
কলম্বিয়া
Featured Image: Wikimedia Commons.

Courtesy: The Perry-Castañeda Library Map Collection (PCLMC), The University of Texas at Austin.
সাল
১৫২৫ স্পেনীয়রা কলম্বিয়া জয় করতে শুরু করল।
১৫৩৬-৩৮ স্পেন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল সান্তা ফে দে বোগোতা বসতি। যা কালক্রমে শুধু বোগোতা নামে পরিচিত হবে। পেরুর স্পেনীয় ভাইস-রয়ালটির অংশ হয়ে যাবে।
১৭১৮ স্পেনীয়দের নুয়েভা গ্রেনাদা ভাইস-রয়ালটির রাজধানী হয়ে উঠল বোগোতা, যা এ সময় ইকুয়েডর আর ভেনেজুয়েলাও শাসন করছে।
১৮১৯ বোয়াচাতে স্পেনীয়দের পরাজিত করলেন সিমন বলিভার। গঠন করলেন গ্র্যান কলম্বিয়া প্রজাতন্ত্র। এই প্রজাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল আজকের কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, ভেনেজুয়েলা, ও পানামা।
১৮২৯-৩০ ভেনেজুয়েলা আর ইকুয়েডর আলাদা হয়ে যাওয়ায় বিলুপ্ত হয়ে গেল গ্র্যান কলম্বিয়া। আজকের দিনের কলম্বিয়া আর পানামায় গঠিত হল একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র। যা নুয়েভা গ্রেনাদা নামে পরিচিত ছিল।
১৮৪৯ গঠিত হল কনজারভেটিভ পার্টি ও লিবারেল পার্টি।
১৮৬১-৮৫ লিবারেল পার্টির শাসন। দেশটিকে ৯টি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়। সেইসাথে গির্জাকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা করা হয়।
১৮৮৫ শুরু হল কনজারভেটিভ পার্টির ৪৫ বছরের শাসন। এ সময় ক্ষমতার পুনর্কেন্দ্রীকরণ ঘটে। গির্জার প্রভাব পুনর্বহাল করা হয়।
১৮৯৯-১৯০২ সহস্র দিবসের যুদ্ধ। লিবারেল আর কনজারভেটিভদের গৃহযুদ্ধে ১ লক্ষ ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু। একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হল পানামা।
১৯১৪-১৮ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।
১৯৩০ জোটবদ্ধভাবে নির্বাচিত হলেন লিবারেল প্রেসিডেন্ট ওলায়া হেরারা। সামাজিক বিধিবিধান প্রবর্তন করা হল। ট্রেড ইউনিয়ন উৎসাহিত করা হল।
১৯৩৯-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
১৯৪৬ রক্ষণশীলরা ক্ষমতায় ফিরলেন।
১৯৪৮-৫৭ প্রেসিডেন্ট পদপ্রত্যাশী হোর্হে এলিজার গাইতান গুপ্তহত্যার শিকার হলে বোগোতায় দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে।
১৯৪৮-৫৭ লা ভায়োলেন্সিয়া। লিবারেল আর কনজারভেটিভদের গৃহযুদ্ধে ২ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যু। যুদ্ধ শেষে দুই দলের মধ্যে আপোস হয়ে যায়।
১৯৫৮ গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটাতে লিবারেল আর কনজারভেটিভরা একটি ন্যাশনাল ফ্রন্ট গঠনের ব্যাপারে সম্মত হলেন। একইসাথে বাকি সব দল নিষিদ্ধ করা হল।
১৯৬৪ বামপন্থীরা ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (ইএলএন) ও মাওবাদীরা পিপলস লিবারেশন আর্মি (ইপিএল) গঠন করলেন।
১৯৬৬ ম্যানুয়েল মারুলান্ডা কর্তৃক গঠিত হল রেভল্যুশনারি আর্মড ফোর্সেস অফ কলম্বিয়া (ফার্ক)।
১৯৭০ ন্যাশনাল ফ্রন্টের একটি বাম বিকল্প হিসেবে গঠিত হল ন্যাশনাল পিপলস অ্যালায়েন্স।
১৯৭১ বামপন্থী এম-১৯ গেরিলা দলের উত্থান ঘটল।
১৯৭৮ মাদক চোরাচালানীদের বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই শুরু করলেন লিবারেল প্রেসিডেন্ট হুলিও তুরবে।
১৯৮২ আগস্ট ফার্কের সাথে শান্তি আলোচনা শুরু করলেন কনজারভেটিভ প্রেসিডেন্ট বেলিসারিও বেতানকুর। এর অংশ হিসেবে গেরিলাদের উদ্দেশ্যে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলেন। রাজবন্দীদের মুক্তি দিলেন।
১৯৮৪ কলম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী গুপ্তহত্যার শিকার হলে মাদক চোরাচালানীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হল।
১৯৮৫ এম-১৯ গেরিলা বাহিনী প্যালেস অফ জাস্টিসে ঢুকে পড়লে ১১ বিচারপতি ও আরো ৯০ জনের মৃত্যু। গঠিত হল প্যাট্রিওটিক ইউনিয়ন পার্টি (ইউপি)। নেভাদো দেল রুই আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত ঘটলে আন্দিজের ৪টি শহরে আনুমানিক ২৩ হাজার ব্যক্তির মৃত্যু।
১৯৮৬ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রেকর্ড ব্যবধানে জিতলেন লিবারেল ভার্জিলিও বার্কো ভার্গাস। ইউপি রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে খতম অভিযান চালাতে শুরু করল ডানপন্থী আধাসামরিক বাহিনীগুলো। বামপন্থী ও মাদক কার্টেলের ওপর নির্ভর ডেথ স্কোয়াডগুলোর সহিংসতার মধ্যেই চলছিল এই অভিযান।
১৯৮৭ জুন কলম্বিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্রোহীদের গেরিলা হামলায় ২৫ জন সৈনিকের মৃত্যু হল। ফার্কের সাথে কলম্বিয়া সরকারের সাময়িক যুদ্ধবিরতির অবসান।
১৯৯১ এপ্রিল ফার্ক, ইএলএন, ও ইপিএল কলম্বিয়া সরকারের প্রতিনিধির সাথে সংলাপে বসল। শুরুতে এই সংলাপ ভেনেজুয়েলায় অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সংলাপস্থল মেক্সিকোতে স্থানান্তরিত হয়।
১৯৯৩ গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য পালিয়ে যাবার সময় মেডেলিনের মাদক কার্টেলের নেতা পাবলো এসকোবারকে গুলি করে হত্যা করা হল।
১৯৯৮ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন রক্ষণশীল রাজনীতিক আন্দ্রেস পাস্ত্রানা আরাঞ্জো।
আগস্ট ফার্ক গেরিলাদের সাথে নতুন করে শান্তি আলোচনা শুরু করার ঘোষণা দিলেন। এই উদ্দেশ্যে কলম্বিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে একটি ডিমিলিটারাইজড জোন তৈরি করা হল।
১৯৯৯ জানুয়ারি একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১,০০০ মানুষের মৃত্যু হল।
২০০০ প্ল্যান কলম্বিয়া, মাদক চোরাচালান ও তা থেকে লাভবান হওয়া বিদ্রোহীদের রুখতে ১ বিলিয়ন ডলার মার্কিন সামরিক সহায়তা পেল কলম্বিয়া।
২০০২ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীরা একটা প্লেন ছিনতাই করলেন। এমন একজন সিনেটরকে জিম্মি করলেন, যিনি শান্তি কমিশনের সদস্য ছিলেন। শান্তি আলোচনার ইতি টানলেন পাস্ত্রানা।
২০০৩ উগ্র ডানপন্থী দল ইউনাইটেড সেলফ-ডিফেন্স ফোর্সেস অফ কলম্বিয়া (এইউসি) নিরস্ত্র হতে শুরু করল।
২০০৪ ডিসেম্বর ফার্কের “পররাষ্ট্রমন্ত্রী” বিবেচিত হওয়া রদ্রিগো গ্রান্ডাকে ভেনেজুয়ালা থেকে পাকড়াও করে কলম্বিয়ায় নিয়ে এলেন আন্ডারকভার কলম্বীয় গোয়েন্দারা।
ফার্ক গেরিলা রিকার্ডো পালমেরার ৩৫ বছরের কারাদণ্ড।
২০০৫ কলম্বিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বামপন্থী গেরিলা দল ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (ইএলএন) সাথে কিউবায় শান্তি আলোচনা শুরু করল কলম্বিয়া সরকার।
২০০৭ আগস্ট ভেনেজুয়ালার প্রেসিডেন্ট উগো চাভেজ ফার্ক আর কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলভারো উরিবের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী হওয়ার প্রস্তাব দিলেন, কিন্তু প্রচেষ্টাটি কয়েকমাস পরেই ভেস্তে যায়।
২০০৮ মার্চ ২৬ ফার্কের প্রতিষ্ঠাতা ও শীর্ষনেতা ম্যানুয়েল মারুলান্ডার মৃত্যু।
২০১০ সেপ্টেম্বর ২২ এক বিমান হামলায় খুন হলেন ফার্কের দ্বিতীয় ব্যক্তি এবং শীর্ষস্থানীয় সামরিক কৌশলবিদ হোর্সে ব্রিসেনো।
২০১১ নভেম্বর ৪ সামরিক বাহিনীর এক হামলায় খুন হলেন শীর্ষস্থানীয় ফার্ক কমান্ডার গুলেরমো সায়েনজ।
২০১২ ফেব্রুয়ারি ২৬ ফার্ক সকল বন্দী সামরিক কর্মকর্তাকে মুক্তি দিল।
আগস্ট ফার্কের সাথে নতুন করে শান্তি আলোচনা শুরু করলেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস।
২০১৬ মার্চ শান্তি আলোচনায় মতপার্থক্যের দোহাই দিয়ে একটা চূড়ান্ত চুক্তিতে সই করার ব্যাপারে কালক্ষেপণ করতে লাগল কলম্বিয়া সরকার। বলল বছরের শেষ নাগাদ একটা সমঝোতা হবে। একইসাথে তারা জানাল, বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইএলএনের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তি আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে।
জুন কলম্বিয়া সরকার ও ফার্ক গেরিলারা একটি ব্যাপকভিত্তিক শান্তি চুক্তির প্রস্তুতি হিসেবে এক সুনির্দিষ্ট যুদ্ধবিরতি ও নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি সই করল।
সেপ্টেম্বর ২৬ কলম্বিয়া সরকার ও ফার্ক গেরিলাদের মধ্যে এক ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি সাক্ষরিত হল।
অক্টোবর একটি জাতীয় গণভোটে ফার্ক গেরিলাদের সাথে শান্তি চুক্তি সামান্য ব্যবধানে প্রত্যাখ্যান করলেন ভোটাররা। প্রেসিডেন্ট সান্তোষ ঘোষণা দিলেন, তিনি বিদ্রোহীদের সাথে আলাপ চালিয়ে যাবেন। দেশটির সুদীর্ঘ এক সংকটের অবসান ঘটাতে রাখা তাঁর অবদানের জন্য শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেলেন প্রেসিডেন্ট সান্তোস।
নভেম্বর কলম্বিয়া সরকার ও ফার্ক গেরিলাদের মধ্যে একটি সংশোধিত শান্তি চুক্তি সাক্ষরিত হল।
২০১৭ জুন ফার্ক গেরিলারা আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের গেরিলা কার্যক্রমের অবসান ঘটাল।
আগস্ট ফার্ক নিজেকে একটি বৈধ রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়া শুরু করল।
অক্টোবর কলম্বিয়া সরকার ও ইএলএনের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি।
নভেম্বর ফার্ক গেরিলাদের সাথে শান্তি চুক্তি সই হওয়ার এক বছর পরেও দলটির ভিন্নমতাবলম্বীরা দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করা অব্যাহত রাখে।
২০১৮ মে কলম্বিয়া সরকার ও বিদ্রোহী দল ইএলএনের সংলাপ মাঝখানে বন্ধ থাকার পর নতুন করে শুরু হল।
জুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ইভান দুকু।
আগস্ট কলম্বিয়ার দ্য ন্যাশনাল সেন্টার ফর হিস্টোরিকাল মেমোরির এক প্রতিবেদনে বলা হল, কলম্বিয়ার ছয় দশকব্যাপী সহিংসতায় ২ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ মারা গেছেন।
২০১৯ জুলাই ৩ কলম্বিয়া সরকারের প্রতি সাবেক বিদ্রোহীদের সাথে করা ওয়াদাকে সম্মান করার আহবান জানালেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুটেরেজ। তিনি আরো বললেন, কলম্বিয়ায় জাতিসংঘ মিশন এটা নিশ্চিত করেছে যে, শান্তি চুক্তির পর থেকে ১২৩ জন সাবেক গেরিলা খুন হয়েছেন।
আগস্ট সাবেক ফার্ক গেরিলা কমান্ডার ইভান মার্কেজ ২০১৬ সালের শান্তি চুক্তি অস্বীকার করলেন এবং সমর্থকদের প্রতি হাতে অস্ত্র তুলে নেবার আহবান জানালেন।
২০২২ কলম্বিয়ার প্রথম বামপন্থী প্রেসিডেন্ট হলেন গুস্তাভ পেত্রো।
তথ্যসূত্র
AP. 2019. “A Timeline of Colombia’s 55-Year Rebel Conflict.” AP, August 29. https://apnews.com/article/79af91d139ae41a2abd06fdcdf86a7da.
BBC. 2018. “Colombia profile – Timeline.” BBC, August 8.
https://www.bbc.com/news/world-latin-america-19390164
— 2023. “Columbia country profile.” BBC, February 14.
https://www.bbc.com/news/world-latin-america-19390026
নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।
অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ
দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি



