আরাকান

Spread the love

Featured Image: Wikimedia Commons.

Encyclopedia Britannica

পূর্বসাল

২৬৬৬ কিংবদন্তি অনুসারে, এ সময় আরাকান শাসন করতেন মারুবংশীয় রাজারা।

সাল

১৪৬/১৫১ মগধ থেকে আগত চন্দ্রসূর্য নামক এক সামন্ত চট্টগ্রাম ও আরাকান জয় করেন।

৭৮৮-৮১০ মহাতাইঙ্গ চন্দ্রের রাজত্বকাল।

৮১০-৩০ থুরিয়াতাইঙ্গ চন্দ্রের রাজত্বকাল।

৮৩০-৪৯ মৌলাতাইঙ্গ চন্দ্রের রাজত্বকাল।

৮৪৯-৭৫ পৌলাতাইঙ্গ চন্দ্রের রাজত্বকাল।

৮৭৫-৮৪ কালাতাইঙ্গ চন্দ্রের রাজত্বকাল।

৮৮৪-৯০৩ দৌলাতাইঙ্গ চন্দ্রের রাজত্বকাল।

৯০৩-৩৫ থিরিতাইঙ্গ চন্দ্রের রাজত্বকাল।

৯৩৫-৫১ থিনঘাতা চন্দ্রের রাজত্বকাল।

৯৫৩-৫৭ সুলাতাইঙ্গ চন্দ্রের রাজত্বকাল।

৯৫৭-৬৪ অমাথুর রাজত্বকাল।*
* মিউ গোত্র প্রধান, চন্দ্র বংশের কেউ নন।

৯৬৪-৯৫ পাইফেয়ুর রাজত্বকাল।

৯৯৫-১০১৮ ঘামিংঘাতুমের রাজত্বকাল।

১০১৮-২৮ খেত্তাতিংয়ের রাজত্বকাল।

১০২৮-৩৯ চান্দাথেংয়ের রাজত্বকাল।

১০৩৯-৪৯ মেং রেংফুর রাজত্বকাল।

১০৪৯-৫২ নাগ সূর্যের রাজত্বকাল।

১০৫২-৫৪ সূর্য রাজার রাজত্বকাল।

১০৫৭ আরাকান জয় করে বার্মার পাগান রাজ্যভুক্ত করলেন আনওয়ারাথা, বিয়ে করলেন আরাকানের বৈশালী রাজকন্যা পঞ্চকল্যাণীকে।

১০৫৭-১২৭৯ এ সময় আরাকান বার্মার পাগানদের করদ রাজ্য ছিল।

১২৩৭ আরাকানের রাজধানী পিনসা থেকে লংগিয়েতে স্থানান্তরিত হল।

১২৭৯-১৩৮৫ মেংদীর রাজত্বকাল।

১২৮৩ লংগিয়েত রাজবংশের নবম রাজা মেংদী বার্মার পাগান রাজ্য থেকে আরাকানের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

১৩৮৫-৮৭ উসানাগ্যার রাজত্বকাল।

১৩৮৭-৯০ থিওয়ারিতের রাজত্বকাল।

১৩৯০-৯৪ থিনচির রাজত্বকাল।

১৩৯৪-৯৫ রাজা থুর প্রথম রাজত্বকাল।

১৩৯৫-৯৭ জবরদখলকারী সিথাবিংয়ের রাজত্বকাল।

১৩৯৭ জবরদখলকারী মিংসোয়েংকির রাজত্বকাল।

১৩৯৭-১৪০১ রাজা থুর দ্বিতীয় রাজত্বকাল।

১৪০১-০৪ থিংগাথুর রাজত্বকাল।

১৪০৪-০৬ মিনসুয়ামুনের রাজত্বকাল।*
* নরমিখলা নামেও পরিচিত।

১৪০৬ বার্মার রাজা মেং শো আই ৩০ হাজার সেনা নিয়ে আরাকান আক্রমণ করলে প্রাণ ভয়ে গৌড়ে পালিয়ে গেলেন আরাকানের রাজা নরমিখলা।

১৪৩০ বাংলার সুলতান জালালুদ্দিন মুহাম্মদ শাহের সহযোগিতায় পিতৃভূমি উদ্ধারের পর লঙ্গিয়েত থেকে রাজধানী সরিয়ে লেম্রু নদীর তীরে ম্রোহং নামক শহরে স্থাপন করলেন রাজা নরমিখলা।

১৪৩০-৩৪ নরমিখলার রাজত্বকাল।*
* এ সময় থেকে নরমিখলা বাংলার সুলতানদের মত মুদ্রার এক পিঠে ফারসি হরফে কলেমা ও মুসলমানি নাম লেখার রেওয়াজ চালু করেন। ১৬৪৫ সাল পর্যন্ত এই রেওয়াজ বজায় ছিল। বাংলার সুলতানদের সাথে আরাকানের রাজাদের ক্ষমতাগত বিরোধ তৈরি হয়েছে এ কালপর্বে, কিন্তু তাঁরা মুসলমানি রীতিনীতি বিসর্জন দেননি।

১৪৩০-১৭৪৮ ম্রাউক-উ রাজবংশ

১৬৬০ আগস্ট ২৬ উত্তরাধিকার দ্বন্দ্বে দাক্ষিণাত্যের সুবাদার শাহজাদা আওরঙ্গজেবের কাছে হেরে আরাকানের রাজধানী ম্রোহংয়ে পালিয়ে গেলেন বাংলার সুবাদার শাহ সুজা। আশ্রয় নিলেন আরাকানের রাজা চন্দ্র সুধর্মার দরবারে। এক পর্যায়ে তিনি সেখানেই সপরিবারে নিহত হন।

১৬৬৬ জানুয়ারি ২৭ চট্টগ্রামের ওপর দাবি ছেড়ে দিল পর্তুগিজ উপনিবেশিক শক্তি আর আরাকানিরা, ফলে তা মুঘলদের নিয়ন্ত্রণে এল।

১৬৮৪ আরাকানের রাজা সান্দা থু ধম্মার মৃত্যু।

১৬৮৪-১৭৮৪ অস্থিতিশীলতার একশ বছর।

১৭৮৪ আরাকান রাজ্যে হামলা চালালেন বার্মার রাজা বোদাপায়া। আরাকানের শেষ রাজা থামাডা পরাজিত ও নিহত। বার্মাভুক্ত হল আরাকান।

১৭৮৫ বর্মীরা ২০ হাজার আরাকানীকে হত্যা করে, কয়েক লাখ আরাকানী প্রাণভয়ে চট্টগ্রামে পালিয়ে আসেন।

১৭৯১ অত্যাচারিত আরাকানীরা তাঁদের প্রাক্তন রাজবংশের ওয়োমা নামক জনৈক বংশধরকে রাজা হিসেবে মনোনীত করে বর্মীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়। ২ লাখ আরাকানী বর্মীদের জেনোসাইডের শিকার হন।

১৭৯৮ বর্মীদের জেনোসাইডের হাত থেকে বাঁচার জন্য আরাকানের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ চট্টগ্রামে আশ্রয় নেন।

১৮০২ রামুতে এ সময় আরাকানী শরণার্থী ১ লাখ।

১৮২৪-২৬, ১৮৫২-৫৩, ১৮৮৫ তিনটি ইঙ্গ-বর্মী যুদ্ধ।

১৮৮৬ বার্মার স্বাধীনতার অবসান। দেশটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশে পরিণত হল। পরে একটি স্বতন্ত্র ব্রিটিশ উপনিবেশ করা হয়।

১৯৪২-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানি দখলদারিত্বে ছিল ব্রিটিশ বার্মা। রাখাইন বৌদ্ধরা সাম্রাজ্যিক জাপানের পক্ষ নেয়, অন্যদিকে রোহিঙ্গা মুসলিমরা লড়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পক্ষে। যুদ্ধকালীন সহিংসতার হাত থেকে বাঁচতে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে ব্রিটিশ বাংলায় চলে আসে, আজকে যেখানে বাংলাদেশ।

১৯৪৭ লন্ডনে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ক্লেমেন্ট এটলি ও বার্মার জাতীয়তাবাদী নেতা অং সানের মধ্যে স্বাধীনতার প্রশ্নে এক ঐতিহাসিক চুক্তি সাক্ষরিত হল।

জুলাই ১৯ অং সানের জাতীয়তাবাদী প্রতিদ্বন্দ্বী উ সাউয়ের নেতৃত্বাধীন একদল রাজনৈতিক বিরোধীর আততায়ী হামলায় খুন হলেন অং সান ও তাঁর অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ জন সদস্য।

বার্মার গণপরিষদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলেন রোহিঙ্গারা।

১৯৪৮ জানুয়ারি ৪ ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করল বার্মা। গঠন করা হল বার্মা ইউনিয়ন। প্রধানমন্ত্রী হলেন উ নু।

‘ইউনিয়ন মেম্বারশিপ অ্যাক্ট’, বার্মার সকল নাগরিককে সমান অধিকার দেয়া হয়। দেশটির সংখ্যালঘু জাতিদের অধিকারেরও স্বীকৃতি দেয়া হল। রোহিঙ্গারা যাদের অন্তর্গত।

১৯৪৯ বার্মা রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্ত করে দেশটির সকল নাগরিকের জন্য নিবন্ধনপত্র ইস্যু করতে শুরু করল।

১৯৫১-৬০ বার্মায় তিনটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। এ সময় দেশের বাকি সব নাগরিকের মত রোহিঙ্গাদেরও ভোটাধিকার ছিল। কয়েকজন রোহিঙ্গা এমপি হতেও পেরেছিলেন।

১৯৬২ বার্মায় সেনা অভ্যুত্থান ও সামরিক শাসন জারি।

১৯৭৪ আরাকানের নাম বদলে রাখাইন রাজ্য রাখা হল। বার্মার সামরিক জান্তা একটি নয়া সংবিধান প্রবর্তন করল, যা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করে।

‘ইমার্জেন্সি ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট’, বাংলাদেশ, ভারত ও চীন থেকে বার্মায় আসা মানুষদের “বিদেশি” হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁদের অধিকার খর্ব করার আইন পাশ করা হল। রোহিঙ্গাদের জাতীয় নিবন্ধনপত্র বাজেয়াপ্ত হতে শুরু করল।

১৯৭৮ অপারেশন নাগা মিন, জাতীয় নিবন্ধনপত্র যাচাই করার নামে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চালাতে ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে শুরু করল বার্মার সেনাবাহিনী।

১৯৮২ বার্মায় ‘নয়া নাগরিকত্ব আইন’। নৃতাত্ত্বিক ভিত্তিতে নাগরিকত্বের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারিত হল। রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতি বাদ পড়লেন।

১৯৮৮ বার্মার গণতন্ত্রপন্থী প্রতিবাদের ঢেউ আরাকান রাজ্যেও লাগল।

১৯৮৯ বার্মা সরকার সব নাগরিককে নতুন সিটিজেনশিপ স্ক্রুটিনি কার্ডের জন্য আবেদন করতে বলল। রোহিঙ্গারা কখনোই এই নতুন কার্ড পায়নি। দেশের নাম বার্মার বদলে মিয়ানমার রাখা হল, আর রাজ্যের নাম আরাকানের বদলে রাখাইন রাখা হল।*
* এই রচনার লেখক বার্মার সামরিক জান্তার বৈধতা স্বীকার করেন না, তাই দেশ ও রাজ্য উভয় ক্ষেত্রেই পরম্পরাগত নামগুলো ব্যবহার করে থাকেন।

১৯৯১ অপারেশন পিয়ি থায়া, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বার্মার সেনাবাহিনী ব্যাপকভিত্তিক সহিংসতা চালাল। ২ লক্ষ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এলেন।

১৯৯১-৯২ রোহিঙ্গাদের উত্যক্ত করতে ও নিপীড়ন চালাতে নাসাকা নামে একটি বিশেষ সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করল বার্মা সরকার।

১৯৯২ ১ লক্ষ ৫০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাল বাংলাদেশ।

১৯৯৪ রোহিঙ্গা শিশুদের জন্ম নিবন্ধন দিতে অস্বীকার করতে শুরু করল বার্মা সরকার।

১৯৯৫ রোহিঙ্গাদের জন্য বিশেষ সাময়িক নিবন্ধনপত্র হিসেবে “হোয়াইট কার্ড” ইস্যু করতে শুরু করল বার্মা সরকার, যা মোটেই নাগরিকত্বের কোন নিশ্চিত প্রমাণ নয়।

২০১২ আরাকান রাজ্যে রাষ্ট্রীয় ইন্ধনে রোহিঙ্গা-রাখাইন দাঙ্গা। ২০০ জন নিহত। মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে কাঠের নৌকায় করে ব্যাপকহারে দেশান্তরিত হতে শুরু করলেন রোহিঙ্গারা।

বার্মার কিছু বৌদ্ধ নাগরিক ও ভিক্ষু “৯৬৯” নামে একটি বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুরু করলেন। যা দেশটির মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেয়। উগ্রবাদী বলে পরে এদের নিষিদ্ধ করা হয়।

গ্রেগ কন্সটান্টাইন, এক্সাইলড টু নোহোয়ার: বার্মা’জ রোহিঙ্গাজ

২০১২-১৬ এই সময়কালে বর্মীদের জেনোসাইড থেকে বাঁচতে ৮৭,০০০ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসেন।

২০১৪ জানুয়ারি বার্মার উগ্র জাতীয়তাবাদী ভিক্ষুরা গঠন করলেন “মাবাথা”। এটি কালক্রমে দেশটির সবচে প্রসিদ্ধ মুসলিমবিরোধী ও রোহিঙ্গাবিরোধী সংগঠনে পরিণত হল।

এপ্রিল তিন দশক পরে বার্মায় জনশুমারি শুরু হল, কিন্তু রোহিঙ্গাদের এই শুমারির বাইরে রাখা হল।

২০১৫ মার্চ বার্মা সরকার রোহিঙ্গাদের একমাত্র পরিচয়পত্র “হোয়াইট কার্ড” অকার্যকর ঘোষণা করল। রোহিঙ্গাদের বলল “ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড” সংগ্রহ করতে, যা তাঁদের ভুলভাবে বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করে। রোহিঙ্গারা এই নতুন কার্ড অস্বীকার করলেন।

মে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসীদের সাথে নৌকায় করে বিপজ্জনকভাবে সমুদ্র পাড়ি দিলেন। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্রগুলো উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় জাতিসংঘের সমালোচনার শিকার হল।

আগস্ট বার্মায় একগুচ্ছ ধর্মীয় ও বর্ণগত আইন পাশ হল। আইনগুলো বিশেষভাবেই সংখ্যালঘু মুসলমানদের আক্রমণ করল। সেইসাথে নারী অধিকারও।

নভেম্বর সামরিক শাসন-পরবর্তী প্রথম “গণতান্ত্রিক” নির্বাচনে জিতে ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ক্ষমতায় এল। কিন্তু এই নির্বাচনে রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার ছিল। প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেও দেয়া হয় নাই।

২০১৬ অক্টোবর রোহিঙ্গা গণহত্যা।*
* বার্মার সেনাবাহিনী ততমাদাও উত্তর আরাকান জুড়ে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো ধবংস করে চলল, নারীদের ধর্ষণ করল, নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালাল। ৮৬ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এলেন।

আজিম ইব্রাহিম, দ্য রোহিঙ্গাজ: ইনসাইড মিয়ানমার’স হিডেন জেনোসাইড

২০১৭ মার্চ জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তথ্যানুসন্ধান মিশন প্রতিষ্ঠা করল। উদ্দেশ্য বার্মায় মানবাধিকার লঙ্ঘণের অভিযোগ খতিয়ে দেখা। বার্মা সরকার এই মিশনের সাথে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করে।

আগস্ট ২৭ আরাকান রাজ্যে বর্মীদের জেনোসাইড থেকে বাঁচতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসার সময় কয়েক ডজন রোহিঙ্গা মুসলমানকে আটক করল বার্মা ও বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।
আগস্ট ৩১ বর্মীদের জেনোসাইডের হাত থেকে বাঁচতে ৩টি নৌকায় করে পালিয়ে আসার সময় নৌকাগুলো নাফ নদীতে ডুবে গেলে ৩৬ জন রোহিঙ্গা নারী ও শিশুর নিষ্প্রাণ দেহ উদ্ধার করা হল।

২০১৭ আগস্ট-জানুয়ারি ২০১৮ বর্মীদের জেনোসাইডের হাত থেকে বাঁচতে ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

সেপ্টেম্বর ৫ ১ লক্ষ ২৩ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বর্মীদের জেনোসাইডের হাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে ঢুকলেন।
সেপ্টেম্বর ৬ বাংলাদেশ অভিযোগ করল, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যেন ফিরে যেতে না পারে, তাই বার্মার সেনাবাহিনী সীমান্তে স্থলমাইন পুঁতে রেখেছে।
সেপ্টেম্বর ১৬ বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য একটি বিশাল শরণার্থী শিবির বানানোর ঘোষণা দিল।
সেপ্টেম্বর ২৮ বর্মীদের জেনোসাইডের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসার সময় বাংলাদেশের উপকূলের খুব কাছে নৌকা ডুবে ১৪ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু, এঁদের মধ্যে ১০ জন শিশু।

অক্টোবর ৮ বর্মীদের জেনোসাইডের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসার সময় নৌকা ডুবে ১২ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু।

নভেম্বর ১৯ বার্মার রাজধানী নেপিদো সফর করলেন চীনা প্রতিনিধিরা। আরাকান রাজ্যের সংকট নিরসনে ৩ ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাব পেশ করলেন, ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই যাতে সম্মতি ছিল। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আরাকান রাজ্যে প্রত্যাবাসন যার অন্তর্ভুক্ত।

ডিসেম্বর ২ ঢাকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাথে সাক্ষাৎ করে বার্মা ও বাংলাদেশে তাঁর ৬ দিনের সফর শেষ করলেন পোপ ফ্রান্সিস।

কিয়ি মাই কাউং, দ্য রোহিঙ্গা জেনোসাইড ইন বার্মা ২০১২-১৭: অ্যান অ্যাকটিভিস্টস’ হ্যান্ডি হ্যান্ডবুক
ফ্রান্সিস ওয়াড, মিয়ানমার’স এনিমি উইদিন: বুদ্ধিস্ট ভায়োলেন্স অ্যান্ড দ্য মেকিং অফ আ মুসলিম ‘আদার’

২০১৮ আগস্ট জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত করার দায়ে দেশটির সামরিক বাহিনীর নেতাদের অভিযুক্ত করা হল। ৬ জন সেনা কর্মকর্তার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) করার আহবান জানান হল। সহিংসতা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে প্রতিবেদনটিতে অং সান সু চিকেও অভিযুক্ত করা হয়। বার্মা এই প্রতিবেদনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকার করে।

সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় গোপন আইন ভঙ্গ করার অভিযোগে রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হল। তাঁরা দাবি করলেন, এটা পুলিশের সাজানো মামলা। উল্লেখ্য, এই সাংবাদিকদ্বয় বার্মার রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর দেশটির সামরিক বাহিনীর চালানো সাম্প্রতিকতম গণহত্যার বাস্তবতা বিশ্ববাসীর সামনে এনেছিলেন।

অ্যান্থনি ওয়ের আর কস্টাস লাউটিডিস,মিয়ানমার’স ‘রোহিঙ্গা’ কনফ্লিক্ট
মোহাম্মদ আবদুল বারী, দ্য রোহিঙ্গা ক্রাইসিস: আ পিপল ফেসিং এক্সটিংশন
রণবীর সমাদ্দার ও সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী, দ্য রোহিঙ্গা ইন সাউথ এশিয়া: পিপল উইদাউট আ স্টেট
হাবিবুর রহমান, সোফি আনসেলের সাথে, ফার্স্ট, দে ইরেজড আওয়ার নেইমস: আ রোহিঙ্গা স্পিকস

২০১৯ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার জানালেন, বাংলাদেশের কক্সবাজারের চারপাশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে এ সময় ৯ লক্ষ ১৪ হাজার রোহিঙ্গা বাস করছে।

জন ক্লিফোর্ড হোল্ট, মিয়ানমার’স বুদ্ধিস্ট-মুসলিম ক্রাইসিস: রোহিঙ্গা, আরাকানিজ, অ্যান্ড বার্মিজ ন্যারেটিভস অফ সিয়েজ অ্যান্ড ফিয়ার
থান্ট মাইন্ট-উ, দ্য হিডেন হিস্ট্রি অফ বার্মা: রেস, ক্যাপিটালিজম, অ্যান্ড দ্য ক্রাইসিস অফ ডেমোক্রেসি ইন দ্য টোয়েন্টি-ফার্স্ট সেঞ্চুরি
মায়ূ আলী, এক্সোডাস বিটউইন জেনোসাইড অ্যান্ড মি

২০২০ ডিসেম্বর ৪ তুমুল আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসান চরে স্থানান্তরিত করা হল।

কার্লোস সার্ডিনা গালাশ, দ্য বার্মিজ ল্যাবিরিন্থ: আ হিস্ট্রি অফ দ্য রোহিঙ্গা ট্রাজেডি
নাসির উদ্দিন, দ্য রোহিঙ্গা: অ্যান এথনোগ্রাফি অফ ‘সাবহিউম্যান’ লাইফ

২০২১ জানুয়ারি ১৪ নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে আগুন লেগে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ৫৫০টিরও বেশি বসতি ধবংস হয়ে গেল।

মার্চ ২২ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১৫ ব্যক্তি নিহত।

সেপ্টেম্বর ৩১ রোহিঙ্গা মানবাধিকার কর্মী মহিব উল্লাহ হত্যাকাণ্ড।

রোনান লি, মিয়ানমার’স রোহিঙ্গা জেনোসাইড: আইডিটিন্টি, হিস্ট্রি, অ্যান্ড হেট স্পিচ

২০২২ ইমতিয়াজ এ. হোসেন, সম্পারোহিঙ্গা ক্যাম্প ন্যারেটিভস: টেলস ফ্রম দ্য ‘লেসার রোডস’ ট্রাভেলড
ক্রিয়াংসাক কিত্তিচাইসারি, দ্য রোহিঙ্গা, জাস্টিস, অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ল
নাসির উদ্দিন, ভয়েসেস অফ দ্য রোহিঙ্গা পিপল আ কেইস অফ জেনোসাইড, এথনোসাইড অ্যান্ড ‘সাবহিউম্যান’ লাইফ

২০২৩ মার্চ ৫ কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে আগুন লেগে ২ হাজারের বেশি বসতি ধবংস হয়ে গেল।

কামিল আহমেদ, আই ফীল নো পীস: রোহিঙ্গা ফ্লিয়িং ওভার সীজ অ্যান্ড রিভারস
মানজুর হাসান, সৈয়দ মানসুব মুর্শেদ, ও প্রিয়া পিল্লাই, সম্পাদিত, দ্য রোহিঙ্গা ক্রাইসিস: হিউম্যানিটারিয়ান অ্যান্ড লিগাল অ্যাপ্রোচেস

২০২৪ জানুয়ারি ৭ কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে আগুন লেগে বিপুল ক্ষতিসাধন, বিস্থাপিত হলেন ৪ হাজার রোহিঙ্গা।

ফেব্রুয়ারি ৫ বার্মার গৃহযুদ্ধের স্পিলওভার ইফেক্টে আন্তঃসীমান্ত শেলিংয়ের দরুণ বান্দরবানের ঘুমধুম ইউনিয়নে খুন হলেন বাংলাদেশি গৃহবধূ হোসনেআরা খাতুন ও জনৈক অচিহ্নিত রোহিঙ্গা শ্রমিক।

২০২৫ মার্চ ১৮ নারায়ণগঞ্জে গ্রেপ্তার হলেন দি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) নেতা আতাউল্লা আবু আম্মার জুনুনি।

তথ্যসূত্র

আখন্দ, ড. মাহফুজুর রহমান। ২০১৩। আরাকানের মুসলমানদের ইতিহাস। বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি লিঃ।

পারভেজ, আলতাফ। ২০১৯। বার্মা: জাতিগত সংঘাতের সাত দশক। ঐতিহ্য।

রহমান, মুহাম্মদ হাবিবুর। ২০০৮। বাংলাদেশের তারিখ। তৃতীয় সংস্করণ। মাওলা ব্রাদার্স।

United States Holocaust Memorial Museum. n.d. “Burma’s Path to Genocide: Timeline.” Accessed April 28, 2025.
https://exhibitions.ushmm.org/burmas-path-to-genocide/timeline

Wikipedia
The Free Encyclopedia
https://www.wikipedia.org

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *