Featured Image: Wikimedia Commons.
সাল
চতুর্দশ শতাব্দী তুতসিরা রুয়ান্ডায় অভিবাসিত হল, যেখানে ইতোমধ্যেই তোয়া আর হুতুরা বাস করে আসছিল।
সপ্তদশ শতাব্দী মধ্য রুয়ান্ডা ও তার চারপাশের হুতু এলাকাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনলেন তুতসি রাজা রুগানজো দোরি।
১৮০০য়ের শতাব্দী কেন্দ্রীভূত সামরিক কাঠামোসমেত একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলেন তুতসি রাজা রোয়াবুগেরি চতুর্থ কিগেলি।
১৮৫৮ প্রথম ইওরোপীয় হিসেবে রুয়ান্ডা ও তার আশেপাশের অঞ্চল পরিদর্শন করলেন ব্রিটিশ অভিযাত্রিক জন হ্যানিং স্পেক।
১৮৯০ উরুন্ডি আর রুয়ান্ডাকে জার্মান পূর্ব আফ্রিকার অন্তর্ভুক্ত করা হল।
১৯১৬ বেলজীয় বাহিনীগুলো রুয়ান্ডা দখল করে নিল।
১৯২৩ লীগ অফ নেশনস বেলজিয়ামকে রুয়ান্ডা-উরুন্ডি শাসনের ম্যান্ডেট দিল, বেলজীয়রা পরোক্ষভাবে তুতসি রাজাদের মাধ্যমে ভূখণ্ডটি শাসন করতে লাগল।
১৯৪৬ রুয়ান্ডা-উরুন্ডি বেলজিয়াম কর্তৃক শাসিত ইউএন ট্রাস্ট টেরিটোরিতে পরিণত হল।
১৯৫৭ হুতুদের তরফে একটি ইশতেহার প্রকাশ করা হল। হুতুরা দাবি তুললেন, রুয়ান্ডার ক্ষমতা কাঠামোয় তাদের হিস্যা পর্যাপ্ত নয়, হুতুদের সংখ্যাগুরুত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে হিস্যা বাড়াতে হবে। কয়েকটি হুতু রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করা হল।
১৯৫৯ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ধারাবাহিকতায় তুতসি রাজা দাহিনদুরওয়া পঞ্চম কিগেলি ও হাজার হাজার তুতসি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র উগান্ডায় নির্বাসিত হতে বাধ্য হলেন।
১৯৬১ রুয়ান্ডাকে একটা প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হল।
১৯৬২ রুয়ান্ডা স্বাধীনতালাভ করল। স্বাধীন রুয়ান্ডার প্রথম প্রেসিডেন্ট হলেন গ্রেগরি কায়িবান্দা। তিনি হুতু হওয়ায় বহু তুতসি দেশত্যাগ করল।
১৯৬৩ বুরুন্ডিভিত্তিক তুতসি বিদ্রোহীদের একটা ইনকার্শনের প্রতিক্রিয়ায় প্রায় ২০ হাজার রুয়ান্ডান তুতসিকে খুন করা হল।
১৯৭৩ রুয়ান্ডায় এক সামরিক ক্যুদেতায় প্রেসিডেন্ট গ্রেগরি কায়িবান্দাকে উৎখাত করে ক্ষমতায় এলেন জুভেনাল হাবইয়ারিমানা।
১৯৭৮ নয়া সংবিধান অণুসমর্থিত, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন হাবইয়ারমানা।
১৯৯০ মূলত তুতসি বিদ্রোহীদের রুয়ান্ডা দেশপ্রেমিক ফ্রন্ট (আরপিএফ) উগান্ডা থেকে রুয়ান্ডায় দখলদারি হামলা চালাল।
১৯৯১ একটি নতুন বহুদলীয় সংবিধান প্রণয়ন করা হল।
১৯৯৩ ‘আরুশা অ্যাকর্ড’: তানজানিয়ায় তুতসি বিদ্রোহীদের সাথে একটি ক্ষমতা ভাগ করে নেয়া চুক্তি সই করলেন প্রেসিডেন্ট জুভেনাল হাবইয়ারিমানা। এসময় মনে হচ্ছিল, গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। শান্তিচুক্তি তদারকি করতে জাতিসংঘ মিশন রুয়ান্ডায় আসলো।
১৯৯৪ এপ্রিল: কিগালিতে গুলি করে রুয়ান্ডা আর বুরুন্ডির প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান বিধবংস করা হলে এতে দুজনেরই মৃত্যু হল। রুয়ান্ডা গণহত্যা সংঘটিত।* ২০ লক্ষ হুতু শরণার্থীকে সাথে নিয়ে হুতু গণহত্যাকারী প্রতিবেশী রাষ্ট্র জায়ারেতে পালিয়ে গেল।
* মাত্র ১০০ দিনে দেশটির ৮ লক্ষ তুতসি ও সহনশীল হুতুকে হত্যা করা হয়। চাপাতিসহ নানান আদিম গোছের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছিল। সারা দুনিয়া নির্বিকারভাবে টিভি পর্দায় তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে এই নরমেধযজ্ঞ, বিশ্ব নেতাদের কেউ গণহত্যা ঠেকাতে আসেন নাই।
১৯৯৪-৯৬ জায়ারের শরণার্থী শিবিরগুলো রুয়ান্ডা গণহত্যার জন্য দায়ী হুতু মিলিশিয়াদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেল।
১৯৯৫ হুতু মিলিশিয়া আর জায়ারে সরকারি বাহিনী স্থানীয় জায়ারীয় বানইয়ামুলেনগে তুতসিদের ওপর হামলা চালাল। শরণার্থীদের জোর করে রুয়ান্ডায় ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিল জায়ারে। জাতিসংঘ নিযুক্ত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল রুয়ান্ডা গণহত্যার জন্য দায়ী একদল মানুষকে অভিযুক্ত করতে ও সাজা দিতে শুরু করল।
১৯৯৬ রুয়ান্ডার সেনাদলগুলো শরণার্থীদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে জায়ারের হুতু মিলিশিয়া-নিয়ন্ত্রিত শরণার্থী শিবিরগুলোয় দখলদারি হামলা চালাল।
১৯৯৭ রুয়ান্ডা ও উগান্ডা মদতপুষ্ট বিদ্রোহীরা জায়ারের প্রেসিডেন্ট মোবুতু সেসে সেকোকে ক্ষমতাচ্যুত করল। জায়ারের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন লরেন্ত কাবিলা। দেশটির নাম বদলে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র রাখা হল।
২০০৩-২০০৭ কারাগারের জনবাহুল্যের চাপ কমাতে প্রায় ৬০ হাজার সন্দেহভাজন অপরাধীকে মুক্তি দেয়া হল।
২০০৩ আগস্ট: ১৯৯৪ সালের গণহত্যার পর আয়োজিত প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতলেন পল কাগামে।
২০০৪ মার্চ: একটি ফরাসি প্রতিবেদনে বলা হল, ১৯৯৪ সালে গুলি করে রুয়ান্ডার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জুভেনাল হাবইয়ারিমানার বিমান বিধবংস করার যে ঘটনাটি গণহত্যা উসকে দিয়েছিল, তার নির্দেশদাতা ছিলেন পল কাগামে। প্রেসিডেন্ট কাগামে এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।
২০০৬ প্রথম রোমক ক্যাথলিক পাদ্রি হিসেবে রুয়ান্ডা গণহত্যায় সম্পৃক্ততার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলেন ফাদার আথানাসে সেরোমবা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
২০০৭ ফেব্রুয়ারি: গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত ৮ হাজার কারাবন্দীকে মুক্তি দেয়া হল। এপ্রিল ১৫ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট পাস্তুর বিজিমুঙ্গুকে ৩ বছর কয়েদ খাটার পর প্রেসিডেন্টের ক্ষমা লাভ করা সাপেক্ষে মুক্তি দেয়া হল।
২০১০ আগস্ট: পল কাগামি পুনঃনির্বাচিত হলেন, নির্বাচন চলাকালীন সহিংসতা আর প্রার্থীদের অযোগ্যতার দায়ে দেশে বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠল।
২০১৭ আগস্ট: ৯৮.৮% ভোট পেয়ে পুনর্নির্বাচিত হলেন প্রেসিডেন্ট কাগামি। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা জানালেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। তারা ফলাফল প্রত্যাখ্যান করলেন।
২০১৮ সেপ্টেম্বর: ২ হাজার কারাবন্দীকে ক্ষমা প্রদর্শন করল রুয়ান্ডা। এদের অন্তর্গত বিরোধী নেতা ভিক্টোয়ের ইনগাবিরে। ২০১২ সালে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা এবং ১৯৯৪ সালের গণহত্যাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে “খাটো” করার দায়ে যাঁকে জেলে পোরা হয়েছিল।
তথ্যসূত্র
BBC. 2018. “Rwanda profile – Timeline.” BBC, September 17, 2018.
https://www.bbc.com/news/world-africa-14093322
Oppong, Joseph R.. 2008. Rwanda. New York: Chelsea House.
নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।
অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ
দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি