Spread the love

Featured Image: Wikimedia Commons.

Image: Perry-Castañeda Library Map Collection, The University of Texas at Austin.

পূর্বসাল

পঞ্চম-চতুর্থ শতাব্দী এসময় বর্তমান কাজাখস্তানের একাংশে বাস করছে সিথীয়রা।

চতুর্থ শতাব্দী মধ্য এশিয়া* জয় করলেন ম্যাকিদোনিয়ার সিকান্দার শা।

* পাঁচটি দেশ নিয়ে মধ্য এশিয়া অঞ্চলটি গঠিত। এগুলো হল উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, ও তুর্কমেনিস্তান। ভারতবর্ষের সাথে মধ্য এশিয়ার ঐতিহাসিক সম্পর্ক আছে, কারণে প্রাচীন ভারতের আর্যভাষী গোষ্ঠী আর মধ্যকালীন ভারতের মুঘল শাসকবৃন্দ উভয়েই এই উপমহাদেশে অত্র অঞ্চল থেকে এসেছে।

তৃতীয় শতাব্দী মঙ্গোলদের সাথে সম্পর্কিত আলানি গোষ্ঠী এসময় বর্তমান কাজাখস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

প্রথম শতাব্দী যে-সিল্ক রোড চীনকে রুমি সাম্রাজ্য ও ইওরোপের সাথে যুক্ত করেছিল, এই শতাব্দীতে বর্তমান কাজাখস্তান সমেত পুরো মধ্য এশিয়া তার গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়।

সাল

চতুর্থ শতাব্দী কেন্দ্রীয় ও পশ্চিম এশিয়া জয় করল হুনরা।

পঞ্চম-সপ্তম শতাব্দী তুর্কিচভাষী গোষ্ঠীগুলো এ-সময় বর্তমান কাজাখস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়।

সপ্তম শতাব্দী আরবদের মধ্য এশিয়া জয় ও অঞ্চলটির ইসলামিকরণ।

অষ্টম শতাব্দী এ-সময় কারলুক তুর্করা বর্তমান কাজাখস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়।

দশম শতাব্দী বর্তমান কাজাখস্তানে কারাখানি গোষ্ঠী কারলুকদেরকে প্রতিস্থাপিত করল, সির দরিয়ার উত্তরে ছড়িয়ে পড়ল ইসলাম।

একাদশ-ত্রয়োদশ শতাব্দী বর্তমান কাজাখস্তানের একেক অংশ একেক গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে।

১২১৮ চেঙ্গিজ খানের নেতৃত্বে মঙ্গোলদের মধ্য এশিয়া আক্রমণ।

ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতাব্দী দলে দলে মঙ্গোলরা ঢুকে পড়ল বর্তমান কাজাখস্তানে।

১৩৯০য়ের দশক আমির তৈমুরের মধ্য এশিয়া জয়।

পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথমভাগে আমির তৈমুরের মৃত্যুতে প্রতিষ্ঠিত হল উজবেক খানাত, ছড়িয়ে পড়ল বর্তমান মধ্য ও পূর্ব কাজাখস্তানে।

১৪৩০য়ের দশক এ-সময় উজবেক খানাতের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবুল খায়ের।

পঞ্চদশ-ষোড়শ শতাব্দী কাজাখ খানাতের পত্তন ও জাতিগত কাজাখদের উত্থান।

সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমভাগে জাতিগত কাজাখরা তিনটি জুজে বিভক্ত হয়ে গেল।

সপ্তদশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ভাগে মঙ্গোল কালমিকরা দখল করে নিল বর্তমান কাজাখস্তান।

১৭১৫ এ-সময় থেকে রুশরা সক্রিয়ভাবে কাজাখস্তানে সামরিক ঘাঁটি বসাতে লাগল এবং বসতিস্থাপন করতে লাগল।

১৭৩১-৪২ পুবদিক থেকে সম্ভাব্য মঙ্গোল আক্রমণ প্রতিহত করতে জাতিগত কাজাখদের তিন জুজের খানরা রাশিয়ার সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিবদ্ধ হল।

১৮২২-৬৮ রুশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে জাতিগত কাজাখদের অগণিত বিদ্রোহ।

১৮৪৫-১৯০৪ ‘কাজাখ সাহিত্যের জনক’ খ্যাত আবাই কুনানবায়েভের জীবনকাল।

১৮৫৪ রুশ সেনাবাহিনীর তৈরি করা একটি দুর্গকে ঘিরে গড়ে উঠল কাজাখস্তানের পুরনো রাজধানী আলমাতি।

১৮৬০ রাশিয়া কাজাখস্তানকে কয়েকটি প্রশাসনিক অঞ্চলে ভাগ করল।

১৮৬০য়ের দশক মধ্য এশিয়ার অধিকাংশ রুশ সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে এল।

১৮৬৪-১৯১৬ রুশ সাম্রাজ্যের তৎপরতায় হাজার হাজার রুশ ও ইউক্রেনীয় চাষী এ-সময় কাজাখস্তানে বসতিস্থাপন করেন।

১৯১৬ রুশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে জাতিগত কাজাখদের বিদ্রোহ। রুশরা এই বিদ্রোহ রক্তাক্ত উপায়ে দমন করে। এতে ১ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, ৩ লক্ষাধিক মানুষ বিদেশে পালিয়ে যান

১৯১৭ ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ায় গণবিপ্লব, সাময়িক স্বাধীনতা পেল কাজাখরা।

১৯২০-২৫ কিরগিজ স্বায়ত্তশাসিত সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের অংশ হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গীভূত হল বর্তমান কাজাখস্তান।

১৯২০-৩০য়ের দশক কৃষি সমবায়করণ, ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু।

১৯৩৬ প্রতিষ্ঠা করা হল কাজাখস্তান সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র।

১৯৫৪-৬২ সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভের তৎপরতায় ২০ লক্ষ রুশ কাজাখস্তানে বসতিস্থাপন করলেন, এতে দেশটির জনসংখ্যায় জাতিগত কাজাখদের ভাগ ৩০ শতাংশে নেমে এল।

১৯৮৬ সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ জাতিগত কাজাখ দীনমুখামেদ কুনায়েভকে সরিয়ে জাতিগত রুশ গেন্নাদি কলবিনকে কাজাখ কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিলে এর প্রতিবাদে আলমাতিতে ৩,০০০ মানুষের বিক্ষোভ প্রদর্শন।

১৯৮৭ প্রকাশিত হল মার্থা ব্রিল ওলকটের দ্য কাজাখস

১৯৮৯ কাজাখস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হলেন নূরসুলতান নজরবায়েভ। সংসদ ভাষা প্রসঙ্গে নতুন আইন পাশ করল। তাতে কাজাখকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হল।

১৯৯১ সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করল কাজাখস্তান। প্রথম ‘গণতান্ত্রিক’ নির্বাচন। প্রতিদ্বন্দ্বীহীন নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় এলেন নূরসুলতান নজরবায়েভ।

১৯৯৫ রাশিয়ার সাথে অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা চুক্তি সই করল কাজাখস্তান।

১৯৯১-২০০২ এই সময়কালে কয়েকলাখ রুশ কাজাখস্তান ছেড়ে গেলেন।

১৯৯৭ কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানা থেকে সরিয়ে আকমোলায় নিয়ে যাওয়া হল।

১৯৯৮ কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় ফিরে এল।

১৯৯৯ দ্বিতীয় মেয়াদে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট হলেন নূরসুলতান নজরবায়েভ।

২০০০ কাজাখস্তানের অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রশংসা করল বিশ্বব্যাংক।

২০০১ কাজাখস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের সুবিশাল তেঙ্গিজ তেলক্ষেত্র থেকে রাশিয়ার নভোরোসিস্কের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর পর্যন্ত একটি তেল পাইপলাইন চালু করা হল। চীন, রাশিয়া, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান, ও তাজিকিস্তানের সাথে মিলে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) গঠন করল কাজাখস্তান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ জুনিয়রের সাথে সাক্ষাৎ করলেন কাজাখ প্রেসিডেন্ট নূরসুলতান নজরবায়েভ, দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত অংশীদারিত্ব ঘোষিত।

২০০৩ মৃত্যুদণ্ডের উপর স্থগিতাদেশ জারি করলেন প্রেসিডেন্ট নজরবায়েভ।

২০০৫ কাজাখস্তানের আদালত ‘সংসদীয় নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে নিজ দলীয় সমর্থকদের প্রতি আহবান জানিয়ে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার’ দায়ে দেশটির অন্যতম প্রধান বিরোধী দলকে বিলুপ্ত করে দিল। কয়েকটি বিরোধী দল মিলে গঠন করল নতুন রাজনৈতিক মোর্চা ফর আ জাস্ট কাজাখস্তান। নিজ গৃহে বিরোধী নেতা ও নূরসুলতান নজরবায়েভের সোচ্চার সমালোচক জামানবেক নূরকাদিলভের লাশ পাওয়া গেল।

৯০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে তৃতীয় মেয়াদে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট হলেন নূরসুলতান নজরবায়েভ, পশ্চিমা পর্যবেক্ষকরা বললেন পাতানো নির্বাচন।

২০০৬ আলমাতির বাইরে বিরোধী নেতা আলতিনবেক সারসিনবাইগুলি, তাঁর দেহরক্ষী, ও গাড়িচালকের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেল।

২০০৭ নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরিরের সদস্য হওয়ার দায়ে ৩০ জন কাজাখ ইসলামপন্থীর বিচার শুরু হল।

২০০৯ সাইবারস্পেসের স্বাধীনতা খর্বকারী একটি আইন বানাল কাজাখস্তান। ফ্রান্স আর কাজাখস্তানের মধ্যে ৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের জ্বালানি ও বাণিজ্য চুক্তি সাক্ষরিত। মধ্য এশিয়াকে চীনের সাথে যুক্ত করা একটি প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইনের কাজাখ অংশ উদ্বোধন করলেন চীনা প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও ও কাজাখ প্রেসিডেন্ট নূরসুলতান নজরবায়েভ।

২০১০ প্রথম সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র হিসেবে অর্গানাইজেশন অফ সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইওরোপের (ওএসসিই) সভাপতিত্ব করার সুযোগ পেল কাজাখস্তান। প্রেসিডেন্ট নজরবায়েভকে “লিডার অফ দ্য নেশন” খেতাব দেয়া হল। রাশিয়া, বেলারুশ, আর কাজাখস্তানের মধ্যে একটা কাস্টমস ইউনিয়ন গঠিত হল।

২০১১ বিরোধীদের বয়কট করা নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হলেন নজরবায়েভ। কাজাখস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের তেলসমৃদ্ধ শহর ঝানাওঝেনে ধর্মঘটী শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘাতে ১৬ জনের মৃত্যু। জরুরি অবস্থা জারি।

২০১৩ প্রথম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজাখস্তান সফর করলেন ডেভিড ক্যামেরন।

২০১৫ রাশিয়া, বেলারুশ, আর কাজাখস্তান মিলে গঠন করল ইউরেশীয় ইকোনমিক ইউনিয়ন (ইইইউ)। অস্ট্রিয়ায় কাজাখস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত রাখাত আলিয়েভকে ভিয়েনার এক কারাকক্ষে মৃত দশায় পাওয়া গেল। প্রায় প্রতিদ্বন্দ্বীহীন নির্বাচনে ৯৭.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নিবার্চিত হলেন নূরসুলতান নজরবায়েভ।

২০১৬ হোয়াটসঅ্যাপ মারফত গোপন রাষ্ট্রীয় তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে সরকারি ভবনে সব ধরণের মোবাইল ডিভাইসের ব্যবহার নিষিদ্ধ করল কাজাখস্তান সরকার। পেডোফিলিয়ার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা ব্যক্তিদেরকে রাসায়নিক উপায়ে খোজা করে দিতে একটা আইন প্রণয়ন করল কাজাখস্তান সরকার। সরকারের নেয়া বিতর্কিত ভূমি সংস্কার কর্মসূচির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার দায়ে এক ডজন প্রতিবাদীকে গ্রেপ্তার করল কাজাখস্তান পুলিশ।

২০১৮ কাজাখস্তানের সংসদ নূরসুলতান নজরবায়েভকে আজীবন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করল।

২০১৯ প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন নূরসুলতান নজরবায়েভ।

২০২০ প্রকাশিত হল এরিকা ফ্যাটল্যান্ডের সোভিয়েতিস্তান: ট্রাভেলস ইন তুর্কমানিস্তান, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, অ্যান্ড উজবেকিস্তান

তথ্যসূত্র

BBC. 2019. “Kazakhstan profile – Timeline.” BBC, April 9, 2019.
https://www.bbc.com/news/world-asia-pacific-15483497

Pavlović, Zoran. 2003. Kazakhstan. New York, Chelsea House, 2003.

নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।

অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ

দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি

By irrafinofficial

ইরফানুর রহমান রাফিনের জন্ম ঢাকায়, ১৯৯২ সালে। বর্তমানে একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে লিখে অন্নসংস্থান করেন। নিজেকে স্মৃতি সংরক্ষণকারীদের পরম্পরার একজন হিসাবে দেখেন। যোগাযোগ: irrafin2022@gmail.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Creative Commons License
Except where otherwise noted, the content on this site is licensed under a Creative Commons Attribution-ShareAlike 4.0 International License.