Featured Image: Wikipedia Commons.
পূর্বসাল
৩০০০-২০০১ সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতা। মহেঞ্জোদারো আর হরপ্পায় নগর সভ্যতার বিকাশ ঘটছে।* প্রাচীন অন্যান্য সভ্যতার সাথে এসভ্যতার যোগাযোগ ছিল।
* হরপ্পায় একটি সীলমোহর খুঁজে পেয়েছেন আধুনিক প্রত্নতাত্ত্বিকরা। এটিকে ‘পশুপতি সীলমোহর’ বলে চিহ্নিত করেন অনেকে। উদ্দেশ্য হরপ্পা সভ্যতাকে বৈদিক সভ্যতা হিসাবে দেখানো। উল্লেখ্য যে, পশুপতি হিন্দু দেবতা শিবের অবতার। (Pattanaik 2022) এই ধরণের চিহ্নায়নকে অনৈতিহাসিক দাবি করেছেন। হরপ্পায় প্রাপ্ত সীলমোহরের সাথে শিবের সম্পর্ক নেই। উপমহাদেশের ইতিহাসে বৈদিক সভ্যতা আরো পরের ব্যাপার।
২৬০০-২৫০০ ভারতবর্ষে ব্রোঞ্জযুগের সূচনা।
২০৫০ ইন্দো-ইরানিরা এসময় ইরান ও আফগানিস্তানে বসতিস্থাপন করছেন।
২০০০-১০০১ মধ্য এশিয়া থেকে ভারতের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল ও পাকিস্তানে যাযাবর আর্য গোষ্ঠীগুলোর আগমন, আফগানিস্তানে তারা ব্যাকট্রিয়া রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে।*
* “হিন্দুত্ববাদী চিন্তকরা একটা বহির্গমন তত্ত্ব প্রচার করেন। যার সারকথা হচ্ছে, সংস্কৃতভাষী আর্যদের উৎপত্তিস্থল ভারত। সেখান থেকে বেরিয়ে তাঁরা বাকি দুনিয়ায় গেছেন। এই তত্ত্বের অসারতা দেখিয়ে দিয়েছেন টনি জোসেফ। তিনি খেয়াল করেছেন যে, বহির্গমন তত্ত্বটির পক্ষে “একটাও বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র নেই, যা সতীর্থদের দ্বারা যাচাই করা হয়েছে।” […] হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা প্রায়শই আরেকটা দাবি করে থাকেন। উপমহাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে যে একটি প্রাচীন সভ্যতা ছিল, সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতা, আর্যদের আগমনের কয়েকশো বছর আগে ক্ষয়লাভ করেছিল; তাদের দাবি বৈদিক সভ্যতা সেটির ধারাবাহিকতা। হিন্দুত্ববাদের অনুসারীরা অসততার বিস্ময়কর পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন। যার মধ্যে রয়েছে সম্পূর্ণরূপে জাল প্রমাণ বানানো। যেমন, ঘোড়ার সীলমোহর। এই জালিয়াতির উদ্দেশ্য হচ্ছে সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতা আর বৈদিক সংস্কৃতিকে এক করে দেখানো (উইজেল ও ফার্মার ২০০০)। বহির্গমন তত্ত্বের মত এই প্রমাণেরও একটাই সমস্যা। এই হাওয়াই দাবির কোন বিদ্যায়তনিক ভিত্তি নেই।” (Truschke 2020, translation mine)
২০০০-১৬০০ হরপ্পায় নাগরিক সভ্যতার পতনের কাল শুরু হল।
১৯০০ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সরস্বতী নদীর পানি শুকিয়ে গেল। সিন্ধু সভ্যতার অবসানের সূচনা। এসময়ই কখনো প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার কেন্দ্র সরস্বতী নদী উপত্যকা থেকে গঙ্গা নদীর উপত্যকায় স্থানান্তরিত হল।
১৫০০-৫০০ গান্ধারা সভ্যতা।*
* পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চল ও আফগানিস্তানের অধিকাংশ অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল প্রাচীন গান্ধারা অঞ্চল।
১৩০০ সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতা এসময় অদৃশ্য হয়ে যায়।*
* একসময় ‘আর্য গোষ্ঠীগুলোর আগ্রাসন’কে দায়ী করা হত। বর্তমানে এই আগ্রাসন তত্ত্ব অতিকথা বিবেচিত হয়। ধারণা করা হয়, সম্ভবত কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতার মানুষেরা অঞ্চলটি ছেড়ে চলে গিয়ে থাকবে।
৩২৬ খাইবার পাস দিয়ে ভারতবর্ষে ঢুকলেন সেকান্দার শা। পাঞ্জাবের রাজা পুরুকে যুদ্ধে পরাস্ত করলেন। পরে অবশ্য পুরুর সাথে তার বন্ধুত্ব হয়ে গেছিল।
৩২০-১৮০ এসময় গান্ধারা অঞ্চল শাসন করছেন মৌর্য সম্রাটরা।
২৭৩-৩২ পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের তক্ষশীলায় সম্রাট অশোক মৌর্য নির্মাণ করলেন ধর্মরাজিকা স্তূপ।
১৮৬ গান্ধারা অঞ্চলে গ্রেকো-ব্যাকট্রীয় রাজা দিমিত্রিয়াসের বিজয় লাভ, অত্র অঞ্চলে গ্রিক শাসনের সূচনা ঘটল।
১৮০-৮০ এসময় গান্ধারা অঞ্চল শাসন করছেন ইন্দো-গ্রিক রাজারা।
৮০ পূর্বসাল-৭৫ সাল এসময় গান্ধারা অঞ্চল শাসন করছে্ন সিথীয়-পার্থীয় রাজারা।
সাল
৫০ তক্ষশীলায় সেইন্ট টমাসের ধর্মপ্রচারক দলের আগমন ঘটল।
৭৫-৪৫০ এসময় গান্ধারা অঞ্চল শাসন করছেন কুশান রাজারা। কালপর্বটি গান্ধারা সভ্যতার স্বর্ণযুগ বলে বিবেচিত হয়। এসময় শিল্প ও স্থাপত্যকলার ব্যাপক সমৃদ্ধি ঘটে।
৭৮ মসনদে আসীন হলেন কুশান রাজা কনিষ্ক।
৪৭০ ভারতবর্ষে হেপথালীয় বা শ্বেত হুনদের অভিযানের সূচনা।
৫০১-৬০০ ভারতবর্ষে আসলেন চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং।
৫১৫-৩৩ এসময় গান্ধারা অঞ্চল শাসন করছেন শ্বেত হুন রাজা মিহিরকুল।
৫৬৫ ইরানের প্রথম খসরু আর তাঁর তুর্কি মিত্রদের একটি যৌথ বাহিনী শ্বেত হুনদেরকে পরাস্ত করলেন।
৫৭০ লোহিত সাগরের পারে আরব উপদ্বীপের শহর মক্কার কুরাইশ বংশের হাশেম গোত্রে ইসলামের* নবি হযরত মুহাম্মদের (সা.)** জন্ম।
* ইসলাম সম্পর্কে সংক্ষেপে জানতে দেখুন, (Gordon 2009).
* হযরত মুহাম্মদের (সা.) অনুসারীরা মুসলিম (المسلمون) নামে পরিচিত, আরবিতে আল-মুসলিমুন অর্থ ‘আত্মসমর্পণকারী’; যাঁরা আল্লাহ’র (ٱللَّٰه) কাছে আত্মসমর্পণ করেন তাঁরাই মুসলিম। বাংলায় ঐতিহ্যগতভাবে মুসলমান শব্দটিই বেশি ব্যবহৃত হয়ে আসছে, সেই ঐতিহ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে মুসলমান শব্দটি ব্যবহার করি আমি। মুসলমানদের পবিত্র বই কুরআন (ٱلۡقُرۡءَانُ) নামে পরিচিত।
৬৩২ হযরত মুহাম্মদের (সা.) মৃত্যু। তাঁর কোন জীবিত পুত্রসন্তান না থাকায় ও উত্তরাধিকারী মনোনীত করে না যাওয়ায় যে নেতৃত্ব সংকট দেখা দেয়, কালক্রমে তাই শিয়া-সুন্নী বিভাজনে রূপ নেবে।* নববী যুগের শেষে শুরু হবে খেলাফতের যুগ।**
* শিয়া-সুন্নী বিভাজনের ইতিহাস জানতে, দেখুন, (McHugo 2017) ও (Louër 2020).
** ইসলামের ইতিহাসে নবির জমানাকে নববী যুগ বলে, ৬৩২ সালে এই যুগের অবসান ঘটে। এরপর শুরু হয় ইসলামের ইতিহাসের খেলাফতের যুগ। খেলাফতকে মুসলমানদের রাজনৈতিক সাম্রাজ্য বলা যেতে পারে। ৬৩২ সাল থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত দুনিয়ার সব মুসলমান অন্তত তত্ত্বগতভাবে কোন না কোন খেলাফতে বাস করেছেন। মুসলমানদের শেষ খলিফা তুরস্কের দ্বিতীয় আবদুল মজিদ, যাঁকে নির্বাসিত করে ১৯২৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে খেলাফত বিলুপ্ত করেন আতাতুর্ক। তবে অনেকেই খেলাফতের বিলুপ্তি মেনে নিতে পারেননি, এবং আধুনিক জমানার ইসলামপন্থী রাজনীতির বিকাশে এই ঘটনা ভূমিকা রেখেছে। আধুনিক ইসলামপন্থীদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ বহুদলীয় গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে গ্রহণ করে নিলেও জঙ্গি বলে চিহ্নিতরা আধুনিকতার সাথে কোন ধরণের আপোসে আগ্রহী নন; তাঁরা সশস্ত্র পদ্ধতিতে খেলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
৬৩২-৬১ ‘রাশিদুন খেলাফত’।*
* সুন্নিরা যেই চার খলিফাকে সঠিকভাবে দিকনির্দেশিত বলে বিশ্বাস করেন, সেই রাশিদুন খেলাফতের কাল। শিয়াদের অধিকাংশ প্রথম তিন খলিফাকে অবৈধ ভাবেন, তাঁদের বিশ্বাসে সুন্নিদের চতুর্থ খলিফা আলীই একমাত্র বৈধ খলিফা। তবে জায়েদি শিয়ারা চার খলিফাকেই বৈধ ভাবেন।
৬৪৪ রাশিদুন খেলাফতের বালুচিস্তান জয়।*
* বালুচিস্তান বর্তমান পাকিস্তানের ৭টি প্রশাসনিক অঞ্চলের একটি।
৬৬১-৭৫০ ‘উমাইয়া খেলাফত’।*
* উমাইয়া খেলাফতের কেন্দ্র ছিল বর্তমান সিরিয়ার দামিশক।
৭১২ উমাইয়া খেলাফতের সিন্ধ বিজয়।*
* সিন্ধ বর্তমান পাকিস্তানের ৭টি প্রশাসনিক অঞ্চলের একটি।
৯৯৭ গজনীর মসনদে আসীন হন সুলতান মাহমুদ, তিন দশকে ১৭ বার ভারতবর্ষ আক্রমণ করেন।
৯৯৮ আফগানিস্তানের গজনীর মসনদে বসলেন সবুক্তগীনের পুত্র মাহমুদ।*
* ভারতবর্ষে ইনি ‘গজনীর সুলতান মাহমুদ’ নামে পরিচিতি। তাঁর রাজত্ব কুর্দিস্তান থেকে কাশ্মীর আর আমু দরিয়া থেকে গঙ্গা নদী পর্যন্ত প্রসারিত ছিল। ১০৩০ সালে মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত শাসন করেন মাহমুদ। এসময়কালে মোট ১৭ বার ভারতবর্ষে আক্রমণ চালান। তাঁর বিরুদ্ধে মন্দির লুঠ করার অভিযোগ আছে, আছে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ, যা সমকালীন ভারতের অন্যতম ঐতিহাসিক বিতর্ক। তবে মাহমুদ জ্ঞানবিজ্ঞান ও শিল্পসাহিত্যের সমঝদার ছিলেন। শাহনামা’র রচয়িতা কবি ফেরদৌসী থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক আল-বিরুনি অনেকেই তাঁর পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছেন।
১০০১ সুলতান মাহমুদ প্রথমবার ভারতবর্ষ আক্রমণ করলেন।
১০০১-২১ উত্তর-পশ্চিম ভারতে অভিযান চালাচ্ছেন গজনীর সুলতান মাহমুদ।
১০২৬ গজনীর সুলতান মাহমুদ কর্তৃক সোমনাথ মন্দির ধবংসসাধন।
১০৩০ গজনীর সুলতান মাহমুদের মৃত্যু।
১২০৬-১৫২৬ দিল্লি সুলতানশাহি।*
* দিল্লি সুলতানশাহির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কুতুবুদ্দিন আইবেক। ছোটকালে তাঁকে গোলাম হিসেবে বিক্রি করা হয়েছিল। এই তুর্কিস্তানি গোলামকে কিনে নেন মুহাম্মদ ঘুরি, এবং কালক্রমে আইবেক প্রতিষ্ঠা করেন দিল্লি সুলতানশাহি।
১৩২৫-১৫২৬ এসময় দিল্লির সুলতানরা উত্তর ভারত ও পাকিস্তানের বিপুল পরিমাণ এলাকা শাসন করছেন।
১৪৬৯-১৫৩৯ গুরু নানকের জীবনকাল।*
* শিখ ধর্মের প্রবর্তক। দিল্লি সুলতানশাহির শেষদিকে ভারতের বেনারসে জন্মগ্রহণ করেন। হিন্দুধর্ম আর ইসলামের মধ্যে সমন্বয়সাধন করতে চেয়েছিলেন। নানক এক ধরণের ধর্মীয় মানবতাবাদ প্রচার করেছেন নানক। পরবর্তীতে পাঞ্জাব শিখ ধর্মাবলম্বীদের নিবাসভূমিতে পরিণত হয়। শিখ ধর্ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, দেখুন, (Singh 2009)।
১৫২৬ দিল্লিতে গিলজাই পশতুন লোদিদেরকে পরাস্ত করার মাধ্যমে ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন বাবুর।
১৫২৬-১৮৫৮ মুঘল সাম্রাজ্য।*
* মুঘল শব্দটা আসলে মঙ্গোল শব্দের হিন্দুস্থানী রূপ। প্রাচীন আর্যভাষীদের মত এরাও ভারতের বাইরে থেকে এসেছেন। তবে পাকাপাকিভাবে ভারতে নিবাস গড়ে স্থানীয় হয়ে যাওয়ায় আর্যভাষী বা মুঘল কাউকেই আর বহিরাগত বলার সুযোগ নেই।
১৫৩০ জহিরুদ্দিন মুহাম্মদ বাবুরের মৃত্যু।
১৬৭৩ লাহোরের বাদশাহি মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হল।
১৬৯৯ গুরু গোবিন্দ সিং কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল খালসা।
১৭০৭ শেষ ‘মহান মুঘল’ সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যু।
১৭৪৭-৭৩ ‘আফগানিস্তানের জনক’ খ্যাত আহমাদ শাহ দুররানির রাজত্বকাল।
১৭৬১ মারাঠা আর শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন আহমাদ শাহ দুররানি।
১৭৬১-৬৯ ‘আফগান-শিখ যুদ্ধ’: এসময় আফগানরা কয়েক হাজার শিখকে হত্যা করে। ধবংস করে অসংখ্য শিখ উপাসনালয়। কিন্তু এতকিছুর পরও তারা পাঞ্জাবের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হয়।
১৭৯৩-১৮০১ আফগানিস্তানে জামান শাহ দুররানির রাজত্বকাল।
১৭৯৭-৯৮ শিখদের বিরুদ্ধে জামান শাহ দুররানির দুটি অভিযান। ব্যর্থ হয়ে গেল। লাহোরে নিজেরই রাজ্যপাল রণজিৎ সিংয়ের কাছে পরাজিত হলেন তিনি।
১৮০১-১৮৩৯ পাঞ্জাবে শিখ সাম্রাজ্য স্থাপন করলেন মহারাজা রণজিৎ সিং, যিনি ‘শের-ই-পাঞ্জাব’ নামে পরিচিত।
১৮৪৯ শিখদেরকে পরাজিত করে পাঞ্জাব নিয়ে নিল ব্রিটিশরা।
১৮৫০-৯৫ বর্তমান পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের – যা অতীতে উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ (এনডব্লিউএফপি) নামে পরিচিত ছিল – নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ব্রিটিশ ও রুশ সাম্রাজ্যের মধ্যে ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হল, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাসে গ্রেট গেম নামে পরিচিত।*
* ম্যাকিদোনিয়ার সেকান্দার শা থেকে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মুহাম্মদ বাবুর তক সব বিজেতাই এই প্রদেশস্থিত খাইবার পাস দিয়ে ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছেন।
১৮৫৭ মহাবিদ্রোহ: দিল্লির সেপাইরা ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করল, দ্রুত ভারতবর্ষের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল বিদ্রোহের আগুন।* ২১ সেপ্টেম্বর: দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের সিংহাসনত্যাগের মধ্য দিয়ে ৩৩১ বছর বয়সী মুঘল সাম্রাজ্যের অবসান।**
* এই বিদ্রোহ শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের নামে হলেও কার্যত এর কোনো একক কেন্দ্র বা নেতৃত্ব ছিল না, সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে যে যার মত লড়েছেন। মহাবিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব – প্রিন্স আজিমুল্লাহ, নানাসাহেব, ঝাঁসির রানী লক্ষী বাঈ। এই বিদ্রোহ ভারতবর্ষ থেকে ব্রিটিশদের তাড়াতে সক্ষম না হলেও সাম্রাজ্যকে ধাক্কা দিয়েছিল, পরের বছর কোম্পানি বিলুপ্তি করে দিয়ে ভারতবর্ষকে ব্রিটিশ রাজমুকুটের অধীনস্ত করার পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের পুনরাবৃত্তি রোখা।
** ব্রিটিশ ঐতিহাসিক রিচার্ড এম. ইটন দিল্লি সালতানাত আর মুঘল সাম্রাজ্যের ছয়শো বছরকে বলেছেন পার্সিয়ানাত: ফারসি ভাষার সাম্রাজ্য। ১৮৫৭ সালের আগ পর্যন্ত ভারত – গ্রিকে ইন্ডিয়া আর ফারসিতে হিন্দুস্তান – স্রেফ একটা geographical territory ছিল, রাষ্ট্র নয়। ব্রিটিশ উপনিবেশিক আমলেই ভারত কেন্দ্রীভূত কর্তৃত্ববাদী প্রতিষ্ঠান অর্থে রাষ্ট্র হয়ে ওঠে, ১৯৪৭ সালের আজাদ পাকিস্তান ও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের আজাদ বাংলাদেশ একই উপনিবেশিক আইনি-প্রশাসনিক উত্তরাধিকার বহন করে চলেছে।
১৮৫৮ সিপাহি যুদ্ধের কারণে ব্রিটিশ রাজপরিবার বুঝতে পারে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ব্রিটেনের জন্য একটা বোঝায় পরিণত হচ্ছে। খোদ ব্রিটেনে কোম্পানির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠছিল। তাই এবছর রানী ভিক্টোরিয়া ভারত শাসনের দায়ভার ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে নিজের হাতে তুলে নেন; ব্রিটিশ সংসদে লর্ড স্ট্যানলির আনা ভারত বিল পাশের মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হয়ে যায় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ভারতবর্ষকে ব্রিটিশ রাজমুকুটের অধীনে আনা হয়। এই শতকের শেষাবধি, ভারতবর্ষের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডে রাজ করে ব্রিটিশরা।* স্যার সৈয়দ আহমদ খান মুসলমান সমাজের ব্রিটিশ কৃষ্টিকালচার গ্রহণ করে নেয়ার ও ইসলামের সংস্কারের পক্ষে কলম ধরলেন।
* বাকি প্রায় এক-তৃতীয়াংশ থাকে প্রিন্সলি স্টেটগুলোর দখলে। ১৯৪৭ সাল নাগাদ এরকম ৫০০-৬০০ প্রিন্সলি স্টেট ছিল, যাদের শাসকরা ব্রিটিশদের সাথে বোঝাপড়ার মাধ্যমে, আধা-স্বাধীনভাবে রাজত্ব করতেন। ১৯৪৭-৪৯ সালে অধিকাংশ প্রিন্সলি স্টেট ভারতে ও অল্প কয়েকটি পাকিস্তানে যোগদান করে; অবশ্য জম্মু ও কাশ্মির, জুনাগড় এবং হায়দারাবাদের মত কয়েকটি প্রিন্সলি স্টেট নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
১৮৬০-১৯২০ ব্রিটিশ উপনিবেশিক সরকার বর্তমান পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে সেচকার্যের প্রকল্প হাতে নেয়, যা দীর্ঘমেয়াদে পাঞ্জাবকে পাকিস্তানের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির কেন্দ্রে পরিণত করে। প্রদেশটির জন্য এর ফল হয়েছে সুদূরপ্রসারী। পাকিস্তানের সবচে ক্ষমতাশালী প্রদেশ পাঞ্জাব, দেশটির রাজনীতি অর্থনীতি মূলত পাঞ্জাবিরাই নিয়ন্ত্রণ করেন।
১৮৬৮ দেওবন্দে প্রতিষ্ঠিত হল দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা, এই মাদ্রাসার বিভিন্ন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উপনিবেশবাদবিরোধী লড়াইয়ে অবদান রেখেছেন।
১৮৭৬ পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের রাজধানী করাচিতে এক গুজরাটি পরিবারে জন্ম নিলেন মোহাম্মদালি জিন্নাভাই।
১৮৭৭ মহারানী ভিক্টোরিয়াকে ভারতবর্ষের সম্রাজ্ঞী ঘোষণা করা হল।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোটে কবি ইকবালের জন্ম, যাকে পাকিস্তানের স্বপ্নদ্রষ্টা ভাবা হয়।
১৮৮৫ প্রতিষ্ঠিত হল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি)।
১৮৯৩ ব্রিটিশ ভারতের ফরেন সেক্রেটারি মর্তিমার দুরান্দ কর্তৃক আফগানিস্তান আর ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার মাঝখানে আঁকা হল দুরান্দ রেখা। এই রেখা আঁকা হয়েছিল পশতুনদের গোত্রীয় জমিজমার ওপর দিয়ে। এই রেখা আঁকার মধ্য দিয়ে পরবর্তীতে পাকিস্তান আর আফগানিস্তানের মধ্যকার দ্বন্দ্বের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
১৮৯৭ ব্রিটিশ ভারত আর রুশ-নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানের মধ্য দিয়ে আঁকা হল দুরান্দ রেখা। পশতুনদের – পাঠান নামে অধিক পরিচিত – ঐতিহাসিক নিবাসভূমি পার্টিশনড হয়ে গেল। এর প্রভাব হল সুদূরপ্রসারী: আফ-পাক সীমান্ত বিবাদ ও স্বাধীন পশতুনিস্তানের দাবিতে আন্দোলন।
১৯০৩ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা আবু আলা মওদূদীর জন্ম।
১৯০৫ বঙ্গভঙ্গ।
১৯০৬ ডিসেম্বর ৩০: ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হল নিখিল ভারত মুসলিম লীগ (এআইএমএল)।
১৯০৯ ‘মর্লে-মিন্টো সংস্কার’: মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র নির্বাচনব্যবস্থা চালু করা হল।
১৯১১ বঙ্গভঙ্গ রদ।
১৯১৩ মুসলিম লীগে যোগ দিলেন গুজরাটের মুহাম্মদালি জিন্নাহভাই।*
* পরবর্তীতে তাঁর নামের প্রথম অংশের মুহাম্মদ আরআলি আলাদা হয়ে যাবে আর জিন্নাহভাই থেকে ভাই ঝরে পড়বে, তিনি হয়ে উঠবেন মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ।
১৯১৪-১৮ ‘প্রথম বিশ্বযুদ্ধ’।
১৯১৪ মুসলিম লীগ ক্রমেই ব্রিটিশবিরোধী অবস্থান নিতে শুরু করায় সংগঠনটির প্রেসিডেন্টের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন আগা খান।
১৯১৬ ‘লখনৌ চুক্তি’: ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে সই হয়।
১৯১৮ খেলাফত আন্দোলন গ্রহণ করে নিল মুসলিম লীগ।
১৯১৯ ‘জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড’।
১৯২০ বর্তমান পাকিস্তানে আবিষ্কৃত হল সিন্ধু সভ্যতার অবশেষ।
১৯২২ ব্রিটিশ সরকার কবি ইকবালকে নাইটহুড প্রদান করল।
১৯২৪ বাংলা, পাঞ্জাব, ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের (এনডব্লিউএফপি) মত ব্রিটিশ ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোতে ফেডারেল কাঠামোর আওতায় কয়েকটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ গঠনের দাবি তুলল অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ।
১৯২৮ সর্বদলীয় সম্মেলন আয়োজিত। রাজনৈতিক দলগুলো একটি সংবিধানের মুসাবিদা করতে এক হল।
১৯৩০ মুসলিম লীগের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন কবি ইকবাল।
১৯৩১ বর্তমান ভারতের গুজরাট রাজ্যের এক মুসলমান পরিবারে জন্ম নিলেন মানববাদী আবদুল সাত্তার ইধি।*
* পাকিস্তানের অসহায় মানুষদের জন্য, বিশেষত এতিম শিশুদের জন্য, তাঁর নিঃস্বার্থ অবদানের কারণে তাকে ‘দয়ার ফেরেশতা’ ডাকা হয়।
১৯৩৩ ইকবালের চিন্তাধারা কর্তৃক অনুপ্রাণিত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ভারতীয় ছাত্র পাকিস্তান শব্দটি চালু করলেন।
১৯৩৫ ‘ভারত শাসন আইন’।*
* ভারতে একটি ফেডারেটেড সরকার প্রতিষ্ঠা করা হল। কেন্দ্রের শাসনভার থাকল ব্রিটিশ ভারতের উপনিবেশিক শাসকদের হাতে, আর প্রদেশগুলোর শাসনভার অর্পিত হল নির্বাচিত ভারতীয় কর্মকর্তাদের হাতে। ১৯৪৭ সালে ভারত আর পাকিস্তান ‘আজাদ’ হলেও, এই উত্তরউপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলো উপনিবেশের ছায়া থেকে বেরোতে পারে নি, তাদের আইনী কাঠামোর ভিত্তি রয়ে গেছে উপনিবেশিক আমলের ভারত শাসন আইন।
১৯৩৮ কবি আল্লামা ইকবালের মৃত্যু।
১৯৩৯-৪৫ ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ’।
১৯৪০ ‘লাহোর প্রস্তাব’: ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরে মুসলিম লীগের সম্মেলনে মুসলমান-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোতে কয়েকটি মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা দাবি গৃহীত হল, তারিখটি ছিল ২৩ মার্চ।*
* শুরুতে অখণ্ড পাকিস্তানের প্রস্তাব তোলা হয়নি, অখণ্ড পাকিস্তানের দাবি আরো পরে উঠেছে। তবে এসময়ই জিন্নাহ দ্বিজাতি তত্ত্ব প্রদান করেন। এই তত্ত্ব অনুসারে, হিন্দু আর মুসলমানরা স্রেফ সম্প্রদায়গতভাবেই পৃথক নন, তারা স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ধারণা করা দুটি জাতি।
১৯৪১ লাহোর প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় লাহোরের ইসলামিয়া পার্কে আবু আলা মওদূদী প্রতিষ্ঠা করলেন জামায়াতে ইসলামী।*
* মওদূদী লাহোর প্রস্তাব সমর্থন করেন নি, কেননা তিনি সর্বপ্রকার জাতীয়তাবাদকে ‘ইসলামবিরোধী’ মনে করতেন। তবে ইতিহাস তার কল্পলৌকিকতাকে প্রশ্রয় দেয়নি। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের মত জামায়াতে ইসলামীও পার্টিশনড হয়ে যায়: জামায়াতে ইসলামী হিন্দ আর জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান।
১৯৪২ ভারতে আপোস প্রস্তাব নিয়ে ক্রিপস মিশনের আগমন। এই মিশন থেকে প্রস্তাব রাখা হল, বিশ্বযুদ্ধের পরে ভারতকে ডমিনিয়ন স্ট্যাটাস দেয়া হবে। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি) এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর নেতৃত্বে শুরু হল ভারত ছাড় আন্দোলন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অক্ষশক্তির সাথে হাত মেলালেন। তাঁর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ) বার্মায় ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হল। আইএনএ ও সাম্রাজ্যিক জাপানের হাতে সিঙ্গাপুরের পতন।
১৯৪৫ ব্রিটিশ ভারতের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনগুলোতে মুসলমান-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোতে মুসলমানদের একটি স্বতন্ত্র আবাসভূমির দাবিতে প্রচারণা চালাল মুসলিম লীগ।* প্রায় সবকটি মুসলিম আসনে মুসলিম লীগ জিতল। অমুসলিম আসনগুলোর ৯১ শতাংশ জিতল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি)।
* এসময় থেকেই অখণ্ড পাকিস্তানের ধারণা সংহত হয়।
১৯৪৬ ব্রিটিশ ভারতে কেবিনেট মিশনের আগমন, কিন্তু ভবিষ্যৎ ভারত সরকারের শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর ব্যাপারে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি) ও মুসলিম লীগের নেতারা একমত হতে না পারায় মিশন ব্যর্থ হল। এপ্রিল ৯: অখণ্ড পাকিস্তানের প্রস্তাব দিলেন হোসেন শহিদ সরোওয়ার্দি। মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ পাকিস্তানের প্রতি মুসলমানদের অঙ্গীকারবদ্ধতা প্রদশর্ন করতে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস পালনের ডাক দিলেন। কলকাতা, নোয়াখালি, ও বিহারে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা। অমৃতসর ও লাহোরে শিখ মুসলিম দাঙ্গা।
১৯৪৭ ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয় হলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন। তিনি ব্রিটিশ ভারতকে দুটি আলাদা রাষ্ট্রে পার্টিশনড করার একটা চূড়ান্ত পরিকল্পনা হাজির করলেন। ব্রিটিশ ভারতের পার্টিশন।*
* ১৪ আগস্ট, মধ্যরাত: ব্রিটিশ ভারত ‘স্বাধীন’ হল। ১৭ আগস্ট: পার্টিশন বাউন্ডারি ঘোষণা করা হল। বাউন্ডারি কমিশন প্রধান সীরিল র্যাডক্লিফ কর্তৃক ব্রিটিশ ভারত ভাগ হল। জন্ম নিল ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি রাষ্ট্র। হিন্দু, মুসলমান, ও শিখদের আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হল। শরণার্থীতে পরিণত হলেন ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। ১৯৪৯ সালের মধ্যে অধিকাংশ প্রিন্সলি স্টেট ভারতে এবং অল্প কয়েকটি পাকিস্তানে যোগ দেয়।
জুনাগড় আর হায়দারাবাদকে জোরপূর্বক ভারতভুক্ত করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের সামনে ভারত পাকিস্তান যেকোন একটিতে যোগদানের সুযোগ রাখা হয়, মহারাজা হরি সিং কালক্ষেপন করেন। জম্মু ও কাশ্মীরের ওপর ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের দাবি থাকায় দ্বন্দ্ব দেখা দেয়, সেই দ্বন্দ্ব এখনো চলছে।
চৌধুরী গোলাম আব্বাসের নেতৃত্বাধীন মুসলিম কনফারেন্স পাকিস্তানে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল।
স্যার সিরিল র্যাডক্লিফ পার্বত্য চট্টগ্রামকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করেন। এটা চিটাগং হিল ট্র্যাক্টস পিপলস এসোসিয়েশন ভালোভাবে নেয়নি। ফলে রাঙামাটিতে ভারতের জাতীয় পতাকা আর বান্দরবানে বার্মার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
উত্তর ভারত থেকে অসংখ্য মোহাজের পাকিস্তানে আসলেন। এদের অধিকাংশই সিন্ধ প্রদেশে বসতি স্থাপন করেন। নবগঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তান তার আফগান সীমান্ত বন্ধ করে দিল।
পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর হলেন মোহাম্মদ আলি জিন্না।
১৯৪৮ কাশ্মির নিয়ে এর আগের বছর শুরু হওয়া প্রথম ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থামাতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ: যুদ্ধবিরতি ও উভয়পক্ষের সেনাপ্রত্যাহার।*
* কাশ্মির ইস্যু নিয়ে ভারত জাতিসংঘে গেল। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি প্রস্তাব পাশ করে, যাতে কাশ্মির সংকট সমাধানে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দেয়া হয়। ভারত প্রতিশ্রুতি দিল গণভোটে যে সিদ্ধান্ত হয় মেনে নেবে, কিন্তু পরবর্তীতে ভারত তার এই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে।
পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন করা হল। গঠিত হল পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিপি)।
মৃত্যুবরণ করলেন কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ। পাকিস্তানের শাসনভার হাতে নিলেন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান। নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হলেন আবু আলা মওদূদী।
কাওয়ালি শিল্পী নুসরাত ফতেহ আলি খানের জন্ম।
১৯৪৮-৫১ পাকিস্তানের কারাগারে নিঃক্ষিপ্ত হলেন ৩ হাজার কমিউনিস্ট।
১৯৪৯ মৌলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হল পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামি মুসলিম লীগ। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রথম ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের অবসান ঘটল।* কাশ্মীর সংকট নিরসনে দুই পক্ষই জাতিসংঘ কর্তৃক গণভোট আয়োজনের প্রস্তাবে তাদের সম্মতি জানাল।
* যুদ্ধে কাশ্মীরের দুই-তৃতীয়াংশ ভারতের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
১৯৫০ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় থেকে জমিদাররা যে বিশেষাধিকার ভোগ করে আসছিল, এবছর ‘ইস্ট বেঙ্গল স্টেট একুইজিশন এন্ড টেন্যান্সি এক্ট’ তার অবসান ঘটাল।
লিয়াকত-নেহরু চুক্তি: সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা প্রশমিত করতে লিয়াকত আলি খান আর পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু চুক্তিবদ্ধ হলেন।
‘খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাযজ্ঞ’: পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহীর খাপড়া ওয়ার্ডে গুলি চালিয়ে পাঁচ জন বন্দীকে হত্যা করা হয়। এরা হলেন – কম্পরাম সিং, বিজন সেন, দেলোয়ার হোসেন, হানিফ শেখ, সুধীন ধর, সুখেন ভট্টাচার্য, এবং আনোয়ার হোসেন। সকলেই কমিউনিস্ট ছিলেন।
আবু আলা মওদূদী এবছরই কারামুক্তি লাভ করেন।
১৯৫১ আততায়ীদের হাতে খুন হলেন লিয়াকত আলী খান। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন খাজা নাজিমুদ্দিন। পূর্ব পাকিস্তানে গঠিত হল আওয়ামী মুসলিম লীগ।
১৯৫২ ভাষা আন্দোলন শুরু। জাতীয়তাবাদীদের দাবি ছিল বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে হবে। কমিউনিস্টরা অবশ্য পাকিস্তানের সব প্রাদেশিক ভাষারই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি তোলেন।
গঠিত হল পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন।
পাকিস্তানি ক্রিকেটার ও রাজনীতিক ইমরান খানের জন্ম।
১৯৫৩ পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগ সরকারের বিরুদ্ধে কয়েকটি রাজনৈতিক দল মিলে গঠন করল যুক্তফ্রন্ট।*
* আওয়ামি মুসলিম লীগ আর কৃষক প্রজা পার্টির নেতৃত্বে কয়েকটি ২১ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে। যুক্তফ্রন্টের প্রধান তিন নেতা ছিলেন হোসেন শহিদ সরোওয়ার্দি, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, আর মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। যুক্তফ্রন্টের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল পূর্ববঙ্গের স্বায়ত্তশাসন।
নয়া দিল্লিতে ভারত আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক। বৈঠকে সাব্যস্ত হল, পরের বছর গণভোট হবে। কিন্তু এটা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি কেউ।
পাকিস্তানে গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রীকে পুরো মন্ত্রীসভাসহ বরখাস্ত করলেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা আবু আলা মওদূদী কাদিয়ানি সমস্যা নামে একটি বই লিখে তীব্র সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করেন। ফলে গ্রেপ্তার হন, বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।*
* মুসলিম দেশগুলোর চাপের কারণে কার্যকর করা যায়নি।
১৯৫৪ পাকিস্তান সাউথইস্ট এশিয়ান ট্রিটি অর্গানাইজেশনে (সিয়াটো) যোগ দিল। পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে যুক্তফ্রন্টের জয়, প্রদেশটিতে মুসলিম লীগ শাসনের সমাপ্তি ঘটল। পাকিস্তান সরকার কমিউনিস্ট পার্টিকে বেআইনী ঘোষণা করল।
১৯৫৫ “এক ইউনিট” পরিকল্পনা চালু করা হল, যার আওতায় পশ্চিম পাকিস্তানের চারটি প্রদেশকে একটি একক প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
১৯৫৬ পাকিস্তানের নাম বদলে ইসলামি প্রজাতন্ত্র পাকিস্তান রাখা হল।*
* এপর্যায়েও পাকিস্তান কেবল নামেই ইসলামি প্রজাতন্ত্র ছিল, বাস্তব রাজনীতিতে ধর্মীয় প্রভাব সামান্যই ছিল।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান গৃহীত হল। এই সংবিধানের আলোকেই ব্রিটিশ ভারতের পূর্ববঙ্গ প্রদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ব পাকিস্তানে পরিণত হয়। পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ উর্দু আর বাংলা দুই ভাষাকেই রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিল।
প্রেসিডেন্ট হলেন ইস্কান্দার মির্জা।
১৯৫৭ আওয়ামী লীগ নেতা ও পাকিস্তানে র প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহিদ সরোওয়ার্দির সাথে পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক মতবিরোধের জের ধরে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করলেন মৌলানা ভাসানী। গঠন করলেন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। ন্যাপের উদ্যোগে ফুলছড়িতে গঠিত হল কৃষক সমিতি।
১৯৫৮ ইস্কান্দার মির্জা সংবিধান বাতিল করে সামরিক আইন জারি করলেন। মুসলিম লীগকে বিলুপ্ত করা হল। এক সামরিক ক্যুদেতায় পাকিস্তানে ক্ষমতায় আসলেন আইয়ুব খান। ইস্কান্দার মির্জাকে নির্বাসিত করা হল। মৌলানা ভাসানীকে গ্রেপ্তার করা হল।
১৯৫৯ ‘মৌলিক গণতন্ত্র’।
১৯৬০য়ের দশক এই দশকটি পাকিস্তানের ‘উন্নয়নের দশক’ বলে পরিচিত। এসময় দেশটির ক্ষমতায় ছিলেন স্বৈরশাসক আইয়ুব খান। উপমহাদেশে ‘উন্নয়ন’ ঐতিহাসিকভাবেই স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অজুহাত মাত্র।
১৯৬০ সিন্ধু নদের পানির ভাগ নিয়ে ভারত-পাকিস্তান চুক্তি।
১৯৬১ পশতুনিস্তান ইস্যু নিয়ে আফগানিস্তানের সাথে সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ল পাকিস্তান।*
* দাউদ পাকিস্তানে ভূখণ্ডে আফগান সেনা ও গোত্রীয় যোদ্ধাদের একটা সম্মিলিত বাহিনী পাঠালেন। আইয়ুব খান আফগানিস্তানে পাকিস্তানি দূতাবাস বন্ধ করে দিলেন। পাকিস্তানের বিমান বাহিনী কোনার প্রদেশে বোমাবর্ষণ করল। বন্ধ হয়ে গেল দুই দেশের সীমান্ত চলাচল। আঠারো মাস ধরে চলল এই সীমান্ত সংঘাত। করাচির ওপর বাণিজ্যের জন্য নির্ভরশীল হওয়ায় আফগানিস্তানেরই বেশি ক্ষতি হল।
পাকিস্তানে নতুন রাজধানী ইসলামাবাদের নির্মাণকাজ শুরু হল।
১৯৬২ পাকিস্তানের নতুন সংবিধান রাষ্ট্রপতির শাসন জোরদার করল। আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন শুরু হল। এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন মোহাম্মদ ফরহাদ, পরবর্তীকালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক। আইয়ুবশাহীর বিরুদ্ধে গঠিত হল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)। ঢাকায় ভারতীয় উপহাইকমিশনের পলিটিকাল অফিসার শশাঙ্ক শেখর ব্যানার্জীর মাধ্যমে পূর্ব বাংলার মুক্তি সংগ্রামের জন্য ভারতের সাহায্য চেয়ে অনুরোধ জানালেন শেখ মুজিবুর রহমান। ছাত্রলীগের ভেতরে একটি নিউক্লিয়াস গঠন করা হল। এর উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার জন্য কাজ করা।
করাচি থেকে সরিয়ে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে নিয়ে যাওয়া হল।
১৯৬৩ ইরান সরকার আফগান আর পাকিস্তানি প্রতিনিধিদেরকে তেহরানে নিমন্ত্রণ জানাল এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখল।
১৯৬৪ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলো মিসেস ফাতেমা জিন্নাহকে দাঁড় করাল।
১৯৬৫ রাশিয়া ও চীনের মধ্যকার ‘আন্তর্জাতিক মতাদর্শিক মহাবিতর্কের’ জের ধরে ভাগ হয়ে গেল পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিলেন দেওয়ান ইশরাতুল্লাহ সৈয়দ ফারুক রহমান। কাশ্মির নিয়ে দ্বিতীয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হল।
১৯৬৬ শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা ঘোষণা করলেন। রাশিয়া ও চীনের মধ্যকার ‘আন্তর্জাতিক মতাদর্শিক মহাবিতর্কের’ জের ধরে ভাগ হয়ে গেল পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (ইপিসিপি)। সুখেন্দু দস্তিদার, মোহাম্মদ তোয়াহা, নজরুল ইসলাম, আবদুল হক, শরদিন্দু দস্তিদার, ও দেলোয়ার হোসনসহ চীনপন্থীরা আলাদা কমিটি গঠন করেন।
১৯৬৭ রাশিয়া ও চীনের মধ্যকার ‘আন্তর্জাতিক মতাদর্শিক মহাবিতর্কের’ জের ধরে ভাগ হয়ে গেল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। মস্কোপন্থী ন্যাপের প্রধান হলেন খান আবদুল ওয়ালি খান। এই ন্যাপের পূর্ব পাকিস্তান শাখার প্রধান হলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, যার নামানুসারে পূর্ব পাকিস্তানে পার্টিটি ন্যাপ-মোজাফফর নামে পরিচিতি পায়। চীনপন্থী ন্যাপের প্রধান হলেন মৌলানা ভাসানী। তাঁর নামানুসারে পূর্ব পাকিস্তানে পার্টিটি ন্যাপ-ভাসানী নামে পরিচিতি পায়। গঠিত হল পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) [ইপিসিপি-এমএল]। ইপিসিপি-এমএল ‘জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা’ কায়েমের সিদ্ধান্ত নেয়।
জুলফিকার আলি ভুট্টো প্রতিষ্ঠা করলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।
১৯৬৮ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায় শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হল, প্রায় বছরখানেক কারাবন্দী থাকেন তিনি।
১৯৬৯ সামরিক আইন জারি করলেন আইয়ুব খান। পাকিস্তানের দুই অংশেই শুরু হল স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন। ফেব্রুয়ারি ২২: পাকিস্তান সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি প্রদান করল। মার্চ ৭: পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষে মাহবুব উল্লাহ প্রকাশ করলেন স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠার ১১ দফা কর্মসূচি। মার্চ ২৬: তীব্র গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করলেন আইয়ুব খান। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হলেন আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান।
১৯৭০ ডিসেম্বর: পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। মৌলানা ভাসানীর অধীনস্ত ন্যাপ নির্বাচন বয়কট করে। এই নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দকৃত ১৬২টি আসনের মধ্যে ১৬০টি জেতে, অপরদিকে জুলফিকার আলি ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দকৃত ১৩৮টি আসনের মধ্যে ৮১টি জেতে।
“এক ইউনিট” পরিকল্পনা রদ করা হল।
১৯৭১ পূর্ব বাংলায় নৃশংস গণহত্যা চালাল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। শুরু হল মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানের পরাজয় ও আত্মসমর্পণ, স্বাধীন বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ। পদত্যাগ করলেন আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান। পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন জুলফিকার আলি ভুট্টো। যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধান করতে সরকারি তদন্তের হুকুম দেয়া হল। ডিসেম্বর ৩-১৬: তৃতীয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ।
মুক্তিপ্রাপ্ত প্রামাণ্যচিত্র
স্টপ জেনোসাইড।
১৯৭২ ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে শিমলা চুক্তি সাক্ষরিত। এই চুক্তিতে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে জাতিসংঘ যে যুদ্ধবিরতি রেখা নির্ধারণ করেছিল তাকে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বলে ঘোষণা করা হল। জুলফিকার আলি ভুট্টো ভারী শিল্প জাতীয়করণ করলেন ও ভূমি সংস্কারের উদ্যোগ নিলেন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোয় পাকিস্তানি ছায়াছবির প্রদর্শন নিষিদ্ধ হল।
১৯৭৩ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন জুলফিকার আলি ভুট্টো। দেশটিতে একটি নতুন সংবিধান গৃহীত হল।
১৯৭৪ পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতিপ্রদান করল।
১৯৭৬ ইরানের মধ্যস্ততায় আফগানিস্তান আর পাকিস্তানের সম্পর্কে উন্নতি। মোহাম্মদ দাউদ খান পাকিস্তান সফর করলেন। আফগানিস্তান সফর করলেন জুলফিকার আলি ভুট্টো।
বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করল পাকিস্তান।
প্রকাশিত বই
জাঁ ফেয়ারলি, দ্য লায়ন রিভারস: দ্য ইন্দুস।
১৯৭৭ জুলফিকার আলি ভুট্টোর বিরুদ্ধে নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগ উঠল। পাকিস্তান জুড়ে দাঙ্গা। অরাজকতার সুযোগ নিয়ে এক সামরিক ক্যুদেতায় ভুট্টোকে উৎখাত করে ক্ষমতায় এলেন জিয়াউল হক।
১৯৭৮ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হলেন জিয়াউল হক।*
* পাকিস্তানের রাজনীতির ইসলামিকরণ এসময় থেকেই শুরু হয়।
১৯৭৯ পাকিস্তানে ইসলামিক পেনাল কোড প্রবর্তন করা হল। জুলফিকার আলি ভুট্টোকে ফাঁসিতে ঝোলালেন জিয়াউল হক। জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা আবু আলা মওদূদীর মৃত্যু।
১৯৮৩ প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক ঘোষণা করলেন, ১৯৮৫ সালের মধ্যে সামরিক আইন তুলে নেয়া হবে।
১৯৮৪ পাকিস্তানের কাছ থেকে সিয়াচেন কেড়ে নিল ভারত।
১৯৮৪-৮৭ পাকিস্তানের গোয়েন্দাসংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টিলিজেন্স (আইএসআই) এসময় প্রায় ৮০ হাজার মুজাহিদিনকে প্রশিক্ষণ দেয়। আফ-পাক সীমান্তে আহত মুজাহিদিনদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। এসবই ঘটেছিল জিয়াউল হকের ইচ্ছায়।*
* পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরতন্ত্রী। ১৯৭৭ সালে জুলফিকার আলী ভুট্টোকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসেন। দুবছর পর এপ্রিলে ভুট্টোকে ফাঁসিতে ঝোলান। দেশটির গণতন্ত্র ধবংস করায় ‘অনন্যসাধারণ’ ভূমিকা রেখেছেন। ক্ষমতার স্বার্থে ধর্মের ধোঁয়া তুলে জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছিলেন। পাকিস্তানি প্রগতিশীলদের বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। আফগান মুজাহিদিনদের পেছনে জিয়ার গোপন মদত ছিল।
১৯৮৫ জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল।
প্রকাশিত হল
খুরশীদ কামাল আজিজ, দ্য মার্ডার অফ হিস্ট্রি: আ ক্রিটিক অফ হিস্ট্রি টেক্সটবুকস ইউজড ইন পাকিস্তান।
১৯৮৬ নতুন ফেডারেল মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করল। সামরিক আইন তুলে নেয়া হল। লন্ডন থেকে লাহোরে ফিরে আসলেন বেনজির ভুট্টো।
১৯৮৭ পাকিস্তানে সরকার এবং জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদগুলো ভেঙে দিলেন জিয়াউল হক। নতুন নির্বাচন আয়োজন করার নির্দেশ দিলেন।
১৯৮৮ এক বিমান দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হকের মৃত্যু। দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হলেন গোলাম ইসহাক খান।
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে জিতল বেনজির ভুট্টোর পিপিপি। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন বেনজির ভুট্টো, তিনিই ইতিহাসের প্রথম মুসলমান নারী প্রধানমন্ত্রী।
এপ্রিল ১৪: জেনেভায় আফগানিস্তান, পাকিস্তান, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শান্তিচুক্তি সাক্ষরিত হল।
১৯৮৯ আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের অবসান, এই আগ্রাসনের ফলে ৬০ লক্ষ আফগান শরনার্থী হয়ে পাকিস্তান ও ইরানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ইসলামাবাদে সিআইএ’র প্রধান সংস্থাটির সদরদপ্তরে একটি দুই শব্দের সংক্ষিপ্ত বার্তা পাঠান: ‘আমরা জিতেছি’। পাকিস্তানে নির্বাসিত আফগানদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হল অন্তর্বর্তীকালীন আফগান সরকার।
১৯৯০ অযোগ্যতা আর দুর্নীতির দায়ে প্রেসিডেন্ট গোলাম ইসহাক খান বেনজির ভুট্টো সরকারকে বরখাস্ত করলেন। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন নওয়াজ শরিফ।
১৯৯১ প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ অর্থনৈতিক উদারীকরণ শুরু করলেন।
শরিয়া আইনকে আনুষ্ঠানিকভাবে আইনিবিধির অন্তর্ভুক্ত করা হল।
দেউলিয়া হয়ে গেল ব্যাংক অফ ক্রেডিটস অ্যান্ড কমার্স ইন্টারন্যাশনাল (বিসিসিআই)।
১৯৯২ অযোধ্যায় কথিত রামজন্মস্থান-স্থিত ঐতিহ্যবাহী বাবরি মসজিদ ভাঙল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) আর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) করসেবকরা। উত্তর ভারতের মুসলমানরা সাম্প্রদায়িক আক্রমণের শিকার হলেন। বাবরি মসজিদ ভাঙন ও ভারতীয় মুসলমানদের আক্রান্ত হওয়ার অজুহাতে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি হিন্দুরা সাম্প্রদায়িক আক্রমণের শিকার হলেন।
অধিনায়ক ইমরান খানের নেতৃত্বে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের শিরোপা জেতে পাকিস্তান পুরুষ ক্রিকেট দল।
১৯৯৩ সেনাবাহিনীর চাপে পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। সাধারণ নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয় মেয়াদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হলেন বেনজির ভুট্টো।
১৯৯৪ সোভিয়েত আগ্রাসনের কারণে পাকিস্তানে আশ্রয় নেয়া আফগানদের যে শরণার্থী শিবিরগুলো তৈরি হয়, সেসব শরণার্থী শিবিরের মাদ্রাসাগুলো থেকে তৈরি হল তালেবান আন্দোলন। তালেবান তালেবের বহুবচন, এর অর্থ মাদ্রাসা ছাত্র। আফ-পাক সীমান্তের মাদ্রাসা ছাত্ররাই প্রথম প্রজন্মের তালেবান।
১৯৯৬-২০০১ আফগানিস্তানের তালেবানদের ইসলামি আমিরশাহিকে দুনিয়ায় মাত্র তিনটি দেশ স্বীকৃত দিয়েছিল, তার একটি ছিল ইসলামি প্রজাতন্ত্র পাকিস্তান। বাকি দুটি দেশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। এই বছরগুলো ছিল পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দুর্ভোগ পোহানোর বছর।
১৯৯৬ দুর্নীতির দায়ে বেনজির সরকারকে বরখাস্ত করা হল।
পাকিস্তান আর তুর্কমেনিস্তানের সাথে ইউনোকলের চুক্তি সাক্ষর।*
* চুক্তিতে ঠিক হল, ১৯৯৮ সালে ২ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হবে। পাইপলাইনটি দৌলতাবাদ গ্যাসক্ষেত্র থেকে পাকিস্তানে প্রবেশ করবে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য চুক্তিটি বাস্তবায়িত হয় নাই।
১৯৯৭ দ্বিতীয় মেয়াদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হলেন নওয়াজ শরিফ।
পাকিস্তানি কাওয়ালি শিল্পী নুসরাত ফতেহ আলি খানের মৃত্যু।
প্রকাশিত বই
আকবর এস. আহমেদ, জিন্নাহ, পাকিস্তান, অ্যান্ড ইসলামিক আইডেন্টিটি: দ্য সার্চ ফর সালাদিন।
জে. হুসাইন, আ হিস্ট্রি অফ দ্য পিপলস অফ পাকিস্তান: টুওয়ার্ডস ইনডিপেন্ডেন্স।
১৯৯৮ এবছর ভারত ও পাকিস্তান পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায়। এই নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন করে তিক্ততা
দেখা দেয়। নির্বাসনে গেলেন বেনজির ভুট্টো।
প্রকাশিত বই
ইয়ান ট্যালবট, পাকিস্তান: আ মডার্ন হিস্ট্রি।
১৯৯৯ অটল বিহারি বাজপেয়ীর ঐতিহাসিক পাকিস্তান সফর। নওয়াজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ। দুইদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক লাহোর শান্তি চুক্তি সই।
দুর্নীতির দায়ে বেনজির ভুট্টো ও তাঁর স্বামী আসিফ আলী জারদারিকে কারাদণ্ড দেয়া হল। অক্টোবর ১২: এক ক্যুদেতায় সরকার উৎখাত করলেন পারভেজ মোশাররফ। দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলেন নওয়াজ শরিফ।
কার্গিলে কাশ্মির নিয়ে চতুর্থ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু, ৫০ দিনের এই যুদ্ধে ভারত জেতে।
২০০০ নওয়াজ শরিফকে ক্ষমাপ্রদান করে নির্বাসিত করা হল। সর্বোচ্চ আদালত মোশাররফের ক্যুদেতাকে বৈধতা প্রদান করল। প্রেসিডেন্ট হলেন মোশাররফ।
২০০১ ফেব্রুয়ারি: জনপরিসরে অস্ত্র প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা হল। জুলাই: ‘আগ্রা সম্মেলন’: কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা করার জন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর সাথে সাক্ষাৎ করলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ। ‘৯/১১’: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত পেন্টাগন আর নিউইয়র্ক সিটিতে অবস্থিত বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে – টুইন টাওয়ার নামে পরিচিত – আল কায়েদার হামলায় ৩,০০০ মানুষের মৃত্যু। জর্জ বুশ জুনিয়রের ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের’ সূচনা। সেপ্টেম্বর ১৯: জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে মোশাররফ জানালেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন করবে পাকিস্তান। ডিসেম্বর: ভারতের পার্লামেন্টে জঙ্গি হামলায় ১৪ জন নিহত। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়েবা ও জইশ-ই-মুহাম্মদকে দায়ী করে।
প্রকাশিত বই
স্টিফেন অল্টার, অমৃতসর টু লাহোর : আ জার্নি অ্যাক্রস দা ইন্ডিয়া পাকিস্তান বর্ডার।
২০০২ পাকিস্তানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন পারভেজ মোশাররফ। ফেব্রুয়ারি: পাকিস্তানে অপহৃত ও খুন হলেন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদক ড্যানিয়েল পার্ল। লস্কর-ই-তৈয়েবা আর জইশ-ই-মুহাম্মদকে নিষিদ্ধ করলেন প্রেসিডেন্ট মোশাররফ। আগস্ট: লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার ২০০২ গ্রহণ করা হল।
২০০৩ মার্চ ২৫: পাকিস্তানে গ্রেপ্তার হলেন আল কায়েদার অপারেশনের সাবেক প্রধান এবং রামজি ইউসূফ ও ড্যানিয়েল পার্লস উভয়ের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত খালিদ শেখ মোহাম্মদ।
কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করল পাকিস্তান ও ভারত।
২০০৪ পাকিস্তানের সংসদ একটি জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করার অনুমতি দিল যার নিয়ন্ত্রণ সেনাবাহিনীর হাতে থাকবে। জুন: পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রথমবারের মত উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে সন্দেহভাজন আল কায়েদা সদস্যদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করল। নভেম্বর: পাকিস্তানের পরমাণুবিজ্ঞানী আবদুল কাদির খান স্বীকার করলেন, তিনি দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র প্রযুক্তির গোপন রহস্য লিবিয়া, ইরান, আর উত্তর কোরিয়ার কাছে ফাঁস করে দিয়েছেন।
নিউ ইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের মধ্যে কাশ্মির নিয়ে আলোচনা শুরু।
প্রকাশিত বই
লরেন্স জিরিং, পাকিস্তান: অ্যাট দ্য ক্রসকারেন্ট অফ হিস্ট্রি।
২০০৫ এপ্রিল: ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের শ্রীনগর আর পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মুজাফফরবাদের মধ্যে বাস সার্ভিস চালু হল। মে: পাকিস্তানের কাছে এফ-১৬ জঙ্গি বিমান বেচতে রাজি হল যুক্তরাষ্ট্র। অক্টোবর: পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ ও আজাদ কাশ্মীরে রিখটার স্কেলে ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প। ৭৯-৮৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হল। গৃহহীন হলেন প্রায় ৩৩ লক্ষ মানুষ।
প্রকাশিত বই
নিহাল আহমেদ, আ হিস্ট্রি অফ রেডিও পাকিস্তান।
২০০৬ কাশ্মির নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু। কাশ্মির সমস্যার সমাধানের উদ্দেশ্যে ‘চার দফা ফর্মুলা’ প্রদান করলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ। মোশাররফের পুনর্নিবার্চন আয়োজন পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানালেন বিরোধীরা।
প্রকাশিত বই
আবদুল সাত্তার, পাকিস্তান’স ফরেন পলিসি ১৯৪৭-২০০৯: আ কনসাইজ হিস্ট্রি।
২০০৭ আগস্ট: সর্বোচ্চ আদালতের জারি করা রুলে বলা হল, নওয়াজ শরিফ নির্বাসন থেকে দেশে ফিরতে পারেন। সেপ্টেম্বর: নওয়াজ শরিফ দেশে ফিরলেন। তাঁকে তৎক্ষনাৎ আবার নির্বাসনে পাঠানো হল। অক্টোবর: নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে আসলেন বেনজির ভুট্টো। নভেম্বর: পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ইফতিখার মোহাম্মদ চৌধুরীকে বরখাস্ত করলেন প্রেসিডেন্ট মোশাররফ। এতে দেশজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখা দিল। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত প্রধান বিচারপতিকে পুনর্বহাল করল। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় লাভ করলেন পারভেজ মোশাররফ। সর্বোচ্চ আদালত এই নির্বাচনী ফলাফল চ্যালেঞ্জ করল। নভেম্বর ৩: মোশাররফ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন। প্রধান বিচারপতি ইফতেখার মোহাম্মদ চৌধুরীকে বরখাস্ত করা হল। ডিসেম্বর ২৭: রাওয়ালপিণ্ডিতে এক নির্বাচনী প্রচারাভিযান চালানোর সময় আততায়ীদের হাতে খুন হলেন বেনজির ভুট্টো। ডিসেম্বর ৩০: বেনজিরের ১৯ বছর বয়সী ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সভাপতি পদে নিয়োগ দেয়া হল।
তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) প্রতিষ্ঠা করলেন বায়তুল্লাহ মেহসুদ।
২০০৮ জানুয়ারি: পারভেজ মোশাররফের লন্ডন, প্যারিস, ও ব্রাসেলস সফর। ফেব্রুয়ারি: নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। মোশাররফের সমর্থকরা পিপিপি আর পিএমএলের কাছে হারল। মার্চ ২৫: পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন ইউসূফ রাজা গিলানি। মে: মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে এলেন পিএমএলের সদস্যরা। জুলাই: পাকিস্তান সরকারের অনুমোদনের তোয়াক্কা না করে মার্কিন বাহিনীকে দেশটির অভ্যন্তরে গ্রাউন্ড অপারেশন চালানোর অনুমতি দিলেন প্রেসিডেন্ট বুশ জুনিয়র। আগস্ট: অভিশংসনের হুমকির মুখে পদত্যাগ করলেন প্রেসিডেন্ট মোশাররফ। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ আলি জারদারি।
মুম্বাইয়ে পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গিদের হামলায় দেড়শতাধিক মানুষ নিহত।
২০০৯ দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে এক মার্কিন ড্রোন হামলায় খুন হলেন পাকিস্তান তালেবানের প্রধান বায়তুল্লাহ মেহসুদ।
২০১০ পাকিস্তানে ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় ১৬০০ মানুষের মৃত্যু। নানানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেন ২ কোটি মানুষ। এপ্রিল: উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের নাম বদলে খাইবার পাখতুনওয়া রাখা হল।
২০১১ পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইন সংশোধনের জন্য প্রচারাভিযানের জের ধরে সংশোধনের দুই সমর্থক খুন হলেন। এদের একজন পাঞ্জাবের গভর্নর সালমান তাসির, অন্যজন সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী শাহবাজ ভাট্টি। মে ১: পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন নেভি সিলের এক অতর্কিত অভিযানে খুন হলেন আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন।*
* এই হত্যাকাণ্ড ছিল আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আন্তর্জাতিক আইনে একটা রাষ্ট্র আরেকটা রাষ্ট্রের অনুমতি ছাড়া তার সার্বভৌম ভূখণ্ডে ঢুকে কাউকে হত্যা করতে পারে না।
প্রকাশিত বই
ইমরান খান, পাকিস্তান: আ পার্সোনাল হিস্ট্রি।
২০১২ তালেবান বন্দুকধারীদের গুলিতে জখম হলেন মালালা ইউসূফজাই।
প্রকাশিত বই
ইয়ান ট্যালবট, পাকিস্তান: আ নিউ হিস্ট্রি।
২০১৩ তৃতীয় মেয়াদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হলেন নওয়াজ শরিফ।
বাংলাদেশ সরকার ১৩ জন পাকিস্তানিকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সম্মাননা প্রদান করল। এঁরা হলেন নাসিম আখতার, তাহিরা মাজহার আলি, আহমেদ সালিম, ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ, ওয়ারিশ মীর, আনোয়ার পীরজাদা, হাবিব জালিব, একবাল আহমেদ, মীর গাউস বখশ বিজেনজো, মালিক গোলাম জিলানি, কাজী ফায়েদ মোহাম্মদ, শামিম আশরাফ মালিক, এবং জাফর মালিক। ওয়ারিশ মীরের পক্ষে তাঁর পুত্র সাংবাদিক হামিদ মীর এবং মালিক গোলাম জিলানির পক্ষে তাঁর কন্যা মানবাধিকার কর্মী আসমা জাহাঙ্গির পুরস্কার গ্রহণ করেন।
প্রকাশিত বই
আয়েশা জালাল, দ্য পিটি অফ পার্টিশন: মান্টোজ লাইফ, টাইমস, অ্যান্ড ওয়ার্ক অ্যাক্রস দ্য ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ডিভাইড।
হুসাইন হাক্কানি, ম্যাগনিফিসেন্ট ডিলিউশনস: পাকিস্তান, দ্য ইউনাইটেড স্টেটস, অ্যান্ড অ্যান এপিক হিস্ট্রি অফ মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং।
২০১৪ এযাবৎকালের সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হিশাবে ১৭ বছর বয়সে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেলেন মালালা ইউসূফজাই। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশওয়ারের এক ইশকুলে হামলা চালিয়ে তালেবানরা ১৫০ জন মানুষকে হত্যা করল। নিহতদের অধিকাংশই শিশু।
প্রকাশিত বই
আয়েশা জালাল, দ্য স্ট্রাগল ফর পাকিস্তান: আ মুসলিম হোমল্যান্ড অ্যান্ড গ্লোবাল পলিটিকস।
ওসমান সামিউদ্দিন, দ্য আনকোয়েট ওয়ানস: আ হিস্ট্রি অফ পাকিস্তান ক্রিকেট।
২০১৫ চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে বিলিয়ন ডলারের অবকাঠামো চুক্তি সই।
প্রকাশিত বই
আনাম জাকারিয়া, দ্য ফুটপ্রিন্টস অফ পার্টিশন: ন্যারেটিভস অফ ফোর জেনারেশনস অফ পাকিস্তানিজ অ্যান্ড ইন্ডিয়ানস।
কামরান আসদার আলি, কমিউনিজম ইন পাকিস্তান: পলিটিকস অ্যান্ড ক্লাস অ্যাকটিভিজম ১৯৪৭-৭২।
ফারাহনাজ ইস্পাহানি, পিউরিফাইং দ্য ল্যান্ড অফ দ্য পিউর: আ হিস্ট্রি অফ পাকিস্তান’স রিলিজিয়াস মাইনরিটিজ।
২০১৬ পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধান হিশাবে নিয়োগ পেলেন কামার জাভেদ বাজওয়া। আবদুল সাত্তার ইধির মৃত্যু। পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশে মার্কিনীদের এক ড্রোন হামলায় খুন হলেন আফগান তালেবানদের নতুন নেতা মোল্লা আখতার মনসুর।
প্রকাশিত বই
রাফিয়া জাকারিয়া, দ্য আপস্টেয়ার্স ওয়াইফ: অ্যান ইন্টিমেট হিস্ট্রি অফ পাকিস্তান।
হামিদ খান, আ হিস্ট্রি অফ দ্য জুডিশিয়ারি ইন পাকিস্তান।
২০১৭ লাল শাহবাজ কালান্দারের মাজারে এক বোমা হামলায় ৯০ জন মানুষের মৃত্যু, আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করে। আফগানিস্তানের সাথে সীমান্ত বন্ধ করে দিল পাকিস্তান। ওবামার আফগানিস্তান নীতিতে পরিবর্তন আনলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি জানালেন, অতীতে নির্ধারণ করা কোন সময়সীমা নয়, ‘মাঠের পরিস্থিতি’ কেমন সেই বিবেচনায় সেনা প্রত্যাহার করা হবে। আফগানিস্তানকে নতুন করে গড়ে তোলার কাজে সাহায্য করার জন্য ভারতের প্রতি আহবান জানালেন তিনি, আর সন্ত্রাসবাদীদেরকে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে পাকিস্তানকে দুষলেন। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে দুর্নীতির দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য করল। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় নওয়াজকে কারাদণ্ড দেয়া হল।
প্রকাশিত বই
টি. সি. এ. রাঘবান, দ্য পিপল নেক্সট ডোর: দ্য কিউরিয়াস হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়াজ রিলেশনস উইথ পাকিস্তান।
২০১৮ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন তেহরিক-ই-ইনসাফের ইমরান খান। কাবুলে তালেবানরা একগুচ্ছ সন্ত্রাসবাদী হামলা চালাল, এতে ১১৫ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হল। এই ঘটনার জের ধরে পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটে, ট্রাম্প প্রশাসন দেশটিতে কয়েক বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা বাতিল করে।
প্রকাশিত বই
আনাম জাকারিয়া, বিটউইন দ্য গ্রেট ডিভাইড: আ জার্নি ইনটু পাকিস্তান-এডমিনিস্টার্ড কাশ্মীর।
মুনিরা ছিমা, উইমেন অ্যান্ড টিভি কালচার ইন পাকিস্তান: জেন্ডার, ইসলাম অ্যান্ড ন্যাশনাল আইডেন্টিটি।
মুহাম্মদ কাসিম জামান, ইসলাম ইন পাকিস্তান: আ হিস্ট্রি।
২০১৯ ফেব্রুয়ারি ১৪: জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক জঙ্গি হামলায় সিপিআরএফের ৪০ জন জওয়ান নিহত হলেন। জইশে মোহাম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করে। ফেব্রুয়ারি ২৬: পাকিস্তানের বালাকোটে বিমানহামলা চালাল ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ)।
প্রকাশিত বই
আনাম জাকারিয়া, ১৯৭১: আ পিপলস হিস্ট্রি ফ্রম বাংলাদেশ, পাকিস্তান, অ্যান্ড ইন্ডিয়া।
এন. ইলাহি, টেরোরিজম ইন পাকিস্তান: দ্য তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) অ্যান্ড দ্য চ্যালেঞ্জ টু সিকিউরিটি।
২০২০
প্রকাশিত বই
পল্লবী রাঘবান, অ্যানিমোসিটি অ্যাট বে: অ্যান অল্টারনেটিভ হিস্ট্রি অফ দ্য ইন্ডিয়া-পাকিস্তান রিলেশনশিপ, ১৯৪৭-১৯৫২।
২০২১ আগস্ট: আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করল মার্কিনীরা। তালেবানদের হাতে কাবুলের পতন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন। পাকিস্তান, চীন, ও রাশিয়া কিছু শর্তসাপেক্ষে তালেবান সরকারের সাথে সম্পর্ক রক্ষায় আগ্রহ দেখাল।
কাশ্মীরের আজাদি আন্দোলনের অন্যতম নেতা সাইয়েদ আলী শাহ গিলানির মৃত্যু। পাকিস্তানের নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞানী আবদুল কাদির খানের মৃত্যু।
২০২২ এপ্রিল ১০: এক অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হলেন ইমরান খান। এপ্রিল ২২: প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন শাহবাজ শরিফে।
মে ২৫-২৬: রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে ইমরানের লং মার্চ।
আগস্ট ২২: একটি “সন্ত্রাস-বিরোধী” আইনে ইমরানকে অভিযুক্ত করা হল, পরে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
অক্টোবর ২১: পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন পাঁচ বছরের জন্য ইমরানকে রাষ্ট্রীয় পদে করার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করে। অক্টোবর ২৮: লাহোর থেকে ইসলামাবাদ অভিমুখে ইমরানের দ্বিতীয় লং মার্চ।
প্রকাশিত বই
তারিক রহমান, পাকিস্তান’স ওয়ারস: অ্যান অল্টারনেটিভ হিস্ট্রি।
২০২৩ মে ৯: আধাসামরিক নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ইমরানকে গ্রেপ্তার করল, তাঁর দল এটাকে অপহরণ আখ্যায়িত করল।
প্রকাশিত বই
আসাদ আলি ও কামরান আসদার আলি (সম্পা.), টুওয়ার্ডস পিপলস হিস্ট্রিজ ইন পাকিস্তান: (ইন)অডিবল ভয়েসেস, ফরগটেন পাস্টস।
২০২৪ জানুয়ারি ১০: আগের বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মারা যাওয়া সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফকে ২০১৯ সালে দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখল পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত। জানুয়ারি ১৬: পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালাল ইরান। জানুয়ারি ১৭: হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান থেকে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার। জানুয়ারি ১৮: ‘অপারেশন মার্গ বার সারমাচার’: ইরানের ভেতরে পাক বিমান বাহিনীর প্রতিহিংসামূলক হামলা। বালুচ লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ) ও বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) শিবিরগুলো লক্ষ্য করে। হামলায় ৪ নারী ও ৩ শিশু খুন হলেন, যাঁদের সকলেই বিদেশি নাগরিক। জানুয়ারি ২৭: ইরানের সারাভানে খুন হলেন ৯ পাকিস্তানি শ্রমিক। জানুয়ারি ২৯: ‘অপারেশন দারা-ই বোলান’: পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বিএলএর সমন্বিত আক্রমণ। জানুয়ারি ৩০: রাষ্ট্রীয় গুপ্ততথ্য ফাঁস করার দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হল।
ফেব্রুয়ারি: পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। ভোটের দৌড়ে ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ এগিয়ে থাকলেও সামরিক বাহিনীর কর্তৃক কারচুপি হয়েছে এই অভিযোগের মধ্যেই মুসলিম লীগের (এন) নওয়াজ শরিফ বিজয় ঘোষণা করলেন। ফেব্রুয়ারি ১৪: পিএলএম-এন, পিপিপি, ও তাদের শরিক দলগুলো জোট সরকার গঠন করার ঘোষণা দিল।
মার্চ ৩: দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন শাহবাজ শরিফ। মার্চ ১০: দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন আসিফ আলি জারদারি।
তথ্যসূত্র
আব্দুল্লাহ, শোয়েব। ২০২১। জানাজা থেকে স্বাধীনতা: কাশ্মীরে আজাদির লড়াই ও তার সাম্প্রতিক বৃত্তান্ত। ঢাকা: আদর্শ।
পারভেজ, আলতাফ। ২০১৯। কাশ্মির ও আজাদির লড়াই। দ্বিতীয় মুদ্রণ। ঢাকা: ঐতিহ্য।
রাফিন, ইরফানুর রহমান। ২০২২। সময়রেখা: মহাবিশ্বের উৎপত্তি থেকে করোনাসংকট পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত ঘটনাপঞ্জি। ঢাকা: দিব্যপ্রকাশ।
Ahmad, Eqbal. 2001. Terrorism: Theirs & Ours, New York: Seven Stories Press.
Al Jazeera. 2023. “Timeline: Imran Khan, from ouster to arrest in Pakistan.” Al Jazeera, May 9, 2023.
https://www.aljazeera.com/news/2023/5/9/timeline-imran-khan-from-ouster-to-arrest-in-pakistan
BBC. 2019. “Pakistan profile – Timeline.” BBC, March 4, 2019.
https://www.bbc.com/news/world-south-asia-12966786
Crompton, Samuel Willard. 2007. Pakistan. 2nd Ed. New York: Chelsea House.
Gordon, Matthew S.. 2009. Islam. 4th ed. Chelsea House: New York.
Hassan, Aziz. 2013. ‘‘Friends’ in the enemy country honoured.’ bdnews24.com, March 24, 2013.
https://bdnews24.com/bangladesh/2013/03/24/friends-in-the-enemy-country-honoured
Louër, Laurence. 2020. Sunnis and Shiʻa: A Political History of Discord. Translated by Ethan Rundell. Princeton & Oxford: Princeton University Press.
Malik, Iftikhar H.. 2008. The History of Pakistan. Westport, Connecticut: Greenwood Press.
McHugo, John. 2018. A Concise History of Sunnis & Shi‘is. Washington, DC: Georgetown University Press.
Naveed, Muhammad Bin. 2015. “Gandhara Civilization.” World History Encyclopedia. Last modified July 07, 2015. https://www.worldhistory.org/Gandhara_Civilization/.
Pattanaik, Devdutt. 2022. “Pashupati and the Harappan seal”. The Hindu, February 26, 2022.
https://www.thehindu.com/society/history-and-culture/pashupati-and-the-harappan-seal/article65070760.ece
Reidel, Bruce. 2014. What We Won: America’s Secret War in Afghanistan, 1979-89. Washington, D.C.: Brookings Institution Press.
Singh, Nikky-Guninder Kaur. 2009. Sikhism. 3rd ed. New York: Chelsea House.
Truschke, Audrey. 2020. “Hindutva’s Dangerous Rewriting of History”, South Asia Multidisciplinary Academic Journal [Online], 24/25 | 2020, Online since 23 October 2020, connection on 05 June 2023. URL: http://journals.openedition.org/samaj/6636; DOI: https://doi.org/10.4000/samaj.6636
Wynbrandt, James. 2009. A Brief History of Pakistan. New York: Facts On File.
নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।
অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ
দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি
তথ্যবহুল লেখা
অনেক ধন্যবাদ।