
উত্তর ম্যাকিদোনিয়া
Featured Image: Wikipedia Commons.

সাল
১৯১২-১৩ প্রথম ও দ্বিতীয় বলকান যুদ্ধ। কসোভো ও ম্যাকিদোনিয়ার বিপুল অঞ্চল সার্বদের হাতে এল, মন্টেনিগ্রোর ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটল। ইওরোপে ওসমানি সুলতানশাহির সময় ফুরিয়ে আসছিল।
১৯১৩ বলকানে ওসমানি সুলতানশাহির পাঁচ দশকের শাসনের অবসান। ম্যাকিদোনিয়াকে সার্বিয়া, বুলগেরিয়া, আর গ্রিসের মধ্যে পার্টিশনড করা হল। বর্তমান উত্তর ম্যাকিদোনিয়াকে সার্বিয়ার অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হল।
১৯১৪-১৮ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।*
* ম্যাকিদোনিয়ায় বুলগেরীয় দখলদারিত্ব।
১৯১৮-১৯ যুদ্ধ শেষে ম্যাকিদোনিয়া আবার সার্বিয়ার অংশ হয়ে গেল। গঠন করা হল সার্ব, ক্রোয়াট, ও স্লোভেনদের রাজ্য।
১৯২১ সার্ব, ক্রোয়াট, ও স্লোভেনদের রাজ্যের প্রথম সংবিধান প্রণীত হল।
১৯২৯ সার্ব, ক্রোয়াট, ও স্লোভেনদের রাজ্যের নাম বদলেযুগোস্লাভিয়া রাখা হল।*
* যুগোস্লাভিয়া শব্দের মানে হল দক্ষিণ স্লাভদের ভূমি।
১৯৩৯-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
১৯৪৫ যুদ্ধ শেষে যুগোস্লাভিয়ায় ক্ষমতায় আসল টিটোর পার্টিজানরা। একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠিত। জোসিপ ব্রজ টিটোর নেতৃত্বে যুগোস্লাভিয়া সমাজতান্ত্রিক ফেডারেল প্রজাতন্ত্র কায়েম করা হল যেখানে, কাগজেকলমে, সব জাতির সমঅধিকার ছিল।*
* ছয়টি প্রজাতন্ত্রের সমষ্টি ছিল এই ফেডারেল প্রজাতন্ত্র। সার্বিয়া (রাজধানী বেলগ্রেড), মন্টেনিগ্রো (রাজধানী টিটোগ্রাদ), স্লোভেনিয়া (রাজধানী জুবজানা), ক্রোয়েশিয়া (রাজধানী জাগরেব), বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা (রাজধানী সারায়েভো), এবং ম্যাকিদোনিয়া (রাজধানী স্কোপজে)। এদের মধ্যে সার্বিয়ায় দুটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ ছিল: কসোভো (রাজধানী প্রিস্টিনা) ও ভোজভোদিনা (রাজধানী নোভি সাদ)।
১৯৮০-৮৯ যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত প্রজাতন্ত্রগুলোয় জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটছে।
১৯৯১ গণভোটে অধিকাংশ ভোটার স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিলেন। ম্যাকিদোনিয়া নামটা নিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র গ্রিসের আপত্তি থাকায় আন্তর্জাতিক সমর্থনের গতি শ্লথ হয়ে এল। আপত্তির কারণ গ্রিসের একটি প্রদেশের নামও ম্যাকিদোনিয়া।
১৯৯৩ ম্যাকিদোনিয়া সাবেক যুগোশ্লাভ প্রজাতন্ত্র নামে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করল।
১৯৯৫ ম্যাকিদোনিয়ার স্বাধীনতাকে স্বীকৃতিপ্রদান করল গ্রিস, দেশটির ওপর পূর্বে আরোপিত বাণিজ্য অবরোধ তুলে নিল।
১৯৯৭ সাংবিধানিক আদালত ও সংসদ আলবানীয় পতাকার ব্যবহার।
১৯৯৯ কসোভার আলবানীয়দের একটি সম্ভাব্য গণহত্যার হাত থেকে বাঁচাতে যুগোস্লাভিয়ায় বোমাবর্ষণ শুরু করল ন্যাটো। সার্ব পরিচয়বাদীদের হাতে পাইকারি হত্যাকাণ্ড ও বিতাড়নের শিকার কসোভার আলবানীয়রা প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোয় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে লাগলেন।
২০০১ ফেব্রুয়ারি/মার্চ জাতিগত আলবানীয়দের অভ্যুত্থান। ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি জাতিগত আলবানীয়দের জন্য সমঅধিকার দাবি করল।
মে প্রধানমন্ত্রী জুবকো জর্জিয়েভস্কির নেতৃত্বে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো একটি জাতীয় ঐক্য সরকার প্রতিষ্ঠা করল, যা সংখ্যালঘুদের বঞ্চনাবোধ আমলে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিল।*
* এই ঘটনাটিকে “সংখ্যালঘু তোষণ” হিসেবে দেখা সশস্ত্র সংখ্যাগুরু ‘প্রতিবাদীরা’ ম্যাকিদোনিয়ার রাজধানীতে স্কোপজেতে সংসদ ভবন ঘেরাও করে রাখল।
আগস্ট পশ্চিমা দেশগুলোর মদতে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে ‘ওহরিদ শান্তি চুক্তি’ সাক্ষরিত হল। ন্যাটোর শান্তিরক্ষীদের কাছে অস্ত্র জমা দেয়ার শর্তে ম্যাকিদোনিয়ায় সংখ্যালঘু জাতিগত আলবানীয়দের অধিকারের বৃহত্তর স্বীকৃতির নিশ্চয়তা দেয়া হল।
নভেম্বর ম্যাকিদোনিয়ার সংসদ একটি নতুন সংবিধানের অনুমোদন দিল, যাতে আলবানীয় ভাষাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া হল, এবং পুলিশসহ অন্যান্য সরকারি চাকরিতে আলবানীয়দের প্রবেশাধিকার বাড়ানো হল।
২০০৩ ন্যাটোর কাছ থেকে শান্তিরক্ষার দায়িত্বভার নিয়ে নিল ইওরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
২০০৪ ফেব্রুয়ারি বসনিয়ায় এক সম্মেলনে যোগদান করার পথে এক বিমান দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট বরিস ত্রাজকভস্কির মৃত্যু।
মার্চ ইওরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানের আবেদনপত্র জমা দিল ম্যাকিদোনিয়া।
এপ্রিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করলেন প্রধানমন্ত্রী ব্রাংকো ক্রভেনকোভস্কি।
২০০৮ এপ্রিল ম্যাকিদোনিয়ার নাম নিয়ে আপত্তির জের ধরে দেশটির ন্যাটোতে যোগ দেয়ার একটা নিমন্ত্রণ আটকে দিল গ্রিস।
অক্টোবর সার্বিয়ার আপত্তি সত্ত্বেও কসোভোকে স্বীকৃতি দিল ম্যাকিদোনিয়া।
২০০৯ ডিসেম্বর ম্যাকিদোনীয় নাগরিকদের ইওরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শেনজেন জোনে ভিসামুক্ত ভ্রমণের অধিকার দেয়া হল।
২০১১ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগয়ে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা আদালত (আইসিজে) রায় দিল, নাম নিয়ে আপত্তির জের ধরে ২০০৮ সালে ম্যাকিদোনিয়ার ন্যাটোয় যোগদানের পথে বাধা সৃষ্টি করা গ্রিসের ভুল ছিল।
২০১৫ মে ম্যাকিদোনিয়ার উত্তরাঞ্চলের কুমানোভো রাজ্যে সংঘাতে ৮ জন পুলিশ ও ১৪ জন বন্দুকধারী নিহত। দেশটির সরকার প্রতিবেশী রাষ্ট্র কসোভো থেকে আসা ‘সন্ত্রাসবাদী’-দের দায়ী করল।
২০১৬-১৭ মধ্যপ্রাচ্য থেকে উত্তর ইওরোপে ঢুকতে চাওয়া বিপুল সংখ্যক অধিবাসীকে ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে উত্তর ম্যাকিদোনিয়া।
২০১৭ মে জাতিগত আলবানীয়দের সাথে জোট গঠন করলেন সমাজ গণতন্ত্রী নেতা জোরান জায়েভ।
২০১৮ জুন ম্যাকিদোনিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম নিয়ে গ্রিস আর ম্যাকিদোনিয়ার মধ্যে ২৭ বছর ধরে যে বিবাদ চলে আসছিল, দেশ দুটি এক ঐতিহাসিক চুক্তি সই করার মধ্য দিয়ে তার অবসান ঘটাল।
২০১৯ ফেব্রুয়ারি ম্যাকিদোনিয়ার নাম বদলে উত্তর ম্যাকিদোনিয়া রাখার সিদ্ধান্ত গ্রিক ও ম্যাকিদোনীয় সংসদ কর্তৃক অণুসমর্থিত হল। ন্যাটোর সাথে অ্যাসেশন চুক্তি সই করল উত্তর ম্যাকিদোনিয়া।
২০২১ উত্তর ম্যাকিদোনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন জোরান জায়েভ।
২০২২ জানুয়ারি উত্তর ম্যাকিদোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন দিমিতার কোভাশেভস্কি।
তথ্যসূত্র
BBC. 2022. “North Macedonia profile – Timeline.” BBC, November 18.
https://www.bbc.com/news/world-europe-17553072
নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।
অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ
দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি