
লেবানন
Featured Image: Wikimedia Commons.

পূর্বসাল
৩০০০ ফিনিশীয়রা লেবাননে বসতিস্থাপন করল।*
* সেকালে দেশটি ফিনিশিয়া নামে পরিচিত ছিল।
৮৬৮ অ্যাসিরীয়দের ফিনিশিয়া বিজয়।
৮১৪ লেবাননের টায়ারের বসতিস্থাপনকারীরা তিউনিসিয়ায় প্রতিষ্ঠা করল কার্থেজ নগরী।
৬০০ বাবেলীয়দের ফিনিশিয়া বিজয়।
৫৩৮ পারসিকদের ফিনিশিয়া বিজয়।
৩৩২ ফিনিশিয়া ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ওপর গ্রিকদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হল।
৬৪ ফিনিশিয়া রোমক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।
৬ পূর্বসাল – ৩০ সাল বর্তমান ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের শহর বেথলেহেমে জন্ম নেয়া খ্রিস্টধর্মের প্রাণকেন্দ্র জেসাস ক্রাইস্টের জীবনকাল।
সাল
৫৭০ হযরত মুহাম্মদের (সা.) জন্ম।
৬০০ ম্যারোনাইটরা বর্তমান লেবাননে বসতিস্থাপন করল।
৬৩০-৩৯ আরবদের লেবানন বিজয় ও দেশটিতে ইসলামের প্রসার।
১২৮০-৮৯ বর্তমান লেবানন মামলুক সুলতানশাহির অংশ হয়ে গেল।
১১১৫ ক্রুসেডাররা জাবাইলে নির্মাণ করল সেইন্ট জন মার্ক ক্যাথেড্রাল।
১৫১৬ বর্তমান লেবানন ওসমানি সুলতানশাহির অংশ হয়ে গেল।
১৮৬০ লেবাননের দ্রুজ আর ম্যারোনাইট খ্রিস্টানদের মধ্যে সংঘাত।
১৮৬৬ প্রতিষ্ঠিত হল আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অফ বৈরুত।
১৮৮১ ফরাসি জেসুইটরা বৈরুতে খুলল দ্য রোমান ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি সাঁ-জোসেফ।
১৯১৮ লেবাননকে ফরাসি সামরিক দখলদারিত্বের আওতায় আনা হল।
১৯২০ লীগ অফ নেশনস ফ্রান্সকে সিরিয়া আর লেবাননের ম্যান্ডেট প্রদান করলে মাউন্ট লেবানন, উত্তর লেবানন, দক্ষিণ লেবানন ও বেকা অঞ্চল নিয়ে বৃহত্তর লেবানন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হল।
১৯২৩ লেবানন ও সিরিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করল ফ্রান্স।
১৯২৬ লেবাননে একটি সংবিধান গৃহীত হল এবং লেবাননকে ফরাসি ম্যান্ডেটের অধীনে একটি ঐক্যবদ্ধ প্রজাতন্ত্র বলে ঘোষণা করা হল।
১৯৪৩ নভেম্বর ২২ লেবাননের স্বাধীনতা লাভ। ঠিক হল, দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন ম্যারোনাইট খ্রিস্টান সম্প্রদায় থেকে, আর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন সুন্নী সম্প্রদায় থেকে। চেম্বার অফ ডেপুটিজের স্পীকার হবেন একজন শিয়া।
১৯৪৬ ফরাসিরা শেষ পর্যন্ত নিজেদের লেবানন থেকে প্রত্যাহার করে নিল।
১৯৪৮ ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার কারণে ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংকট তৈরি হলে ১০০,০০০ ফিলিস্তিনি শরণার্থী লেবাননে আশ্রয় নিলেন।
১৯৫৮ লেবাননে সরকারবিরোধী আন্দোলনের কারণে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে লেবানীয় প্রেসিডেন্ট কামিল শামুনের অনুরোধে শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য মার্কিন মেরিনরা দেশটিতে আসল। লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন ফুয়াদ শেহাব।
১৯৬৪ লেবাননের প্রেসিডেন্ট হলেন শার্ল হেলু।
১৯৬৬ ফাদার টমাস বোয়েস, ইংরেজি অনুবাদ, দ্য কুর্দস।*
* লেবাননের বৈরুত থেকে প্রকাশিত হয়।
১৯৬৭ জুন যুদ্ধের কারণে আবারও ফিলিস্তিন থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার শরণার্থী লেবাননে আশ্রয় নিলেন।
১৯৭০ পিএলও জর্দান ছেড়ে লেবাননে ঘাঁটি স্থাপন করল।
১৯৭৫-৯০ লেবাননের গৃহযুদ্ধ।
১৯৭৬ লেবানীয় সরকারের দরখাস্তে সিরীয় সেনারা লেবাননে ঢোকে।
১৯৭৭ লেবাননের সিরিয়া সীমান্তে আততায়ীদের হাতে খুন হয়ে গেলেন দ্রুজ সম্প্রদায়ের নেতা কামাল জুমব্লাত।
১৯৭৮ ইসরায়েল লেবাননে হামলা চালাল।
কাহলিল জিবরান, দ্য প্রফেট।
১৯৮২ ইসরায়েল লেবাননে দ্বিতীয়বারের মত হামলা চালাল। লেবাননের ইসরায়েলপন্থী প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট বাশির গেমায়েল আততায়ীদের হাতে খুন হলেন। ইসরায়েল পশ্চিম বৈরুত দখল করল। সেখানকার সাবরা ও শাতিলা শরণার্থী শিবিরের কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি শরণার্থীকে খুন করল ইসরায়েলি মদতপুষ্ট ফ্যালাঞ্জিস্ট খ্রিস্টানদের বাহিনী। মার্কিন, ফরাসি, ও ইতালীয় শান্তিরক্ষীদের বৈরুত আগমন। পিএলওকে লেবানন থেকে তাড়িয়ে দেয়া হল। লেবাননে গঠিত হল হিজবুল্লা।
১৯৮৩ লেবাননে মার্কিন দূতাবাসে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৬৩ জন মানুষের মৃত্যু। মার্কিন মেরিন ব্যারাকে আরেক বোমা হামলায় ২৪১ জন মার্কিন মেরিন ও ৬০ জন ফরাসি সেনার মৃত্যু হয়।
১৯৮৪ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করল যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৮৫ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে শুরু করল ইসরায়েল, তবে দক্ষিণ লেবাননে একটি বাফার জোন রয়ে গেল।
১৯৯০ তায়েফ চুক্তির মধ্য দিয়ে লেবাননের গৃহযুদ্ধের অবসান। এই যুদ্ধে দেশটি টুকরো টুকরো হয়ে যায় এবং ১ লক্ষ লেবানীয় আর ২০,০০০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়। লেবাননে স্বাভাবিকতা ফেরাতে সাহায্যের হাত বাড়াল সিরিয়া।
১৯৯১ লেবাননের জাতীয় সংসদ নির্দেশ দিল হিজবুল্লাহ ছাড়া বাকি সব মিলিশিয়াকে অস্ত্রসমর্পণ করতে হবে। ইসরায়েলপন্থী সাউথ লেবানন আর্মি (এসএলএ) অস্ত্রসমর্পণে অস্বীকৃতি জানাল। লেবানীয় সেনাবাহিনী পিএলওকে পরাস্ত করে দেশটির দক্ষিণের সিদন বন্দর দখল করে নিল।
১৯৯২ লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হলেন বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী রফিক হারিরি।
১৯৯৪ রোজমেরি সায়িগ, টু মেনি এনিমিজ: দ্য প্যালেস্টাইনিয়ান এক্সপেরিয়েন্স ইন লেবানন।
১৯৯৬ অপারেশন গ্রেপস অফ র্যাথ। দক্ষিণ লেবানন, দক্ষিণ বৈরুত, আর বেকা উপত্যকায় হিজবুল্লাহ ঘাঁটিগুলোয় বোমাবর্ষণ করল ইসরায়েল। কানার জাতিসংঘের ঘাঁটিতে বোমার আঘাত ১০০ বেসামরিক লেবানীয় নাগরিকের মৃত্যু, যারা জান বাঁচাতে জাতিসংঘের ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
২০০০ ইসরায়েলপন্থী সাউথ লেবানন আর্মিকে (এসএলএ) বিলুপ্ত করা হল। হিজবুল্লার অগ্রাভিযান। ইসরায়েল লেবানন থেকে সকল সেনা প্রত্যাহার করল।
২০০৪ সিরিয়াকে লক্ষ্য করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে বলা হল, লেবানন থেকে সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। সিরিয়া জাতিসংঘের এই আহবান মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানাল।
২০০৫ বৈরুতে এক গাড়ি বোমা হামলায় খুন হলেন লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি। এতে দেশটিতে সিরিয়াবিরোধী রাজনীতি ব্যাপক গতিলাভ করে। প্রধানমন্ত্রী ওমর কারামি পুরো মন্ত্রীসভাসমেত পদত্যাগ করেন। সিরিয়া অবশেষে লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করে। সাদ হারিরির সিরিয়াবিরোধী জোট পরবর্তী নির্বাচনে জেতে। লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট হন হারিরি-মিত্র ফুয়াদ সিনিওরা।
২০০৬ দ্বিতীয় লেবানন যুদ্ধ। ৩৪ দিনের যুদ্ধে ১২০০ মানুষের মৃত্যু হয়। যুদ্ধের কারণে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ শরণার্থী হন।
২০০৭ সিরিয়াবিরোধী একাধিক লেবানীয় রাজনীতিক আততায়ীদের হাতে খুন হলেন। ইসলামি জঙ্গি সংগঠন ফাতাহ আল-ইসলামের সাথে লেবানীয় সেনাবাহিনীর সংঘাতের ফলে মে থেকে সেপ্টেম্বর ঘেরাও হয়ে থাকে ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবির নাহর আল-বারেদ। এই সংঘাতে ৩০০রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
রফিক হারিরি হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠনের পক্ষে ভোট দিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
২০০৮ লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন সেনাপ্রধান মিশেল সুলেইমান।
২০০৯ দ্য নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরের আন্তর্জাতিক আদালত রফিক হারারি হত্যার বিচার শুরু করল। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হলেন মোহাম্মদ জুহাইর আল-সিদ্দিক। তিনি সিরিয়ার একজন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
২০১০ হিজবুল্লা নেতা হাসান নাসরুল্লাহ লেবাননের প্রতি আহবান জানালেন জাতিসংঘের হারিরি ট্রাইব্যুনাল বর্জন করতে, দাবি করলেন এই ট্রাইব্যুনাল ‘ইসরায়েলের সাথে যোগসাজশে লিপ্ত’।
ডেনিস ভিলেনুয়েভে, ইনসেনডিজ।
২০১১ লেবাননের জন্য জাতিসংঘের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল রফিক হারিরি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকায় চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করল। অভিযুক্তরা হিজবুল্লার সদস্য। হিজবুল্লাহ জানাল সদস্যদের গ্রেপ্তার মেনে নেবে না।
২০১২ আগের বছরের মার্চে শুরু হওয়া সিরিয়া যুদ্ধের ঢেউ লেবাননে এসেও লাগল। ত্রিপোলি আর বৈরুতে সুন্নিদের সাথে আলাওয়িদের রক্তাক্ত সংঘাত দেখা দিল। এক গাড়ি বোমা হামলায় লেবাননের নিরাপত্তা প্রধান উইসাম আল-হাসানের মৃত্যু। বিরোধীরা সিরিয়াকে দুষল। ত্রিপোলিতে সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সমর্থক আর বিরোধীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত। সিরিয়া যুদ্ধের ফলে দেড় লক্ষাধিক শরণার্থী লেবাননে আশ্রয় নিলেন।
২০১৩ ইওরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) হিজবুল্লার সামরিক শাখাকে সন্ত্রাসবাদী তালিকার অন্তর্ভুক্ত করল। বৈরুতের ইরানি দূতাবাসের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২২ জনের মৃত্যু, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ দাবি করলেন এর পেছনে সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার হাত আছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা জানাল, এসময় লেবাননে ৭ লক্ষ সিরীয় শরণার্থী অবস্থান করছেন।
২০১৫ ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত সংঘাত।
২০২০ লেবাননে গণ আন্দোলনে সাদ হারিরি সরকারের পতন। ক্ষমতায় এল লেবানীয় অ্যাকাডেমিক হাসান দিয়াবের সরকার। কিন্তু মুদ্রার দরপতন, কোভিড-১৯ লকডাউনের প্রভাব, এবং সর্বোপরি বৈরুতে এক রাসায়নিক বিস্ফোরণের ফলে দেখা দেয়া জনরোষের কারণে দিয়াব সরকার ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ায়।
২০২৪ সেপ্টেম্বর ২৭ ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লার মৃত্যু।
তথ্যসূত্র
BBC. 2018. “Lebanon profile – Timeline.” BBC, April 25.
https://www.bbc.com/news/world-middle-east-14649284
2025. “Lebanon country profile.” BBC, January 10.
— https://www.bbc.com/news/world-middle-east-14647308
Malaspina, Ann. 2009. Lebanon. New York: Chelsea House.
Mark, Joshua J.. 2018. “Fertile Crescent.” World History Encyclopedia. Last modified March 28. https://www.worldhistory.org/Fertile_Crescent/.
Stewart, James. 2008. Lebanon. Florida: Rourke Publishing LLC.
নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।
অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ
দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি