বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা

Spread the love

Featured Image: Wikimedia Commons.

বিশ্ব মানচিত্র ব্লগ

পূর্বসাল

১০০০-১ বর্তমান বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় বাস করছে ইলিরীয়রা।

২০০-১ ইলিরিয়া রাজ্যের ওপর রুমিদের নিয়ন্ত্রণ স্থাপিত হল।

সাল

বর্তমান বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় বসবাসরত ইলিরীয়রা রোমক সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে একটি ব্যর্থ বিদ্রোহ সংঘটিত করে।

ইলিরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে রোমক সাম্রাজ্যের প্রদেশে পরিণত হয়, রুমিরা এই প্রদেশটিকে ডাকত ইলিরিকাম নামে।

৩৯৫ রোমক সাম্রাজ্য দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেল। দুই সাম্রাজ্যের সীমানা টানা হয়েছিল বর্তমান বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার দ্রিনা নদীর তীর ঘেঁষে।

৫০১-৬০০ সার্ব আর ক্রোয়াট নামের দুটি স্লাভিক গোষ্ঠী বর্তমান বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় বসতিস্থাপন করেন।

৬০১-৭০০ স্লাভরা মূলত এসময়ই খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হন। তবে খ্রিস্টানদের মধ্যে অর্থোডক্স ক্যাথলিক বৈচিত্র্য আছে। সার্বরা অর্থোডক্স চার্চের অনুসারী, ক্রোয়াটরা ক্যাথলিক চার্চের।

১১৩৭ বর্তমান বসনিয়ার পুরোটাই দখল করে নিল হাঙ্গেরি।

১১৬৭ বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য* হাঙ্গেরির কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল বসনিয়া।
* রোমক সাম্রাজ্যের ভাঙন পরবর্তী পূর্ব রোমক সাম্রাজ্য বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য ((Βασιλεία Ρωμαίων) নামে পরিচিত। এখানে বাইজেন্টাইন বলতে সাম্রাজ্যটির শাসকদেরকে বোঝাবে। বাইজেন্টাইনের কেন্দ্র ছিল কনস্টান্টিনোপল, বর্তমান তুরস্কের ইস্তানবুল।

১১৮০ হাঙ্গেরি বাইজেন্টাইনদের কাছ থেকে বসনিয়া পুনর্দখল করল।

১১৮০-১২০৪ বর্তমান বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় রাজা কুলিনের রাজত্ব। কুলিনের শাসনামলে বসনিয়া স্বাধীন রাজ্যে পরিণত হয়। তাঁর শাসনামলকে বসনিয়ার স্বর্ণযুগ ভাবা হয়ে থাকে।*
* কুলিনের ধর্ম বিষয়ক চিন্তা বেশ কৌতূহলউদ্দীপক ছিল। তিনি ঘোষণা করেন, বসনিয়ার খ্রিস্টানদের উচিত ক্যাথলিক আর অর্থোডক্স উভয় ধারাকে প্রত্যাখ্যান করে বগোমিলি নামের একটি ভিন্ন খ্রিস্টধর্মীয় ধারা অনুসরণ করা। ঐতিহাসিকদের মত হল, বর্তমান বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার পুবদিকের অর্থোডক্স (যেখানে বর্তমান সার্বিয়া অবস্থিত) আর পশ্চিমদিকের ক্যাথলিক প্রভাবের (যেখানে বর্তমানে ক্রোয়েশিয়া অবস্থিত) বিরুদ্ধে দেশটির স্বাধীনতা রক্ষার বাসনাই এই ধর্ম বিষয়ক প্রথাবিরোধী চিন্তার আসল কারণ।

১২৩৫-৮১ বসনিয়ার বগোমিলদের বিরুদ্ধে ক্রুসেডের ডাক দিলেন পোপ তৃতীয় ইনোসেন্ট।

১৩১২ বসনিয়ার রাজা হলেন বান স্তেফান কত্রোমানিচ।

১৩৭৭ বসনিয়া ও সার্বিয়ার রাজা হলেন প্রথম বান স্তেফান ভ্রতকো।

১৪৬৫-৮১ বর্তমানে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা নামে পরিচিত অঞ্চলটি এ বছর দখল করে নেন ওসমানিরা। শুরু হয় ওসমানি সুলতানদের ৪০০ বছরের শাসন। যে বসনীয় মুসলমানরা বসনিয়াক নামে পরিচিত, এরা মূলত এই সময়ই ইসলাম গ্রহণ করেন।*
* সার্ব পরিচয়বাদীরা এটাকে একটা বেঈমানি হিসেবে দেখেন। তাঁরা মনে করেন, ইসলাম ওসমানি তুর্কিদের বয়ে আনা “বিজাতীয়” ধর্ম, যাঁরা “বহিরাগতদের” ধর্ম গ্রহণ করেছেন তাঁরাও “বহিরাগত”। বিংশ শতাব্দীর শেষদিকে, যখন বসনিয়াকদের ওপর গণহত্যা সংঘটিত করা হয়, তখন এই যুক্তিই ছিল তার মূল চালিকাশক্তি।

কিন্তু এই পরিচয়বাদী যুক্তি ঐতিহাসিকভাবে সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন। সার্বরা নিজেরাই খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের আগে পৌত্তলিক ছিলেন। ধর্ম পাল্টালেই কারো জাতিগত পরিচয় বদলায় না।

দুর্ভাগ্যবশত, শুধু বলকানেই নয়, দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশসহ দুনিয়ার বহু অঞ্চলে পরিচয়বাদ নিরর্থক সংঘাত ও রক্তপাতের কারণ হয়েছে।

১৪৯২ এ বছর ক্যাথলিক সাম্রাজ্যের হাতে আন্দালুসীয় স্পেনের পতন ঘটলে দেশটি থেকে বিতাড়িত বহু ইহুদি ওসমানি বসনিয়ায় আশ্রয় নেন।

১৫০১-১৬০০ রবোসোনা শহরের নাম পাল্টে সারায়েভো রাখা হল।

১৮৭৫ হার্জেগোভিনায় খ্রিস্টান চাষীদের বিদ্রোহ দেখা দিল।

১৮৭৮ বার্লিন কংগ্রেস পূর্ব ইওরোপকে বিভাজিত করল। এই কংগ্রেসে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাকে অস্ট্রো-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের হাতে তুলে দেয়া হল।

১৯০৮ অস্ট্রো-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্য। হাপসবুর্গ সাম্রাজ্য নামেও পরিচিত। আনুষ্ঠানিকভাবে বর্তমান বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা দখল করে নিল।

১৯১৪ জুন ২৮ সারায়েভোতে এক বসনীয় সার্ব ছাত্র গাভরিলো প্রিন্সিপের গুলিতে সস্ত্রীক নিহত হলেন অস্ট্রিয়ার আর্কডিউক, শুরু হল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।

১৯১৪-১৮ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ

১৯১৮ অস্ট্রো-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের পতন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে বলকানে সার্ব, ক্রোয়াট, ও স্লোভেনদের রাজ্য ঘোষিত হল। বর্তমান বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা রাজ্যটির অন্তর্ভুক্ত হল।

১৯২১ সার্ব, ক্রোয়াট, ও স্লোভেনদের রাজ্যের প্রথম সংবিধান প্রণীত হল। ভিদোভান সংবিধান বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার সীমান্ত নির্ধারণ করল।

১৯২৯ সার্ব, ক্রোয়াট, ও স্লোভেনদের রাজ্যের নাম বদলেযুগোস্লাভিয়া রাখা হল।* রাজকীয় একনায়কত্ব কায়েম। এর ফলে দেশটির সরকারব্যবস্থা আরো কেন্দ্রীভূত হল।
*যুগোস্লাভিয়া শব্দের মানে হল দক্ষিণ স্লাভদের ভূমি।

১৯৩৯-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

১৯৪১ নাৎসি জার্মানির পুতুল ক্রোয়াট ফ্যাসিস্টদের সরকার দখল করে নিল বর্তমান বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা। হাজার হাজার সার্ব, ইহুদি, আর জিপসিকে মৃত্যু শিবিরে পাঠানো হল।

১৯৪৫ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাকে মুক্ত করল টিটোর পার্টিজানরা। জোসিপ ব্রজ টিটোর নেতৃত্বে যুগোস্লাভিয়া সমাজতান্ত্রিক ফেডারেল প্রজাতন্ত্র কায়েম করা হল যেখানে, কাগজেকলমে, সব জাতির সমঅধিকার ছিল।* পরবর্তী প্রায় পাঁচ দশক ধরে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এই ফেডারেল প্রজাতন্ত্রের অংশ ছিল।
* ছয়টি প্রজাতন্ত্রের সমষ্টি ছিল এই ফেডারেল প্রজাতন্ত্র। সার্বিয়া (রাজধানী বেলগ্রেড), মন্টেনিগ্রো (রাজধানী টিটোগ্রাদ), স্লোভেনিয়া (রাজধানী জুবজানা), ক্রোয়েশিয়া (রাজধানী জাগরেব), বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা (রাজধানী সারায়েভো), এবং ম্যাকিদোনিয়া (রাজধানী স্কোপজে)। এদের মধ্যে সার্বিয়ায় দুটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ ছিল: কসোভো (রাজধানী প্রিস্টিনা) ও ভোজভোদিনা (রাজধানী নোভি সাদ)।

১৯৪৫-৯১ যুগোস্লাভিয়া সমাজতান্ত্রিক ফেডারেল প্রজাতন্ত্র

১৯৫৬ রেবেকা ওয়েস্ট, ব্ল্যাক ল্যাম্ব অ্যান্ড গ্রে ফ্যালকন: আ জার্নি থ্রু যুগোস্লাভিয়া

১৯৬৮ যুগোস্লাভিয়া সমাজতান্ত্রিক ফেডারেল প্রজাতন্ত্রের ষষ্ঠ প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি পেল বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা।

যুগোস্লাভিয়া মুসলমানদের “জাতিগত সংখ্যালঘু” হিসেবে চিহ্নিত করল। কমিউনিস্টদের এই অদ্ভুত বর্গীকরণের কারণে এমন একটা ধারণা তৈরি হল, যেন সার্বরা সার্ব আর ক্রোয়াটরা ক্রোয়াট, কিন্তু জাতিগত ফারাক নির্বিশেষে যুগোস্লাভিয়ায় বাস করা সব মুসলমান শুধুই মুসলমান। দুই দশক পর বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা (১৯৯২-৯৫) এবং কসোভোয় (১৯৯৮-৯৯) যে যুদ্ধ দেখা দেয়, তার একটা শেকড় এই বিভ্রান্তিকর রাষ্ট্রীয় নীতিতে প্রোথিত ছিল।

১৯৭৭ ইভো আন্দ্রিচ, দ্য ব্রিজ অন দ্য দ্রিনা

১৯৮৪ এ বছরের শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজন করে সারায়েভো।

১৯৯০-৯২ যুগোস্লাভিয়ায় দ্য লীগ অফ দ্য কমিউনিস্টসের বিলুপ্তি। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন আলিয়া আলী ইজেতবেগোভিচ। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা নিজেকে স্বাধীন ঘোষণা করল।*
* যুক্তরাষ্ট্র ও ইওরোপীয় কমিউনিটি এই স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়।

বসনীয়দের বিরুদ্ধে সার্বদের জাতিগত শুদ্ধি অভিযান শুরু

১৯৯২-৯৫ সিয়েজ অফ সারায়েভো, একজন মুসলমান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় বসনীয় সার্বদের মধ্যে যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, তার প্রকাশ ঘটেছিল এ বছরের ১২ এপ্রিল, একটি শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি চালিয়ে সার্ব বন্দুকবাজরা যখন ৫ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছিল। ১৯৯২ সালের এই দিনটি থেকে ১৯৯৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবরুদ্ধ থাকে সারায়েভো। সার্ব সেনাবাহিনী আর মিলোসেভিচের নিজস্ব স্নাইপারদের যুগপৎ আক্রমণে শহরটি রীতিমতো ধূলিস্যাৎ হয়ে যায়, হাজার হাজার মানুষ ক্ষুধার যন্ত্রণায় মারা যান, বহু হতাহত হওয়ার ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

১৯৯৩ মস্তার নিয়ে বসনিয়াক আর ক্রোয়াটদের মধ্যে যুদ্ধ। ক্রোয়াটরা বোমা মেরে মস্তার সেতু উড়িয়ে দিল। এই ঐতিহাসিক সেতুটি ওসমানি আমলে নির্মিত হয়েছিল। সাবেক যুগোস্লাভিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটিওয়াই) গঠন করল জাতিসংঘ।

রয় গুটম্যান, আ উইটনেস টু জেনোসাইড
স্লাভেনকা দ্রাকুলিচ, দ্য বলকান এক্সপ্রেস: ফ্র্যাগমেন্টস ফ্রম দ্য আদার সাইড অফ ওয়ার
রবার্ট ডি. কাপলান, বলকান ঘোস্টস: আ জার্নি থ্রু হিস্ট্রি
জলাতকো দিদারেভিচ, সারায়েভো: আ ওয়ার জার্নাল
রাবিয়া আলী ও লরেন্স লিফশুলৎজ (সম্পা.), হোয়াই বসনিয়া? রাইটিংস অন দ্য বলকান ওয়ার

১৯৯৪ গোরাজদের নিকটবর্তী একটি জায়গায় বসনীয় সার্ব বাহিনীর বিরুদ্ধে ন্যাটো তার ইতিহাসের প্রথম সামরিক আক্রমণাভিযান পরিচালনা করল।

ফেব্রুয়ারি সারায়েভোর বাজারে ৬৮ জন বেসামরিক নাগরিক বসনীয় সার্বদের হাতে হত্যাযজ্ঞের শিকার হন।

মার্চ জাতিসংঘের সহায়তায় গঠিত হয় বসনীয়-ক্রোয়াট ফেডারেশন।

নোয়েল ম্যালকম, বসনিয়া: আ শর্ট হিস্ট্রি
বোগদান দেনিচ, এথনিক ন্যাশনালিজম: দ্য ট্রাজিক ডেথ অফ যুগোস্লাভিয়া
মিশা গ্লেনি, দ্য ফল অফ যুগোস্লাভিয়া: দ্য থার্ড বলকান ওয়ার
আনা কাতালদি, লেটার্স ফ্রম সারায়েভো: ভয়েসেস অফ আ বিসেইজড সিটি
জলাতা ফিলিপোভিচ, জলাতাজ ডায়েরি: আ চাইল্ড’স লাইফ ইন সারায়েভো

১৯৯৫ ফেব্রুয়ারি ২৩ জাতিসংঘের ট্রাইব্যুনাল ২১ জন বসনীয় সার্বকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করল।

নভেম্বর ২১ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে ডেটন চুক্তির মধ্য দিয়ে বসনিয়া যুদ্ধের অবসান।*
* এই যুদ্ধে ১ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়, ৫০ হাজার মুসলমান নারী ও কন্যাশিশু পদ্ধতিগত ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকার হন। বসনিয়া যুদ্ধের সবচে আলোচিত ঘটনা স্রেবেনিচা হত্যাযজ্ঞ। সেনাপতি রাতকো ম্লাদিচের নেতৃত্বাধীন বসনীয় সার্ব বাহিনীগুলো জাতিসংঘ-কর্তৃক ‘সেফ হ্যাভেন’ ঘোষিত স্রেব্রেনিচায় ঢুকে শান্তিরক্ষীদের চোখের সামনে ৭ হাজারেরও বেশি বসনিয়াক (বসনীয় মুসলমান) পুরুষ ও কিশোরকে হত্যা করে।

ডিসেম্বর ডেটন চুক্তি অনুসারে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাকে দুটি পৃথক অঞ্চলে ভাগ করা হল। একটি বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ফেডারেশন (FBiH), যা মুসলমান ও ক্রোয়াটদের যৌথ নিয়ন্ত্রণে থাকল। অন্যটি স্প্রসকা প্রজাতন্ত্র (RS), যা বসনীয় সার্বদের নিয়ন্ত্রণাধীন। এই চুক্তি বাস্তবায়নের দায়িত্ব অর্পণ করে একটি সর্বোচ্চ প্রতিনিধির কার্যালয় সৃষ্টি করা হল। একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করা হল।
ডিসেম্বর ১৪ প্যারিসে যুদ্ধরত সব পক্ষের মধ্যে শান্তিচুক্তি সই।

টম জেলতান, সারায়েভো ডেইলি: আ সিটি অ্যান্ড ইটস নিউজপেপার আন্ডার সিয়েজ
নরম্যান সিগার, জেনোসাইড ইন বসনিয়া: দ্য পলিসি অফ ‘এথনিক ক্লিনজিং’

১৯৯৬ নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে সাবেক যুগোস্লাভিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটিওয়াই) কাজ করতে শুরু করল। স্রেবেনিচা গণহত্যায় ভূমিকা রাখার দায়ে সার্ব দ্রাজেন এর্দেমোভিচকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হল। দ্বিতীয় মেয়াদে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার প্রেসিডেন্ট হলেন আলিয়া আলী ইজেতবেগোভিচ।

১৯৯৭ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় নিরাপত্তা রক্ষা করতে ন্যাটো গঠন করল স্টেবিলাইজেশন ফোর্স (এসফোর)।

আদেমির কেনোভিচ, দ্য পারফেক্ট সার্কেল
মাইকেল উইন্টারবটম, ওয়েলকাম টু সারায়েভো

১৯৯৮ প্রেদরাগ আন্তোনিজেভিচ, সেভিয়ার
ডেভিড এটউড, শট থ্রু দ্য হার্ট

১৯৯৯ লেসলি উডহেড, স্রেব্রেনিচা: আ ক্রাই ফ্রম দ্য গ্রেভ

২০০০ নির্বাচনে মুসলমান-ক্রোয়াট অঞ্চলে মডারেটরা ভালো ফল করলেন, বসনীয় সার্ব-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে জাতীয়তাবাদীরা এগিয়ে থাকলেন। সার্ব জাতীয়তাবাদী দল একটি ঐক্যজোট গঠন করল। যার নেতৃত্বে ছিলেন মডারেট প্রধানমন্ত্রী ম্লাদেন ইভানিচ।

২০০১ আগস্ট জাতিসংঘের ট্রাইব্যুনাল সাবেক বসনীয় সার্ব নেতা রাদিস্লাভ ক্রিস্তিচকে স্রেবেনিচা হত্যাযজ্ঞে ভূমিকা রাখার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ৪৬ বছরের কারাদণ্ড দিল।

ইভান লভরেনোভিচ, বসনিয়া: আ কালচারাল হিস্ট্রি

ডেনিস তানোভিচ, নো ম্যান’স ল্যান্ড
জন মুর, বিহাইন্ড এনিমি লাইনস

২০০২ মে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার জন্য সর্বোচ্চ প্রতিনিধি হলেন ব্রিটিশ রাজনীতিক প্যাডি অ্যাশডাউন।

অক্টোবর ফেডারেশন প্রেসিডেন্সিয়াল, সংসদীয়, ও স্থানীয় নির্বাচনে জিতে জাতীয়তাবাদীরা আবার ক্ষমতায় ফিরল।

২০০৪ ডিসেম্বর একটি ইওরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-নেতৃত্বাধীন বাহিনী ইউফোরের হাতে শান্তিরক্ষার দায়িত্ব হস্তান্তর করল ন্যাটো।

২০০৫ সাবিনা ভাজরাচা, ব্যাক টু বসনিয়া

২০০৬ ডিসেম্বর ন্যাটোর পার্টনারশিপ ফর পীস প্রি-মেম্বারশিপ প্রোগ্রামে যোগ দিল বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা।

জাসমিলা জবানিচ, গ্রবাভিচা
ক্রিশ্চিনা ভাগনার, ওয়ারচাইল্ড।

২০০৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা আদালতের (আইসিজে) রায়ে বলা হল, ১৯৯৫ সালের স্রেবেনিচা হত্যাযজ্ঞ একটি গণহত্যা ছিল; তবে আদালত খোদ সার্বিয়া রাষ্ট্রকে এই গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা থেকে বিরত থাকলেন।

২০০৮ জুলাই ১৩ বছর পলাতক থাকার পর বেলগ্রেডে সার্বীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হলেন রাদোভান কারাদজিচ, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সাবেক বসনীয় সার্ব নেতা।

জিয়াকমো বাত্তিয়াতো, রেজল্যুশন ৮১৯

২০১০ জুয়ানিতা উইলসন, অ্যাজ ইফ আই অ্যাম নট দেয়ার

২০১১ মে সার্ব কর্তৃপক্ষের হাতে গ্রেপ্তার হলেন যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সাবেক বসনীয় সার্ব সেনাপ্রধান রাতকো ম্লাদিচ ও ক্রোয়েশীয় সার্ব গোরান হাদজিচ।

ডিসেম্বর বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার মুসলমান, সার্ব, ও ক্রোয়াট নেতারা একটি নতুন কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করার ব্যাপারে রাজি হলেন। এতে ১৪ মাসের রাজনৈতিক স্থবিরতার অবসান হল।

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, ইন দ্য ল্যান্ড অফ মিল্ক অ্যান্ড হানি

২০১৩ মে জাতিসংঘের একটি ট্রাইব্যুনাল ছয়জন সাবেক বসনীয় ক্রোয়াট নেতাকে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করল।

স্রদান গোলুবভিচ, সার্কেলস
মার্ক স্টিভেন্স জনসন, কিলিং সিজন

২০১৪ মে তীব্র বন্যায় ৫ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হলেন এবং জনগণের এক-চতুর্থাংশ পানীয় জলের সংকটে পড়ল।

২০১৫ মার্চ ইওরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সাথে স্টেবিলাইজেশন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন চুক্তি সই করল বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা।

২০১৬ ইওরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আনুষ্ঠানিক সদস্যপদের জন্য আবেদন করল বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা।

মার্চ জাতিসংঘের ট্রাইব্যুনাল সাবেক বসনীয় সার্ব নেতা রাদোভান কারাদজিচকে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা সংঘটনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিল।

ওজান আচিকতান, মাই মাদার্স উন্ড

২০১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের ট্রাইব্যুনাল সাবেক বসনীয় সার্ব সামরিক কমাণ্ডার রাতকো ম্লাদিচকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল।

তারিক হদজিচ, স্ক্রিম ফর মি সারায়েভো
লার্স ফেল্ডবেল পিটারসন, দ্য আনফরগিভেন

২০১৮ অক্টোবর তিন-সদস্যবিশিষ্ট ফেডারেল প্রেসিডেন্সিতে সার্বদের জন্য বরাদ্দকৃত আসন জিতলেন সার্ব পরিচয়বাদী নেতা মিলোরাদ দোদিক। তিনি বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা থেকে দেশটির বসনীয় সার্ব-নিয়ন্ত্রিত স্প্রসকা প্রজাতন্ত্রের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার প্রস্তাব উত্থাপন করলেন।

২০২১ জুলাই সাধারণভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের দায় অস্বীকার করা এবং বিশেষভাবে ১৯৯৫ সালের স্রেব্রেনিচা গণহত্যার দায় অস্বীকার করাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার জন্য সর্বোচ্চ প্রতিনিধি ভ্যালেন্তিন ইনজকো একটি আইন বলবৎ করলেন। স্প্রসকা প্রজাতন্ত্রের সার্ব জাতীয়তাবাদী নেতারা এই আইন বলবৎ করার কঠোর বিরোধিতা করেন।

অক্টোবর বসনীয় সার্ব পরিচয়বাদী নেতা মিলোরাদ দোদিক ঘোষণা করলেন, স্প্রসকা প্রজাতন্ত্র বসনিয়ার সেনাবাহিনী, শীর্ষস্থানীয় আইনী সংস্থাসমূহ, ও কর প্রশাসন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিবে। এতে অঞ্চলটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংকটের আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ল।

তথ্যসূত্র

বইপত্র

Phillips, Douglas. 2004. Bosnia and Herzegovina. Philadelphia: Chelsea House.

Schuman, Michael A.. 2004. Bosnia and Herzegovina. New York: Facts of File.

সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্র

BBC
The New York Times

অন্যান্য

Internet Movie Database (IMDb)

নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।

অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ

দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *