সুদান

Spread the love

Featured Image: Wikimedia Commons.

Image: The Nations Online Project.

পূর্বসাল

২৬০০ কুশ নামের একটি মিসরীয়-নুবীয় সভ্যতার উন্মেষ ঘটল। প্রায় ৩০০০ বছর টিকে ছিল এই সভ্যতা।

৭৬০ এ সময়ের মধ্যে সমগ্র নুবিয়া ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে, নাপাতা ছিল একালের একটি প্রধান শহর।

২৫০ নুবিয়ার রাজধানী হয়ে উঠল মেরো।

সাল

৪০০ নুবিয়ায় মাকুরিয়া, নোবাতিয়া, আলোদিয়া ইত্যাদি নতুন রাজ্য গড়ে উঠল।

৬৪২ আরবরা মিসর জয় করার পর দক্ষিণদিকে অগ্রসর হয়ে নুবিয়া জয়ের চেষ্টা করে, কিন্তু তাদের পিছু হঠিয়ে দেয়া হয়।

৬৫২ আরবদের সাথে নুবীয়দের বাক্ত চুক্তি, এটা ইতিহাসের সবচে দীর্ঘ সময় ধরে টিকে থাকা চুক্তি।

১৫০১-১৬০০ বর্তমান সুদানের অধিকাংশ অঞ্চল জয় করল ফুঞ্জরা। দিনকা, শিল্লুক, নুয়ের, এবং আজান্দের মত কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান গোষ্ঠীগুলো দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে বসতিস্থাপন করল।

১৮২১ মিসরীয় ও ওসমানি তুর্কিদের একটি যৌথ বাহিনী বর্তমানে সুদান বলে পরিচিত দেশটি জয় করে সুদানকে ঐক্যবদ্ধ করল। দেশটিতে তুর্কি ও মিসরীয়দের যৌথ রাজত্বের সূচনা। সুদানে তুর্কি-মুসরীয়রা যে-সরকার বসাল তা তুর্কিয়ে নামে পরিচিত ছিল।

এ বছরই বর্তমান সুদানের রাজধানী খার্তুম প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৮৮১ দক্ষিণ সুদানের মুহাম্মদ আহমাদ বিন আবদুল্লা বিন ফাহাল নিজেকে মাহদী ঘোষণা করলেন। মাহদীর নেতৃত্বে তুর্কিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান শুরু হল। অভ্যুত্থান ঠেকাতে সরকার ব্রিটিশদের মদত চাইল।

১৮৮৫ খার্তুমে প্রবেশ করলেন মাহদী অনুসারী বিদ্রোহীরা। ব্রিটিশ সেনাপতি চার্লস গর্ডনকে হত্যা করলেন। সুদান নিজেকে একটি স্বাধীন দেশ বলে ঘোষণা করল।

১৮৯৮ ওমদুরমানের সমর, কামান ও মেশিন গানের মত আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত ব্রিটিশ ও মিসরীয়দের অপেক্ষাকৃত ছোট যৌথ বাহিনীর কাছে হেরে গেল সনাতনী অস্ত্রে বলীয়ান সুদানিদের বিশাল বাহিনী। এই সমরে ১০ হাজার সুদানির মৃত্যু হয়। অপরদিকে, ব্রিটিশ-মিসরীয় মৃতের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৮।

১৮৯৯ ব্রিটিশ ও মিসরীয়রা সুদানের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেল। সুদানে একটি নতুন সরকারের পত্তন। পরিচিত হবে ইঙ্গ-মিসরীয় সুদান হিসেবে।

১৯০২ ব্রিটিশরা খার্তুমে গর্ডন মেমোরিয়াল কলেজ চালু করল। এর ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল দেশটিতে ‘শিক্ষা’ বিস্তার। কলেজের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ছিলেন উত্তরাঞ্চলের আরবিভাষী মুসলমান।

১৯১২ স্থাপিত হল ওমদুরমান সায়েন্টিফিক ইন্সটিটিউট।

১৯৫৪ সুদানের ভোটাররা একটি নতুন সংসদ নির্বাচিত করলেন। দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী হলেন ন্যাশনাল ইউনিয়নিস্ট পার্টির ইসমাইল আল-আহিরি।

১৯৫৫ সুদানের সংসদ পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিল।

১৯৫৫-৭২ সুদানের প্রথম গৃহযুদ্ধ

১৯৫৬ জানুয়ারি ১ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল সুদান।

১৯৫৮ সুদানে এক সামরিক ক্যুদেতায় বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করলেন সেনাপতি ইব্রাহিম আব্বুদ।

১৯৬২ আন্যানিয়া মুভমেন্টের নেতৃত্বে সুদানের দক্ষিণাঞ্চলে গৃহযুদ্ধ শুরু হল।

১৯৬৪ “অক্টোবর বিপ্লবে” উৎখাত হলেন সেনাপতি আব্বুদ, দেশটিতে প্রতিষ্ঠা করা হল একটি জাতীয় সরকার।

১৯৬৫ ওমদুরমান সায়েন্টিফিক ইন্সটিটিউট ওমদুরমান ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে রূপান্তরিত হল।

১৯৬৯ মে বিপ্লব, কর্নেল জাফর মুহাম্মদ নিমেরির নেতৃত্বে একদল সেনা কর্মকর্তা ক্ষমতা দখল করলেন।

১৯৭১ কর্নেল নিমেরির বিরুদ্ধে একটি ব্যর্থ ক্যুদেতা পরিচালনা করা সুদানি কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল।

১৯৭২ আদ্দিস আবাবা চুক্তি। সুদান সরকার ও আন্যা নিয়া মুভমেন্টের মধ্যে সম্পাদিত এই চুক্তি সুদানের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটাল। দক্ষিণ সুদান একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে পরিণত হল।

১৯৭৮ দক্ষিণ সুদানের বেনতিউয়ে তেল আবিষ্কৃত হল।

১৯৮৩-২০০৫ সুদানের দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধ

১৯৮৩ সুদানে শরিয়া আইন চালু করলেন কর্নেল নিমেরি।

১৯৮৫ নিমেরি সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিল। একদল সেনা কর্মকর্তা কর্নেল নিমেরিকে ক্ষমতাচ্যুত করলেন। দেশ চালাতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সামরিক কাউন্সিল গঠন করা হল।

১৯৮৬ নির্বাচনের পরে সুদানে জোট সরকার গঠিত হল, দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন সাদিক আল-মাহদী।

১৯৮৯ সুদানে ক্ষমতাদখল করলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওমর আল-বশির।

১৯৯৩ সুদানের প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হলেন ওমর আল-বশির।

১৯৯৮ আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খার্তুমের আল-শিফা কেমিকেল ফ্যাক্টরিতে মিসাইল হামলা চালাল। প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন বিশ্বাস করতেন সুদান সরকার এই কারখানায় আল কায়েদার জন্য রাসায়নিক অস্ত্র বানাচ্ছে। এই হামলা সুদানের চিকিৎসা ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।

১৯৯৯ সুদানে সংসদীয় স্পিকার হাসান আল-তুরাবির সাথে এক ক্ষমতা সংঘাতের জের ধরে সংসদ বিলুপ্ত করে দিলেন প্রেসিডেন্ট আল-বশির। জারি করলেন জরুরি অবস্থা। তেল রফতানি করতে আরম্ভ করল সুদান।

২০০০ সুদানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হলেন ওমর আল-বশির।

২০০১ সুদানে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিল।

২০০২ মাচাকোস প্রোটোকল, এসপিএলএম/এ-র সাথে শান্তিচুক্তি সই করল সুদান সরকার।

২০০৩ দারফুর বিদ্রোহ

গ্যাব্রিয়েল ওয়ারবুর্গ, ইসলাম, সেক্টারিয়ানিজম অ্যান্ড পলিটিকস ইন সুদান সিন্স মাহদিয়া
ডি. এইচ. জনসন, দ্য রুট কজেস অফ সুদান’স সিভিল ওয়ারস

২০০৩-বর্তমান দারফুর গণহত্যা

২০০৪ বিদ্রোহ ঠেকাতে দারফুরে হস্তক্ষেপ করল সুদান সেনাবাহিনী, অঞ্চলটিতে আরবিভাষী জানজাওয়িদ মিলিশিয়াকে ডেকে আনল। হাজার হাজার মানুষ শরণার্থী হয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র চাদে আশ্রয় নিলেন। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা জানালেন, আরবিভাষী জানজাওয়িদ মিলিশিয়া দারফুরের আফ্রিকান গ্রামবাসীর ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। দারফুরে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিল। ক্যুদেতা প্রচেষ্টা চালানোর অভিযোগে ইসলামপন্থী হাসান আল-তুরাবিসহ বিরোধী রাজনীতিক ও সেনা কর্মকর্তাদের আটক করা হল। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল দারফুর হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা বলে আখ্যায়িত করলেন।

২০০৫ জানুয়ারি ৯ সুদান সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে শান্তিচুক্তি সই হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশটির গৃহযুদ্ধের অবসান। কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ইসলামপন্থী হাসান আল-তুরাবি।

জি প্রুনিয়ের, দারফুর: আ টোয়েন্টি-ফার্স্ট সেঞ্চুরি জেনোসাইড

২০০৭ জে. এস. জক, সুদান: রেস, রিলিজিয়ন, অ্যান্ড ভায়োলেন্স

২০০৮ দারফুর ইস্যুতে বিবাদের কারণে প্রতিবেশী রাষ্ট্র চাদের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করল সুদান।

২০০৯ দারফুরে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার দায়ে সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করল নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগস্থ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

২০১০ সুদানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হলেন ওমর আল-বশির।

২০১১ সুদানের কাছ থেকে স্বাধীনতালাভ করল দক্ষিণ সুদান।

২০১৫ সুদানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হলেন ওমর আল-বশির।

২০১৯ সুদানে ওমর আল-বশিরের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন শুরু হল। জরুরি অবস্থা জারি, প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু। সেনাবাহিনী এক ক্যুদেতায় প্রেসিডেন্ট আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করল এবং দেশটির গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য বিরোধীদের সাথে আলাপ শুরু করল।

তথ্যসূত্র

African Union. n.d. “Member States | African Union.” Accessed March 3, 2025.
https://au.int/en/member_states/countryprofiles2.

BBC. 2019. “Sudan profile – Timeline.” BBC, September 10.
https://www.bbc.com/news/world-africa-14095300

Connolly, Sean. 2008. Sudan. Florida: Rourke Publishing LLC.

Oppong, Joseph, R.. 2010. Sudan. New York: Chelsea House.

নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।

অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ

দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *