
লাওস
Featured Image: Wikimedia Commons.

Courtesy: The Perry-Castañeda Library Map Collection (PCLMC), The University of Texas at Austin.
সাল
১৩৫৩ লান ঝাং রাজ্য, যার রাজধানী লুয়াং প্রাবাংয়ে। খেমার সাম্রাজ্য থেকে নিজ পিতা কর্তৃক নির্বাসিত হয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজকুমার ফা নগুম। এই রাজ্যের দরবারি ধর্ম ছিল থেরবাদ বৌদ্ধধর্ম।
১৬৩৭-৯৪ সৌরিগনা ভংসার রাজত্ব। লাওসের স্বর্ণযুগ বিবেচিত হয়ে থাকে। ভংসার মৃত্যুর পর রাজ্যটি তিন ভাগে ভাগ হয়ে যায়।
১৭০১-১৮০০ এসময় লাওসের বিভিন্ন অংশ নিয়ন্ত্রণ করছেন থাই, বার্মিজ, ও ভিয়েতনামিরা।
১৭৬৩-৬৯ বার্মিজ সেনাবাহিনী দখল করে নিল লাওসের উত্তরাঞ্চল, আর লুয়াং প্রাবাংকে বার্মার সীমানাভুক্ত করল।
১৭৭৭ লাওসের দক্ষিণাঞ্চল থাই শাসনের অধীনস্ত হল।
১৮৫৯-৮৫ ফরাসিরা ভিয়েতনামের পুরোটা দখল করে নিল এবং পরবর্তীকালে লাওস ও কম্বোডিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে ফরাসি ইন্দো-চীন প্রতিষ্ঠা করল।
১৮৯৩ ফ্রাঙ্কো-সিয়ামিজ চুক্তি। মেকং নদীর পূর্বদিকের সব লাও ভূখণ্ড ফ্রান্সের হাতে তুলে দেয়া হল। এর মধ্য দিয়ে লাওস ফ্রান্সের প্রটেক্টরেটে পরিণত হল।
ভিয়েতনামকে তার পার্শ্ববর্তী দেশ কম্বোডিয়া আর লাওসের অধিকাংশ অঞ্চলের সাথে জুড়ে দিয়ে ফরাসিরা ইন্দোচীন ইউনিয়ন গঠন করল, যা ফরাসি ইন্দোচীন নামেই অধিক পরিচিত।*
* ইতিহাসের পরিহাস হচ্ছে, এই তিনটি দেশেই ফরাসিরা দীর্ঘমেয়াদে মার খাবে, এবং প্রতিটি দেশেই কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখল করবে।
১৯১৪-১৮ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।
১৯৩৯-৪৫ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
১৯৪৫ সাম্রাজ্যিক জাপান সাময়িকভাবে লাওস দখল করে নিল।
১৯৪৬ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হেরে গিয়ে জাপান আত্মসমর্পণ করলে লাওসের ওপর ফরাসি নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৫০ ফরাসিদের ব্যাপারে লাওদের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ সামাল দিতে আর ভিয়েতমিনদের সাথে ফরাসি ইন্দোচীনের অধিকাংশ অঞ্চলে যুদ্ধের প্রেক্ষিতে ফরাসি ইউনিয়নের ভেতরে লাওসকে আধা-স্বায়ত্তশাসন দিল ফ্রান্স।
১৯৫৪ দিয়েন বিয়েন ফুর সমরে ভিয়েতমিনদের কাছে পরাস্ত হয়ে ফরাসিরা পিছু হঠলে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র হিসাবে স্বাধীন হয় লাওস।
১৯৬০ রাজকীয় লাও বাহিনী এবং উত্তর ভিয়েতনামী কমিউনিস্ট ও সোভিয়েত মদতপুষ্ট ফাটেথ লাও বাহিনীগুলোর মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে গেল।
১৯৬০-৬৯ লাওসে ঘাঁটি গাড়া উত্তর ভিয়েতনামী কমিউনিস্টদের ওপর বিরতিহীন বিমান হামলা শুরু করল যুক্তরাষ্ট্র। লাওস আর কম্বোডিয়ার মধ্য দিয়ে চলে যাওয়া ও দুই ভিয়েতনামকে যুক্ত করা হো চি মিন ট্রেইল নামে পরিচিত কমিউনিস্টদের সাপ্লাই লাইন ভেঙে দেয়াই ছিল বিমান হামলার উদ্দেশ্য। পুরো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যে পরিমাণ বোমা ব্যবহৃত হয়েছে, এসময় তারচে বেশি বোমা শুধু লাওসেই ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৬৪-৭৫ কমিউনিস্ট ফাটেথ লাওদের বিরুদ্ধে মার্কিনীদের “গোপন” যুদ্ধ।
১৯৭৩ ভিয়েনতিয়ান যুদ্ধবিরতি চুক্তি, কমিউনিস্ট আর রাজতন্ত্রীদের মধ্যে ভাগ হয়ে গেল লাওস।
১৯৭৫ কমিউনিস্টদের ফাটেথ লাও, যাদের নাম বদলে লাও পিপলস ফ্রন্ট রাখা হয়েছিল, ক্ষমতা দখল করল। সিংহাসন ছাড়লেন রাজা সাভাং ভাতহানা। পরবর্তীতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়, এবং বন্দী থাকা অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
লাও জনগণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (লাও পিডিআর) ঘোষণা করা হল। লাওসের একমাত্র বৈধ রাজনৈতিক দলে পরিণত হল লাও পিপলস রেভল্যুশনারি পার্টি (এলপিআরপি)। দেশটির প্রেসিডেন্ট হলেন রাজকুমার সুওপানুওভং আর প্রধানমন্ত্রী হলেন কেইসোনে ফমভিহানে।
লাওসে অর্থনীতির সমাজতান্ত্রিক রূপান্তরের পর্ব শুরু হল, দেশটির ওপর ত্রাণ নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৭৯ অর্থনৈতিক সংকটের কারণে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিল। হাজার হাজার লাও সীমান্ত পার হয়ে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র থাইল্যান্ডে শরণার্থী হিসাবে আশ্রয় নিলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে কৃষি খাতে সীমিত আকারে ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাষাবাদের অনুমোদন দেয়া হল।
১৯৮৬ সোভিয়েত ইউনিয়নের মিখাইল গর্বাচেভ কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে বাজারমুখী সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিল লাওস।
১৯৮৯ লাওসে ১৯৭৫ সালের পর প্রথম নির্বাচন আয়োজিত। তবে সকল প্রার্থীরই এলপিআরপির অনুমোদনের প্রয়োজন হল। এই “নির্বাচনে” জিতে কমিউনিস্টরা ক্ষমতা ধরে রাখল।
১৯৯১ থাইল্যান্ডের সাথে নিরাপত্তা ও সহযোগিতা চুক্তি সই করল লাওস। একটি নতুন সংবিধান গ্রহণ করা হল। প্রেসিডেন্ট হলেন কেইসোনে ফমভিহানে, প্রধানমন্ত্রী খামতাই সিফানদন।
১৯৯২ প্রেসিডেন্ট ফমভিহানের মৃত্যু, এলপিআরপির প্রধান হলেন সিফানদন।
১৯৯৪ লাওস ও থাইল্যান্ডকে যুক্ত করা মেকং নদীর ওপরকার ”মৈত্রী সেতু” চালু করা হল।
১৯৯৫ লাওসে কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় আসায় ১৯৭৫ সালে আরোপ করা ত্রাণ নিষেধাজ্ঞা দুই দশক পরে এসে তুলে নিল যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৯৭ জুলাই ২৩ অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসে (আসিয়ান) যোগ দিল লাওস।
১৯৯৮ লাওসের প্রেসিডেন্ট হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খামতাই সিফানদন।
২০০০ লাওসের রাজধানী ভিয়েনতিয়ানে ধারাবাহিক বোমা হামলা। কর্তৃপক্ষ “সরকারবিরোধী”দের দোষারোপ করল।
ডিসেম্বর লাওসে কমিউনিস্ট শাসনের ২৫ দশক উদযাপিত হল।
এ বছর লাওসে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ শুরু হয়, প্রদেশগুলোকে অধিকতর স্বায়ত্তশাসন প্রদান করা হয়।
২০০১ মার্চ লাওসের প্রেসিডেন্ট হিসাবে পুনর্নির্বাচিত হলেন খামতাই সিফানদন।
এপ্রিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) লাওসকে তিন বছর মেয়াদে ৪০ বিলিয়ন ডলার সমমানের অর্থ সাহায্য দেয়ার অনুমোদন দিল।
ডিসেম্বর জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) লাওসের ৭০,০০০ অপুষ্ট শিশুকে খাওয়ানোর একটা তিন বছর মেয়াদী উদ্যোগ চালু করল।
২০০৩ প্রবাসী লাওদের মার্কিনভিত্তিক গোষ্ঠী দ্য ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিশন দাবি করল, দ্য লাও সিটিজেনস মুভমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি (এলসিএমডি) লাওসের ১১টি প্রদেশে বিপ্লবের সূচনা করেছে। এলসিএমডি দাবি করল, তাদের বাহিনীর সাথে সংঘাতের ফলে ৩ জন সৈনিক নিহত হয়েছেন। লাওস সরকার এই দুটো দাবিই অস্বীকার করল।
২০০৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে লাওসের স্বাভাবিক বাণিজ্য সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত।
এপ্রিল লাওসের নাম থুয়েন টু জলবিদ্যুৎ বাঁধ প্রকল্পের জন্য ঋণের অনুমোদন দিল বিশ্বব্যাংক। সমালোচকরা এই বাঁধ পরিবেশ ও সমাজের ওপর যেসব নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে তার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন।
২০০৬ লাওসের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন খামতাই সিফানদন। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন চৌমাল্লি সাইগানাসন। প্রধানমন্ত্রী হলেন বউয়াসোনে বউফাভান।
২০০৮ সেইভ দ্য চিল্ড্রেনের প্রতিবেদন অনুসারে, এ বছর নাগাদ লাওসের ৬৯ শতাংশ শিশু মৌলিক স্বাস্থ্যসেবার অভাবে ভুগছে।
২০১১ লাওসের রাজধানী ভিয়েনতিয়ানে পুঁজিবাদী অর্থনীতি নিয়ে নিরীক্ষার অংশ হিসাবে স্টক মার্কেট খোলা হল।
২০১২ প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া এবং পরিবেশবাদীদের বিরোধিতা উপেক্ষা করে মেকং নদীর ওপর জায়াবুড়িতে এক বিশাল বাঁধ নির্মাণের অনুমতি দিল লাওস।
জুলাই ৫৭ বছরের মধ্যে প্রথম মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে লাওস সফর করলেন হিলারি ক্লিনটন।
২০১৩ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সদস্যপদ লাভ করল লাওস।
২০১৬ সেপ্টেম্বর প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে লাওস সফর করলেন বারাক ওবামা। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় লাওসে যুক্তরাষ্ট্র যেসব বোমা ফেলেছিল, তার মধ্যে অবিস্ফোরিতগুলোকে পরিষ্কার করার কাজে সহায়তা করতে ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিল দেশটি।
তথ্যসূত্র
ASEAN. n.d. “ASEAN member states.” Accessed March 6, 2025.
https://asean.org/member-states/.
BBC. 2018. “Laos Profile – Timeline.” BBC, January 9.
https://www.bbc.com/news/world-asia-pacific-15355605.
— 2018. “Laos Country Profile.” BBC, July 24.
https://www.bbc.com/news/world-asia-pacific-15351898.
Church, Peter, ed. 2009. A Short History of South-East Asia. Singapore: Wiley.
নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।
অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ
দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি