
নেপাল
Featured Image: Wikimedia Commons.

পূর্বসাল
১৭৫০ যাযাবর আর্যরা নেপালের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে অভিবাসিত হল।
৫৬৩-৪৮৩ নেপালের কপিলাবস্তুতে জন্ম নেয়া ও পরবর্তীতে বুদ্ধ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা রাজকুমার সিদ্ধার্থ গৌতমের জীবনকাল।*
* বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে সংক্ষেপে জানতে দেখুন, (Wangu 2009).
৫০০ তিব্বতি-বর্মণরা এ সময় নেপালে বাস করছেন।
সাল
৩০০-১২০০ নেপালে লিচ্ছবি রাজত্ব।
৪৬৫ রাজা মনদেবের ছাঙ্গু নারায়ণ শিলালিপি।
৬৪৭ চীনারা একটি ভারতীয় রাজ্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক অভিযান পরিচালনা করলে নেপালি সেনারা সহায়তা করল।
৮৭৯ নেপাল যুগের সূচনা।
১০৯৭ মিথিলার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলেন কর্ণাটকের নয়নদেব।
১১০০ নেপালের পশ্চিমাঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হল খাস সাম্রাজ্য।
১১০০-১৪৮৪ খাস মল্ল রাজারা নেপালের পশ্চিমাঞ্চল শাসন করছেন।
১২০০ কাঠমান্ডু উপত্যকা শাসন করছেন মল্ল রাজবংশের প্রথম রাজা আরি মল্ল।
১৩১২ খাস রাজা রিপু মল্ল কাঠমান্ডু উপত্যকায় হামলা চালালেন।
১৩৪৫-৪৬/১৩৪৯ বাংলার সুলতান শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহের কাঠমান্ডু অভিযান।
১৩৮২ কাঠমান্ডু উপত্যকার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলেন জয়স্থিতি মল্ল।
১৪৮২ সমগ্র কাঠমান্ডু উপত্যকা একচ্ছত্রভাবে শাসন করা শেষ রাজা যক্ষ মল্লের মৃত্যু।
১৪৮৪ মল্ল রাজ্যকে তিন ভাগে ভাগ করা হল; এগুলো হল: কান্তিপুর, পাটান, ও ভারগাঁও।
১৫৩৩ শেরপারা তিব্বতের খাম থেকে সোলুখুম্বুতে অভিবাসিত হলেন।
১৫৫৯ দ্রাব্য শাহ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল গোর্খা রাজ্য।
১৬০৬-৩৩ রাম শাহের রাজত্বকাল।
১৬২৮ প্রথম ইওরোপীয় হিসেবে নেপাল সফর করলেন জেসুইট জন কাবরাল।
১৭৪২ গোর্খা রাজ্যের মসনদে বসলেন পৃথ্বী নারায়ণ শাহ।
১৭৬৮ কাঠমান্ডু, পাটান, ও ভারগাঁও জয় করে যুক্ত নেপাল রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করলেন গোর্খা শাসক পৃথ্বী নারায়ণ শাহ।
১৭৬৯ আধুনিক নেপালে রাজধানীতে পরিণত হল কাঠমান্ডু।
১৭৭৫ যুক্ত নেপালের প্রথম রাজা পৃথ্বী নারায়ণ শাহের মৃত্যু।
১৭৯২ তিব্বতে চীনাদের হাতে মার খেয়ে থেমে গেল নেপালি রাজ্যের সম্প্রসারণ।
১৮০৯ পশ্চিমে কংগ্রা আর পুবে তিস্তা পর্যন্ত প্রসারিত হল নেপালের গোর্খা রাজত্বের সীমা।
১৮১৪-১৬ ইঙ্গ-নেপাল যুদ্ধ, এই যুদ্ধ যে সুগাউলি চুক্তির মধ্য দিয়ে শেষ হয় তাই বর্তমান নেপালের সীমানা চিহ্নিত করেছে।
১৮৪৬ কোট হত্যাযজ্ঞকে ব্যবহার করে জং বাহাদুর রানা প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হলেন। পরবর্তী ১০৩ বছরের জন্য দেশটিতে বংশানুক্রমিক রানা রাজত্ব কায়েম করলেন। সারা দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল নেপাল।
১৯১৪-১৮ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।*
* এই যুদ্ধে সৈনিক হিসেবে গ্রেট ব্রিটেনের পক্ষ নিয়ে লড়েন হাজার হাজার নেপালি নাগরিক।
১৯২৩ গ্রেট ব্রিটেন এক মৈত্রী চুক্তির অধীনে* নেপালকে একটি স্বাধীন রাজ্য বলে স্বীকৃতি দিল।
* এই চুক্তির কারণে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সাথে নেপালের একটা বিশেষ সম্পর্ক রয়ে যায়।
১৯৩৯-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
১৯৪৭ নেপালের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করল যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৪৮ নেপালের প্রথম সংবিধান নেপাল সরকার আইন কার্যকর করা হল।
১৯৫০ গঠিত হল নেপালি কংগ্রেস (এনসি) দল। ভারতভিত্তিক রানা-বিরোধী শক্তিগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা এই দল অন্য রানা-বিরোধী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করল। গৃহযুদ্ধের সূচনা।
১৯৫১ রানাদের রাজত্বের অবসান। নেপালি কংগ্রেস দল সরকার গঠন করল। প্রধানমন্ত্রী হলেন মোহন শমসের।
১৯৫২ চাপের মুখে ক্ষমতা ছাড়লেন মোহন শমসের। রাজা ত্রিভুবনকে পুনরায় মসনদে বসানো হল, আমলাতন্ত্র আর সেনাবাহিনীর ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেলেন তিনি। দেশটির জন্য একটি অন্তর্বর্তী সংবিধান প্রণীত হল।
১৯৫৩ প্রথমবারের মত এভারেস্ট পর্বতের চূড়ায় আরোহণ করলেন নিউ জিল্যান্ডার এডমুণ্ড হিলারি ও নেপালি শেরপা তেনজিং নরগে।
১৯৫৫ রাজা ত্রিভুবনের মৃত্যু। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন মহেন্দ্র। জাতিসংঘে যোগ দিল নেপাল।
১৯৫৬ প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা।
১৯৫৯ নেপাল একটি বহুদলীয় ব্যবস্থার সংবিধান প্রণয়ন করল।
১৯৬০ নির্বাচনে নেপালি কংগ্রেস দল বিজয় লাভ করল। রাজা মহেন্দ্র সংসদ, সংবিধান, ও দলীয় রাজনীতি স্থগিত করলেন। পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু করা হল।
১৯৬২ নেপালের নতুন সংবিধান পঞ্চায়েত ব্যবস্থকে বৈধতা দিল, যেখানে প্রকৃতপক্ষে রাজাই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
১৯৬৩ নেপালের প্রথম রাষ্ট্রীয় পঞ্চায়েতের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল।
১৯৭২ রাজা মহেন্দ্রর মৃত্যু, তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন বীরেন্দ্র।
১৯৮০ নেপালে রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে তীব্র আন্দোলন। আপোস করলেন রাজা। সরাসরি ভোটে সংসদীয় নির্বাচনে রাজি হলেন বীরেন্দ্র; তবে শর্ত থাকল, এই নির্বাচন পার্টি পরিচয় ছাড়া করতে হবে।
১৯৮৫ বহুদলীয় ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে নাগরিক অবাধ্যতা আন্দোলন শুরু করল নেপালি কংগ্রেস দল।
১৯৮৯ বাণিজ্য ও ট্রানজিট নিয়ে ভারতের সাথে নেপালের দ্বন্দ্ব দেখা দিল।
১৯৯০ নেপালে গণতন্ত্রের দাবিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠল। বিপুল সংখ্যক মানুষ গ্রেপ্তার ও খুন হলেন। আখেরে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার অবসান ঘটল, বহু দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন আয়োজনে সম্মত হলেন রাজা।
১৯৯১ নেপালের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জিতল নেপালি কংগ্রেস দল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী হলেন গিরিজা প্রসাদ কৈরালা।
১৯৯৪ অনাস্থা ভোটে হেরে গেল কৈরালা সরকার। নতুন নির্বাচনে একটি কমিউনিস্ট সরকার গঠিত হল।
১৯৯৫ নেপালের কমিউনিস্ট সরকারকে বিলুপ্ত করে দেয়া হল। মাওবাদী বিদ্রোহের সূচনা। বিদ্রোহীরা দাবি তুললেন, রাজতন্ত্রের বিলোপসাধন করতে হবে।
১৯৯৬ নেপাল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মাওবাদীদের গেরিলা যুদ্ধের সূচনা।
১৯৯৬-২০০৬ নেপালের গৃহযুদ্ধ, রাজতন্ত্র উৎখাত করে লোকতন্ত্র কায়েম করার জন্য মাওবাদীরা গেরিলা যুদ্ধে নামলেন, এই যুদ্ধে প্রায় ১৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
১৯৯৭ অনাস্থা ভোটে হেরে গেলেন নেপালি প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেওবা। দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সূচনা। প্রধানমন্ত্রী পদে ঘন ঘন পরিবর্তন আসতে লাগল।
২০০০ নেপালে পুনর্বার প্রধানমন্ত্রী হলেন গিরিজা প্রসাদ কৈরালা।
২০০১ নেপালের রাজপ্রাসাদে হত্যাযজ্ঞ। যুবরাজ দীপেন্দ্র রাজা বীরেন্দ্র ও রানী ঐশ্বরিয়াসহ রাজপরিবারের একাধিক সদস্যকে হত্যা করে আত্মহত্যা করলেন। দেশটির নতুন রাজা হলেন রাজার ভাই জ্ঞানেন্দ্র। মাওবাদী বিদ্রোহের তীব্রতা বৃদ্ধি পেল। ৯৬ ঘন্টায় ১০০ জন খুন। জরুরি অবস্থা জারি। রাজা জ্ঞানেন্দ্র নেপালি সেনাবাহিনীকে মাওবাদী বিদ্রোহ দমনের নির্দেশ দিলেন।
২০০৩ মাওবাদীদের সাথে নেপাল সরকারের কয়েক মাসের যুদ্ধবিরতি।
২০০৪ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) যোগ দিল নেপাল।
২০০৫ সরকার বিলুপ্ত করে দিলেন রাজা জ্ঞানেন্দ্র। হয়ে উঠলেন নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী। রাজার কাছ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রধান বিরোধী দলগুলোর সাথে একই প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে রাজি হলেন মাওবাদীরা।
২০০৬ দ্বিতীয় জন আন্দোলন। অংশ নিয়েছিল ৭টি মূলধারার দল ও মাওবাদীগণ। সংসদ ও গণতান্ত্রিক সরকার পুনর্বহাল করা হল। সরকার ও মাওবাদীদের মধ্যে শান্তিচুক্তি সই হল। এর মধ্য দিয়ে দশকব্যাপী গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটল। রাজার কাছ থেকে রাজনৈতিক ক্ষমতা ও রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে পাওয়া মর্যাদা কেড়ে নিল সরকার। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের লক্ষ্য অর্জিত হল।
২০০৭ নেপালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যোগ দিলেন মাওবাদীরা। দেশটির রাজনীতির মূলধারায় প্রবেশ করলেন। নেপালের সংসদ রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে দিল।
২০০৮ মে ২৮ প্রায় আড়াইশো বছরের রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করা হল। নেপালকে একটি ফেডারেল প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হল। জোট সরকার গঠন করলেন মাওবাদী নেতা পুষ্প কমল দহল প্রচণ্ড।
২০১০-১৪ নেপালের সংবিধান নিয়ে তুমুল রাজনৈতিক বিবাদের সময়কাল।
২০১৪ নেপালের অরুণ নদীর ওপর একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকল্পে ভারত ও নেপাল ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের চুক্তি সই করল।
২০১৫ নেপালে একটি যুগান্তকারী সংবিধান প্রণয়ন করা হল। এটি নেপালকে একটি সেক্যুলার প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করল।* রাষ্ট্রের সেক্যুরালাইজেশনের বিরোধীরা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামলে তাতে ৪০ জনের মৃত্যু হয়; যার ফলে ভোটদান পিছিয়ে দেয়ার আহবান ওঠে, যদিও রাষ্ট্রের তরফে তা উপেক্ষা করা হয়।
* এর আগ পর্যন্ত নেপাল দুনিয়ার একমাত্র হিন্দুরাষ্ট্র ছিল।
২০১৬ জুলাই মাওবাদী দল সরকারি জোট ছেড়ে বেরিয়ে এল। সংসদে একটি অনাস্থা ভোট আয়োজিত হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী কে. পি. ওলি।
আগস্ট সংসদ কর্তৃক দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন সাবেক কমিউনিস্ট বিদ্রোহী ও মাওবাদী দলনেতা পুষ্প কমল দহল প্রচণ্ড।
২০১৭ চীনের সাথে নেপালের প্রথম যৌথ সামরিক অনুশীলন।
২০২৫ মার্চ ২৮ কাঠমুন্ডুতে পুলিশ ও রাজতন্ত্র পুনর্বহালের পক্ষপাতী আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় ১ সাংবাদিক সহ ২ জন নিহত হলেন।
তথ্যসূত্র
BBC. 2018. “Nepal profile – Timeline.” BBC, February 19.
https://www.bbc.com/news/world-south-asia-12499391
— 2024. “Nepal country profile.” BBC, July 15.
https://www.bbc.com/news/world-south-asia-12511455
Bhattarai, Krishna P.. 2008. Nepal. Chelsea House.
Wangu, Madhu Bazaz. 2009. Buddhism. 4th ed. Chelsea House.
Wikimedia Foundation. 2025. “2025 in Nepal.” Last modified March 28, at 15:23 (UTC).
https://en.wikipedia.org/wiki/2024_in_Turkey
Whelpton, John. 2005. A History of Nepal. Cambridge University Press.
নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।
অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ
দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি