
তুর্কমেনিস্তান
Featured Image: Wikimedia Commons.

পূর্বসাল
৬০০-৫০১ তুর্কমেনিস্তান এ সময় ইরানের কুরুশের রাজত্বের অংশ ছিল।
৪০০-৩০১ মধ্য এশিয়া* জয় করলেন ম্যাকিদোনিয়ার সিকান্দার শা।
* পাঁচটি দেশ নিয়ে মধ্য এশিয়া অঞ্চলটি গঠিত। এগুলো হল উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, ও তুর্কমেনিস্তান। ভারতবর্ষের সাথে মধ্য এশিয়ার ঐতিহাসিক সম্পর্ক আছে, কারণে প্রাচীন ভারতের আর্যভাষী গোষ্ঠী আর মধ্যকালীন ভারতের মুঘল শাসকবৃন্দ উভয়েই এই উপমহাদেশে অত্র অঞ্চল থেকে এসেছে।
১০০-১ যে সিল্ক রোড চীনকে রুমি সাম্রাজ্য ও ইওরোপের সাথে যুক্ত করেছিল, এই শতাব্দীতে তুর্কমেনিস্তান সমেত পুরো মধ্য এশিয়া তার গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়।
সাল
৬০১-৭০০ আরবদের মধ্য এশিয়া জয় ও অঞ্চলটির ইসলামিকরণ।
৯০১-১৩০০ এ সময়ের মধ্যেই কখনো বর্তমান তুর্কমানদের পূর্বপুরুষ ওঘুজ সেলজুক গোষ্ঠী বর্তমান তুর্কমানিস্তানে বসতিস্থাপন করে। মঙ্গোলরাও এ সময় মঙ্গোলিয়া থেকে মধ্য এশিয়ায় আসে। সাম্রাজ্য নির্মাতা চেঙ্গিজ খান অঞ্চলটি জয় করেন।
১৪০১-১৭০০ এই শতাব্দীগুলোতে তুর্কমেনিস্তানের দক্ষিণ অংশ ইরানিদের নিয়ন্ত্রণ এল, উত্তর অংশ উজবেকিস্তানের খিভা আর বোখারা রাজ্যগুলো দ্বারা শাসিত হতে থাকল।
১৮৮১ গোক তেপের যুদ্ধে রুশদের কাছে তুর্কমানরা হেরে গেলে তুর্কমেনিস্তানকে রুশ তুর্কিস্তানের অঙ্গীভূত করে নেয়া হল।
১৯২১ গঠিত হল তুর্কিস্তান স্বায়ত্তশাসিত সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র।*
* বর্তমান তুর্কমেনিস্তান এর একটি অংশ ছিল।
১৯২৫ সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি প্রজাতন্ত্রের মর্যাদা পেল তুর্কমেনিস্তান।
১৯৪৮ তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাতে এক ভূমিকম্পে ১ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হল।
১৯৬০-৬৭ কারাকোরাম খালের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার ফলে তুর্কমানদের উৎপাদিত তুলার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেল।
১৯৭১ তুর্কমান কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হলেন মুহাম্মদ গাপুরভ।
১৯৮৫ তুর্কমান কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হলেন সাপারমুরাত নিয়াজভ।
১৯৮৯ তুর্কমেনিস্তানের বিরোধী রাজনীতিকদের দ্বারা গঠিত হল আগজিবিরলিক পিপল’স ফ্রন্ট।
১৯৯০ তুর্কমান কমিউনিস্ট পার্টি কর্তৃক নিষিদ্ধ হল আগজিবিরলিক পিপল’স ফ্রন্ট।
১৯৯১ সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করল তুর্কমেনিস্তান। কমনওয়েলথ অফ ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টেটসে (সিআইএস) যোগ তুর্কমেনিস্তান।
১৯৯২ সোভিয়েতউত্তর তুর্কমেনিস্তান একটি নয়া সংবিধান প্রণয়ন করল। এই সংবিধানে প্রেসিডেন্ট একইসাথে সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধান থাকলেন, এবং প্রেসিডেন্টকে নিজের খেয়ালখুশি অনুযায়ী যেকোন সময় প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেয়ার অধিকার দেয়া হল। প্রতিদ্বন্দ্বীহীন নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হলেন সাপারমুরাত নিয়াজভ।
১৯৯৩ তুর্কমানিস্তানে একটি নতুন মুদ্রা চালু করা হল: মানাত। রাশিয়ার সাথে দ্বৈত নাগরিকত্ব চুক্তি করল দেশটি।
১৯৯৪ এক গণভোটে প্রেসিডেন্ট নিয়াজভের মেয়াদ বাড়িয়ে তাঁকে ২০০২ সাল পর্যন্ত নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় থাকার সুযোগ দেয়া হল।
১৯৯৭ তুর্কমেনিস্তানে জমির ওপর ব্যক্তিমালিকানাকে আইনসঙ্গত করা হল।
১৯৯৮ ইরানে গ্যাস রফতানি করার জন্য একটি পাইপলাইন বসাল তুর্কমেনিস্তান।
১৯৯৯ তুর্কমেনিস্তানের সংসদ সাপারমুরাত নিয়াজভকে আজীবন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করল, দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্ত করা হল।
২০০০ প্রেসিডেন্ট সাপারমুরাত নিয়াজভ ঘোষণা দিলেন, তিনি ২০১০ সালে ৭০ বছর বয়সে পৌঁছানোর পর ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াবেন। নিয়াজভ আরো ঘোষণা করলেন, কারাকোরাম মরুভূমিতে ২০০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে একটি কৃত্রিম হ্রদ নির্মাণ করবেন। হ্রদ নির্মাণের ঘোষিত উদ্দেশ্য জলপ্রবাহ নিশ্চিত করা, কিন্তু বিজ্ঞানীরা হুঁশিয়ার করে দিলেন, এটা পরিবেশের জন্য ব্যাপক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
২০০২ তুর্কমানিস্তানের বিরোধী সক্রিয়তাকর্মী বরিস শিখমুরাদভ গ্রেপ্তার হলেন।
২০০৩ রাশিয়ার গ্যাজপ্রমের সাথে একটি চুক্তি সই করল তুর্কমেনিস্তান। চুক্তির আওতায় রুশরা তুর্কমানদের কাছ থেকে প্রতি বছর ৬০ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস কিনবে। ১৯৯৩ সালে রাশিয়ার সাথে করা দ্বৈত নাগরিকত্ব চুক্তি ডিক্রি জারি করে বাতিল করলেন নিয়াজভ, যা দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংকট তৈরি করল।
২০০৪ প্রেসিডেন্ট সাপারমুরাত নিয়াজভ তুর্কমেনিস্তানের মরুভূমিতে একটি প্রকাণ্ড বরফের তৈরি প্রাসাদ নির্মাণের হুকুম দিলেন। তুর্কমান আর উজবেক প্রেসিডেন্টের মধ্যে দোস্তির চুক্তি সই। দুদেশের পানিসম্পদের ভাগবাটোয়ারা বিষয়ক বোঝাপড়া।
আদ্রিয়ান লিন এডগার, ট্রাইবাল নেশন দ্য মেকিং অফ সোভিয়েত তুর্কমেনিস্তান।
২০০৬ চীনের তুর্কমান গ্যাস রফতানি করার জন্য চীন আর ইরানের মধ্যে পাইপলাইন তৈরির ব্যাপারে বেইজিংয়ের সাথে একটি চুক্তি সই করল আশগাবাত। রাশিয়ার গ্যাজপ্রম তুর্কমান গ্যাসের জন্য ৫৪ শতাংশ বেশি অর্থ খরচ করতে রাজি হল। রেডিও লিবার্টির সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী ওগুলসাপার মুরাদভাকে কারাগারে মৃত দশায় পাওয়া গেল।
সাপারমুরাত নিয়াজভের মৃত্যু।
২০০৭ প্রতিদ্বন্দ্বীহীন নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হলেন কুরবানগুলি বের্দিমুখামেদভ। কাস্পিয়ান হ্রদের উত্তরে একটি নতুন পাইপলাইন বানাতে রাজি হল রাশিয়া, কাজাখস্তান, ও তুর্কমেনিস্তান; যা তুর্কমান গ্যাসে রুশদের অভিগম্যতা নিশ্চিত করবে।
২০০৮ ঐতিহ্যিক গ্রেগরীয় পঞ্জিকায় ফিরে গেল তুর্কমেনিস্তান। তুর্কমানদের পিপল’স কাউন্সিল একটি নয়া সংবিধান প্রণয়ন করল। তাতে বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা ও সংসদীয় নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হল।
২০০৯ চীনে গ্যাস রফতানি করতে শুরু করল তুর্কমেনিস্তান, এতে তুর্কমান গ্যাসের ওপর রাশিয়ার একচ্ছত্র অধিকার আর রইল না।
২০১০ ইরানে গ্যাস রফতানি করার জন্য আরেকটি পাইপলাইন বসাল তুর্কমেনিস্তান।
২০১১ প্রেসিডেন্ট বের্দিমুখামেদভকে হিরো অফ দ্য নেশন খেতাব দেয়া হল।
২০১২ দ্বিতীয় মেয়াদে তুর্কমান প্রেসিডেন্ট হলেন কুরবানগুলি বের্দিমুখামেদভ। সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীন হওয়ার পর তুর্কমেনিস্তানের প্রথম বৈধ বিরোধী দল এবছর গঠিত হয়। ওভেজমাম্মেদ মাম্মেদোভ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই মধ্যডানপন্থী রাজনৈতিক দলের নাম তুর্কমেনিস্তানের শিল্পপতি আর উদ্যোক্তাদের দল।
২০১৩ আফগানিস্তানের সাথে একটি ৩০ বছর মেয়াদী গ্যাস চুক্তি সই করল তুর্কমেনিস্তান।
২০১৪ ১৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ তুর্কমেনিস্তান-আফগানিস্তান-পাকিস্তান-ইন্ডিয়া (তাপি) প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইন তৈরি ও পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে উল্লিখিত চার দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস কোম্পানিগুলো একটি কোম্পানি তৈরি করল।
২০১৫ তাপি প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইনের নির্মাণকাজ শুরু হল।
২০১৭ তৃতীয় মেয়াদে তুর্কমান প্রেসিডেন্ট হলেন কুরবানগুলি বের্দিমুখামেদভ।
২০২০ এরিকা ফ্যাটল্যান্ড, সোভিয়েতিস্তান: ট্রাভেলস ইন তুর্কমেনিস্তান, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, অ্যান্ড উজবেকিস্তান।
তথ্যসূত্র
BBC. 2018. “Turkmenistan profile – Timeline.” BBC, February 26.
https://www.bbc.com/news/world-asia-16098048
নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।
অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ
দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি