ইন্দোনেশিয়া

Spread the love

Featured Image: Wikimedia Commons.


Indonesia. Administrative Divisions. 2002.

Courtesy: The Perry-Castañeda Library Map Collection (PCLMC), The University of Texas at Austin.

পূর্বসাল

২৫০০ তাইওয়ান ও ফিলিপাইন হয়ে অস্ট্রেনেশীয় মানুষেরা ইন্দোনেশিয়ার* আওতাভুক্ত দ্বীপগুলোতে আসতে শুরু করলেন। ইন্দোনেশিয়ায় মৃৎপাত্র ও প্রস্তরনির্মিত হাতিয়ার ব্যবহৃত হচ্ছে।
* ইন্দোনেশিয়া একটি দ্বীপরাষ্ট্র। ১৭৫০০য়েরও বেশি দ্বীপ নিয়ে এই রাষ্ট্রটি গঠিত। এর ৬০০০য়েরও বেশি দ্বীপে মানুষের বসবাস আছে।

৫০০ বর্তমান ভারত, চীনের দক্ষিণাঞ্চল, আর দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার নানান দেশের সাথে সমুদ্র বাণিজ্য চালু করল উত্তর জাভার বন্দরগুলো।

সাল

১০০-৭০০ ভারত থেকে বিপুল সংখ্যক হিন্দু ইন্দোনেশিয়ায় আসেন। দেশটির অভিজাত শ্রেণি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে। এই সময়েই বৌদ্ধরাও ভারত থেকে ইন্দোনেশিয়ায় আসেন।

৩০০ বর্তমান ইন্দোনেশিয়ার সাথে আরব বণিকদের ব্যবসাবাণিজ্য শুরু।

৪১৩ চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং জাভায় আসলেন।

৪২৩ কাশ্মীরি রাজকুমার গণবর্মন সিংহল হয়ে জাভায় আসেন এবং স্থানীয় রাজপরিবারকে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত করেন।

৬০০ সুমাত্রা দ্বীপের পালেমবাং-জাম্বির নিকটে শ্রীবিজয় রাজ্যের উত্থান।

৭০০-১৩৭৭ শ্রীবিজয় রাজ্যের সমৃদ্ধিকাল। এই রাজ্যের শাসকরা ধর্মীয় পরিচয়ে বৌদ্ধ ছিলেন। শ্রীবিজয় রাজ্য সেকালের একটি শক্তিশালি নৌ-বাণিজ্যশক্তি।

৮২০ মধ্য জাভার হিন্দু-বৌদ্ধ মাতারাম রাজ্য কর্তৃক বোরোবোদুর মন্দিরের নির্মাণকাজ শুরু, ৮২৫ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়।

৯৩৬-১০০৬ মহাভারতের ইন্দোনেশীয় সংস্করণ এসময়ই কখনো লিখিত হয়।

১২০১-১৩০০ উত্তর সুমাত্রার প্রথম মুসলমান রাজ্যগুলো প্রতিষ্ঠিত হল।

১২৯২ ইতালিতে ফিরে যাওয়ার পথে সুমাত্রা আর জাভায় সাময়িক যাত্রাবিরতি করলেন পরিব্রাজক মার্কো পোলো।

১৩০০ এসময় ইন্দোনেশিয়ার সবচে বড় রাজ্য হিন্দু-বৌদ্ধদের মাজাপাহিত। ১৪৭৮ সাল পর্যন্ত মাজাপাহিতরা প্রভাবশালী থাকবেন। এরা ইন্দোনেশিয়াকে ঐক্যবদ্ধ করেন।

১৫১১-১২ ইন্দোনেশিয়ায় পর্তুগিজদের আগমন, আম্বোনে ঘাঁটি গাড়ল তারা। পর্তুগিজদের মালাক্কা জয়। কিন্তু স্থানীয় সমাজে তাদের সামান্যই প্রভাব পড়ল।

১৫১৩-১৬৪৯ পতুর্গিজ উপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে মালাক্কাবাসীদের নিরন্তর প্রতিরোধযুদ্ধ।

১৫২৭ মুসলমান রাজ্য দেমাকের হাতে পরাজিত হল হিন্দু-বৌদ্ধ রাজ্য মাজাপাহিত, জাভার প্রায় পুরোটাই এ-সময়ের মধ্যে মুসলমান হয়ে গেছে।

১৫৬০ মানাদোয় স্পেনীয়দের আগমন।

১৫৭০ পর্তুগিজ আততায়ীদের হাতে খুন হলেন তার্নেতের সুলতান।

১৫৯৫ ওলন্দাজদের একটি অভিযাত্রিক দল প্রথমবারের মত বর্তমান ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে পৌঁছাল ও স্থানীয়দের সাথে বাণিজ্য চুক্তি করল।

১৬০২ গঠিত হল ওলন্দাজ সংযুক্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি (ভিওসি)।

১৬১১ ওলন্দাজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি জয়াকের্তায় (জাকার্তার সেকালীন নাম) একটি বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করল। ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন দ্বীপে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করল ব্রিটিশরা।

১৬১৩-৪৬ এসময় মাতারাম রাজ্য শাসন করছেন সুলতান আগুং, জাভার প্রায় পুরোটাই জয় করলেন তিনি। মাতারাম রাজ্যের মহত্তম শাসক বলে বিবেচিত হন। ১৬৪১ সালে তিনি সুলতান উপাধি গ্রহণ করেছিলেন।

১৬১৮ ইন্দোনেশিয়ায় ওলন্দাজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির গভর্নর জেনারেল হলেন ইয়ান পিয়েতেরজুন কোয়েন।

১৬১৯ জাকার্তা শহরটিকে ধবংস করলেন ইয়ান পিয়েতেরজুন কোয়েন।  এটিকে একটি ওলন্দাজ বাণিজ্যকেন্দ্র হিশাবে পুনর্নির্মাণ করলেন। নাম দিলেন বাতাভিয়া।

১৬২০-২৩ ওলন্দাজ উপনিবেশিক শক্তি বান্দায় একটা হত্যাযজ্ঞ চালাল।

১৬২৫ মশলা দ্বীপপুঞ্জ বলে খ্যাত বর্তমান ইন্দোনেশিয়ার মালুকু দ্বীপগুলোর লোভনীয় লবঙ্গ ব্যবসা পর্তুগিজদের হাত থেকে ওলন্দাজদের হাতে এল।

১৬৪১ মালাক্কা বন্দরের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারাল পর্তুগিজরা, এ-বছরই মালাক্কা দুর্গ ওলন্দাজদের অধিকারভুক্ত হল।

১৬৪৪ ইন্দোনেশিয়ার সব পর্তুগিজ-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল ওলন্দাজদের অধিকারভুক্ত হল।

১৬৪৬ সুলতান আগুংয়ের মৃত্যু।

১৭৩২ জাকার্তায় ম্যালেরিয়া মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ল।

১৭৯৯ ওলন্দাজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে গেল, ইন্দোনেশিয়ার নিয়ন্ত্রণ কোম্পানির কাছ থেকে চলে এল ওলন্দাজ সরকারের হাতে।

১৮১১-১৬ জাভায় ব্রিটিশ শাসন।

১৮১২ তম্বোরা আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতে ১২,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়। আগ্নেয়গিরির ছাই বহু ফসলী ক্ষেতের ক্ষতিসাধন করে। ফলে ক্ষুধায় আরো ৮০,০০০ মানুষ মারা যান।

১৮১৬ ব্রিটিশরা ইন্দোনেশিয়ার নিয়ন্ত্রণ ওলন্দাজদের হাতে ফিরিয়ে দিল।

১৮২১-৩৮ ওলন্দাজ উপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে ইন্দোনেশীয়দের পাদরি যুদ্ধ। মধ্য সুমাত্রা টুয়ানকু ইমাম বনজোলের নেতৃত্বে। ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম জাতীয় বীর।

১৮২৪ ওলন্দাজ আর ব্রিটিশদের মধ্যে লন্ডন চুক্তি সাক্ষরিত।

১৮২৫-৩০ জাভা যুদ্ধ

১৮৩১-৭৭ ইন্দোনেশিয়া থেকে নেদারল্যান্ডসের রাজকোষে জমা হল ৮২ কোটি ৩০ লক্ষ গিল্ডার। এই অর্থ দিয়ে ওলন্দাজরা ঋণ শোধ করে, রেলপথ তৈরি করে, এবং বেলজিয়ামের সাথে যুদ্ধের ব্যয়ভার বহন করে। আধুনিক ইওরোপ উপনিবেশিক লুঠের টাকায় গড়ে উঠেছে।

১৮৩৫ জাভায় জোরপূর্বক চাষাবাদ ব্যবস্থা চাপিয়ে দিল ওলন্দাজরা।

১৮৪৫ জাভায় ভ্যানিলা উৎপাদন শুরু হল।

১৮৫৯ ইন্দোনেশিয়ায় দাসপ্রথার বিলোপসাধন করল ওলন্দাজরা।

১৮৬০ কালিমান্তানকে ওলন্দাজদের উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হল।

১৮৬৪ বানজারমাসিনকে ওলন্দাজদের উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হল।

১৮৭২-৯৫ দক্ষিণ সুমাত্রায় বাতাক যুদ্ধ।

১৮৭৩-৭৪ বর্তমান ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে হামলা চালাল ওলন্দাজরা।

১৮৮৩ ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত।

১৮৮৪ এ. বাস্তিয়ান নামের জনৈক জার্মান পণ্ডিত ইন্দোনেশিয়া নামটি প্রথমবারের মত ব্যবহার করেন।*
* এর আগে অঞ্চলটি নুসানতারা নামে পরিচিত ছিল। নুসানতারা মানে “অন্য দ্বীপপুঞ্জ।”

১৮৮৭ মাদুরাকে ওলন্দাজদের উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হল।

১৮৯৪ লম্বোককে ওলন্দাজদের উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হল।

১৯০৫ সুলাওয়েসিকে ওলন্দাজদের উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হল।

১৯০৬ বালিকে ওলন্দাজদের উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হল।

১৯০৮ আচেহকে ওলন্দাজদের উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হল। ইন্দোনেশিয়ার প্রথম জাতীয়তাবাদী সংগঠন বুদি উতোমো গঠিত। এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ওয়াহিদিন সুদির হুসোদা।

১৯১১ মুসলমান বণিকদের সংগঠন সারেকাত দাগাং ইসলাম গঠিত।

১৯১২ সারেকাত ইসলাম রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল।

১৯১২ মধ্য জাভার আহমেদ কে. এইচ. দাহলান কর্তৃক ইন্দোনেশিয়ার সংস্কারপন্থী ইসলামপন্থী সংগঠন মুহাম্মদিয়া গঠিত।*
* কুরআন ও হাদিসের অপেক্ষাকৃত আক্ষরিক ব্যাখ্যায় বিশ্বাসী।

১৯২০ পশ্চিম পাপুয়াকে ওলন্দাজদের উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হল।

১৯২১ সারেকাত ইসলামে ভাঙন ধরলে দলটির বামপন্থী অংশের সদস্যদের নিয়ে গঠিত হল ইন্দোনেশীয় কমিউনিস্ট পার্টি (পিকেআই)।

১৯২৬ ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্যবাদী ইসলামপন্থী সংগঠন নাদলাতুল উলামা গঠিত।*
* ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসগুলোর সাথে সাংঘর্ষিক না হলে হিন্দুবৌদ্ধ প্রভাবিত স্থানীয় ইন্দোনেশীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন চর্চা সহ্য করার পক্ষপাতী।

১৯২৬-২৭ ইন্দোনেশীয় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইন্দোনেশীয় কমিউনিস্টদের বিদ্রোহ। ১৩,০০০ কমিউনিস্ট গ্রেপ্তার। এর মধ্য চার সহস্রাধিককে জেলে পাঠান হল।

১৯২৭ আখমাদ সুকর্ণ* কর্তৃক গঠিত হল ইন্দোনেশীয় ন্যাশনালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (পিএনআই)।
* ইন্দোনেশিয়ার প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্রপ্রধান ও বামঘেঁষা জাতীয়তাবাদী। ক্ষমতালাভের পর ক্রমেই একনায়কতন্ত্রী প্রবণতা প্রদর্শন করেন। ইন্দোনেশীয় কমিউনিস্টরা সুকর্ণকে নিঃশর্ত সমর্থন প্রদান করেছিল, তাদের জন্য যার ফল হয়েছিল মারাত্মক।

১৯২৮ পিএনআই ইন্দোনেশীয় জাতীয়তাবাদী পার্টিতে পরিণত হল।

১৯৩১ সুতোমা সুরোবায়ার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল ইউনিয়ন অফ দ্য ইন্দোনেশিয়ান পিপল।

১৯৩৩ ওলন্দাজরা ইন্দোনেশিয়ার জাতীয়তাবাদী নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার ও কারাবন্দী করল।

১৯৩৯ ইন্দোনেশিয়ার রাজনৈতিক দলগুলোর ফেডারেশন দেশটির নয়টি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলকে এক করে একটি জাতীয়তাবাদী মহাসম্মেলনের আয়োজন করে।

১৯৪২-৪৫ ইন্দোনেশিয়ায় জাপানি উপনিবেশিক শাসনের কাল।

১৯৪২ জাপানি ফ্যাসিস্ট শক্তি দখল করে নিল ইন্দোনেশিয়া। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে প্রায় দুই লক্ষ ইন্দোনেশীয় জাপানিদের ইন্টার্নমেন্ট ক্যাম্পে বন্দী ছিলেন। ওলন্দাজরা কারাগার থেকে পালাতে সক্ষম হলেন সুকর্ণ।

১৯৪৩ ইন্দোনেশীয় সেনাবাহিনীর ভ্রুণ পেটা গঠন করা হল। মিত্রপক্ষ ইন্দোনেশিয়া পুনঃদখল করতে শুরু করল।

১৯৪৫ আগস্ট ১৭ সুকর্ণ আর মোহাম্মদ হাত্তা* ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। ওলন্দাজদের সাথে চার বছরের স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হল, একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা হল, সুকর্ণ প্রেসিডেন্ট ঘোষিত হলেন। পশ্চিম জাভায় দারুল ইসলাম প্রতিষ্ঠা করলেন মুসলমান সূফি ও উপনিবেশবাদবিরোধী সক্রিয়তাবাদী এস. এম. কার্তোসূর্য।
* পশ্চিম সুমাত্রায় জন্ম নেয়া একজন ইন্দোনেশীয় গণতন্ত্রী। ধর্মপ্রাণ মুসলমান ছিলেন। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে মধ্যপন্থী হওয়ায় পরবর্তীকালে বামঘেঁষা সুকর্ণ আর ডানঘেঁষা সুহার্তো উভয়েরই সমালোচনা করেছেন।

১৯৪৮ কার্তোসূর্যের নেতৃত্বে দারুল ইসলামের বিদ্রোহ। কমিউনিস্টদের মাদিউন বিদ্রোহ। স্বাধীনতাকামী ইন্দোনেশীয়দের বিরুদ্ধে পুলিশি অ্যাকশন নিল ওলন্দাজরা।

১৯৪৯ ডিসেম্বর ২৭ ওলন্দাজ ইস্ট ইন্ডিজ ইন্দোনেশিয়া নামে স্বাধীন হল। দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট হলেন সুকর্ণ, বাতাভিয়ার নাম বদলে জাকার্তা করা হল, এবং জাকার্তাকে দেশটির রাজধানী বানানো হল। ইন্দোনেশিয়ায় একটি ইসলামি রাষ্ট্র গঠন করলেন কার্তোসূর্য।

১৯৫০ ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার তদবিরে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করল ইন্দোনেশিয়া। গারুদা ইন্দোনেশীয় এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠা করা হল।

১৯৫১ ইন্দোনেশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টির (পিকেআই) প্রধান হলেন এ. এন. আইদাত।

১৯৫৫ বান্দুংয়ে আফ্রো-এশীয় সম্মেলন।

১৯৫৭ প্রেসিডেন্ট সুকর্ণ ‘গাইডেড ডেমোক্রেসি’-র ধারণা প্রবর্তন করলেন।

১৯৫৮ ইন্দোনেশিয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রেভল্যুশনারি গভর্নমেন্ট অফ দ্য রিপাবলিক অফ ইন্দোনেশিয়া’র (পিআরআরআই) পারমেস্তা (ইউনিভার্সাল স্ট্রাগল চার্টার) বিদ্রোহ।

১৯৫৯-৬৫ গাইডেড ডেমোক্রেসি

১৯৬০ ডিক্রি জারি করে সংসদ বিলুপ্ত করলেন সুকর্ণ।

১৯৬১ ইন্দোনেশিয়ার অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করা হল।

১৯৬২ কার্তোসূর্যকে পাকড়াও করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হল। জাতিসংঘের তৎপরতায় পশ্চিম পাপুয়া ইন্দোনেশিয়ায় যোগ দিল। ইন্দোনেশিয়া ওপেকের সদস্য হল।

১৯৬৩ মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান চালাতে শুরু করলেন সুকর্ণ। সুকর্ণকে আমৃত্যু প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করা হল। এক একনায়কতন্ত্রকে সমর্থন দিয়েছিল ইন্দোনেশীয় কমিউনিস্ট পার্টি (পিকেআই)।

১৯৬৫ সুহার্তোকে সেনাপ্রধান হিসাবে নিয়োগ দেয়া হল। কারারুদ্ধ হলেন ইন্দোনেশিয়ার সবচে বিখ্যাত লেখকদের একজন, রাজনৈতিক ধ্যানধারণায় বামপন্থী, প্রমোদয়া অনন্ত তোয়ের। জাতিসংঘ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিল ইন্দোনেশিয়া।

১৯৬৬ চাপের মুখে সুহার্তোকে বিশেষ ক্ষমতা দিলেন সুকর্ণ। গৃহবন্দী হলেন সুকর্ণ। এ সময় কার্যত সুহার্তোই ইন্দোনেশিয়ার অঘোষিত রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন।

১৯৬৫-৬৬ ১৯৬৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এক রহস্যময় ও ব্যর্থ ক্যু প্রচেষ্টায় ইন্দোনেশীয় সেনাবাহিনীর পাঁচ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা খুন হন। এই হত্যাকাণ্ডকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে ১৯৬৫-৬৬ সালে কয়েক লক্ষ কমিউনিস্ট, তাদের দরদী, ও জাতিগত সংখ্যালঘু চীনাদের হত্যা করা হয়। ইন্দোনেশিয়া গণহত্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, দেখুন, (Roosa 2020).

১৯৬৭ সুকর্ণ ক্ষমতাচ্যুত, ইন্দোনেশিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হলেন সুহার্তো।

আগস্ট ৮ প্রতিষ্ঠিত হল অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান), ইন্দোনেশিয়া যার প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একটি।

জাতিসংঘে পুনরায় যোগদান করল ইন্দোনেশিয়া।

১৯৭১ প্রথমবারের মত ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন সুহার্তো।

১৯৭৫ পর্তুগিজরা পূর্ব তিমুর ছেড়ে চলে গেল। পূর্ব তিমুরে হামলা চালাল ইন্দোনেশিয়া।

১৯৭৬ আচেহ প্রদেশে স্বাধীনতা ঘোষণা করলেন হাসান দ্য তিরো। ইন্দোনেশিয়া পূর্ব তিমুর দখল করে নিল এবং দেশটিকে ইন্দোনেশিয়ার ২৭তম প্রদেশ দাবি করল।

১৯৭৮ জানানা গুসমাওয়ের নেতৃত্বে ইন্দোনেশীয় শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হল।

১৯৮০ ইন্দোনেশিয়ায় স্থাপিত হল পিটিশন অফ ফিফটি গ্রুপ।

১৯৮০-৮৯ ইন্দোনেশীয় অর্থনীতির উদারীকরণ।

১৯৯০ প্রতিষ্ঠিত হল অল ইন্দোনেশিয়া অ্যাসোসিয়েশন অফ মুসলিম ইন্টেলেকচুয়ালস (আইসিএমআই)।

১৯৯১ দিলি হত্যাযজ্ঞ

১৯৯২ ইন্দোনেশীয় বাহিনী জানানা গুসমাওকে পাকড়াও ও কারারুদ্ধ করল।

১৯৯৩-৪ আবদুল্লাহ সাঙ্কার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল জামায়া ইসলামিয়া। সংগঠনটির উদ্দেশ্য ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, থাইল্যান্ড, ও ফিলিপাইনের দক্ষিণ অংশ নিয়ে একটি বিশাল ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। জামায়া ইসলামিয়ার ঐতিহাসিক অনুপ্রেরণা কার্তোসূর্যের দারুল ইসলাম।

১৯৯৩ ইন্দোনেশিয়ার গণতন্ত্রী পার্টির (পিডিআই) প্রধান হলেন মেঘবতী সুকর্ণপুত্রী।

১৯৯৫ যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি সই করল অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়া।

১৯৯৭ এশীয় অর্থনৈতিক সংকট

১৯৯৮ ইন্দোনেশিয়ার ত্রিশক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বৈরতন্ত্রবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চার ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করা হল। পদত্যাগ করলেন সুহার্তো। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন বাসারুদ্দিন ইউসূফ হাবিবি। মেঘবতী সুকর্ণপুত্রী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল ইন্দোনেশিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ স্ট্রাগল (পিডিআইপি)।

১৯৯৯ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বিজে হাবিবি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি গণভোটের আয়োজন করলে অধিকাংশ পূর্ব তিমুরি ইন্দোনেশীয় শাসনের বিপক্ষে ভোট দিলেন। জাকার্তাপন্থী মিলিশিয়াদের চালানো সহিংসতার মধ্যে দেশটির শাসনভার সাময়িকভাবে গ্রহণ করল জাতিসংঘ, কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করলেন জানানা গুসমাও। এ বছর আংশিক স্বাধীনতালাভ করল পূর্ব তিমুর।

চারদশক পরে ইন্দোনেশিয়ার প্রথম মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন আবদুররহমান ওয়াহিদ।

২০০০ ১৯৬৫-৬৬ সালের গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাইলেন প্রেসিডেন্ট আবদুররহমান ওয়াহিদ।

রবার্ট ক্রিব, হিস্টোরিকাল অ্যাটলাস অফ ইন্দোনেশিয়া

২০০১ অভিশংসনের শিকার হলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদুররহমান ওয়াহিদ। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন মেঘবতী সুকর্ণপুত্রী।

আর. ই. এলসন, সুহার্তো: আ পলিটিকাল বায়োগ্রাফি

২০০২ অক্টোবর ১২ ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে জঙ্গি হামলায় দুইশতাধিক নিহত। এ বছর পূর্ব তিমুর পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে।*
* একবিংশ শতাব্দীর প্রথম স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্র পূর্ব তিমুর।

এম. সি. রিকলেফস, আ হিস্টোরি অফ মডার্ন ইন্দোনেশিয়া সিন্স সি. ১২০০

২০০৩ ইন্দোনেশিয়ার ম্যারিয়ট হোটেলে বোমা মারল জামায়া ইসলামিয়া। ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে শরিয়া আইন চালু হল। মদ্যপান, জুয়া খেলা, এবং বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ককে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বিধিবদ্ধ করা হল।

২০০৪ ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাসের প্রথম প্রত্যক্ষ প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হলেন সুশীল বামবাং যুধোজন। সুনামিতে ইন্দোনেশীয় উপকূলে ১ লক্ষ ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু।

রবার্ট প্রিঙ্গল, আ শর্ট হিস্টোরি অফ বালি: ইন্দোনেশিয়াজ হিন্দু রিলম

২০০৫ ইন্দোনেশিয়া সরকারের সাথে আচেহ প্রদেশের বিদ্রোহীদের শান্তিচুক্তি। বেইজিং সফর করলেন ইন্দোনেশীয় প্রেসিডেন্ট যুধোজন।

২০০৬ ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের প্রথম প্রত্যক্ষ নির্বাচনে জয়লাভ করে গভর্নর নির্বাচিত হলেন সাবেক বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী নেতা ইরাওয়ান্দি ইউসূফ। অস্ট্রেলিয়ার সাথে লম্বোক চুক্তি সই করল ইন্দোনেশিয়া, এটি একটি নতুন নিরাপত্তা চুক্তি।

২০০৮ বালি ডেমোক্রেসি ফোরাম আয়োজন করল ইন্দোনেশিয়া।

২০০৯ পুলিশের গুলিতে খুন হলেন নুরুদ্দিন মুহাম্মদ তপ। তিনি ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার মোস্ট ওয়ান্টেড সশস্ত্র ইসলামপন্থী।

রবার্ট ল্যামেনসন, ফোর্টি ইয়ার্স অফ সাইলেন্স

২০১১ ব্লাসফেমির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সময় একদল মুসলমান মধ্য জাভার দুটি চার্চে অগ্নিসংযোগ করলেন। পশ্চিম জাভায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের তিন সদস্য খুন। একটি ইসলামি জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মদত দেয়ার দায়ে উগ্রপন্থী আবু বকর বাসাইরকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হল।

২০১২ জোশুয়া ওপেনহাইমার, দ্য অ্যাক্ট অফ কিলিং

২০১৪ ইন্দোনেশিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন জোকো উইডোডো। ইন্দোনেশীয় ইসলামি জঙ্গি আমান আবদুর রহমান আইএসের কথিত খলিফার প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করলেন।

জোশুয়া ওপেনহাইমার, দ্য লুক অফ সাইলেন্স

২০১৬ এ বছর দ্য স্ট্রেইট টাইমসের দেয়া তথ্যমতে, ইন্দোনেশিয়া থেকে ৩৯২ জন আই/এসের কথিত খেলাফতে বাস করতে ইরাক-সিরিয়ায় গিয়েছিলেন।

২০১৭ জাকার্তার খ্রিস্টান মেয়র বাসুকি জাহাজা পূর্নামাকে ব্লাসফেমির দায়ে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হল।

২০১৮ ভূমিকম্প ও সুনামিতে ইন্দোনেশিয়ায় ১০০০এরও বেশি মানুষের মৃত্যু। ইন্দোনেশিয়ার একটি আদালত সন্ত্রাসী তৎপরতায় যুক্ত থাকা ও নর হত্যার অভিযোগে আমান আবদুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করল।

২০২০ জন রুসা, বারিড হিস্টোরিজ: দ্য অ্যান্টিকমিউনিস্ট ম্যাসাকারস অফ ১৯৬৫-৬৬ ইন ইন্দোনেশিয়া

২০২২ প্রস্তাবিত নতুন রাজধানী নুসানতারার নির্মাণকাজ শুরু হল।

তথ্যসূত্র

রেহমান, তারেক শামসুর। ২০১৯। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার রাজনীতি। ঢাকা: শোভাপ্রকাশ

ASEAN. n.d. “ASEAN member states.” Accessed March 6, 2025.
https://asean.org/member-states/.

BBC. 2018. “Indonesia Country Profile.” BBC, October 2.
https://www.bbc.com/news/world-asia-pacific-14921238.
2019. “Indonesia – Timeline.” BBC, April 17.
https://www.bbc.com/news/world-asia-pacific-15114517

Church, Peter, ed. 2009. A Short History of South-East Asia. Singapore: Wiley.

Drakeley, Steven. 2005. The History of Indonesia. Westport, Connecticut: Greenwood Press.

Oxford Reference. 2022. “Timeline: Dutch Empire.” Accessed May 23.
https://www.oxfordreference.com/view/10.1093/acref/9780191737565.timeline.0001

Phillips, Douglas A.. 2005. Indonesia. Philadelphia: Chelsea House.

Roosa, John. 2020. Buried Histories: The Anticommunist Massacres of 1965-66 in Indonesia. Madison, Wisconsin: The University of Wisconsin Press.

The Atlantic. 1956. “A Chronology of Indonesian History.” The Atlantic, June 1956 Issue.
https://www.theatlantic.com/magazine/archive/1956/06/a-chronology-of-indonesian-history/642694/

নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।

অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ

দিব্যপ্রকাশ । বাতিঘর । বইবাজার । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী । বুক হাউজ । ওয়াফিলাইফ । রকমারি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *