ্যাভিষেক উপলক্ষ্যে দিল্লিতে শেষবারের মত বসান হল দিল্লি দরবার। রাজধানী কলকাতা থেকে সরিয়ে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হল। বঙ্গভঙ্গ রদ করা হল।

জামশেদপুরে নির্মিত হল ভারতের প্রথম ধাতুশিল্প কারখানা।

১৯১৩ মুসলিম লীগে যোগ দিলেন গুজরাটের মুহাম্মদালি জিন্নাভাই।* যুক্তরাষ্ট্রে গঠিত হল ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন (পরে, গদর পার্টি)। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
* পরবর্তীতে তাঁর নামের প্রথম অংশের মুহাম্মদ আরআলি আলাদা হয়ে যাবে আর জিন্নাভাই থেকে ভাই ঝরে পড়বে, তিনি হয়ে উঠবেন মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ।

১৯১৪-১৮ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ

১৯১৪-২০০২ স্বামী সচ্চিদানন্দের জীবনকাল।

১৯১৪ মুসলিম লীগ ক্রমেই ব্রিটিশবিরোধী অবস্থান নিতে শুরু করায় সংগঠনটির প্রেসিডেন্টের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন আগা খান।

১৯১৫ হরিদ্বারে পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা।* বার্লিনে প্রতিষ্ঠিত হল ভারত স্বাধীনতা কমিটির সংগঠন। কাবুলে প্রতিষ্ঠিত হল প্রবাসী অস্থায়ী ভারত সরকার। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে এলেন গান্ধী। গান্ধীর সত্যাগ্রহ আশ্রম।
* ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও নিখিল ভারত মুসলিম লীগের প্রতিক্রিয়ায় গড়ে ওঠা এই সংগঠনটিকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) মাতৃসংগঠন বলা যেতে পারে।

নভেম্বর সিঙ্গাপুরে ভারতীয় সেপাইদের বিদ্রোহ। গান্ধীর নেতৃত্বে প্রথম সত্যাগ্রহ আন্দোলন।

১৯১৬ লখনৌ চুক্তি, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে সই হয়। গঠিত হল নিখিল ভারত হোমরুল লীগ।

১৯১৭ রুশ বিপ্লব

১৯১৮ মাদ্রাজে প্রতিষ্ঠিত হল ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন। আগস্ট: আইএনসিতে আবার ভাঙন দেখা দিল। গঠিত হল লিবারেল ফেডারেশন। খেলাফত আন্দোলন গ্রহণ করে নিল মুসলিম লীগ। স্পেনীয় ফ্লুতে সারা পৃথিবীতে ২ কোটি ১৬ লক্ষ মানুষের মৃত্যু। এদের মধ্যে ১ কোটি ২৫ লক্ষ ভারতীয়। ব্রিটেনের রয়েল সোসাইটির ফেলোশিপ পেলেন শ্রীনিবাস রামানুজন।

১৯১৮-২০০৮ মহর্ষি মহেশ যোগীর জীবনকাল।

১৯১৯ মন্টেগু-চেমসফোর্ড শাসন সংস্কার। অমৃতসরের কসাই রেজিনাল্ড ডায়ারের নির্দেশে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড। গান্ধীর রাওলাট সত্যাগ্রহ

১৯২০-২২ গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন।

১৯২০ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম পর্যায়।

সেপ্টেম্বর অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করে নিল আইএনসি।

ডিসেম্বর আইএনসি কর্তৃক গৃহীত হল প্রথম পার্টি সংবিধান। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করলেন পরমহংস যোগানন্দ। গঠিত হল ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই)। প্রতিষ্ঠিত হল নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস।

১৯২১ মে আসামে চা শ্রমিকদের ধর্মঘট।

আগস্ট মোপলা অভ্যুত্থান শুরু।

নভেম্বর বোম্বেতে চারদিনের রাজনৈতিক ধর্মঘট।

১৯২১-২২ যুক্তপ্রদেশে চাষীদের একা আন্দোলন, পাঞ্জাবে আকালি আন্দোলন।

১৯২২ ফেব্রুয়ারি বারদোলি প্রস্তাব। চৌরিচৌরা সহিংসতা দেখে অসহযোগ আন্দোলন বাতিল করলেন গান্ধী। রবীন্দ্র ঠাকুরের শান্তিনিকেতন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হল।

১৯২২-২৩ পেশওয়ার ষড়যন্ত্র মামলা

১৯২৩ বিনায়ক দামোদর সাভারকার, হিন্দুত্ব: হু ইজ আ হিন্দু?

১৯২৪ কানপুর কমিউনিস্টবিরোধী মামলা। বাংলা, পাঞ্জাব, ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের (এনডব্লিউএফপি) মত ব্রিটিশ ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোতে ফেডারেল কাঠামোর আওতায় কয়েকটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ গঠনের দাবি তুলল অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ। স্যার জন মার্শাল প্রাক-হিন্দু সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতার নানান নিদর্শন আবিষ্কার করতে শুরু করলেন।

১৯২৪-২৫ বোম্বের বস্ত্রকল শ্রমিকদের ধর্মঘট।

১৯২৫ বিজয়া দশমীর দিন নাগপুরে কেশব বলিরাম হেজওয়ার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল হিন্দুত্ববাদী আদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)।

ডিসেম্বর ২৮-৩০ কানপুরে কমিউনিস্টদের প্রথম সর্বভারতীয় সম্মেলন। গঠিত হল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি।

১৯২৬-২৭ গঠিত হল কৃষক ও শ্রমিক পার্টি।

১৯২৬-২০১১ সত্য সাই বাবার জীবনকাল।

১৯২৭ মহারাষ্ট্রে দেবদাসী প্রথা নিষিদ্ধ করা হল। দ্রুত প্রথাটি নিষিদ্ধ হয়ে গেল কর্ণাটক, অন্ধ্র প্রদেশ ও ওড়িশাতেও। বাবাসাহেব ভীমরাও রামজি আম্বেদকারের নেতৃত্বে মাহাদ সত্যাগ্রহ

১৯২৮ জুলাই মতিলাল নেহরু প্রণীত ভারতের সংবিধান।

ডিসেম্বর নিখিল ভারতের স্বাধীনতা লীগের অধিবেশন। প্রতিষ্ঠিত হল হিন্দুস্তান সোশালিস্ট রিপাবলিকান এসোসিয়েশন (এইচএসআরএ)।

১৯২৯-৩৩ মীরাট ষড়যন্ত্র মামলা

১৯৩০ মার্চ গান্ধীর ইয়াং ইন্ডিয়ার এগারো দফা।
এপ্রিল গান্ধীর নেতৃত্বে লবন সত্যাগ্রহ আন্দোলন। পেশওয়ার, শোলাপুর, ও চট্টগ্রামে দেখা দিল সশস্ত্র অভ্যুত্থান।

কংগ্রেসের সভাপতি পদে নির্বাচিত হলেন জওহরলাল নেহরু। লাহোরে পাশ হয়ে গেল পূর্ণ স্বরাজ প্রস্তাব। মার্কিন ঐতিহাসিক উইল ডুরান্ট ভারত সফর করলেন।

পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেলেন চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমণ।

১৯৩০-৩২ লন্ডনের গোলটেবিল বৈঠক।

১৯৩১ মার্চ ৫ গান্ধী আরউইন চুক্তি।
মার্চ করাচিতে আইএনসির কংগ্রেস। এ সময় প্রায় ২৫ লক্ষ ভারতীয় হিন্দু শ্রীলঙ্কা, মালয়া, মরিশাস, দক্ষিণ আফ্রিকা ইত্যাদি দেশে বাস করছেন।

১৯৩১-৯০ ভগবান শ্রী রজনীশের জীবনকাল।*
* ওশো নামেও পরিচিত।

১৯৩১-৩২ কাশ্মীরে সামন্তবিরোধী আন্দোলন।

১৯৩২ গান্ধী-আম্বেদকার চুক্তি, কথিত অস্পৃশ্যদের জন্য সংরক্ষিত আসনের বন্দোবস্ত হল।

১৯৩৩ ইকবালের চিন্তাধারা কর্তৃক অনুপ্রাণিত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ভারতীয় ছাত্র পাকিস্তান শব্দটি চালু করলেন।

১৯৩৪ গঠিত হল কংগ্রেস-সমাজতান্ত্রিক পার্টি।

পল ব্রান্টন, আ সার্চ ইন সিক্রেট ইন্ডিয়া

১৯৩৫ ভারত শাসন আইন।*
* ভারতে একটি ফেডারেটেড সরকার প্রতিষ্ঠা করা হল। কেন্দ্রের শাসনভার থাকল ব্রিটিশ ভারতের উপনিবেশিক শাসকদের হাতে, আর প্রদেশগুলোর শাসনভার অর্পিত হল নির্বাচিত ভারতীয় কর্মকর্তাদের হাতে। ১৯৪৭ সালে ভারত আর পাকিস্তান “আজাদ” হলেও, এই উত্তরউপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলো উপনিবেশের ছায়া থেকে বেরোতে পারে নি, তাদের আইনী কাঠামোর ভিত্তি রয়ে গেছে উপনিবেশিক আমলের ভারত শাসন আইন।

যুক্তরাষ্ট্রে সেলফ-রিয়েলাইজেশন ফেলোশিপ প্রতিষ্ঠা করলেন পরমহংস যোগানন্দ।

১৯৩৬ শ্রীযুক্তা লক্ষীবাঈ কেলকর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল রাষ্ট্রীয় সেবিকা সমিতি।*

এপ্রিল গঠিত হল সর্বভারতীয় কৃষক সভা।

মে কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচিত হলেন জওহরলাল নেহরু।
* আরএসএসের প্রথম শাখা সংগঠন বিবেচিত হয়।

১৯৩৭ ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারতের প্রথম “গণতান্ত্রিক” নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। এই নির্বাচনে ব্রিটিশ ভারতের এগারোটি প্রদেশের আটটিতে জেতে ও প্রাদেশিক সরকার গঠন করে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি)। মুসলিম লীগ প্রাদেশিক নির্বাচনগুলোতে জিতে সরকার গঠনে ব্যর্থ হলেও কংগ্রেসি রাজনীতিকরা মুসলিম লীগের রাজনীতিকদেরকে কিছু ছাড় দেন।

নাসিকে বালকৃষ্ণ শিবরামজি মুঞ্জে কর্তৃক ফ্যাসিস্ট ইতালির সামরিক ইশকুলগুলোর ধাঁচে প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন সেন্ট্রাল হিন্দু মিলিটারি এডুকেশন সোসাইটি।

১৯৩৮ বোম্বেতে কে. এম. মুনশি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল ভারতীয় বিদ্যা ভবন। কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচিত হলেন সুভাষচন্দ্র বসু। কবি আল্লামা ইকবালের মৃত্যু।

১৯৩৯-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

১৯৩৯ আইএনসি থেকে বেরিয়ে এলেন সুভাষচন্দ্র বসু। গঠন করলেন ফরওয়ার্ড ব্লক। সেপ্টেম্বর: যুদ্ধ সম্পর্কে আইএনসির ঘোষণা।

সাবিত্রী দেবী মুখার্জি, আ ওয়ার্নিং টু দ্য হিন্দুজ

১৯৪০ মার্চ ২৩ লাহোর প্রস্তাব, ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরে মুসলিম লীগের অধিবেশনে মুসলমান-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোতে কয়েকটি মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা দাবি গৃহীত হল।*
* শুরুতে অখণ্ড পাকিস্তানের প্রস্তাব তোলা হয়নি, অখণ্ড পাকিস্তানের দাবি আরো পরে উঠেছে। তবে এসময়ই জিন্নাহ দ্বিজাতি তত্ত্ব প্রদান করেন। এই তত্ত্ব অনুসারে, হিন্দু আর মুসলমানরা স্রেফ সম্প্রদায়গতভাবেই পৃথক নন, তারা স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ধারণা করা দুটি জাতি।

অক্টোবর ব্যক্তিগত সত্যাগ্রহে কারাবরণ করলেন ২০ হাজার কংগ্রেসী।

আকালি দলের নেতা মাস্টার তারা সিং পাকিস্তানের ধারণার বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, শিখরা “আজাদ পাঞ্জাব”য়ের জন্য লড়বে। লাহোর ও মুলতানের অংশবিশেষ পরবর্তীতে খালিস্তান নামে পরিচিতি পাওয়া এই রাষ্ট্রপ্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

১৯৪১ লাহোর প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় লাহোরের ইসলামিয়া পার্কে আবু আলা মওদূদী প্রতিষ্ঠা করলেন জামায়াতে ইসলামী।*
* মওদূদী লাহোর প্রস্তাব সমর্থন করেন নি, কেননা তিনি সর্বপ্রকার জাতীয়তাবাদকে ‘ইসলামবিরোধী’ মনে করতেন। তবে ইতিহাস তার কল্পলৌকিকতাকে প্রশ্রয় দেয়নি। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের মত জামায়াতে ইসলামীও পার্টিশনড হয়ে যায়: জামায়াতে ইসলামী হিন্দ আর জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান।

১৯৪২ ভারতে আপোস প্রস্তাব নিয়ে ক্রিপস মিশনের আগমন। এই মিশন থেকে প্রস্তাব রাখা হল, বিশ্বযুদ্ধের পরে ভারতকে ডমিনিয়ন স্ট্যাটাস দেয়া হবে। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল আইএনসি, কংগ্রেস নেতাদের কারাবরণ।

এপ্রিল গান্ধীর নেতৃত্বে শুরু হল ভারত ছাড়ো আন্দোলন।

জুলাই ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিকে বৈধতা প্রদান করা হল।

আগস্ট গান্ধী গ্রেপ্তার, আইএনসির কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করা হল।

সুভাষচন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অক্ষশক্তির সাথে হাত মেলালেন। তাঁর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ) বার্মায় ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হল। আইএনএ ও সাম্রাজ্যিক জাপানের হাতে সিঙ্গাপুরের পতন।

১৯৪৩ তেতাল্লিশের মন্বন্তর, চার্চিলের উপনিবেশিক বর্ণবাদী নীতির ফলে বাংলায় দুর্ভিক্ষ। চলল ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত। এর মধ্যে না খেতে পেয়ে মারা যান ৩৫ লক্ষ মানুষ।*
* দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের পরাস্ত করায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় যুদ্ধনায়ক বিবেচিত হন উইনস্টন চার্চিল, আর সেটা ন্যায্যও বটে। কিন্তু ফসলে উদ্বৃত্ত বাংলায় ভাতের কষ্ট পেয়ে মারা যাওয়া ৩৫ লক্ষ বাঙালির চোখে তিনি নায়ক ছিলেন না। ইতিহাসে নায়ক আর খলনায়কদের বিচারটা খুবই আপেক্ষিক।

মে ২৩ কলকাতায় অনুষ্ঠিত হল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম সম্মেলন।

১৯৪৫ ব্রিটিশ ভারতের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনগুলোতে মুসলমান-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোতে মুসলমানদের একটি স্বতন্ত্র আবাসভূমির দাবিতে প্রচারণা চালাল মুসলিম লীগ।* প্রায় সবকটি মুসলিম আসনে মুসলিম লীগ জিতল। অমুসলিম আসনগুলোর ৯১ শতাংশ জিতল আইএনসি।
* এসময় থেকেই অখণ্ড পাকিস্তানের ধারণা সংহত হয়।

কংগ্রেস নেতৃবৃন্দকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হল। লর্ড ওয়াভেলের সিমলা সম্মেলন। বাংলায় শুরু হল “তেভাগা আন্দোলন।”

১৯৪৬ ব্রিটিশ ভারতে কেবিনেট মিশনের আগমন। কিন্তু ভবিষ্যৎ ভারত সরকারের শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর ব্যাপারে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি) ও মুসলিম লীগের নেতারা একমত হতে না পারায় মিশন ব্যর্থ হল।

ফেব্রুয়ারি ১৮-২৩ বোম্বেতে বিদ্রোহ করলেন রাজকীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা।

এপ্রিল আইনসভার নির্বাচন।
এপ্রিল ৯ অখণ্ড পাকিস্তানের প্রস্তাব দিলেন হোসেন শহিদ সরোওয়ার্দি।

জুন কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচিত হলেন জওহরলাল নেহরু।

আগস্ট শপথ গ্রহণ করলেন ভারতের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্যরা।

মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ পাকিস্তানের প্রতি মুসলমানদের অঙ্গীকারবদ্ধতা প্রদশর্ন করতে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস পালনের ডাক দিলেন। কলকাতা, নোয়াখালি, ও বিহারে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা। অমৃতসর ও লাহোরে শিখ মুসলিম দাঙ্গা।

কাশ্মীর ছাড়ো আন্দোলন।

জওহরলাল নেহরু, দ্য ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়া

১৯৪৭ এপ্রিল গোয়ালিয়রে অনুষ্ঠিত হল নিখিল ভারত প্রজাপরিষদের অধিবেশন।

মে গঠিত হল ভারতের জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন।

জুলাই দিল্লিতে প্রথম প্রকাশিত হল আরএসএসের মুখপত্র অর্গানাইজার।*
* পেশাদার প্রচারবিদদের শাখা। পরের বছর থেকে প্রকাশিত হতে শুরু করা হিন্দুস্তান সমাচারও এই ধরণের শাখা। সমরূপ প্রকাশনা পঞ্চজন ও বিশ্ব সংবাদ কেন্দ্র। ডিজিটাল জমানার আইটি সেল ও হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটিকে এই প্রকাশনাগুলোরই আদর্শিক ধারাবাহিকতা বলা যায়। প্রাক-ইন্টারনেট যুগে শুধু পেপারপত্রিকা প্রকাশ করতেন, সামাজিক মাধ্যমের যুগে সাইবারস্পেসের বিভিন্ন পরিসরেও এঁরা ব্যাপক সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। সত্যমিথ্যা মিলিয়ে “অখণ্ড ভারতের” অবাস্তবতা তৈরি করা, “হিন্দু খাতরে মে হ্যাঁয়” জাতীয় তৈরি করা আতঙ্ক তৈরি করা, “জিস হিন্দু কা খুন না খওলে খুন নেহি ওয়ো পানি হ্যাঁয়” জাতীয় শ্লোগান দিয়ে হিন্দুদের গা গরম করা মূলত এগুলাই এদের উদ্দেশ্য।

ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয় হলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন।

জুলাই ৩ তিনি ব্রিটিশ ভারতকে দুটি আলাদা ডমিনিয়নে পার্টিশনড করার একটা চূড়ান্ত পরিকল্পনা হাজির করলেন। ব্রিটিশ ভারতেরপার্টিশন।*

আগস্ট ১৪, মধ্যরাত ব্রিটিশ ভারতের অবসান।
আগস্ট ১৭ পার্টিশন বাউন্ডারি ঘোষণা করা হল। বাউন্ডারি কমিশন প্রধান সীরিল র‍্যাডক্লিফ কর্তৃক ব্রিটিশ ভারত ভাগ হল। জন্ম নিল ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি রাষ্ট্র। হিন্দু, মুসলমান, ও শিখদের আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতা। ২ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু। গৃহহীন হলেন ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ।

চৌধুরী গোলাম আব্বাসের নেতৃত্বাধীন মুসলিম কনফারেন্স পাকিস্তানে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল। শেখ
আবদুল্লার কারামুক্তি। পুঞ্চ গণহত্যা, জম্মুর মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালাল দোগরা সৈন্য ও আরএসএস ভাবাদর্শী হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা, জম্মু হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে পরিণত হল।*
* এই গণহত্যার আগ পর্যন্ত কাশ্মিরের মত জম্মুও মুসলমান-সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে অল্প কয়েকটি অঞ্চলে অহিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, যার প্রায় প্রতিটির সাথে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সংঘাতে লিপ্ত আছে। এই অঞ্চলগুলো হল: জম্মু ও কাশ্মির, পাঞ্জাব, মণিপুর, মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল।

১৯৪৭-৪৯ অধিকাংশ দেশীয় রাজ্য ভারতে এবং অল্প কয়েকটি পাকিস্তানে যোগ দেয়। জুনাগড় আর হায়দারাবাদকে জোরপূর্বক ভারতভুক্ত করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের সামনে ভারত পাকিস্তান যেকোন একটিতে যোগদানের সুযোগ রাখা হয়। মহারাজা হরি সিং কালক্ষেপন করেন। জম্মু ও কাশ্মীরের ওপর ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের দাবি থাকায় দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। সেই দ্বন্দ্ব এখনো চলছে।

১৯৪৭-৬৩ এসময় সক্রিয় ছিল আরএসএসের বিশেষ সংগঠন অল জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর প্রজা পরিষদ।*
* এই সংগঠন গঠনের পেছনে উদ্দেশ্য ছিল জম্মু ও কাশ্মীরের আঞ্চলিক রাজনীতিতে পাকিস্তান চীনের সাথে যে কোন ধরণের আপোসরফার প্রচেষ্টাকে হিন্দুদের সাথে গাদ্দারি হিসাবে দেখানো ও উপত্যকার মুসলমানদের ব্যাপারে ইচ্ছাকৃতভাবে ও পরিকল্পিতভাবে আতঙ্ক ছড়ানো।

১৯৪৭-৬৪ ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর শাসনামল।

১৯৪৮ গান্ধী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল সর্ব সেবা সংঘ।

জানুয়ারি ৩০ হিন্দুত্ববাদী নাথুরাম গডসের হাতে খুন হলেন গান্ধী। কাশ্মির নিয়ে এর আগের বছর শুরু হওয়া প্রথম ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থামাতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ: যুদ্ধবিরতি ও উভয়পক্ষের সেনাপ্রত্যাহার।*
* কাশ্মির ইস্যু নিয়ে ভারত জাতিসংঘে গেল। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি প্রস্তাব পাশ করে, যাতে কাশ্মির সংকট সমাধানে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দেয়া হয়। ভারত প্রতিশ্রুতি দিল গণভোটে যে সিদ্ধান্ত হয় মেনে নেবে, কিন্তু পরবর্তীতে ভারত তার এই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে।

বলরাজ মোধক কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)।*
* এবিভিপি গঠনের পেছনে ক্যাম্পাসগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বামপন্থীদের প্রভাব ঠেকানোর উদ্দেশ্য কাজ করেছিল।

ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) জাতীয়করণ করা হল।

তেলেঙ্গনা কৃষক আন্দোলন। ২৫,০০ গ্রাম ছোট ছোট কমিউনে সংগঠিত হল। চীনের অনুসরণে ভারতে “জনযুদ্ধ” সংগঠিত করার ডাক।

১৯৪৯ নভেম্বর ২৬ অনুমোদন লাভ করল স্বাধীন ভারতের সংবিধান। এর খসড়া করেছিলেন আম্বেদকার। স্বাধীন ভারতের সংবিধানে পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করা হল, জাতপাতের ভিত্তিতে কোন নাগরিকের সাথে বৈষম্যপূর্ণ আচরণ করা হবে না।*
* “The State shall not discriminate against any citizen on grounds only of religion, race, caste, sex, place of birth or any of them.” [Article 15, ‘The Constitution of India’]

হিন্দু ম্যারেজ ভ্যালিডেটিং অ্যাক্ট, ভারতে আন্তঃবর্ণ বিয়ের ব্যাপারে যে সকল আইনী বাধা বিদ্যমান ছিল তা তুলে নেয়া হল।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রথম ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের অবসান ঘটল।*
* যুদ্ধে কাশ্মীরের দুই-তৃতীয়াংশ ভারতের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

প্রতিষ্ঠিত হল ব্রাহ্মণ্যবাদবিরোধী দল দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাজাগাম (ডিএমকে)।

১৯৫০ জানুয়ারি ২৬ নয়া সংবিধান পাশ। ভারতকে একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্ররূপে প্রতিষ্ঠা করা হল। সংবিধান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন হিসেবে গৃহীত হল।

লিয়াকত-নেহরু চুক্তি, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা প্রশমিত করতে লিয়াকত আলি খান আর পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু চুক্তিবদ্ধ হলেন। কাশ্মীরে গণভোট প্রসঙ্গে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ভারত। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১এ কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখান হয়, তবে ৩৭০ নং ধারায় জম্মু ও কাশ্মিরকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করা হয়।

ভারতে পরিকল্পনা কমিশন গঠন করা হল। কাশ্মীরে অনুমোদিত হল বিগ স্টেট এবলিশন অ্যাক্ট। গতি পেল ভূমি ও কৃষি সংস্কার।

১৯৫১-৫২ অক্টোবর ২৫-ফেব্রুয়ারি ২৪ পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে ভারতের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে জিতল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস (আইএনসি)।

গঠিন হল কিষান মজদুর প্রজা পার্টি।

শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি গঠন করলেন ভারতীয় জনসংঘ।*
* ১৯৭৭ সালে জয়প্রকাশ নারায়ণের জনতা পার্টির (জেপি) সাথে একীভূত হয় এবং ১৯৮০ সালে বিজেপির সাথে মিলেমিশে যায়।

কাশ্মির সমস্যা সমাধানে গণভোটের প্রস্তাব দিল জাতিসংঘ। কাশ্মীরে সংবিধান সভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। সবকটা আসনেই জিতল শেখ আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্স। প্রথম সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ আবদুল্লাহ।

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেল।

নীরদচন্দ্র চৌধুরী, দ্য অটোবায়োগ্রাফি অফ অ্যান আননোন ইণ্ডিয়ান

১৯৫১ অক্টোবর অর্থনৈতিক সহায়তা নিয়ে প্রথম মার্কিন-ভারত চুক্তি সই।

১৯৫১/৫৫-১৯৫৫/৫৬ প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা।

১৯৫২ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু।*
* ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস সরকারগুলোর প্রধানমন্ত্রী থাকবেন তিনি।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে আইএনসি’র ভূমিধবস বিজয়, প্রধান বিরোধী দল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই)। এই নির্বাচনে অল ইন্ডিয়া ভারতীয় জনসংঘ (বিজেএস) আর অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা (এবিএইচএম) মাত্র ১৩টি আসনে জেতে। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হলেন ডা: বিধানচন্দ্র রায়।

তাঞ্জোরের এক অনামা কৃষক আমেরিকান কৃষি-অর্থনীতিবিদ উলফ ইসহাক লাডেজিনস্কিকে জানালেন, জমিদার ঝামেলা করলে তিনি “লালপতাকার সংগঠনের” লোকদের কাছে যাবেন, লাডেজিনস্কি নিশ্চিত হলেন কৃষকদের ভূমি সমস্যার সমাধান না হলে ভারত কমিউনিস্টদের হাতে চলে যাবে।

ভারত সরকারের সাথে চুক্তি করলেন শেখ আবদুল্লাহ। দিল্লিতে সম্পাদিত এই চুক্তি অনুযায়ী কাশ্মির ভারতভুক্ত হবে, এবং একইসাথে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হবে। হরি সিং’য়ের পুত্র করন সিংকে কাশ্মীরের সদর ই রিয়াসত হিসেবে নিযুক্ত করা হল।

প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন অখিল ভারতীয় বনবাসী কল্যাণ আশ্রম। গোরখপুরে আরএসএসের মদতে প্রথমবারের মত খোলা হল একটি সরস্বতী শিশু মন্দির।

১৯৫৩ কাশ্মীরের ভারতভুক্তির দাবিতে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির আন্দোলন শুরু। প্রতিক্রিয়ায় কাশ্মীরের স্বাধীনতার দাবি তুললেন শেখ আবদুল্লাহ। শেখ আবদুল্লাহকে কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হল এবং গ্রেপ্তার করা হল।

নয়া দিল্লিতে ভারত আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক। বৈঠকে সাব্যস্ত হল, পরের বছর গণভোট হবে। কিন্তু এটা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি কেউ।

১৯৫৪ ভারত-চীন সম্পর্কোন্নয়নের লক্ষ্যে পঞ্চশীলা নীতি গৃহিত। তিব্বত নিয়ে ভারত-চীন চুক্তি। ভারতস্থ ফরাসি উপনিবেশগুলো ভারতভুক্ত করে নেয়া হল।

কাশ্মীরের সংবিধান সভায় ভারতভুক্তি অনুমোদন পেল।

আর্থার লেভেলিন ব্যাশাম, দ্য ওয়ান্ডার দ্যাট ওয়াজ ইন্ডিয়া: আ সার্ভে অফ দ্য কালচার অফ দ্য ইন্ডিয়ান সাবকনটিনেন্ট বিফোর দ্য কামিং অফ দ্য মুসলিমস

১৯৫৫ ভারতে হিন্দু বিবাহ ও সম্পত্তির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত কিছু সংস্কারমূলক ও সম্পত্তিতে নারীর অধিকার নিশ্চিতকারী আইন প্রণীত হল। কথিত অস্পৃশ্যদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণকে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ সাব্যস্ত করা হল এবং লোকসভা, প্রাদেশিক বিধানসভা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি চাকরিতে তফসিলি বর্ণ আর জাতিগুলো জন্য কোটা রাখা হল। শেখ আবদুল্লার মুক্তি ও কাশ্মীরে গণভোট আয়োজনের দাবিতে গঠিত হল গণভোট ফ্রন্ট।

ইম্পেরিয়াল ব্যাংকের জাতীয়করণ। সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করলেন জওহরলাল নেহরু। দত্তপন্থী ঠেংরিজি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন অখিল ভারতীয় মজদুর সংঘ।*
* দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর দুনিয়ায় শ্রমিকশ্রেণির ওপর কমিউনিস্টদের প্রভাব ঠেকানোর ডানপন্থী উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়।

১৯৫৬/৫৭-১৯৬০/৬১ দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা।

১৯৫৬ স্টেটস রিঅর্গানাইজেশন অ্যাক্ট, ভারত সরকার সীমানা পুনর্নিধারণের মাধ্যমে ১৪টি রাজ্য ও ৬টি ইউনিয়ন টেরিটোরি গঠন করল।*
* ভারতের ফেডারেটিভ কাঠামোয় রাজ্যগুলোর নিজস্ব সরকার রয়েছে, কিন্তু ইউনিয়ন টেরিটোরিগুলো কেন্দ্রীয় সরকার শাসিত।

কথিত অস্পৃশ্যদের নেতা বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকার বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হলেন। বাবাসাহেবের অনুসারীদের অনেকেই তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করলেন।

১৯৫৭ এপ্রিল কেরালায় কমিউনিস্টরা নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করল। কাশ্মীরের ভাগ্যনির্ধারণে গণভোট আয়োজনের তাগিদ দিল জাতিসংঘ। জম্মু ও কাশ্মীরের নিজস্ব সংবিধান গৃহীত হল, তাতে জম্মু ও কাশ্মিরকে ভারতের অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হল।

১৯৫৮ জামশেদপুরে টাটা ইস্পাত কারখানার শ্রমিকদের সাধারণ ধর্মঘট। আবাদী শ্রমিকদের সাধারণ ধর্মঘট। এপ্রিল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির পঞ্চম জরুরি অধিবেশনে শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের কর্মসূচি নেয়া হল।

ভারত সরকার কর্তৃক প্রকাশিত হতে শুরু করল দ্য কালেক্টেড ওয়ার্কস অফ মহাত্মা গান্ধী। প্রকাশিত হল সাবিত্রী দেবী মুখার্জির দ্য লাইটনিং অ্যান্ড দ্য সান।*
* এই বইয়ে মুখার্জি দাবি করেন, নাৎসি জার্মানির ফ্যুয়েরার অ্যাডলফ হিটলার আসলে ভগবান বিষ্ণুর অবতার।

১৯৫৯ পঞ্চায়েত রাজ পরিকল্পনা, ভারতে কৃষি ও গ্রাম উন্নয়নের উদ্যোগ সংগঠিত। প্রতিষ্ঠিত হল স্বতন্ত্র পার্টি। আইএনসির নাগপুর সম্মেলনে কৃষিনীতি সংক্রান্ত প্রস্তাব গৃহীত।

ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধ।

চীনের বিরুদ্ধে তিব্বতে গণঅভ্যুত্থান দেখা দেয়। বেইজিং কঠোরভাবে তা দমন করে। ভারতে পালিয়ে যান দালাই লামা।

১৯৬০ সিন্ধু নদের পানির ভাগ নিয়ে ভারত-পাকিস্তান চুক্তি। মহারাষ্ট্র ও গুজরাত রাজ্য গঠন করা হল।

১৯৬০-৬৯ এই দশকে হিন্দুধর্ম পশ্চিমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

১৯৬১/৬২-১৯৬৫/৬৬ তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা।

১৯৬১ যৌতুক নিবারণ আইন।

১৯৬২ লাদাখ অঞ্চল নিয়ে শুরু হল চীন-ভারত যুদ্ধ। যুদ্ধে ভারত হারে। ফলে আকসাই চীন* চীনের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
* আকসাই চীনকে ভারত লাদাখের অংশ দাবি করে। অন্যদিকে, চীন দাবি করে এটি ঝিনঝিয়াংয়ের অংশ। অঞ্চলটির স্ট্যাটাস অমীমাংসিত।

ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভ করল গোয়া।

১৯৬৩ শ্রীনগরে হজরতবাল দরগা শরিফ থেকে সেখানে সংরক্ষিত হযরত মুহাম্মদের (সা.) মাথার চুল চুরি
যাওয়ায় জম্মু ও কাশ্মীরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিল। নাগাল্যান্ড রাজ্য গঠন করা হল। প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন ভারতীয় বিকাশ পরিষদ।

ইরফান হাবিব, দ্য এগ্রেরিয়ান সিস্টেম অফ মুঘল ইন্ডিয়া ১৫৫৬-১৭০৭

১৯৬৪ মে ২৭ জওহরলাল নেহরুর মৃত্যু। ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) ভেঙে বেরিয়ে আসল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) [সিপিআইএম]।

প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)।

১৯৬৫ ভারতে সবুজ বিপ্লব, চলবে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত।

দেশটির লোকসভায় জম্মু ও কাশ্মিরকে “একটি ভারতীয় প্রদেশ” বলে ঘোষণা করা হল। সেখানকার সরকার ও তার কার্যক্রমকে প্রত্যাখ্যান করে গভর্নর নিয়োগ দেয়া হল। কাশ্মির নিয়ে দ্বিতীয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হল।

দামোদর ধর্মানন্দ কোসাম্বি, দ্য কালচার অ্যান্ড সিভিলাইজেশন অফ এনসিয়েন ইন্ডিয়া ইন হিস্টোরিকাল আউটলাইন

১৯৬৫-৬৬ সিপিআই(এম)য়ের তরুণ নেতা চারু মজুমদার মার্কসবাদ, লেনিনবাদ, ও মাও সেতুং চিন্তাধারার আলোকে লিখলেন তাঁর ঐতিহাসিক আট দলিল

১৯৬৬ জানুয়ারি ৩-১০ তাশখন্দ চুক্তি, সোভিয়েত ইউনিয়নের হস্তক্ষেপে যুদ্ধ থামল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর রহস্যময় মৃত্যু। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের (আইএনসি) নেতৃবৃন্দ কর্তৃক নতুন প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর কন্যা ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী।*
* ভারতীয় রাজনীতিতে মিসেস গান্ধী নামেই বেশি পরিচিত।

হরিয়ানা রাজ্য গঠিত হল। পশ্চিমবঙ্গে গঠিত হল পিপলস ইউনাইটেড লেফট ফ্রন্ট (পিইএলএফ)। রাজ্যের রাজনীতিতে যা সংক্ষেপে ইউনাইটেড ফ্রন্ট নামে পরিচিতি পাবে।

১৯৬৭ সংসদে সরকারি ভাষাবিধি গ্রহণ করে নেয়া হল। মিসেস গান্ধীর দশ দফা প্রগতিশীল কর্মসূচি গৃহীত।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে ইউনাইটেড ফ্রন্টের জয়লাভ, বাংলা কংগ্রেসের সাথে জোট বেঁধে রাজ্যে সরকার গঠন করল সি পি আই(এম)। পশ্চিমবঙ্গের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হলেন অজয় মুখার্জি। চারু মজুমদার এটাকে “বেঈমানি” বলে চিহ্নিত করলেন।

নকশালবাড়ি আন্দোলন শুরু।*
* ১৯৬৭ সালের ২৫ মে নেপাল সীমান্তের নিকট উত্তরবাংলার নকশালবাড়ি জেলায় এসআই সোনম ওয়াংদির নেতৃত্বাধীন পুলিশের গুলিতে ১১ জন গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় নকশালবাড়ির কৃষক আন্দোলনের সূত্রপাত। নিহতদের নয়জন নারী: ধনেশ্বরী দেবী, সরুবালা বর্মণ, সোনামতি সিং, সীমাশ্বরী মল্লিক, নয়েনশ্বরী মল্লিক, সমশ্বরী সাইবানি , গয়দ্রু সাইবানি , ফুলমতি সিং, ও খর সিং মল্লিক। কৃষক আন্দোলনের আগুন দ্রুত নকশালবাড়ি থেকে বিহার, উত্তর প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে; যে সব জায়গায় সিপিআই(এম)-এর নেতাকর্মীদের একাংশ আন্দোলনে যোগদান করেন। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা পিপলস ডেইলি তার ৫ জুলাইয়ের সম্পাদকীয়তে নকশাল আন্দোলনকে বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ বলে আখ্যায়িত করে। দেশব্রতী আর লিবারেশন প্রকাশিত হতে শুরু করে। ১৩ নভেম্বর তামিলনাড়ু, কেরালা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, কর্নাটক, ওড়িশা আর পশ্চিমবঙ্গের সিপিআই(এম) সদস্যদের একাংশ পার্টিকে চ্যালে ঞ্জ করে গঠন করেন অল ইন্ডিয়া কোঅর্ডিনেশন কমিটি অফ রেভল্যুশনারিজ (এআইসিসিআর)। ভারত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নকশালদের ‘জনযুদ্ধের’ সূচনা, চীন সফর করলেন নকশাল নেতা কানু সান্যাল।

ইউনাইটেড ফ্রন্ট সরকারের সাথে সিপিআই(এম)-এর বিরোধের সূচনা। মাদ্রাজে ক্ষমতায় আসল দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাজাগাম (ডিএমকে)। ভারতের পাঞ্জাবের নিয়ন্ত্রণ নিল শিখদের আকালি দল।

১৯৬৮ গণতান্ত্রিক ও বাম শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্যের আহবান জানাল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই)। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ইউনাইটেড ফ্রন্ট সরকার ভেঙে দিয়ে সেখানে প্রেসিডেন্টের শাসন জারি করা হল। অল ইন্ডিয়া কোঅর্ডিনেশন কমিটি অফ রেভল্যুশনারিজের (এআইসিসিআর) নামে কমিউনিস্ট শব্দটি যুক্ত করে গঠন করা হল অল ইন্ডিয়া কোঅর্ডিনেশন কমিটি অফ কমিউনিস্ট রেভল্যুশনারিজ (এআইসিসিসিআর)।

গঠিত হল ভারতীয় ক্ষেতমজুর ইউনিয়ন।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেলেন হরবিন্দ খোরানা।

১৯৬৯ ১৪টি ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংক জাতীয়করণ করলেন মিসেস গান্ধী। আইএনসিতে ভাঙন, গঠিত হল দুই কংগ্রেস। কেরালায় বামপন্থী যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করা হল।

লেনিনের জন্মদিনে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) [সি পি আই(এম)] নকশালপন্থী সদস্যরা পার্টি থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিষ্ঠা করলেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) [সিপিআই(এম-এল)]। কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি হলেন চারু মজুমদার। সি পি আই(এম-এল) গঠিত হওয়ায় এআইসিসিসিআর’কে বিলুপ্ত করা হল। সিপিআই(এম) আর সিপিআই(এম-এল) ক্যাডারদের মধ্যে সংঘর্ষ। ২০০ জন আহত। অন্ধ প্রদেশের শ্রীকাকুলামে পুলিশের গুলিতে ৭ নকশাল নেতাকর্মী খুন। কানাই চ্যাটার্জি প্রতিষ্ঠা করলেন মাওয়িস্ট কমিউনিস্ট সেন্টার (এমসিসি )।

১৯৭০ সাবেক দেশীয় রাজ্যগুলো ভারতভুক্তির প্রতিদান হিসেবে প্রিভি পার্স নামে অভিহিত যে অর্থ পেত, মিসেস গান্ধী তা বিলুপ্ত করলেন। কলকাতায় কঠোর গোপনীয়তায় অনুষ্ঠিত হল সিপিআই(এম-এল)-এর প্রথম পার্টি কংগ্রেস, চারু মজুমদার পার্টির সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হলেন। তামিলনাড়ুতে সিপিআই(এম-এল)-এর প্রতিষ্ঠাতা আপ্পু পুলিশের গুলিতে খুন। শ্রীকাকুলাম অভ্যুত্থানের দুই নেতা পুলিশের গুলিতে খুন। ভারভারা রাও, শ্রী শ্রী, আর সি বি জয়লক্ষীর মত নামকরা তেলেগুভাষী লেখকরা গঠন করলেন রেভল্যুশনারি রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন (আরডব্লিউএ)।

গঠিত হল ভারতীয় ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (আইটিইউসি)। যুক্তরাষ্ট্রে শাখা খুলল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)। প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন বালাগোকুলম।*
* কচি কাঁচাদের শাখা। ভারতজুড়ে হিন্দুত্ববাদের শিশুতোষ সংস্করণ প্রচার করে বালাগোকুলম। হিন্দু পরিবারে জন্ম নেয়া শিশুদের সহজাত মানবিক অনুভূতিকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে তাদেরকে বাবু বজরঙ্গীদের মত পিশাচে পরিণত করার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে চলেছে এই শিশু সংগঠন।

১৯৭১ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।

আগস্ট ৯ ভারত আর সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে বিশ বছর মেয়াদী শান্তি, মৈত্রী, ও সহযোগিতা চুক্তি সই হল।

ডিসেম্বর ৩-১৬ তৃতীয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ।

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি) থেকে বিতাড়িত হয়ে ইন্দিরা গান্ধী দারিদ্র্য দূরীকরণের প্ল্যাটফর্মে নিজের নতুন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রস (রিকুইজিশনিস্ট) [আইএনসি(আর)] গঠন করলেন। পুলিশের হাতে কথিত এনকাউন্টারে খুন হলেন সিপিআই(এম-এল)-এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ও সুসাহিত্যিক সরোজ দত্ত। নকশালদের ওপর ভয়াবহ রাষ্ট্রীয় নির্যাতন শুরু হল।

তামিলনাড়ু সরকার এই মর্মে ডিক্রি জারি করল যে, সংস্কৃত লিটার্জির একমাত্র ভাষা হবে না।

১৯৭২ দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন মিসেস গান্ধী।

ভারতে নকশাল নেতা চারু মজুমদার গ্রেপ্তার হলেন। লালবাজার থানায় আটক অবস্থায় তাঁর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, চিকিৎসা না পাওয়ায় মৃত্যু বরণ করেন। এই ঘটনাটি নকশাল আন্দোলনের গতি স্তিমিত করল।

মার্চ ১৫ বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার শেষ হল।
মার্চ ১৯ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ২৫ বছর মেয়াদী শান্তি, মৈত্রী ও সহযোগিতা চুক্তি সই।

মে প্রতিষ্ঠিত হল ভারতের ট্রেড ইউনিয়নগুলোর জাতীয় পরিষদ।

জুলাই ৩ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শিমলা চুক্তি সই। এই চুক্তিতে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে জাতিসংঘ যে যুদ্ধবিরতি রেখা নির্ধারণ করেছিল তাকে নিয়ন্ত্রণ রেখা, লাইন অফ কন্ট্রোল (এলওসি), বলে ঘোষণা করা হল।

১৯৭৩ নভেম্বর ভারত সফর করলেন সোভিয়েত রাষ্ট্রপ্রধান লিওনিদ ব্রেজনেভ।

১৯৭৪ এপ্রিল বামপন্থীদের সর্বভারতীয় অধিবেশন।

মে নিখিল ভারত রেলশ্রমিক ধর্মঘট।
মে ১৮ অপারেশন স্মাইলিং বুদ্ধা, রাজস্থানের পোখরানে সফলভাবে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর মাধ্যমে পৃথিবীর ষষ্ঠ পারমাণবিক রাষ্ট্র হয়ে উঠল ভারত।

সেপ্টেম্বর ইসলামাবাদে ভারত-পাকিস্তান সংলাপ।

শেখ আবদুল্লার কারামুক্তি, কাশ্মীরে ফেরার অনুমতি পেলেন। তাঁকে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখমন্ত্রী করা হল। বিনিময়ে তাঁর রাজনৈতিক সহযোগী মির্জা আফজাল বেগ এই মর্মে ভারতের সাথে চুক্তি করলেন যে, জম্মু ও কাশ্মির ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে সিপিআই(এম-এল)য়ের সভা অনুষ্ঠিত হল। পার্টির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন সুব্রত দত্ত। পার্টির নাম বদলে রাখা হল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) লিবারেশন [সিপিআই(এম-এল) লিবারেশন]।

শুরু হল জয়প্রকাশ নারায়ণের “সম্পূর্ণ ক্রান্তি” আন্দোলন।

১৯৭৫-৭৭ ইমার্জেন্সি, জরুরি অবস্থা।

১৯৭৫ এপ্রিল উৎক্ষিপ্ত হল ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ আর্যভট্ট

ইন্দিরা সরকারের বিরুদ্ধে গঠিত হল জনতা মোর্চা। উত্তর প্রদেশের হাইকোর্ট ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধীর নির্বাচনী অনিয়মের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করল এবং তাঁর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার ওপর বাধানিষেধ আরোপ করল।

জুন ২৬ জরুরী অবস্থা জারি করলেন ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী, ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তা বহাল থাকবে।*
* সংবিধানে প্রদত্ত নাগরিক অধিকার স্থগিত করা হয়। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের গণ হারে জেলে পাঠান হয়। এসময় ব্যাপক আকারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। ইন্দিরার ছেলে সঞ্জয় ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। শহুরে বস্তি ভাঙা ও গরিবদের জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণের মত ভয়াবহ কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়। এটা ছিল ভারতীয় গণতন্ত্রের ওপর প্রথম আঘাত, পরবর্তীতে যা আসবে হিন্দুত্বের দিক থেকে। জরুরী অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, দেখুন, (Kapoor 2015).

ওলন্দাজদের সাবেক উপনিবেশ সুরিনাম স্বাধীনতা লাভ করল। সুরিনামি হিন্দুদের এক-তৃতীয়াংশ উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় দ্য নেদারল্যান্ডসে পারি জমালেন। উল্লেখ্য যে, এই হিন্দুরা হচ্ছেন সেই ভারতীয়দের বংশধর, উপনিবেশিক আমলে যাদেরকে প্ল্যান্টেশন শ্রমিক হিসাবে নিয়ে আসা হয়েছিল।

১৯৭৬ ভারতে জয়প্রকাশ নারায়ণের “সম্পূর্ণ ক্রান্তি” গতি পেল। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মহিলা কংগ্রেসের (ইন্দিরা) সাধারণ সম্পাদক হলেন মমতা ব্যানার্জি।

মে পাকিস্তানের সাথে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটল।

১৯৭৭ মার্চ জরুরি অবস্থার অবসান ঘোষণা করলেন ইন্দিরা গান্ধী। রাজবন্দিদের মুক্তি দিলেন। নির্বাচন ঘোষণা করলেন। নির্বাচনে জিতে জনতা মোর্চা সরকার গঠন করল। ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন মোরারজি দেশাই।*
* ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করতে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবছরই প্রথম ভারত সফর করেন।

মে আনুষ্ঠানিকভাবে গঠন করা হল জনতা দল।

জুন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে গঠন করা হল বামফ্রন্ট।** রাজ্যের লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের বিজয়। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) [সিপিআই(এম)] নেতা জ্যোতি বসু।
** বামফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য দলগুলো হচ্ছে: ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) [সিপিআই(এম)],
নিখিল ভারত ফরওয়ার্ড ব্লক (এআইএফবি), মার্কসবাদী ফরওয়ার্ড ব্লক (এমএফবি), বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক দল (আরএসপি), ভারতের বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি (আরসিপিআই), এবং বিপ্লবী বাংলা কংগ্রেস (বিবিসি)। এদের মধ্যে সিপিআই(এম)-ই সবসময় নেতৃত্বমূলক অবস্থানে থেকেছে। পরবর্তী আরো কয়েকটি দল বামফ্রন্টে যোগ দেয়, যাদের মধ্যে সবচে উল্লেখযোগ্য দলটি হল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই)।

অক্টোবর সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করলেন মোরারজি দেশাই।

পশ্চিমবঙ্গ ভূমি সংস্কার বিল, এই বিল পাশ করার মধ্য দিয়ে রাজ্যে আইনী ভূমি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হল।

কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বিষয়ে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারার প্রতি সম্মান দেখানো না হলে কাশ্মির বিচ্ছিন্নতাবাদের পথ বেছে নেবে, কেন্দ্রকে এই হুমকি দিলেন শেখ আবদুল্লাহ। ব্রিটেনে জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ) গঠন করলেন কয়েকজন প্রবাসী কাশ্মিরী।

প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন বিদ্যা ভারতী।

জনার্দন ঠাকুর, অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স ম্যান

১৯৭৭-২০১০ সুজাত ভদ্র আর পূর্নেন্দু মণ্ডলের হিসাবে এই সময়কালে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারের প্রধান শরিক সিপিআই(এম)’য়ের হাতে ৫০০+ বিরোধী রাজনীতিক খুন হয়েছেন, একইসময়ে খোদ সিপিআই(এম)য়ের ২০০০+ সদস্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন। (Bagchi 2021)

১৯৭৮-৮০ ভারতের মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বাধীন জনতা সরকার গঠিত মণ্ডল কমিশনের প্রতিবেদনে ৩০০০য়েরও বেশি নতুন বর্ণ ও সম্প্রদায়কে আদার ব্যাকওয়ার্ডস ক্লাসেস (ওবিসি) হিসেবে শনাক্ত করা হল, যাঁরা শিক্ষা ও সরকারি চাকরিতে বিশেষ বিবেচনার দাবি রাখেন।

১৯৭৮ জানুয়ারি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে (আইএনসি) ভাঙন।

১৯৭৯ মার্চ ভারত সফর করলেন সোভিয়েত রাষ্ট্রপ্রধান অ্যালেক্সেই কোসিগিন। দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও বৈজ্ঞানিক-কৃৎকৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি সই।

জুলাই জনতা দলের ভাঙন। দেশাই সরকারের পতন। ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন চৌধুরী চরণ সিং।

অন্ধ্র প্রদেশে কোন্ডাপল্লী সীতারামাইয়াহ প্রতিষ্ঠা করলেন পিপলস ওয়ার গ্রুপ।

নিবন্ধিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন, কাগজে-কলমে সমবায় সংগঠন, সহকার ভারতী।

১৯৭৯ আগস্ট – ১৯৮০ জানুয়ারি চরণ সিংয়ের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন যুক্তফ্রন্ট সরকারের শাসনকাল।

১৯৮০ জানুয়ারি ভারতের নির্বাচনে মিসেস গান্ধী নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের (আইএনসি-আই) কাছে জনতা দলের পরাজয়। ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন ইন্দিরা গান্ধী। এক বিমান দুর্ঘটনায় সঞ্জয় গান্ধীর মৃত্যু হল।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের জন্য আচরণবিধি বাতিল করল। তাদেরকে ট্রেড ইউনিয়ন করার পূর্ণ অধিকার দিল। ধর্মঘট আহবান করার ও পালন করার অধিকার দিল।

কম্বোডিয়াকে স্বীকৃতি দিল ভারত।

প্রতিষ্ঠিত হল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) রাজনৈতিক ফ্রন্ট ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। প্রতিষ্ঠিত হল অখিল ভারতীয় কিষান সংঘ।

১৯৮০/৮১ প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন সংস্কৃত ভারতী।

১৯৮১ ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই), গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক দল (ডিএসপি), আর পশ্চিমবঙ্গ সমাজতান্ত্রিক দল (ডব্লিউবিএসপি) পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্টে যোগ দিল।

ভারতে গঠিত হল মজদুর কিষান সংগ্রাম সমিতি (এমকেএসএস)।

তামিলনাড়ু রাজ্যের মীনাক্ষীপুরমের কথিত অস্পৃশ্যরা গণহারে ইসলাম গ্রহণ করলেন, যাঁদের অনেকেই পরবর্তীতে আবার ইসলাম ত্যাগ করেন।

লখনৌতে প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন সংস্কার ভারতী।*
* সংস্কৃত ভারতী দেব ভাষা সংস্কৃতের মাহাত্ম্যপ্রচার করে।

এপ্রিল মার্কিন-ভিত্তিক খালিস্তানি মতাদর্শী গঙ্গা সিং ধীলন খালিস্তানের দাবি তুললেন।

সেপ্টেম্বর পাঞ্জাবি পুলিশ দমদমি টাঁকশালের জাঠেদার জর্নাইল সিং ভ্রিন্দানওয়ালেকে গ্রেপ্তার করল। এক মাস পরে তাঁকে ছেড়ে দেয়া হয়।

সালমান রুশদী, মিডনাইট’স চিলড্রেন

১৯৮২ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জ্যোতি বসুর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের ভূমিধবস বিজয়, রাজ্যে দ্বিতীয়বারের মত বামফ্রন্ট সরকার গঠিত। শেরে কাশ্মির শেখ আবদুল্লার মৃত্যু। কাশ্মীরের নতুন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ছেলে ফারুক আবদুল্লাহ।

আগস্ট আনন্দপুর সাহেব প্রস্তাব বাস্তবায়ন এবং হরিয়াণা ও হিমাচল প্রদেশের পাঞ্জাবিভাষী অংশকে পাঞ্জাবের হাতে তুলে দেয়ার লক্ষ্য অর্জন করতে ভ্রিন্দানওয়ালের সাথে মিলে ধর্ম যুদ্ধ মোর্চা গঠন করলেন আকালি দলের নেতা এইচ. এস. লঙ্গোওয়াল ও প্রকাশ সিং বাদল।

পাঞ্জাবে প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের বিশেষ সংগঠন রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা সমিতি।*
* উদ্দেশ্য ছিল শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী/স্বাধীনতাকামীদের খালিস্তান আন্দোলন ঠেকান।

১৯৮৩ ভারতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) একাত্মযাত্রা আয়োজন করল, শুরু হল হিন্দুত্ব ফ্যাসিস্টদের রামজন্মভূমি প্রচারাভিযান। নেলি গণহত্যা, ৫ হাজার অসমীয় মুসলমান খুন। নিহতদের সবাই হতদরিদ্র, অধিকাংশই নারী ও শিশু।

পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করলেন সুব্রামানিয়াম চন্দ্রশেখর।

১৯৮৪ ভারতে আরএসএস কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল বজরং দল। কাছাকাছি সময়েই গঠিত হয় ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), যা হিন্দুত্ব ফ্যাসিস্ট আরএসএসয়ের রাজনৈতিক ফ্রন্ট হিসেবে কাজে করে। লোকসভা নির্বাচনে সিপিআইয়ের (এম) লোকনাথ চ্যাটার্জিকে হারিয়ে ভারতীয় সংসদের সদস্য হলেন মমতা ব্যানার্জি।

চালু হল ভারতের প্রথম মেট্রোরে ল – কলকাতা মেট্রো।

জুন অপারেশন ব্লু স্টার, শিখ উগ্রপন্থী ভ্রিন্দানওয়ালে ও তার শিষ্যদের খতম করতে ভারতীয় সেনাবাহিনী শিখদের চোখে মহাপবিত্র অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে অভিযান চালাল। খুন হলেন ভ্রিন্দানওয়ালে। অক্টোবর ৩১ নিজ শিখ দেহরক্ষীদের হাতে খুন হলেন মিসেস গান্ধী।

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতাদের একাংশের মদতে দিল্লিতে শিখদের ওপর ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক নিপীড়ণ শুরু হল। ৮ হাজার শিখ খুন, অগণিত নারী ধর্ষণের শিকার। পরবর্তীতে ইন্দিরার ছেলে রাজীবকে এব্যাপারে মন্তব্য করতে বলা হলে তিনি বলেন, “বড় বৃক্ষের পতন হলে ভূমিতে কিছুটা কম্পন দেখা দেয়াটাই স্বাভাবিক।”

ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন ইন্দিরাপুত্র রাজীব গান্ধী। নির্বাচন আহবান করলেন। ইন্দিরার মৃত্যুতে যে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল, তার কল্যাণে অনায়াসে জিতল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি)।

মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ইউনিয়ন কার্বাইড কোম্পানির ফ্যাক্টরিতে গ্যাসবিস্ফোরণ। ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু। আহত হলেন আরও ১০ হাজার।

নিম্নবর্ণ ও কথিত অস্পৃশ্যদের রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত করতে কাশীরাম প্রতিষ্ঠা করলেন বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)।

জেকেএলএফ ব্রিটেনে ভারতীয় কূটনীতিক রবীন্দ্র মৈত্রকে অপহরণ ও হত্যা করল। কাশ্মীরে ফারুক আবদুল্লাহ সরকারকে বরখাস্ত করা হল, নতুন মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হলেন গোলাম মোহাম্মদ শাহ। মকবুল ভাটের ফাঁসি।

পাকিস্তানের কাছ থেকে সিয়াচেন দখল করে নিল ভারত।

উত্তর প্রদেশে (ইউপি) প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন বজরং দল। প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন সেবা ভারতী।

১৯৮৪-৯৫ পাঞ্জাবে শিখদের অভ্যুত্থান এসময় তীব্রতার চরমে পৌঁছায়।

১৯৮৫ ভারতে শাহবানো মামলার রায় রক্ষণশীল মুসলমানদের ক্ষুব্ধ করে তুললে পরিস্থিতি সামাল দিতে ও সংখ্যালঘু ভোটের লোভে রাজীব গান্ধী সরকার ভারতীয় মুসলমানদের জন্য শরিয়া আইনকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিল।

জুলাই-আগস্ট প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর সাথে শান্তি চুই সই করলেন আকালি দলের নেতা এইচ. এস. লঙ্গোওয়াল। পাঞ্জানে ফেরার পরপরই চরমপন্থীদের হাতে খুন হন।

১৯৮৬ কাশ্মিরে সরকারি চাকরিতে মুসলমানদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি।

ঝাড়খণ্ডে প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন একল বিদ্যালয় ফাউন্ডেশন (ইভিএফ)।

১৯৮৭ ভারতে সরকারের বফরস স্ক্যান্ডাল ফাঁস করে দেয়ায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি) থেকে বিতাড়িত হলেন ভি. পি. সিং। নতুন দল গঠন করলেন সিং – জনতা দল।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা নি র্বাচনে জ্যোতি বসুর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের বিজয়। রাজ্যে টানা তৃতীয়বারের মত গঠিত হল বামফ্রন্ট সরকার। এবছর থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা সরকারের পক্ষ নিয়ে
লিবারেশন টাইগার্স অফ তামিল এলামের (এলটিটিই) বিরুদ্ধে লড়ল ভারতের রাজীব গান্ধী সরকার।

সাইয়ীদ আতহার আব্বাস রিজভি, দ্য ওয়ান্ডার দ্যাট ওয়াজ ইন্ডিয়া পার্ট টু: আ সার্ভে অফ দ্য হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচার অফ দ্য ইন্ডিয়ান সাবকনটিনেন্ট ফ্রম দ্য কামিং অফ দ্য মুসলিমস টু দ্য ব্রিটিশ কনকোয়েস্ট, ১২০০-১৭০০

১৯৮৮ ভারত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জেকেএলএফের সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু।

সালমান রুশদী, দ্য স্যাটানিক ভার্সেস

১৯৮৯ ভারতে ভি. পি. সিংয়ের জনতা দলের নেতৃত্বে ন্যাশনাল ফ্রন্ট রাজীব গান্ধী সরকারকে পরাজিত করে জোট সরকার গঠন করল। ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন ভি. পি. সিং। লোকসভা নির্বাচনে হেরে গেলেন মমতা ব্যানার্জি।

প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন বনবন্ধু পরিষদ।

১৯৯০-৯৯ প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ।*
* নয়াউদারবাদী বিশ্বায়নের বিরুদ্ধে স্থাপিত হয়েছিল, বৃহৎ পুঁজিবান্ধব মোদি জমানায় এসে কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেছে।

১৯৯০ ভারতে ভি. পি. সিং সরকার মণ্ডল কমিশনের প্রতিবেদনের পরামর্শগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলে উচ্চবর্ণ হিন্দুরা এর প্রতিবাদ শুরু করেন এবং কয়েকজন উচ্চবর্ণ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবছরের অক্টোবরের মধ্যে কথিত রামজন্মস্থানে – অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের স্থলে – রামমন্দির নির্মাণের ঘোষণা দিল। ভিএইচপির রামজন্মভূমি আন্দোলনের সমর্থনে গুজরাট থেকে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি রথযাত্রা শুরু করলেন। রথযাত্রা বিহারে পৌঁছালে গ্রেপ্তার হলেন লালকৃষ্ণ আদভানি।

কাশ্মীরে শুরু হল ব্যাপক মাত্রায় সামরিকায়ন। শ্রীনগরের গোকদাল সেতু এলাকায় গণহত্যা সংঘটিত হল। জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সামনে প্রতিশ্রুত গণভোটের দাবিতে মিছিল করলেন প্রায় ৫ লক্ষ কাশ্মীরি। গেরিলা কমান্ডার আশফাক মাজিদ ওয়ানি খুনকে কেন্দ্র করে উপত্যকায় জারি করা হল আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্ট। জেকেএলএফের সশস্ত্র সংগ্রামের মুখে কাশ্মীরি পন্ডিতদের এক্সোডাস।

ভারতের এলাহাবাদে গঠিত হল অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (এআইএসএ)। প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন অখিল ভারতীয় অধিভক্তা পরিষদ।

১৯৯১ এক তামিল গেরিলার হাতে খুন হলেন রাজীব গান্ধী।

সাধ্বী রিতম্ভরা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন দুর্গা বাহিনী।* নাগপুরে প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন বিজ্ঞান ভারতী।**
* রাষ্ট্রীয় সেবিকা সমিতির মতই মা বোনদের শাখা। ‘পশ্চিমা’ ও/বা ‘নারীবাদী’দের আছর থেকে মুক্ত হয়ে মনুসংহিতার পথে ফিরে এসে মহাভারত-রামায়ণের মহীয়সী নারীদের আদর্শে জীবন গঠন করবে এমন ‘সাংস্কারি লাড়কি’ উৎপাদন করা এই শাখার উদ্দেশ্য। তবে পৌরাণিক যুগেও যে সবাই সীতা ছিলেন না, দুচারজন প্রমীলাও ছিলেন; এই সত্য এঁরা কৌশলে আড়াল করেন।
** বিজ্ঞান ভারতী আন্তর্জাতিক মানে চর্চিত বিজ্ঞানকে “পশ্চিমা বিজ্ঞান” হিসাবে চিহ্নিত করে এর বিপরীতে প্রচার করে “স্বদেশি বিজ্ঞান।”

পি ভি নরসীমা রাওয়ের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠন করল আইএনসি। রাওয়ের নয়াউদারনীতিবাদে বিশ্বাসী অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং ভারতের বাজারকে বিশ্ব পুঁজির জন্য উন্মোচন করলেন।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর চার রাজপুতানা রাইফেলস কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলার কুনান ও পোশপোরা গ্রামের মুসলমান নারীদের সম্মিলিতভাবে ধর্ষণ করে।

১৯৯২ বাংলাদেশের কাছে তিনবিঘা করিডোর হস্তান্তর করল ভারত।

ডিসেম্বর ৬ অযোধ্যায় কথিত রামজন্মস্থানস্থিত ঐতিহ্যবাহী বাবরি মসজিদ ভাঙল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) আর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) করসেবকরা। সমগ্র ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল সহিংসতা। ২ হাজার মানুষের মৃত্যু। উত্তর ভারতের মুসলমানরা সাম্প্রদায়িক আক্রমণের শিকার হলেন। প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাও সাময়িকভাবে আরএসএস, ভিএইপি, ও বজরং দলকে নিষিদ্ধ করলেন। বাবরি মসজিদ ভাঙন ও ভারতীয় মুসলমানদের আক্রান্ত হওয়ার অজুহাতে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি হিন্দুরা সাম্প্রদায়িক আক্রমণের শিকার হলেন।

বিহার ও উত্তর প্রদেশে আদার ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসদের (ওবিসি) রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত করতে গঠন করা হল সমাজবাদী দল (এসপি)।

অন্ধ্র প্রদেশে নিষিদ্ধ হল পিপলস ওয়ার গ্রুপ।

মহারাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন ক্রীড়া ভারতী।

১৯৯৩ কাশ্মীরে আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের দাবিতে গঠিত হল অল পার্টি হুররিয়েত কনফারেন্স। উর্দু ভাষায় হুররিয়েত শব্দের অর্থ হচ্ছে স্বাধীনতা। সাপোর গণহত্যায় ৫৫ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু।

মুম্বাইয়ে এক ভূমিকম্পে প্রায় ১০,০০০ মানুষের মৃত্যু।

প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন রাষ্ট্রবাদী শিক্ষক পরিষদ।

১৯৯৪ কাশ্মিরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ঘোষণা করে ভারতীয় সংসদে প্রস্তাব পাশ। ভারত সরকার ও জেকেএলএফের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি। ইয়াসিন মালিকের মুক্তিলাভ।

নিবন্ধিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন, কাগজে-কলমে ক্ষুদ্র শিল্পের সর্বভারতীয় সংগঠন, লঘু উদ্যোগ ভারতী।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেল, এসময় যুক্তরাষ্ট্রে ৮০০রও বেশি হিন্দু মন্দির আছে।

১৯৯৫ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মানবাধিকার কমিশন গঠন করা হল। আগস্ট খালিস্তানিদের হাতে খুন হলেন পাঞ্জাবির মুখ্যমন্ত্রী বিন্ত সিং।

১৯৯৬ কাঞ্চা ইলাইহা শেফার্ড, হোয়াই আই অ্যাম নট আ হিন্দু

১৯৯৭ মমতা ব্যানার্জিকে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি) থেকে বের করে দেয়া হল। কাশ্মিরে মানবাধিকার কর্মী জালিল আন্দ্রাবি অপহরণ ও হত্যা।

অরুন্ধতী রায়, দ্য গড অফ স্মল থিংস

১৯৯৮ ভারতে বিজেপি তার হিন্দুত্ব রাজনৈতিক এজেন্ডার মূল উপাদানগুলো বর্জন করে একটি জোট সরকার গঠন করতে সমর্থ হল। বিজেপির নেতৃত্বে গঠিত হল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)।

সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) গঠন করলেন মমতা ব্যানার্জি। এবছরের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জন্য বরাদ্দ ৪২টি আসনের মধ্যে মাত্র ৭টা আসন জেতে তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি)।

এবছর ভারত ও পাকিস্তান পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায়, এই নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন করে তিক্ততা দেখা দেয়।

ক্রিস্তোফ জ্যাফরেলো, দ্য হিন্দু ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট ইন ইন্ডিয়া
নিকোলাস গুডরিক-ক্লার্ক, হিটলার’স প্রিস্টেস: সাবিত্রী দেবী, দ্য হিন্দু-আরইয়ান মিথ, অ্যান্ড নিও-নাৎসিজম

অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করলেন অমর্ত্য সেন।

১৯৯৯ ভারতে জাতীয় নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ’র জয়লাভ। প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় এনডিএ সরকারের রেলমন্ত্রী হলেন মমতা ব্যানার্জি।

অটল বিহারি বাজপেয়ীর ঐতিহাসিক পাকিস্তান সফর। নওয়াজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ। দুইদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক লাহোর শান্তি চুক্তি সই।

কার্গিলে কাশ্মির নিয়ে চতুর্থ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু, ৫০ দিনের এই যুদ্ধে ভারত জেতে।

ওড়িশা রাজ্যে আদিবাসী খ্রিস্টানদের ওপর প্রায় শতাধিক হামলা।

প্রতিষ্ঠিত হল আর্থিক উপদেষ্টাদের সংগঠন ভারতীয় বিত্ত সলাহকার সমিতি।

২০০০ নয়া দিল্লির লাল কেল্লায় পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদী হামলা। এতে ৩ জন মানুষের মৃত্যু ঘটে। কলকাতা পৌরসংস্থা নির্বাচনে জিতল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি)। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে দুই দশকের মধ্যে
প্রথমবারের মত সংস্থাটির কর্তৃত্ব বামফ্রন্টের হাতছাড়া হল। মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেন জ্যোতি বসু। নয়া মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মণিপুরের মালম গ্রামের নিকটবর্তী এক বাসস্টপে অপেক্ষারত দশ বেসামরিক নাগরিককে খুন করল আসাম রাইফেলস। প্রতিবাদে কবি ইরম শর্মিলা চানু শুরু করলেন আমরণ অনশন। কাশ্মীরের অনন্তনাগে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হলেন ৩৬ জন শিখ। কাশ্মীরে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করল ভারত। পরের বছরের মে পর্যন্ত এই ঘোষণা কার্যকর ছিল। মধ্যপ্রদেশে পিপলস ওয়ার গ্রুপের হামলায় ২৩ জন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হলেন।

ভারতের জনসংখ্যা এবছর ১০০ কোটিতে পৌঁছায়।

জন কিয়াই, ইন্ডিয়া: আ হিস্ট্রি
গুরুচরণ দাশ, ইন্ডিয়া আনবাউন্ড: ফ্রম ইনডিপেন্ডেন্স টু দ্য গ্লোবাল ইনফরমেশন এজ
আব্রাহাম এরালি, দ্য লাস্ট স্প্রিং: দ্য লাইভস অ্যান্ড টাইমস অফ গ্রেট মুঘলস

২০০১ গঙ্গা ও যমুনা নদীর সঙ্গমস্থলে, এলাহাবাদে, আয়োজিত কুম্ভবেলায় ৭ কোটি মানুষ সমবেত হলেন; যা ইতিহাসের বৃহত্তম মানব সমাবেশ।

গুজরাতের ভুজ শহরে এক প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প সংঘটিত হল। সরকারি হিসেবে প্রায় ২০,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়। ৬ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন।

গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র মোদি।

ভারতের পার্লামেন্টে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ১৪ জন নিহত। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়েবা ও জইশ-ই-মুহাম্মদকে দায়ী করে।

কাশ্মীরে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হলেন মধ্যপন্থী হুররিয়েত নেতা আবদুল গণি লোন।

অপারেশন ওয়েস্ট এন্ড, তেহেলকা ম্যাগাজিনের স্টিং অপারেশন বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের সামরিক চুক্তি সংক্রান্ত দুর্নীতি ফাঁস করে দিল। এর প্রতিবাদে রেলওয়ে মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেন মমতা ব্যানার্জি। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের (আইএনসি) সাথে জোটবদ্ধ হল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি)।

ক্যালকাটার নাম আনুষ্ঠানিকভাবে বদলে কলকাতা রাখা হল। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের জয়। রাজ্যে টানা ষষ্ঠবারের মত বামফ্রন্ট সরকার গঠিত।

২০০২ ভারতের প্রেসিডেন্ট হলেন আভুল পাকির জয়নুলাবেদিন আবদুল কালাম।

ভারতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভাঙনের দশ বছর পূর্তি উদযাপন করল। ভারতের গুজরাট রাজ্যের মুসলমানরা গণহত্যার শিকার হলেন।* কাশ্মীরের সংসদে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ৩৮ জনের মৃত্যু।
* সবরমতি এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডে ৫৮ জন মানুষ পুড়ে মারা গেলেন, যাদের অধিকাংশই হিন্দু তীর্থযাত্রী। হিন্দুত্ব ফ্যাসিস্টরা রাজ্যের মুসলমানদের ঘাড়ে দায় চাপাল। শুরু হল গণহত্যা। সরকারি হিসেবে হাজারখানেক মানুষের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হলে ও বেসরকারি হিসেবে দুইহাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়, যাদের অধিকাংশই মুসলমান। এসময় মুসলমান নারীরা গণহত্যামূলক ধর্ষণের শিকার হন। ২০০৭ সালের নভেম্বরে তেহেলকা ম্যাগাজিন Gujarat 2002: The Truth নামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে যাতে এই গণহত্যায় সমর্থন প্রদান করার জন্য গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দায়ী করা হয়। গুজরাট গণহত্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, দেখুন, (Engineer 2003)।

রোমিলা থাপার, আর্লি ইন্ডিয়া: ফ্রম দ্য অরিজিনস টু এডি ১৩০০
আব্রাহাম এরালি, জেম ইন দ্য লোটাস: দ্য সিডিং অফ ইন্ডিয়ান সিভিলাইজেশন

২০০৩ ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উন্নতি, লাহোর-অমৃতসর বাস সার্ভিস চালু।

২০০৪ ভারতে আইএনসির নেতৃত্বে গঠিত হল ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ)। দেশটির সাধারণ
নির্বাচনে বিজেপি হেরে গেল, নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করল আইএনসি-নেতৃত্বাধীন ইউপিএ। ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিং। লোকসভা নির্বাচনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি ) স্রেফ মমতা ব্যানার্জির আসনেই জিতল; অনেকেই ধরে নিলেন, মমতার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ। ভারতের এলাহাবাদে কথিত ‘এনকাউন্টারে’ ইশরাত জাহান খুন। পিপলস ওয়ার গ্রুপ (পিডব্লিউজি) আর মাওয়িস্ট কমিউনিস্ট সেন্টার (এমসিসি) মিলে গঠন করল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)। নিউ ইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের মধ্যে কাশ্মির নিয়ে আলোচনা শুরু।

রোমিলা থাপার, সোমনাথ: দ্য মেনি ভয়েসেস অফ আ হিস্ট্রি

২০০৫ ভারত দখলকৃত কাশ্মীর আর পাকিস্তান দখলকৃত মুজাফফরবাদের মধ্যে বাস সার্ভিস চালু করা হল। প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের বিশেষ সংগঠন মাই হোম ইন্ডিয়া।*
* আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল। এই সাতটি রাজ্য সাতবোন অঙ্গরাজ্য নামে পরিচিত। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে (North-East) অবস্থিত। কেন্দ্রের সাথে এই রাজ্যগুলোর ঐতিহাসিক ঝামেলা আছে। সাত বোনের বিচ্ছিন্ন/স্বাধীন হতে চাওয়ার রাজনীতি আছে। তাদের সম্পদ নিষ্কাশন করতে চাওয়ার অর্থনীতিও আছে। মাই হোম ইন্ডিয়ার উদ্দেশ্য সাতবোন অঙ্গরাজ্যে জাতীয়তাবাদ প্রচার করা ও ভারতের বাকি অংশের সাথে তাঁদের আত্মীকরণ ঘটানো।

ভারতে মাওবাদী দমনের নামে সালওয়া জুদুম গঠিত, সংগঠনটি আদিবাসী অঞ্চলগুলোতে আতঙ্ক তৈরি করল।

২০০৬ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের জয়, রাজ্যে টানা সপ্তমবারের মত বামফ্রন্ট সরকার গঠিত। এই নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) ২৯৪টি আসনের মধ্যে মাত্র ৩০টি আসন জেতে। কাশ্মির নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু। কাশ্মির সমস্যার সমাধান করার উদ্দেশ্যে ‘চারদফা ফর্মুলা’ প্রদান করলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ। ভারত সফর করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ জুনিয়র। দুই দেশের মধ্যে একটি পারমাণবিক চুক্তি সাক্ষরিত হল।

২০০৭ ভারতের প্রথম নির্বাচিত নারী প্রেসিডেন্ট হলেন প্রতিভা দেবি সিং পাতিল। দেশটির উত্তর প্রদেশে বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) ভূমি ধবস জয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেন মায়াবতী। পশ্চিমবঙ্গে নন্দীগ্রাম আন্দোলন।*

* জানুয়ারি হলদিয়া উন্নয়ন বোর্ডের কেমিকাল হাব বানানোর জন্য ভূমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে নন্দীগ্রামে সহিংসতা।
জানুয়ারি ৪ নন্দীগ্রাম একটা না মানুষী জমিনে পরিণত হল যখন চাষীরা জানালেন তাঁরা জান দেবেন, কিন্তু জমি দেবেন না।
জানুয়ারি ৫ গঠিত হল ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি (বিইউপিসি)।

মার্চ ১৪ পুলিশের গুলিতে ১৪ জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হল।

নভেম্বর ১১ বিরোধী পক্ষের কয়েকজন সক্রিয়তাবাদীকে খুন করার মধ্য দিয়ে নন্দীগ্রামের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেল সিপিআই(এম)।
নভেম্বর ১৪ চলচ্চিত্রনির্মাতা ও শিল্পীরা নন্দীগ্রামে সিপিআই(এম) ক্যাডারদের সহিংসতার নিন্দা জানালেন, বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই প্রতিবাদস্বরূপ কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব বয়কট করলেন।

রামচন্দ্র গুহ, ইন্ডিয়া আফটার গান্ধী: দ্য হিস্ট্রি অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস লার্জেস্ট ডেমোক্রেসি

২০০৮ পশ্চিমবঙ্গে সিঙ্গুর আন্দোলন।* অরুন্ধতী রায়, মহাশ্বেতা দেবী, ও মেধা পাটেকরসহ বিভিন্ন লেখক, সক্রিয়তাবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন এই আন্দোলনে সংহতি জানান।
* আগস্ট ২৪ রাজ্যের হুগলি জেলার সিঙ্গুরে টাটা মোটরসের ন্যানো কার প্রকল্পের জন্য সরকার জোরপূর্বক ১০০০ একর জমি অধিগ্রহণ করলে মমতা ব্যানার্জি এর বিরুদ্ধে ও ৪০০ একর জমি চাষীদেরকে ফেরত দেয়ার দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করলেন।

অক্টোবর ৩ টাটা মোটরস পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ছেড়ে চলে গেল।

নভেম্বর ৪-১০ গঠিত হল পিপলস কমিটি অ্যাগেইন্সট পুলিশ অ্যাট্রোসিটিজ (পিসিএপিএ)।

ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে সালওয়া জুদুম বিলুপ্ত।

অমরনাথ মন্দিরের জমি বরাদ্দ দেয়া কেন্দ্র করে কাশ্মীরে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হল।

মুম্বাইয়ে পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গিদের হামলায় দেড়শতাধিক মানুষ নিহত।

কেরালায় কুম্মানাম রাজাসেখারান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের শাখা সংগঠন সবরিমালা আয়াপ্পা সেবা সমাজম।

২০০৯ ভারতে সাধারণ নির্বাচনে জিতে জোট সরকার গঠন করল আইএনসি-নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ)। দেশটির লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বামফ্রন্টের চেয়ে বেশি আসন পেল ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) – বামফ্রন্টের পতনের সূচনা। কাশ্মীরি মানবাধিকার গ্রুপ অনুসন্ধান
চালিয়ে উত্তর কাশ্মীরে ২৭০০ অচিহ্নিত গণকবরের সন্ধান পেল। সুরেশ টেন্ডুলকারের নেতৃত্বাধীন টেন্ডুলকার কমিটি জানাল, ভারতের ৩৭.৫% মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন। ‘অপারেশন গ্রিন হান্ট’: মাওবাদী দমনের নামে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল ভারত রাষ্ট্র।

রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করলেন ভেঙ্কটরমণ রামকৃষ্ণান।

ওয়েন্ডি ডোনিগার, দ্য হিন্দুজ: অ্যান অল্টারনেটিভ হিস্ট্রি

২০১০ ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক। দুই দেশের মধ্যে তিন চুক্তি ও দুই সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হল। এলাহাবাদের আদালত রায় দিল, অযোধ্যার বিতর্কিত জমি তিন ভাগ করে দাবিদারদের বন্টন করে দেয়া হবে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে খুন হল ৮-বছর-বয়সী কাশ্মীরি শিশু তুফায়েল ভুট্টো খুন, উপত্যকা জুড়ে প্রচণ্ড বিক্ষোভ, বহু কাশ্মীরি তরুণের হিজবুল মুজাহিদিনে যোগদান।

বি. জেড. খসরু, মিথস অ্যান্ড ফ্যাক্টস বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার: হাউ ইন্ডিয়া, ইউএস, চায়না, অ্যান্ড দ্য ইউএসএসআর শেপড দ্য আউটকাম

২০১১ ভারতে জন লোকপাল বিলের দাবিতে দুর্নীতি বিরোধ আন্দোলন। এই আন্দোলনকারীদের একাংশ আলাদা হয়ে আম আদমি পার্টি প্রতিষ্ঠা করলেন। অযোধ্যার ব্যাপারে এলাহাবাদের আদালতের রায় বহাল রাখল ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।

পরিবর্তন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি ) ও সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) বামফ্রন্টকে পরাজিত করল। রাজ্যে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসনের অবসান হল।* পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হলেন মমতা ব্যানার্জি।
* পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীদের উত্থানপতন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, দেখুন, (Bhowmick 2021).

আব্রাহাম এরালি, দ্য ফার্স্ট স্প্রিং: দ্য গোল্ডেন এজ অফ ইন্ডিয়া

২০১২ মানসী লাহিড়ী, ম্যাপিং ইন্ডিয়া

২০১৩ ভারতে অপরাধের শক্ত প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও কাশ্মীরি আফজাল গুরুর ফাঁসি হল, রায়ে বলা হল, ভারতীয় সমাজের সামষ্টিক চেতনাকে তৃপ্ত করার জন্যই গুরুকে এই শাস্তি দেয়া হয়েছে।

ওয়েন্ডি ডোনিগার, অন হিন্দুইজম

২০১৪ নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় এল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।

মার্চ ২৬ ভারতের পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মোদি।*
* প্রথমবারের মত সার্ক-ভুক্ত বিভিন্ন রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দকেও এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল।

সেপ্টেম্বর ২৫ বিজেপির “মেক ইন ইন্ডিয়া” প্রচারাভিযান শুরু হল।**
** উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিতদের মধ্যে ছিলেন বৃহৎ ব্যবসায়ী মুকেশ আম্বানি ও আজিম প্রেমজি।

অক্টোবর ২ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকীতে ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযান শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদি।

ভারত সফর করলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

আব্রাহাম এরালি, দ্য এজ অফ র‍্যাথ: আ হিস্ট্রি অফ দ্য দিল্লি সালতানাত

২০১৫ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম বাংলাদেশ সফর। ১৯টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক এবং ২০০ কোটি ডলার ঋণ চুক্তি সই হল। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ছিটমহল বিনিময়, এর মধ্য দিয়ে সাত দশকের একটি মানবিক সংকটের অবসান ঘটে।

মুফতি মুহাম্মদ সাঈদের নেতৃত্বে কাশ্মীরে কোয়ালিশন সরকার। প্রথমবারের মত পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) জোটসঙ্গী হিসেবে কাশ্মীরে শাসন করার সুযোগ পেল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।

২০১৬ নভেম্বর ৮ রাত ৮টার সময় টেলিভিশনের পর্দায় হাজির হয়ে ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোট ডিমানিটাইজ করার ঘোষণা দিলেন মোদি। সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এই হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে তৈরি হওয়া আর্থিক চাপের দরুণ মাত্র এক সপ্তাহে ৩৩ জন মানুষের মৃত্যু হয়। বিরোধীদের দাবি, মৃতের সংখ্যা ১০০ জনেরও বেশি।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মত জিতল মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি)। কাশ্মীরে মুফতি মুহাম্মদ সাঈদের মৃত্যু, নতুন মুখ্যমন্ত্রী হলেন তাঁর কন্যা মেহবুবা
সাঈদ, যিনি মেহবুবা মুফতি নামেও পরিচিত। ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হলেন বুরহান ওয়ানি।*
* হিজবুল মুজাহিদিনের সদস্য। বুরহানের জানাজায় অংশ নেন ৫ লক্ষ কাশ্মিরি। কাশ্মিরজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ। তিন মাসে ৯ হাজার নিহত। কাশ্মির সীমান্তের কাছাকাছি চারটি গণকবরের সন্ধান মিলল। সেখানে প্রায় ২ হাজার মৃতদেহ শনাক্ত করা হল। এরা হচ্ছেন কাশ্মিরের “গুম হয়ে যাওয়া” মানুষ।

অদ্রে ত্রুশকা, কালচার অফ এনকাউন্টারস: সাংস্কৃত অ্যাট দ্য মুঘল কোর্ট
শশী থারুর, অ্যান এরা অফ ডার্কনেস: দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার ইন ইন্ডিয়া

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ১ রেলওয়ে আর ইউনিয়ন বাজেট একীভূত করা হল। বাজেট পেশ করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ১৯২৪ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসকরা আইন করে একাধিক বাজেট একীভূত করা নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল।

জুন-আগস্ট ভুটানের দোকলাম ভূখণ্ড নিয়ে সাময়িক চীন-ভারত উত্তেজনা।

জুলাই ১ গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্ট (জিএসটি) প্রয়োগ করা হল। মোদি বললেন, এটা গুড অ্যান্ড সিম্পল ট্যাক্স। বিভিন্ন শিল্পের ট্রেডাররা এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেন।

নভেম্বর ১৪ রাফায়েল জেট ‘স্ক্যাম’ বিতর্ক।

বুরহান ওয়ানির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে কাশ্মিরজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ। বন্দুকধারীদের হামলায় ১৯ জন হিন্দু তীর্থযাত্রীর মৃত্যু।

অদ্রে ত্রুশকা, আওরঙ্গজেব: দ্য লাইফ অ্যান্ড লিগ্যাসি অফ ইন্ডিয়া’জ মোস্ট কন্ট্রোভার্শিয়াল কিং
অরুন্ধতী রায়, দ্য মিনিস্ট্রি অফ আটমোস্ট হ্যাপিনেস
সাগরিকা ঘোষ, ইন্দিরা: ইন্ডিয়া’জ মোস্ট পাওয়ারফুল প্রাইম মিনিস্টার

২০১৮ সেপ্টেম্বর ৬ ভারতীয় পেনাল কোডের (আইপিসি) ৩৭৭ ধারাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে কার্যত সমকামিতাকে ডিক্রিমিনালাইজ করল ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।

ভারতের কাশ্মীরে পাহাড়ি যাযাবর ও মুসলমান বাকারওয়াল সম্প্রদায়ের ৮-বছর বয়সী শিশু আসিফা বানোকে একটা মন্দিরের মধ্যে সম্মিলিতভাবে ধর্ষণ করে মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়।

মার্কিন-ভিত্তিক শিখস ফর জাস্টিস ঘোষণা করল ‘রেফারেন্ডাম ২০২০’। উদ্দেশ্য ভারত থেকে পাঞ্জাবের বিচ্ছিন্ন হওয়ার পক্ষে পাঞ্জাবির মধ্যে জনমত তৈরি করা।

আনন্দ তেলতুম্বদে, রিপাবলিক অফ কাস্ট: থিংকিং ইকুয়ালিটি ইন দা টাইম অফ নিওলিবারেল হিন্দুত্ব
রুবি লাল, এমপ্রেস: দ্য অ্যাস্টোনিশিং রেইন অফ নূর জাহান
টনি জোসেফ, আর্লি ইন্ডিয়ানস: দ্য স্টোরি অফ আওয়ার অ্যানসেস্টরস অ্যান্ড হোয়ার উই কেইম ফ্রম
ওয়েন্ডি ডনিগার, অ্যাগেইন্সট ধার্মা: ডিসেন্ট ইন দ্য এনসিয়েন ইন্ডিয়ান সায়েন্সেস অফ সেক্স অ্যান্ড পলিটিকস

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ১৪ জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক জঙ্গি হামলায় সিপিআরএফের ৪০ জন জওয়ান নিহত হলেন। জইশে মোহাম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করে।
ফেব্রুয়ারি ২৬ পাকিস্তানের বালাকোটে বিমানহামলা চালাল ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ)।

মে ৩০ দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন নরেন্দ্র মোদি।
মে ৩১ ফাঁস হওয়া সরকারি নথি থেকে জানা গেল, এসময় ভারতে বেকারত্বের হার ৬.১ শতাংশ, ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আগস্ট ৫ ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা, যা ভারতের ভেতরেই জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ স্ট্যাটাস দিয়েছে, তুলে নিল বিজেপি সরকার। উপত্যকায় একটা লকডাউন চাপিয়ে দেয়া হল। হাজার হাজার ভারতীয় সেনা মোতায়েন করা হল। জম্মু ও কাশ্মীরের বিরোধী নেতৃবৃন্দকে গৃহবন্দী করা হল, যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লা।

নভেম্বর ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বাবরি মসজিদ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করল: কথিত রামজন্মস্থানে রামমন্দির নির্মাণের অনুমতি দেয়া হল।

ডিসেম্বর ১১ সংসদে নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন পাশ করা হল।* দিল্লিতে শাহীনবাগ আন্দোলন।
* এর বিরুদ্ধে দেশটিতে তীব্র আন্দোলন দেখা দেয়। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া (জেএমইউ), আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (এএমইউ), জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়-সহ (জেএনআই) বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ব্যাপক পুলিশি সহিংসতার শিকার হলেন। ডিসেম্বর পর্যন্ত শুধু উত্তর প্রদেশেই গ্রেপ্তার হন ১৮ হাজার ৭০৫ জন, খুন হন ১৮ জন।

ভারতীয় পাঞ্জাবের পাঠানকোটের একটি আদালত শিশু আসিফা বানো ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে সানজিরামসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল।*
* এর কৃতিত্ব শিশু আসিফা বানোর আইনজীবী দীপিকা সিং রাজাওয়াতের, যিনি কাশ্মীরের কুপওয়ারার একটি রাজপুত হিন্দু পরিবারের মেয়ে।

রিচার্ড ইটন, ইন্ডিয়া ইন দ্য পারসিয়ানাত এজ ১০০০-১৭৬৫
হিলাল আহমেদ, সিয়াসি মুসলিমস: আ স্টোরি অফ পলিটিকাল ইসলামস ইন ইন্ডিয়া
কপিল সতিশ কমিরেড্ডি, ম্যালোভেলেন্ট রিপাবলিক: আ শর্ট হিস্ট্রি অফ দ্য নিউ ইন্ডিয়া
অরুন্ধতী রায়, মাই সেডিশিয়াস হার্ট: কালেক্টেড নন-ফিকশন

২০২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে রাষ্ট্রীয় ইন্ধনে সহিংসতা।

মার্চ লাদাখের গালওয়ানে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএএস) ভারতীয় ও চীনা সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘাত ছড়িয়ে পড়ল। অন্তত ২০ জন জওয়ান এতে নিহত হন। দেশদুটির মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেয়।

আগস্ট ৫ অযোধ্যায় যেখানে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়েছিল, সেখানে কথিত ‘রামজন্মভূমি’ মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করলেন নরেন্দ্র মোদি।

সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ভাঙনের ঘটনায় বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতীসহ ৩২ জন অভিযুক্তকে অব্যাহতি দিল আদালত। বলা হল ভাঙনের ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল না।

সেপ্টেম্বর ২০ সংসদে তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন পাশ হল। এসব আইনের উদ্দেশ্য ছিল কৃষি খাতের বেসরকারিকরণ। সারা দেশের কৃষকরা ক্ষোভে ফেটে পড়লেন, আইনগুলো বাতিলের দাবিতে হরিয়ানা আর পাঞ্জাবের চাষীরা মিছিল করে দিল্লিতে আসলেন।

বাংলাদেশে মুজিববর্ষ (২০২০-২১) উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসার কথা থাকলেও করোনা সংকটের কারণে সফর স্থগিত করা হল।

ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির মৃত্যু।

ভারতীয় অভিনেতা ইরফান খান, ঋষি কাপুর, সুশান্ত সিং রাজপুত, আর সৌমিত্র চ্যাটার্জির মৃত্যু।

ক্রিস্তোফ জ্যাফরেলো ও প্রতিনাভ অনিল, ইন্ডিয়া’জ ফার্স্ট ডিক্টেটরশিপ: দ্য ইমার্জেন্সি, ১৯৭৫-৭৭
আকর প্যাটেল, আওয়ার হিন্দু রাষ্ট্র: হোয়াট ইট ইজ। হাউ উই গট হেয়ার
মান্নান আহমেদ আসিফ, দ্য লস অফ হিন্দুস্তান: দি ইনভেনশন অফ ইন্ডিয়া

২০২১ জানুয়ারি ২৬ প্রজাতন্ত্র দিবসে মূলত হরিয়ানা আর পাঞ্জাবের হাজার হাজার বিদ্রোহী কৃষক তাঁদের ট্রাক্টর নিয়ে লাল কেল্লায় ঢুকে পড়লেন।

মে ৩১ ২০২০-২১ সালে ভারতের জিডিপি প্রায় ৭.৬% সংকুচিত হল, যা চার দশকের মধ্যে সবচে দেশটির সবচে খারাপ পারফর্মেন্স।

জুলাই ১৮ দ্য পেগাসাস স্ক্যান্ডাল, বিভিন্ন গণমাধ্যমের একটি স্বাধীন তদন্তে জানা গেল, ভারতের সরকারি কর্মকর্তা, বিরোধী নেতৃবৃন্দ, অধিকার কর্মী, ও জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিকদের অন্তত ৩০০ ফোন নম্বর টার্গেট করতে ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহৃত হয়েছে।

নভেম্বর ১৯ দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বিতর্কিত কৃষি আইনগুলো বাতিল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মত জিতল মমতা ব্যানার্জির সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি)।*
* মমতা আমলের সংক্ষিপ্ত মূল্যায়নের জন্য, দেখুন, (Bhattacharya 2021).

মহারাষ্ট্রে পুলিশের কথিত এনকাউন্টারে মাওবাদী নেতা মিলিন্দ তেলতুম্বদে-সহ ২৬ জন নকশাল নেতাকর্মীর মৃত্যু। হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ভারতের প্রতিরক্ষাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের মৃত্যু। কাশ্মীরের আজাদি আন্দোলনের অন্যতম নেতা সাইয়েদ আলী শাহ গিলানির মৃত্যু।

নমিত অরোরা, ইন্ডিয়ানস: আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ আ সিভিলাইজেশন
অদ্রে ত্রুশকা, দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ অফ হিস্ট্রি: সাংস্কৃত ন্যারেটিভস অফ ইন্দো-মুসলিম রুল
আকর প্যাটেল, প্রাইস অফ দ্য মোদি ইয়ার্স
চন্দ্রশেখর দাসগুপ্ত, ইন্ডিয়া অ্যান্ড দ্য বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার
টেরি মিলেউস্কি, ব্লাড ফর ব্লাড: ফিফটি ইয়ার্স অফ দ্য গ্লোবাল খালিস্তান প্রজেক্ট

২০২২ জুন ১৪ সামরিক বাহিনীভুক্তির ব্যাপারে অগ্নিপথ পরিকল্পনা ঘোষণা করল সরকার, দেশ জুড়ে ভয়াবহ প্রতিবাদ দেখা দিল।

জুলাই ১৯ স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেল, দোকলাম মালভূমির ভুটানি অংশের পুব দিকে চীনারা বসতিস্থাপন করছে। উল্লেখ্য যে, দোকলাম নিয়ে ভারত-চীন দ্বন্দ্ব আছে।

সাগরিকা ঘোষ, অটল বিহারি বাজপেয়ী
শশী থারুর, আম্বেদকর: আ লাইফ

২০২৩ মে ১৯ রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) ঘোষণা দিল, ২০০০ টাকার নোট সরবরাহ থেকে তুলে নেয়া হল।

জুলাই মণিপুরে উন্মত্ত জনতার একটি দঙ্গল পুলিশের জিম্মা থেকে দুজন আদিবাসী মহিলাকে টেনে নিয়ে গিয়ে বিবসন করে রাস্তায় হাঁটায় ও সম্মিলিতভাবে ধর্ষণ করে, যার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই ঘটনায় দেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে, ও শাসকদলের নির্লিপ্ততা তীব্রভাবে সমালোচিত হয়। স্থানীয় মহিলারা সন্দেহভাজন অপরাধীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন।

আগস্ট ২৩ যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, ও চীনের পর চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদে গেল ভারত।

সেপ্টেম্বর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ তুললেন, ভারত সরকারের এজেন্টরা গত জুনে ব্রিটিশ কলম্বিয়াস্থ শিখ কমিউনিটি লিডার হরদীপ সিং নিজ্জরকে খুন করেছে।

আজাদ এসসা, হোস্টাইল হোমল্যান্ডস: দ্য নিউ অ্যালায়েন্স বিটউইন ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইসরায়েল

২০২৪ এপ্রিল-জুন লোকসভা নির্বাচন আয়োজিত। ২০১৪ সালের পরে প্রথমবারের মত সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হল বিজেপি, এনডিএ জোট ২৯৩টি আসন পেল। বিরোধীদের ইন্ডিয়া কোয়ালিশন ২৩৪টি আসন পেল।

রুবি লাল, ভ্যাগাবন্ড প্রিন্সেস: দ্য গ্রেট এডভেঞ্চার্স অফ গুলবদন
হিলাল আহমেদ, আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ দ্য প্রেজেন্ট: মুসলিমস ইন নিউ ইন্ডিয়া

২০২৫ মার্চ ১৭ নাগপুর সহিংসতা, মহারাষ্ট্রের নাগপুরে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি সরিয়ে ফেলার হিন্দুত্ববাদী দাবিকে কেন্দ্র করে সহিংসতা দেখা দিলে অন্তত ৩০ জন আহত, কারফিউ জারি, ৩ শিশু সহ ৬৫ জন গ্রেপ্তার।
মার্চ ১৮ ১৯৮১ সালে উত্তর প্রদেশের দেহুলি গ্রামে ২৪ জন দলিতকে হত্যা করার দায়ে এক বিশেষ আদালত ৩ ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করল ও মৃত্যুদণ্ড দিল।
মার্চ ২৯ ছত্তিশগড়ের সুকমা জেলায় ভারতীয় পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৬ জন মাওবাদী নিহত।

এপ্রিল গুজরাটের দিশায় এক অবৈধ আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণের কারণে অন্তত ১৮ ব্যক্তির মৃত্যু।

অদ্রে ত্রুশকা, ইন্ডিয়া: ফাইভ থ্যাউজ্যান্ডস ইয়ারস অফ হিস্ট্রি অন দ্য সাবকনটিনেন্ট

তথ্যসূত্র

আন্তোনভা, কোকা, বোনগার্দ-লেভিন, গ্রিগোরি, ও কতোভস্কি, গ্রিগোরি। ১৯৮৮। ভারতবর্ষের ইতিহাস। তৃতীয় সংস্করণ। মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায় ও দ্বিজেন শর্মা কর্তৃক অনূদিত। প্রগতি প্রকাশন।

আব্দুল্লাহ, শোয়েব। ২০২১। জানাজা থেকে স্বাধীনতা: কাশ্মীরে আজাদির লড়াই ও তার সাম্প্রতিক বৃত্তান্ত। আদর্শ।

ইসলাম, ড. শামসুল। ২০২২। আরএসএস: জাতীয়তাবাদের আড়ালে ফ্যাসিবাদ। তাসমিম মাহমুদ কর্তৃক রূপান্তরিত। রেড।

বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যজিৎ। ২০২১। সংঘ পরিবারের ভিতরের কথা। একুশশতক।

বাংলাপিডিয়া। ২০১৫। “দুর্ভিক্ষ।” বাংলাপিডিয়া। শেষ সম্পাদিত হয়েছে জানুয়ারি ১৪, ২০১৫য়।
https://bn.banglapedia.org/index.php/%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7
 ২০১৫খ। “দুর্ভিক্ষ, ১৯৪৩।” বাংলাপিডিয়া। শেষ সম্পাদিত হয়েছে জানুয়ারি ১৪, ২০১৫য়।
https://bn.banglapedia.org/index.php?title=%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7,_%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AA%E0%A7%A9

মনু, রক। ২০১৩। “সহমরণ হতে সতীদাহ।” বাছবিচার।
https://bacbichar.net/2013/07/art.1154.bb/

রাফিন, ইরফানুর রহমান। ২০২২। সময়রেখা: মহাবিশ্বের উৎপত্তি থেকে করোনাসংকট পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত ঘটনাপঞ্জি। দিব্যপ্রকাশ।

রায়, সুপ্রকাশ। ২০১৮। ভারতের কৃষক-বিদ্রোহ ও গণতান্ত্রিক সংগ্রাম। দ্বিতীয় র‍্যাডিকাল প্রকাশ। র‍্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন।

রায়, সুমিত। ২০২২। “গুর্জর-প্রতীহার রাজবংশ (৭৩০-১০৩৬ খ্রি.) : রাজবৃত্তান্ত।” বিবর্তনপথ, জানুয়ারি ৩১।
https://www.bibortonpoth.com/10542

শর্মা, রাম শরণ। ২০১৭। প্রাচীন ভারত। ষষ্ঠ মুদ্রণ। সুমন চট্টোপাধ্যায় কর্তৃক ভাষান্তরিত। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষৎ।

BBC. 2019. “India profile – Timeline.” BBC, March 4.
https://www.bbc.com/news/world-south-asia-12641776

Bhatt, Chetan. 2001. Hindu Nationalism: Origins, Ideologies and Modern Myths. Berg.

Bhattacharya, Debraj. 2021. “The Many Faces of ‘Parivartan’: West Bengal under Mamata Banerjee 2011-2021”. Economic & Political Weekly 56 (17). https://ojs.epw.in/index.php/epw/article/view/30067.

Bhowmick, Sourjya. 2021. Gangster State: The Rise and Fall of the CPI(M) in West Bengal. Pan Macmillan, 2021.

Brown, Stephen F.. 2009. Protestantism. 3rd ed. Chelsea House.

Brown, Stephen F. and Anatolias, Khaled. 2009. Catholicism & Orthodox Christianity. 3rd ed. Chelsea House.

Doniger, Wendy. 2014. On Hinduism. Oxford University Press.
2018. Against Dharma: Dissent in the Ancient Indian Sciences of Sex and Politics. Yale University Press.

‌Engineer, Asgar Ali. 2003. The Gujarat Carnage. Orient Longman.

Gordon, Matthew S.. 2009. Islam. 4th ed. New York.

Hartz, Paula R.. 2009a. Zoroastrianism. 3rd ed. Chelsea House.

Jones, Constance A., and Ryan, James D. 2007. Encyclopedia of Hinduism. Facts On File.

Joseph, Tony. 2018. Early Indians: The Story of Our Ancestors and Where We Came From. Juggernaut.

Kapoor, Coomi. 2015. The Emergency: A Personal History. Penguin Books.

Louër, Laurence. 2020. Sunnis and Shiʻa: A Political History of Discord. Translated by Ethan Rundell. Princeton University Press.

M, Kaunain Sheriff, and Sahu, Manish. 2020. “Babri Masjid demolition: Advani, Joshi and Uma among all 32 cleared, court says no evidence.” The Indian Express, October 1.
https://indianexpress.com/article/india/babri-masjid-demolition-ayodhya-6656454/

McHugo, John. 2018. A Concise History of Sunnis & Shi‘is. Georgetown University Press.

Mcleod, John. 2015. The History of India. 2nd ed. Greenwood.

Phillips, Douglas A., and GritAner, Charles F. 2003. India. Chelsea House.

Robinson, Andrew. 2014. India: A Short History. Thames & Hudson.

Rose, Jenny. 2011. Zoroastrianism: A Guide for the Perplexed. Bloomsbury.

Sardar, Ziauddin. 2017. Mecca: The Sacred City. Paperback ed. Bloomsbury.

The Indian Express. 2023. “9 Years of Narendra Modi Government: A Timeline.” The Indian Express, May 30.
https://indianexpress.com/article/india/nine-years-of-narendra-modi-government-timeline-major-event-decisions-policies-protests-8636401/.

Tharoor, Shashi. 2016. An Era of Darkness: The British Empire in India. Aleph Book Company.

Truschke, Audrey. 2020. “Hindutva’s Dangerous Rewriting of History”, South Asia Multidisciplinary Academic Journal [Online], 24/25 | 2020, Online since 23 October 2020, connection on 05 June 2023. URL: http://journals.openedition.org/samaj/6636; DOIhttps://doi.org/10.4000/samaj.6636

Wangu, Madhu Bazaz. 2009a. Buddhism. 4th ed. New York: Chelsea House.
— 2009b. Hinduism. 4th ed. Chelsea House.

Wikimedia Foundation. 2025. “2025 in India.” Last modified April 1, at 17:13 (UTC).
https://en.wikipedia.org/wiki/2025_in_India

The New York Times
Observer Research Foundation
DW
INSIGHTSIAS
Hindustan Times
The Hindu
News 18

নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।

অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ

দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *