
মলদোভা
Featured Image: Wikipedia Commons.

সাল
৫৬ রুমিরা ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের মোয়েসিয়ার নিম্নভূমি প্রদেশ দখল করে নিল। তাঁদের তাড়াল বর্বর গোষ্ঠীগুলো। তাঁদের তাড়াল স্লাভ গোষ্ঠীগুলো। তাঁদের তাড়াল তুর্কিচভাষী যাযাবর গোষ্ঠীগুলো। এভাবে একটা ঐতিহ্য তৈরি হল। বিতাড়ন পাল্টা বিতাড়নের। পরের ২ হাজার বছর ঐতিহ্যটা জীবিত থাকবে।
১২৪১ মঙ্গোলরা ট্রান্সনিস্ট্রিয়া দখল করে নিল।
১৩০১-১৫০০ কার্পেথীয় পর্বতমালা আর নিস্তার নদীর মধ্যবর্তী জায়গাটিতে এ সময় মলদোভা প্রিন্সিপালিটি অবস্থিত ছিল।
১৫০০ লিথুয়ানিয়ার গ্র্যান্ড ডাচি ছিনিয়ে নিল ট্রান্সনিস্ট্রিয়া।
১৫০১-১৮৫০ মলদোভা ভূখণ্ড নিয়ে ওসমানি সুলতানশাহি ও রুশ জারশাহির দ্বন্দ্ব দেখা দিল, যার ফলে একাধিক যুদ্ধবিগ্রহ সংঘটিত হল।
১৫৬৯ ট্রান্সনিস্ট্রিয়া দখল করে নিল পোলিশ-লিথুয়ানীয় সাধারণতন্ত্র।
১৭৯২ ট্রান্সনিস্ট্রিয়াকে সাম্রাজ্যিক রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হল।
১৮০০-৯৯ ট্রান্সনিস্ট্রিয়াকে ‘বেসারাবিয়ার’ অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হল।
১৮১২ বুখারেস্ট চুক্তি, বেসাবেরিয়া বা মলদোভার পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণলাভ করল রাশিয়া, আর পশ্চিমাঞ্চলে কায়েম হল ওসমানিদের নিয়ন্ত্রণ।
১৮৭৮ পশ্চিম মলদোভাকে অন্তর্ভুক্ত করে রোমানিয়া রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিল ওসমানি সুলতানশাহি।
১৯১৪-১৮ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।
১৯১৮ আগের বছর রাশিয়ায় সংঘটিত হওয়া বিপ্লবের প্রভাবে বেসাবেরিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করল, আর এর সংসদ রোমানিয়ার সাথে ইউনিয়ন গঠন করার প্রস্তাব দিল।
১৯২০ প্যারিস চুক্তি, বেসাবেরিয়া আর রোমানিয়ার ইউনিয়নকে স্বীকৃতি দেয়া হল।
১৯২৪ নিস্তার নদীর পুবদিকে ইউক্রেনের ভেতরে মলদোভা স্বায়ত্তশাসিত সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র গঠন করা হল।
১৯৩৯-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
১৯৪০ বেসারাবিয়া আর উত্তর বুকোভিনায় সোভিয়েত দখলদারিত্ব মলদোভান সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (মলদোভান এসএসআর) গঠনের পথ করে দিল।
১৯৪১ নাৎসি জার্মানি ও রোমানিয়া ট্রান্সনিস্ট্রিয়া দখল করে নিল। দেশটির ইহুদি ও কমিউনিস্টদের মৃত্যু শিবিরে পাঠানো হল।
১৯৪৪ লাল ফৌজ ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেল। মলদোভাবাসী ও ফ্যাসিস্টদের গুলাগে পাঠানো হল।
১৯৪১-৪৫ নাৎসি জার্মানির সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণের প্রেক্ষিতে তার মিত্র রোমানিয়া মলদোভার ওপর নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করল।
১৯৪৫ মলদোভার ওপর সোভিয়েত ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হল।
১৯৮০-৮৯ রাশিয়ায় মিখাইল গর্বাচেভের নেয়া সংস্কার কর্মসূচির সূত্র ধরে মলদোভায় জাতীয়তাবাদীদের উত্থান ঘটল।
১৯৮৯ মলদোভা মলদোভানকে দেশটির একমাত্র দরবারি ভাষা ঘোষণা করল।
১৯৯০ সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করল মলদোভা।
মলদোভার কাছ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করল ট্রান্সনিস্ট্রিয়া।*
* জাতিসংঘের সদস্য-রাষ্ট্র নয়। রাশিয়াসহ জাতিসংঘের কোন সদস্য-রাষ্ট্র ট্রান্সনিস্ট্রিয়াকে স্বীকৃতিপ্রদান করেনি। মলদোভা ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে থাকে।
১৯৯১ স্বাধীনতা ঘোষণা করল মলদোভা। ট্রান্স-নিস্তার অঞ্চলে সংঘাত দেখা দিলে তাতে শত শত মানুষের মৃত্যুর প্রেক্ষিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হল। একটা যুদ্ধবিরোধী চুক্তি সই করার পর অত্র অঞ্চলে রুশ শান্তিরক্ষী মোতায়েন করা হল।
১৯৯২ ট্রান্সনিস্ট্রিয়ায় শান্তিরক্ষী পাঠাল মস্কো। ট্রান্সনিস্ট্রিয়া যুদ্ধের অবসান। প্রেসিডেন্ট হলেন ইগোর স্মিরনভ।
১৯৯৩ কেজিবির সাবেক সদস্য ভিক্টর গুশান ও ইলিয়া কাজমালি শেরিফ নামে একটি কোম্পানি গঠন করলেন, যা কালক্রমে ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার ব্যবসাবাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করবে।
১৯৯৪ সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তরসূরী স্বাধীন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রমণ্ডলে (সিআইএস) যোগ দিল মলদোভা।
১৯৯৬ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন পেত্রু লুচিনশি।
২০০১ মলদোভায় নির্বাচনে জিতলেন কমিউনিস্ট নেতা ভ্লাদিমির ভরোনিন।
২০০৫ খোদ ট্রান্সনিস্ট্রিয়া দেশটির চেয়েও ধনী হয়ে ওঠা শেরিফের মদতে রিনিউয়াল নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠিত হল।
২০০৬ সেপ্টেম্বর ট্রান্স-নিস্তার অঞ্চলে আয়োজিত গণভোটে অধিকাংশ ভোট মলদোভার কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে দীর্ঘমেয়াদে রাশিয়ার সাথে যুক্ত হয়ে যাওয়ার পক্ষে পড়ল।
২০০৯ জুলাই নতুন সংসদীয় নির্বাচনে কমিউনিস্টরা তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল। চারটি পশ্চিমপন্থী দল জোট সরকার গঠন করল। প্রধানমন্ত্রী হলেন উদার গণতন্ত্রীদের নেতা ভ্লাদ ফিলাত।
২০১১ নির্বাচনে হারলেন স্মিরনভ, নয়া প্রেসিডেন্ট ইয়েভগেনি শেভচুক।
২০১২ মার্চ মলদোভার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন নিকোলা তিমোফতি।
ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার সোনার মজুতের ৯০ শতাংশ হাপিস হয়ে গেল। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইয়েভগেনি শেভচুক রাষ্ট্রীয় কোষাগারে মাত্র ৪৯ হাজার ডলার খুঁজে পেলেন। শেরিফ জানাল, ট্রান্সনিস্ট্রিয়া চাইলে ধার নিতে পারে।
২০১৪ ইওরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সাথে অ্যাসোসিয়েশন চুক্তি সই করল মলদোভা। রাশিয়া এর প্রতিক্রিয়ায় দেশটির কৃষিজ পণ্যের ওপর আমদানি নিষেধাজ্ঞা প্রদান করল। ক্রিমিয়ার ঘটনায় উজ্জীবিত হয়ে ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার সর্বোচ্চ আদালত মস্কোর কাছে এমন একটি আইন প্রণয়ন করার আবেদন জানাল, যার বলে ট্রান্সনিস্ট্রিয়া রাশিয়ায় যোগ দিতে পারবে।
২০১৬ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতলেন রুশপন্থী প্রার্থী ইগোর দোদোন।
২০২০ মার্চ কোভিড-১৯ ভাইরাস সৃষ্ট মহামারী পরিস্থিতি সামাল দিতে মলদোভায় সাময়িকভাবে জরুরি অবস্থা জারি করা হল।
নভেম্বর মলদোভার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন মাইয়া সান্ডু। ইওরোপপন্থী এই প্রার্থী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন রুশপন্থী প্রার্থী ইগোর দোদোনকে পরাস্ত করেন।
রেবেকা হেইনেস, মলদোভা: আ হিস্ট্রি।
তথ্যসূত্র
BBC. 2022. “Moldova profile – Timeline.” BBC, November 25.
https://www.bbc.com/news/world-europe-17601579
MacLean, Rory, and, Danziger, Nick. Back in the USSR: Heroic Adventures in Transnistria. London: Unbound, 2014.
নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।
অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ
দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি