কাশ্মীর

Spread the love

Featured Image: Francesca Recchia.

বিশ্ব মানচিত্র ব্লগ

সাল

১৮৪৬ দেশীয় রাজ্য কাশ্মীর গঠন করা হল।

১৯৪৭ ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয় হলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন। তিনি ব্রিটিশ ভারতকে দুটি আলাদা রাষ্ট্রে পার্টিশনড করার একটা চূড়ান্ত পরিকল্পনা হাজির করলেন। ব্রিটিশ ভারতের পার্টিশন।*
আগস্ট ১৪, মধ্যরাত ব্রিটিশ ভারত ‘স্বাধীন’ হল।
আগস্ট ১৭ পার্টিশন বাউন্ডারি ঘোষণা করা হল। বাউন্ডারি কমিশন প্রধান সীরিল র‍্যাডক্লিফ কর্তৃক ব্রিটিশ ভারত ভাগ হল। জন্ম নিল ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি রাষ্ট্র। হিন্দু, মুসলমান, ও শিখদের আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হল। শরণার্থীতে পরিণত হলেন ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। ১৯৪৯ সালের মধ্যে অধিকাংশ দেশীয় রাজ্য ভারতে এবং অল্প কয়েকটি পাকিস্তানে যোগ দেয়। জুনাগড় আর হায়দারাবাদকে জোরপূর্বক ভারতভুক্ত করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের সামনে ভারত পাকিস্তান যে কোন একটিতে যোগদানের সুযোগ রাখা হয়। মহারাজা হরি সিং কালক্ষেপন করেন। পাকিস্তানের দিক থেকে ট্রাইবাল শক্তিসমূহের হামলা। ভারতের সাথে যোগদান চুক্তি করলেন হরি সিং। জম্মু ও কাশ্মীরের ওপর ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের দাবি থাকায় দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। সেই দ্বন্দ্ব এখনো চলছে।

চৌধুরী গোলাম আব্বাসের নেতৃত্বাধীন মুসলিম কনফারেন্স পাকিস্তানে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল। শেখ আবদুল্লার কারামুক্তি। পুঞ্চ গণহত্যা, জম্মুর মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালাল দোগরা সৈন্য ও আরএসএস ভাবাদর্শী হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা, জম্মু হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে পরিণত হল।*
* এই গণহত্যার আগ পর্যন্ত কাশ্মীরের মত জম্মুও মুসলমান-সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে অল্প কয়েকটি অঞ্চলে অহিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, যার প্রায় প্রতিটির সাথে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সংঘাতে লিপ্ত আছে। এই অঞ্চলগুলো হল: জম্মু ও কাশ্মির, পাঞ্জাব, মণিপুর, মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল।

১৯৪৭-৬৩ এ সময় সক্রিয় ছিল আরএসএসের বিশেষ সংগঠন অল জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর প্রজা পরিষদ।*
* এই সংগঠন গঠনের পেছনে উদ্দেশ্য ছিল জম্মু ও কাশ্মীরের আঞ্চলিক রাজনীতিতে পাকিস্তান চীনের সাথে যে কোন ধরণের আপোসরফার প্রচেষ্টাকে হিন্দুদের সাথে গাদ্দারি হিসাবে দেখানো ও উপত্যকার মুসলমানদের ব্যাপারে ইচ্ছাকৃতভাবে ও পরিকল্পিতভাবে আতঙ্ক ছড়ানো।

১৯৪৭-৪৯ কাশ্মীর নিয়ে প্রথম ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ। যুদ্ধ থামাতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ। যুদ্ধবিরতি ও উভয়পক্ষের সেনাপ্রত্যাহার।

১৯৪৮ কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারত জাতিসংঘে গেল। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি প্রস্তাব পাশ করে, প্রস্তাব নং ৪৭, যাতে কাশ্মীর সংকট সমাধানের জন্য গণভোট আয়োজনের ডাক দেয়া হয়। প্রস্তাবে পাকিস্তানকে কাশ্মীর থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে ও ভারতকে কাশ্মীরে সামরিক উপস্থিতি ন্যূনতমে নামিয়ে আনতে বলা হয়। জাতিসংঘের মদতে যুদ্ধবিরতি। কিন্তু পাকিস্তান সেনা প্রত্যাহার করতে অস্বীকার করে। ভারত ওয়াদা করে, গণভোটে কাশ্মীরের জনগণ যে সিদ্ধান্ত নেয় তা তারা মেনে নেবে। কিন্তু পরে ভারত তার এই ওয়াদা ভঙ্গ করে।

১৯৪৯ কাশ্মীরের পার্টিশন

১৯৫০-৫৯ চীন একটু একটু করে কাশ্মীরের পূর্বাঞ্চলের, ‘আকসাই চীন’, ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।

১৯৫০ কাশ্মীরে গণভোট প্রসঙ্গে ওয়াদা ভঙ্গ করল ভারত। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১এ কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখান হল। তবে ৩৭০ নং ধারায় জম্মু ও কাশ্মীরকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করা হল।

কাশ্মীরে অনুমোদিত হল বিগ স্টেট এবলিশন অ্যাক্ট। গতি পেল ভূমি ও কৃষি সংস্কার।

১৯৫১ কাশ্মীরে সংবিধান সভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। সবকটা আসনেই জিতল শেখ আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্স। প্রথম সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ আবদুল্লাহ। ভারত এটাকে ভারতভুক্তির ব্যাপারে গণরায় হিসেবে দেখল। তাই দাবি করল, গণভোটের আর প্রয়োজন নেই। জাতিসংঘ আর পাকিস্তান এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে। বলে, গণরায় জানার জন্য গণভোটের প্রয়োজন হবে।

১৯৫২ ভারত সরকারের সাথে চুক্তি করলেন শেখ আবদুল্লাহ। দিল্লিতে সম্পাদিত এই চুক্তি অনুযায়ী কাশ্মীরকে ভারতভুক্ত হবে, এবং একইসাথে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হবে। হরি সিংয়ের পুত্র করন সিংকে কাশ্মীরের সদর ই রিয়াসত হিসেবে নিযুক্ত করা হল।

১৯৫৩ কাশ্মীরের ভারতভুক্তির দাবিতে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির আন্দোলন শুরু। প্রতিক্রিয়ায় কাশ্মীরের আজাদির দাবি তুললেন শেখ আবদুল্লাহ। শেখ আবদুল্লাহকে কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হল ও গ্রেপ্তার করা হল। একটি নতুন জম্মু ও কাশ্মীর সরকার ভারতে যোগদানের চুক্তি অণুসমর্থন করল। নয়া দিল্লিতে ভারত আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক। বৈঠকে সাব্যস্ত হল, পরের বছর গণভোট হবে। কিন্তু এটা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি কেউ।

১৯৫৪ কাশ্মীরের সংবিধান সভায় ভারতভুক্তি অনুমোদন পেল।

১৯৫৫ শেখ আবদুল্লার মুক্তি ও কাশ্মীরে গণভোট আয়োজনের দাবিতে গঠিত হল গণভোট ফ্রন্ট।

১৯৫৭ কাশ্মীরের ভাগ্যনির্ধারণে গণভোট আয়োজনের তাগিদ দিল জাতিসংঘ। জম্মু ও কাশ্মীরের নিজস্ব সংবিধান গৃহীত হল। তাতে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসেবে দেখান হল।

১৯৬২ লাদাখ অঞ্চল নিয়ে শুরু হল চীন-ভারত যুদ্ধ। যুদ্ধে ভারত হারে। ফলে আকসাই চীন* চীনের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
* আকসাই চীনকে ভারত লাদাখের অংশ দাবি করে। অন্যদিকে, চীন দাবি করে এটি ঝিনঝিয়াংয়ের অংশ। অঞ্চলটির স্ট্যাটাস অমীমাংসিত।

১৯৬৩ শ্রীনগরে হজরতবাল দরগা শরিফ থেকে সেখানে সংরক্ষিত হযরত মুহাম্মদের (সা.) মাথার চুল চুরি
যাওয়ায় জম্মু ও কাশ্মীরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিল। পাকিস্তান কাশ্মীরের ট্রান্স-কারাকোরাম অঞ্চল চীনকে ছেড়ে দিল।

১৯৬৫ দেশটির লোকসভায় জম্মু ও কাশ্মিরকে “একটি ভারতীয় প্রদেশ” বলে ঘোষণা করা হল। সেখানকার সরকার ও তার কার্যক্রমকে প্রত্যাখ্যান করে গভর্নর নিয়োগ দেয়া হল। কাশ্মির নিয়ে দ্বিতীয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হল।

১৯৭১ ডিসেম্বর ৩-১৬ তৃতীয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ

১৯৭২ জুলাই ৩ শিমলা চুক্তি, এই চুক্তিতে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে জাতিসংঘ যে যুদ্ধবিরতি রেখা নির্ধারণ করেছিল তাকে নিয়ন্ত্রণ রেখা, লাইন অফ কন্ট্রোল (এলওসি), বলে ঘোষণা করা হল। চুক্তিতে সই করা দুই পক্ষই শপথ নিল, নিজেদের মধ্যকার সব মতপার্থক্য আপোসরফার মাধ্যমে মীমাংসা করবে এবং কাশ্মীর বিবাদের একটা চূড়ান্ত ফয়সালার ডাক দিল। চুক্তিটি ইন্দো-পাক সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

১৯৭৪ শেখ আবদুল্লার কারামুক্তি, কাশ্মীরে ফেরার অনুমতি পেলেন। তাঁকে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী করা হল। ব্যাপক স্বায়ত্তশাসনের বিনিময়ে তাঁর রাজনৈতিক সহযোগী মির্জা আফজাল বেগ দীর্ঘদিনের গণভোটের দাবি ছেড়ে দিয়ে ভারতের সাথে এই মর্মে চুক্তি করলেন যে, জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

১৯৭৭ কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বিষয়ে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারার প্রতি সম্মান দেখানো না হলে কাশ্মির বিচ্ছিন্নতাবাদের পথ বেছে নেবে, কেন্দ্রকে এই হুমকি দিলেন শেখ আবদুল্লাহ। ব্রিটেনে জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ) গঠন করলেন কয়েকজন প্রবাসী কাশ্মিরী।

১৯৮২ শেরে কাশ্মির শেখ আবদুল্লার মৃত্যু। কাশ্মীরের নতুন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ছেলে ফারুক আবদুল্লাহ।,

১৯৮৪ জেকেএলএফ ব্রিটেনে ভারতীয় কূটনীতিক রবীন্দ্র মৈত্রকে অপহরণ ও হত্যা করল। কাশ্মীরে ফারুক আবদুল্লাহ সরকারকে বরখাস্ত করা হল। নতুন মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হলেন গোলাম মোহাম্মদ শাহ। মকবুল ভাটের ফাঁসি। সিয়াচেন গ্লেসিয়ার দখল করে নিল ভারত। এটির সীমা এলওসি দ্বারা নির্ধারিত করা হয়নি। পরের কয়েক দশকে পাকিস্তান সিয়াচেন গ্লেসিয়ার নিয়ে নিতে বারংবার চেষ্টা চালায়।

১৯৮৬ কাশ্মিরে সরকারি চাকরিতে মুসলমানদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি।

১৯৮৮ ভারত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জেকেএলএফের সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু।

১৯৯০ কাশ্মীরে শুরু হল ব্যাপক মাত্রায় সামরিকায়ন। শ্রীনগরের গোকদাল সেতু এলাকায় গণহত্যা সংঘটিত হল। জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সামনে প্রতিশ্রুত গণভোটের দাবিতে মিছিল করলেন প্রায় ৫ লক্ষ কাশ্মীরি। গেরিলা কমান্ডার আশফাক মাজিদ ওয়ানি খুনকে কেন্দ্র করে উপত্যকায় জারি করা হল আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্ট। জেকেএলএফের সশস্ত্র সংগ্রামের মুখে কাশ্মীরি পন্ডিতদের এক্সোডাস।

১৯৯১ ভারতীয় সেনাবাহিনীর চার রাজপুতানা রাইফেলস কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলার কুনান ও পোশপোরা গ্রামের মুসলমান নারীদের সম্মিলিতভাবে ধর্ষণ করে।

১৯৯৩ কাশ্মীরে আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের দাবিতে গঠিত হল অল পার্টি হুররিয়েত কনফারেন্স। উর্দু ভাষায় হুররিয়েত শব্দের অর্থ হচ্ছে স্বাধীনতা। সাপোর গণহত্যা, ৫৫ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু।

১৯৯৪ কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ঘোষণা করে ভারতীয় সংসদে প্রস্তাব পাশ। ভারত সরকার ও জেকেএলএফের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি। ইয়াসিন মালিকের মুক্তিলাভ।

১৯৯৭ কাশ্মীরে মানবাধিকার কর্মী জালিল আন্দ্রাবি অপহরণ ও হত্যা।

১৯৯৯ কার্গিলে কাশ্মীর নিয়ে চতুর্থ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু, ৫০ দিনের এই যুদ্ধে ভারত জেতে।

২০০০ কাশ্মীরের অনন্তনাগে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হলেন ৩৬ জন শিখ। কাশ্মীরে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করল ভারত। পরের বছরের মে পর্যন্ত এই ঘোষণা কার্যকর ছিল।

২০০১ কাশ্মীরে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হলেন মধ্যপন্থী হুররিয়েত নেতা আবদুল গণি লোন।

২০০২ কাশ্মীরের সংসদে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ৩৮ জনের মৃত্যু।

২০০৪ নিউ ইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের মধ্যে কাশ্মির নিয়ে আলোচনা শুরু।

২০০৫ ভারত দখলকৃত কাশ্মীর আর পাকিস্তান দখলকৃত মুজাফফরবাদের মধ্যে বাস সার্ভিস চালু করা হল। প্রতিষ্ঠিত হল আরএসএসের বিশেষ সংগঠন মাই হোম ইন্ডিয়া।*
* আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল। এই সাতটি রাজ্য সাতবোন অঙ্গরাজ্য নামে পরিচিত। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে (North-East) অবস্থিত। কেন্দ্রের সাথে এই রাজ্যগুলোর ঐতিহাসিক ঝামেলা আছে। সাত বোনের বিচ্ছিন্ন/স্বাধীন হতে চাওয়ার রাজনীতি আছে। তাদের সম্পদ নিষ্কাশন করতে চাওয়ার অর্থনীতিও আছে। মাই হোম ইন্ডিয়ার উদ্দেশ্য সাতবোন অঙ্গরাজ্যে জাতীয়তাবাদ প্রচার করা ও ভারতের বাকি অংশের সাথে তাঁদের আত্মীকরণ ঘটানো।

২০০৬ কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু। কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করার উদ্দেশ্যে ‘চারদফা ফর্মুলা’ প্রদান করলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ।

২০০৮ অমরনাথ মন্দিরের জমি বরাদ্দ দেয়া কেন্দ্র করে কাশ্মীরে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হল। ছয় দশকের মধ্যে প্রথমবারের মত এলওসির দুইদিকে বাণিজ্যপথ চালু করল ভারত ও পাকিস্তান।

২০০৯ কাশ্মীরি মানবাধিকার গ্রুপ অনুসন্ধান চালিয়ে উত্তর কাশ্মীরে ২৭০০ অচিহ্নিত গণকবরের সন্ধান পেল।

২০১০ ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে খুন হল ৮-বছর-বয়সী কাশ্মীরি শিশু তুফায়েল ভুট্টো। উপত্যকা জুড়ে প্রচণ্ড বিক্ষোভ।* বহু কাশ্মীরি তরুণ হিজবুল মুজাহিদিনে যোগ দিলেন।
* এই বিক্ষোভে অন্তত ১০০ জন শহিদ হন।

২০১৩ ভারতে অপরাধের শক্ত প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও কাশ্মীরি আফজাল গুরুর ফাঁসি হল, রায়ে বলা হল, ভারতীয় সমাজের সামষ্টিক চেতনাকে তৃপ্ত করার জন্যই গুরুকে এই শাস্তি দেয়া হয়েছে।

২০১৫ মুফতি মুহাম্মদ সাঈদের নেতৃত্বে কাশ্মীরে কোয়ালিশন সরকার। প্রথমবারের মত পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) জোটসঙ্গী হিসেবে কাশ্মীরে শাসন করার সুযোগ পেল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।

২০১৬ কাশ্মীরে মুফতি মুহাম্মদ সাঈদের মৃত্যু, নতুন মুখ্যমন্ত্রী হলেন তাঁর কন্যা মেহবুবা সাঈদ, যিনি মেহবুবা মুফতি নামেও পরিচিত। ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হলেন বুরহান ওয়ানি।*
* হিজবুল মুজাহিদিনের সদস্য। বুরহানের জানাজায় অংশ নেন ৫ লক্ষ কাশ্মীরি। কাশ্মীর জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ। তিন মাসে ৯ হাজার নিহত। কাশ্মীর সীমান্তের কাছাকাছি চারটি গণকবরের সন্ধান মিলল। সেখানে প্রায় ২ হাজার মৃতদেহ শনাক্ত করা হল। কাশ্মীরের “গুম হয়ে যাওয়া” মানুষদের।

২০১৭ বুরহান ওয়ানির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে কাশ্মিরজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ। বন্দুকধারীদের হামলায় ১৯ জন হিন্দু তীর্থযাত্রীর মৃত্যু।

২০১৮ ভারতের কাশ্মীরে পাহাড়ি যাযাবর ও মুসলমান বাকারওয়াল সম্প্রদায়ের ৮-বছর বয়সী শিশু আসিফা বানোকে একটা মন্দিরের মধ্যে সম্মিলিতভাবে ধর্ষণ করে মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়।

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ১৪ জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক জঙ্গি হামলায় সিপিআরএফের ৪০ জন জওয়ান নিহত হলেন। জইশে মোহাম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করে।
ফেব্রুয়ারি ২৬ পাকিস্তানের বালাকোটে বিমানহামলা চালাল ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ)।

আগস্ট ৫ ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা, যা ভারতের ভেতরেই জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ স্ট্যাটাস দিয়েছে, তুলে নিল বিজেপি সরকার। উপত্যকায় একটা লকডাউন চাপিয়ে দেয়া হল। হাজার হাজার ভারতীয় সেনা মোতায়েন করা হল। জম্মু ও কাশ্মীরের বিরোধী নেতৃবৃন্দকে গৃহবন্দী করা হল। যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লা।

ভারতীয় পাঞ্জাবের পাঠানকোটের একটি আদালত শিশু আসিফা বানো ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে সানজিরামসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল।*
* এর কৃতিত্ব শিশু আসিফা বানোর আইনজীবী দীপিকা সিং রাজাওয়াতের, যিনি কাশ্মীরের কুপওয়ারার একটি রাজপুত হিন্দু পরিবারের মেয়ে।

২০২০ মার্চ লাদাখের গালওয়ানে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএএস) ভারতীয় ও চীনা সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘাত ছড়িয়ে পড়ল। অন্তত ২০ জন জওয়ান এতে নিহত হন। দেশদুটির মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেয়।

২০২১ কাশ্মীরের আজাদি আন্দোলনের অন্যতম নেতা সাইয়েদ আলী শাহ গিলানির মৃত্যু।

তথ্যসূত্র

আব্দুল্লাহ, শোয়েব। ২০২১। জানাজা থেকে স্বাধীনতা: কাশ্মীরে আজাদির লড়াই ও তার সাম্প্রতিক বৃত্তান্ত। আদর্শ।

পারভেজ, আলতাফ। ২০১৯। কাশ্মির ও আজাদির লড়াই। দ্বিতীয় মুদ্রণ। ঐতিহ্য।

রাফিন, ইরফানুর রহমান। ২০২২। সময়রেখা: মহাবিশ্বের উৎপত্তি থেকে করোনাসংকট পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত ঘটনাপঞ্জি। দিব্যপ্রকাশ।

BBC. 2019. “Kashmir profile – Timeline.” BBC, August 6.
https://www.bbc.com/news/world-south-asia-16069078
2025. “Kashmir profile.” BBC, March 10.
https://www.bbc.com/news/world-south-asia-11693674

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *