Featured Image: Wikipedia Commons.
সাল
নবম শতাব্দী মাগইয়াররা রাজকুমার আরপাডের নেতৃত্বে দানিয়ুব পারের সমভূমিতে বসতিস্থাপন করলেন।
১০০০ আরপাডের এক বংশধর এবং হাঙ্গেরির প্রথম খ্রিস্টান রাজা হিসাবে পোপ কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রথম স্টিফেন কার্পেথীয় অববাহিকার ওপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করলেন।
১২৪১-৪২ মঙ্গোল আক্রমণে হাঙ্গেরির বেশ বড় একটা অংশ ধবংস হয়ে গেল।
১৩৪২-৮২ লুই দ্য গ্রেটের রাজত্বকাল। তিনি ডালমেশিয়াকে হাঙ্গেরির সীমানাভুক্ত করে নেন। পেকসে দেশটির প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন।
১৪৫৬ হাঙ্গেরীয় অভিজাত ইয়ানোস হুনিয়াদির বাহিনী বেলগ্রেড ঘেরাও করে রাখা ওসমানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করল।
১৫২৬ ‘মোহাকসের যুদ্ধ’: ওসমানি তুর্কিদের হাতে পরাজিত হলেন হাঙ্গেরির রাজা, ফলে দেশটির অধিকাংশ অঞ্চলের ওপর ওসমানি সুলতানশাহির নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হল।
১৬৯৯ প্রথম লিওপোল্ডের নেতৃত্বে অস্ট্রীয় হাপসবুর্গরা হাঙ্গেরি থেকে ওসমানি তুর্কিদেরকে তাড়িয়ে দিল।
১৮৪৮-৪৯ লায়োস কোসসুথের নেতৃত্বে হাপসবুর্গ শাসনের বিরুদ্ধে হাঙ্গেরীয়রা অভ্যুত্থান ঘটালে সেই বিদ্রোহ সশস্ত্র উপায়ে দমন করা হল।
১৮৬৭ হাঙ্গেরিকে অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যে সমান অংশীদারিত্ব প্রদান করা হল।
১৯১৪-১৮ ‘প্রথম বিশ্বযুদ্ধ’।
১৯১৮ অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের অবসান। হাঙ্গেরিতে বিপ্লব। প্রজাতন্ত্র ঘোষিত।
১৯১৯ বেলা কুনের নেতৃত্বে ক্ষমতা গ্রহণ করল কমিউনিস্টরা। চেকস্লোভাকিয়া ও রুমানিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন বেলা। রুমানীয় বাহিনী বুদাপেস্ট দখল করে নিল এবং অ্যাডমিরাল মিকলোস হোর্থির হাতে ক্ষমতা তুলে দিল।
১৯২০ ‘ত্রিয়াননের চুক্তি’: আঁতাত শক্তিগুলো হাঙ্গেরির দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি ভূখণ্ড চেকোস্লোভাকিয়া, রুমানিয়া, আর যুগোস্লাভিয়ার হাতে তুলে দিল। হাঙ্গেরির এই সীমানা পুনঃনির্ধারণের ফলে হাঙ্গেরীয়ভাষীদের এক-তৃতীয়াংশ দেশের সীমান্তের বাইরে পড়ে গেলেন। দ্য ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি হাঙ্গেরি রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করল, অ্যাডমিরাল মিকলাস হোর্থিকে রাজপ্রতিনিধি বানানো হল।
১৯২০-৩০য়ের দশক মিকলাস হোর্থির শাসনামল। সাম্রাজ্য হারানোর বেদনায় কাতর হয়ে উঠল হাঙ্গেরি। এসময় দেশটি নাৎসি জার্মানির দিকে ঝুঁকে পড়ে।
১৯৩৮ মিউনিখ চুক্তি চেকোস্লোভাকিয়ার কিছু অংশ নাৎসি জার্মানির হাতে তুলে দিলে হাঙ্গেরি তার ১৯২০ সালে হারানো ভূখণ্ডের কিছু অংশ ফিরে পেল।
১৯৩৯ জার্মানি, জাপান, ও ইতালির অ্যান্টাই-কমিনটার্ন প্যাক্টে যোগ দিল হাঙ্গেরি, লীগ অফ নেশনস থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিল।
১৯৩৯-৪৫ ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ’।
১৯৪০ নাৎসি জার্মানির উৎসাহে রুমানিয়ার কাছ থেকে উত্তর ট্রান্সসিলভানিয়া ফিরে পেল হাঙ্গেরি।
১৯৪৪ সোভিয়েতদের সাথে সন্ধির প্রস্তাব দিলেন মিকলাস হোর্থি। হাঙ্গেরীয় নাৎসিদের ক্ষমতাদখল। দেশটির ইহুদি আর জিপসিদেরকে মৃত্যুশিবিরে পাঠানো হল।
১৯৪৫ এপ্রিল: সোভিয়েতরা জার্মানদেরকে হাঙ্গেরি থেকে বের করে দিল। জোট সরকার গঠিত। ভূমি সংস্কারের বিল প্রবর্তন করা হল, জমিদারকে কাছ থেকে জমি চাষীদের কাছে বিলিয়ে দেয়ার বন্দোবস্ত করা হল।
১৯৪৭-৪৯ সোভিয়েত দখলদারিত্বে হাঙ্গেরীয় কমিউনিস্টরা ক্ষমতা সংহত করল। দেশটিতে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা হল, শিল্প জাতীয়করণ ও কৃষির সমবায়ীকরণ করা হল। কমিউনিস্ট শাসনের বিরোধীদের ওপর দমনপীড়ন শুরু।
১৯৫৬ অক্টোবর-নভেম্বর: হাঙ্গেরিতে সরকারবিরোধী অভ্যুত্থান। সোভিয়েত ট্যাংক দিয়ে বিদ্রোহ গুঁড়িয়ে দেয়া হল। নতুন সরকারপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পেলেন ইয়ানোস কাদার।
১৯৬০এর দশক সীমিত আকারে উদারীকরণ সংস্কার প্রবর্তন করলেন কাদার। রাজবন্দী আর চার্চের নেতাদেরকে মুক্তি দেয়া হল। চাষী আর শিল্পশ্রমিকদের অধিকারের পরিসর বাড়ল কিছুটা।
১৯৬৮ বাজারের জন্য হাঙ্গেরীয় অর্থনীতির উন্মুক্তকরণ শুরু হল।
১৯৮৮ হাঙ্গেরির নয়া সরকারপ্রধান হলেন কারোলি গ্রস। বিরোধী দলগুলো গঠন করল হাঙ্গেরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোরাম।
১৯৮৯ মে: অস্ট্রিয়ার সাথে হাঙ্গেরির সীমান্ত খুলে দেয়া হল। হাঙ্গেরিতে কমিউনিস্টদের একদলীয় শাসন দুর্বল হয়ে পড়ছে। বহুদলীয় গনতন্ত্রে রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে।
১৯৯০ নির্বাচনে জিতে মধ্য-ডানপন্থীরা ক্ষমতায় এল, চার দশকেরও বেশি সময়ের কমিউনিস্ট শাসনের অবসান।
১৯৯১ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন। ওয়ারশ প্যাক্ট বিলুপ্ত। হাঙ্গেরি থেকে সোভিয়েত সেনা প্রত্যাহার করা হল।
১৯৯৪ সাবেক কমিউনিস্ট আর লিবারেলরা জোট গঠন করল, সংস্কারপন্থী কমিউনিস্টদের নেতা গাইলা হর্ন মুক্ত বাজার অর্থনীতির পথে হাঁটার প্রতিশ্রুতি দিলেন।
১৯৯৮ হাঙ্গেরির সাথে সদস্যপদ সংলাপ শুরু করল ইওরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ফিদেৎজ নেতা ভিক্টর অরবানের নেতৃত্বে মধ্য-ডানপন্থীদের জোট গঠিত হল।
১৯৯৯ ন্যাটোয় যোগদান করল হাঙ্গেরি।
২০০১ জুন: বিতর্কিত ‘স্ট্যাটাস আইন’।
২০০২ পিটার মেদগাইসির নেতৃত্বে সোশালিস্ট পার্টি আর লিবারেল ফ্রি ডেমোক্র্যাটরা মধ্য-বামপন্থী জোট সরকার গঠন করল।
২০০৪ মে: ইওরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগ দিল হাঙ্গেরি। সেপ্টেম্বর: প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন পিটার মেদগাইসি। নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী ফেরেনস গাইরসকানি।
২০০৫ জুন: সোশালিস্ট পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীকে তাঁদের ফ্রি ডেমোক্র্যাট জোটসঙ্গীরা আটকে দিলে সংসদ লাসলো সলইয়োমকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে বেছে নিল।
২০০৬ এপ্রিল: ফেরেনস গাইরসকানির নেতৃত্বে সোশালিস্টদের নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় ফিরে এল। প্রধানমন্ত্রী গাইরসকানি স্বীকার করলেন নির্বাচনী প্রচারাভিযান চালানোর সময় তিনি মিথ্যা বলেছিলেন। তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বুদাপেস্টে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এলে সহিংসতা দেখা দিল।
২০০৮ বৈশ্বিক আর্থিক সংকটে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হল হাঙ্গেরি। বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), এবং ইওরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ২০ বিলিয়ন ডলারের উদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করল।
২০০৯ মার্চ: দ্য সাউথ স্ট্রীম পাইপলাইনের অংশবিশেষ হাঙ্গেরীয় ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে নির্মাণের জন্য হাঙ্গেরির সাথে চুক্তি সই করল রাশিয়া। এপ্রিল: প্রধানমন্ত্রী হলেন অর্থমন্ত্রী গর্ডন বাজনাই। জুন: ইওরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে তিনটি আসন জিতল উগ্রডানপন্থী জব্বিক পার্টি।
২০১০ এপ্রিল: সংসদীয় নির্বাচনে রক্ষণশীল ফিদেৎজ পার্টির ভূমিধ্বস বিজয়, ৪৭টি আসন জিতে প্রথমবারের মত সংসদে ঢুকল উগ্রডানপন্থী জব্বিক পার্টি। মে: হাঙ্গেরির সংসদে এই মর্মে আইন পাশ করা হল যে, বিদেশের মাটিতে থাকা জাতিগত হাঙ্গেরীয়রা দেশটির নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। অক্টোবর: রাসায়নিক বর্জ্যসংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনার কারণে ৭ জনের মৃত্যু ও ১৫০ জন আহত হলেন, জরুরি অবস্থা জারি করা হল।
তথ্যসূত্র
BBC. 2018. “Hungary profile – Timeline.” BBC, January 8, 2018.
https://www.bbc.com/news/world-europe-17383522
নোট: ইরফানুর রহমান রাফিনের নন-ফিকশন সময়রেখা ঢাকার দিব্যপ্রকাশ কর্তৃক ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এই ব্লগটি সেই বই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্প। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও সিলেটের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে সময়রেখা, এবং অনলাইনে অর্ডার দিয়েও সংগ্রহ করা যাবে।
অনলাইন অর্ডার লিংকসমূহ
দিব্যপ্রকাশ । রকমারি । বইবাজার । বাতিঘর । ওয়াফিলাইফ । বইয়ের দুনিয়া । বইফেরী